What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

Review ছিটকিনি ও বন্দী নারীর গল্প (1 Viewer)

7JusPD1.jpg


ছায়াছবি – ছিটকিনি
পরিচালক – সাজেদুল আউয়াল
অভিনয় – রুনা খান, মানস বন্দ্যোপাধ্যায়, বড়দা মিঠুন, ভাস্বর বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমুখ।
মুক্তি – ১ ডিসেম্বর ২০১৭

fYcqdXw.jpg


'বাইরে থেকে ছিটকিনি খুলতে আর ভালো লাগে না। ভেতর থেকে কেউ খুলে দিলে হয়তো বাঁচার স্বপ্ন দেখতাম'
সংলাপটি শুনে কবি নির্মলেন্দু গুণের কবিতা মনে পড়েছে। কবি 'বাইরে থেকে দরজা খুলতে খুলতে ক্লান্ত' বলেছিলেন। সংলাপ বা কবিতা যাই বলি না কেন শৃঙ্খল সবগুলো। আটকে রাখতে চায় বাস্তবতা। মানুষ স্বাধীনতা চায় কিন্তু পায় না। মাঝখানে যা থাকে তাকে বাঁচার জন্য সংগ্রাম ছাড়া আর কিছু বলা যায় না।

xpI0RuP.jpg


বাঁচার সংগ্রামে বন্দী জীবন থেকে উঠে আসা একজন নারীর গল্পে সাজেদুল আউয়ালের জীবনমুখী ছবি 'ছিটকিনি।' ছবির নামটি রূপক। 'অ্যলেগরি' বলা হয় একে। অর্থ 'অন্য কিছু বোঝানো।' ছবির গল্পে ছিটকিনি নারীর বন্দী থাকার সুযোগ নিয়ে সভ্যতার অধঃপতনে যাওয়া পুরুষের কামনাকে বাস্তবতার সাথে দেখানো হয়েছে।

রুনা খান এমন একজন অভিনেত্রী যিনি শমী কায়সার, বিপাশা হায়াত, আফসানা মিমি-দের পরে পিওর ক্লাস অভিনেত্রীদের সংকটের মাঝে একটা আশার আলো। তাদের পরবর্তী উত্তরাধিকারের মধ্যে তিনি অন্যতম প্রতিভা। তিনি কম কাজ করলেও তাঁর কাজের মধ্যে মান বজায় থেকেছে। একসময় বিটিভির ছোটদের জনপ্রিয় অনুষ্ঠান 'সিসিমপুর'-এ সুমনার চরিত্রে অভিনয় করেছেন এবং এ চরিত্রটি দিয়ে সুপরিচিত। 'ছিটকিনি' ছবির কেন্দ্রীয় নারী চরিত্রে তিনি ছিলেন। কর্মজীবী নারীর ভূমিকায় চরিত্রের সাথে মিশে গিয়েছেন। কনস্ট্রাকশনের কাজে পাথর ভাঙা, উত্তোলন এসবের মাঝে মিশে গিয়েছেন। পঞ্চগড় জেলার ডায়ালেক্টকে সুন্দরভাবে বলেছেন। কাজ করতে গিয়ে প্রভাবশালী নারীলোভী বড়দা মিঠুনের সাথে তার দেখা হয়। ইনি তাকে ইঙ্গিত করে সেই ভাষায় পুরুষের যে ভাষাকে নারীরা ভয় পায়। বাস্তবতার চরম অবস্থায় রুনা খান শেষ পর্যন্ত যা মেনে নেয় তাকে অগ্রাহ্য করা যায় না।

dwUwaQm.jpg


পরিচিত যে লোকটি রুনার জন্য লালশাক নিয়ে আসে আর বলে-'খেলে শক্তি হয়' রুনার উত্তর হয়-'কি জানি!' লালশাকের গুণাগুণ তার জানার বাইরে। এটা একদিকে যেমন তার সরলতা তেমনি নিজের দারিদ্র্যের কাছে আত্মসমর্পণ। ছেলের মুখের দিকে তাকিয়ে তার অসহায় লাগে নিজেকে।

ছবির শেষ দশ মিনিটে মাইন্ড গেম চলে ছিটকিনি নিয়ে। দুজন মানুষ দুদিকে। মাঝখানে দরজা। দরজায় ছিটকিনি দেয়া। কে খুলবে আর কে খুলবে না। আদৌ কি খুলবে! নারীর সামাজিক অবস্থানে জালের মতো বিছিয়ে রাখা পুরুষের চোখগুলো হায়েনার মতো দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে অলিতে গলিতে, জানা-অজানা অনেক গল্পে। অন্তত একটা গল্প দেখাতে পেরেছে 'ছিটকিনি' ছবি এটাও কম কি!

hBxC4Wn.jpg


শুটিংয়ে ক্যামেরায় দেখছেন পরিচালক সাজেদুল আউয়াল

কে কখন ছিটকিনি খুলে দিল বা বন্ধ করল দুটোরই অর্থ আছে গভীর। খুলে দিলে ভেতরে কেউ ঢুকল কিংবা বন্ধ করলেও ভেতর থেকে কেউ বন্ধ করল। বাইরের জন ভেতরে ঢুকে বন্ধ করল কিনা এই পয়েন্টে ছবিটি অসাধারণ হয়ে ওঠে। বাকিটা দর্শকের বোঝার ওপর ছেড়ে দেয়া ভালো।
 

Users who are viewing this thread

Back
Top