What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

Collected স্বামীই কেন আসামি? (1 Viewer)

bWhhuON.jpg


হোয়াট ইজ স্বামী?

আমি অনেক দিন ধরেই ভাবছি, স্বামী আসলে কী? সে যে মানুষ নয়, সে ব্যাপারে আমার কোনো সন্দেহ নেই। এ ছাড়া সে আসলে কী? কোনো পদার্থ (বউ অবশ্য অপদার্থই বলে), নাকি বহিরাগত কোনো জীব (বউ অবশ্য আজিব বলে থাকে)! স্বামীকে মৃত, অর্ধমৃত হিসেবে ঘোষণা আগেই করা হয়েছে, কিন্তু আসলে স্বামী কী? স্বামী আসলে বীর। সেই বীর যে পরাজিত জেনেও সংসার নামের এক মহাযুদ্ধে দিনের পর দিন ঢাল-তলোয়ার বাগিয়ে লড়াই করে যায়। আমরা যারা স্বামীর জাত, তাদের এখন একসঙ্গে কণ্ঠে আওয়াজ তোলা উচিত, 'আমরা স্বামী আমরা বীর...আমরা শক্তি পৃথিবীর'!

স্বামীই কেন আসামি?

একটা ব্যাপার আমার মাথায় কোনোভাবেই ঢোকে না যে সব সময় কীভাবে আমিই আসামি হয়ে যাই? কী করে সমস্ত দায় আমার ওপরেই এসে পড়ে? সেদিন রাতে বাইরে খেতে যাওয়ার কথা ছিল। আমার স্ত্রী রুনা দীর্ঘক্ষণ ধরে সাজার পর অবশেষে দয়া করে মুখ তুলে চাইল। মিষ্টি হেসে (আমি আমার বউয়ের মিষ্টি হাসি দারুণ ভয় পাই। কেন যেন মনে হয় এই হাসি শেষেই একটা অ্যাটম বোমা ছুটে আসবে আমার দিকে) বউ বলল, 'লিপস্টিকটা কেমন হয়েছে?' আমি ভয়ে ভয়ে উত্তর দিলাম, 'ভালোই তো!'
: শুধু ভালোই তো? এটা খালাতো বোন নূপুর পাঠিয়েছে ম্যারিকা থেকে! রংটা দারুণ না?
: হ্যাঁ।
: তুমি আর রঙের কী বুঝবে? তুমি তো মিষ্টি রং আর পিংকের মধ্যে পার্থক্য বোঝো না!
: না না, সুন্দর আছে রংটা!

: তা তো থাকবেই। কিন্তু তোমাকে তো কোনো দিন দেখলাম না এ রকম সুন্দর রঙের লিপস্টিক কিনতে!

: আমি তো লিপস্টিক কিনি না...!

: তা কিনবে কেন? বউয়ের জন্য কোনো কিছু কিনতে তো তোমার হাত কাঁপে...বুক ধড়াস ধড়াস করে। ভাবো যে এত টাকা খরচ করে ফেলব! অথচ সেদিন তোমার কলিগের বউয়ের বার্থডেতে কত কত গিফট নিয়ে গেলে তোমরা!

: আরে, ওটা তো সবাই মিলে কিনেছিলাম।

: হুহ্‌, সবাই মিলে কিনেছিলে না? আমি বুঝি না। এইগুলাতে তোমার তো খুব চালাকি! সবার নাম দিয়ে আসলে এগুলা তুমি নিজেই কেন! বলো, সত্যি কি না, বলো?

: আরে, কী বলো তুমি এসব?

: কী বলি মানে? আমি মিথ্যা বলি? তুমি তো একটা গবেট। গাধার গাধা। নিজের পকেট থেকে কেনো আর নাম হয় সবার! এ রকম গাধা আমি দুনিয়ায় দেখিনি!

6zbCsXk.jpg


আমি অত্যন্ত কনফিউজড হয়ে পড়ি এ সময়। একটা মানুষ একই সঙ্গে চালাক ও গবেট কীভাবে হতে পারে? পাশাপাশি এ ব্যাপারেও কনফিউজড হই যে লিপস্টিক না কেনায় আমার দোষ কোথায়? কারণ, দোকানে গেলে তো আমার বউ আমাকে পাত্তাই দেয় না। এই কনফিউশনের মধ্যেই আমার বউ উঠে দাঁড়ায় আর বলে, 'থাক থাক, আর জ্ঞানীদের মতো বসে বসে ভাবতে হবে না! চলো...বনানী ভাড়া করবা রিকশা। তিরিশ টাকার বেশি না কিন্তু, বুঝছ?'

আমি কিছু বলে ওঠার আগেই ঝাঁপিয়ে বৃষ্টি নামে। রুনা গজগজ করে ওঠে। আর আমাকে বলে, 'সব তোমার দোষ! সব তোমার দোষ!'

: আরে, বৃষ্টি প্রাকৃতিক ব্যাপার। এর মধ্যে আমার দোষ কোথায়?

: তোমার দোষ না? তোমার জন্যই তো এতক্ষণ ধরে কথা বলতে হলো... না হলে কবেই রেস্টুরেন্টে পৌঁছে যেতাম। এখন খাবে কী? ঘরে তো কোনো খাবার নেই! এই তোমার জন্য এখন না খেয়ে রাত পার করতে হবে।

দীর্ঘশ্বাস ফেলা ছাড়া আমার আর কোনো উপায় ছিল না। মনে মনে বলেছিলাম, স্বামীই আসামি। স্বামীই একমাত্র আসামি।

সন্ধ্যায় বাসায় ঢুকে হয়তো জাতীয় ও আন্তর্জাতিক রাজনীতি নিয়ে পরবর্তী দিনে অফিস আড্ডায় কী বলা যায়, তার খোরাক জোগাতে একটু টিভিটা দেখব, একটু টক শো, একটু খবর দেখব কিন্তু তার কোনো উপায় থাকে না। বউ এসে রিমোট দখলে নেয়, নেটফ্লিক্সে নতুন কোনো সিরিজ দেখতে বসে।

সংসার সুখের হয় শুধুই স্বামীর গুণে

কত যে ভুলভাল প্রবাদ প্রচার হয়ে আসছে অতীত থেকে। এই ভুলভাল প্রবাদগুলোর মধ্যে সবচেয়ে ভুল প্রবাদ হলো, সংসার সুখের হয় রমণীর গুণে! অসম্ভব! সংসার আসলে সুখের হয় আমাদের গুণে অর্থাৎ স্বামীদের গুণে। বউ সকাল থেকে আমাদের পেছনে লেগে থাকে। বলে, 'আরে, এভাবে দাঁত ব্রাশ করছ কেন? তুমি কি ছোট বাচ্চা!'

আমরা স্বামীরা কিছু বলি না। চুপচাপ সহ্য করে যাই।

অফিসে কাজের মধ্যে থাকা অবস্থায় বউ ফোন করে। হয়তো বসের সামনে আছি, তখন বউ ফোন দিয়ে পাশের বাড়ির লালচে বেড়ালটা যে তিনটা সাদা বাচ্চা দিয়েছে তা নিয়ে গল্প শোনায়।

আমরা স্বামীরা কিছু বলি না। চুপচাপ সহ্য করে যাই।

সন্ধ্যায় বাসায় ঢুকে হয়তো জাতীয় ও আন্তর্জাতিক রাজনীতি নিয়ে পরবর্তী দিনে অফিস আড্ডায় কী বলা যায়, তার খোরাক জোগাতে একটু টিভিটা দেখব, একটু টক শো, একটু খবর দেখব কিন্তু তার কোনো উপায় থাকে না। বউ এসে রিমোট দখলে নেয়, নেটফ্লিক্সে নতুন কোনো সিরিজ দেখতে বসে।

আমরা স্বামীরা কিছু বলি না। চুপচাপ সহ্য করে যাই। ভর রাতে বারান্দায় দাঁড়িয়ে হয়তো একটা সিগারেট খেতে যাই, তখনই বউ আঁতকা চিৎকার দিয়ে ওঠে, 'তোমাকে না কতবার বলেছি আর সিগারেট খাবে না? আবার ধরাচ্ছ তুমি?'

সঙ্গে সঙ্গে সিগারেট ফেলে দিয়ে সুড়সুড় করে মশারির ভেতর ঢুকে যাই এবং হ্যাঁ, আমরা স্বামীরা কিছু বলি না। চুপচাপ সহ্য করে যাই।

আর এই যে বলি না কিছু, এই যে চুপচাপ সহ্য করে যাই বলেই তো সংসারে অশান্তি হয় না, বিবাদ হয় না, ঝগড়া হয় না। যদি বলতাম, যদি সহ্য না করতাম, তাহলে প্রতিদিন রেসলিং হবে সংসারে। ঝগড়াঝাঁটির ডোজ হবে রোজ রোজ! আমরা স্বামীরা শান্তিকামী। আমরা জন্মেইছি পকেটে সাদা রুমাল নিয়ে। বউ যতই শাসন আর শোষণ করুক আমাদের, পকেট থেকে সাদা রুমাল সব সময় উঁকি দেয় বাইরে...আর তাই সংসারটা সুখের হয়। তাই সংসার সুখের হয় স্বামী, শুধুই স্বামীর গুণে—এটিই আসল প্রবাদ, এটাই সত্য প্রবাদ।

ml7G52N.jpg


কিন্তু সন্ন্যাসী হতে পারি না

গৌতম বুদ্ধও তো চলে গিয়েছিলেন! হায়! কতবার ভাবি আমিও চলে যাব। আর তো সহ্য হয় না! কিন্তু পারি না। পারি না কারণ, আমার বউ আমাকে যতটা আগলে রাখে, যতটা ভালোবাসে...অন্যের বউ কি ততটাই আগলে রাখবে, ভালোবাসবে?

লেখক:
 

Users who are viewing this thread

Back
Top