What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

যে কারণে স্পেসএক্স ফ্যালকন ৯ রকেট সবার থেকে আলাদা (1 Viewer)

Bergamo

Forum God
Elite Leader
Joined
Mar 2, 2018
Threads
9,649
Messages
117,051
Credits
1,241,096
Glasses sunglasses
Berry Tart
Statue Of Liberty
Profile Music
Sandwich
EFb0OWQ.jpg


১২ মে ভোররাতে কোটি বাঙালি চোখের পলক না ফেলে নির্ঘুম জেগে ছিল ইতিহাসের সাক্ষী হওয়ার জন্য। কারণ এসময় বাংলাদেশ অর্জন করেছে এক অসাধারণ মাইলফলক। দেশের প্রথম স্যাটেলাইট বঙ্গবন্ধু-১ তখন স্পেসএক্স ফ্যালকন ৯ রকেট চড়ে মহাকাশে আপন কক্ষপথে পাড়ি জমিয়েছে। রকেট উৎক্ষেপণের সময় রুদ্ধশ্বাস ঐ কয়েক মিনিট যেন ফুরোতেই চাইছিলনা। আগের দিন একই সময়ে ঘটেছিল যান্ত্রিক ত্রুটি। আর দ্বিতীয় দিন এসে সবাই প্রার্থনা করছিল যাতে সবকিছু ঠিক থাকে এবং বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট ভালোভাবে নিজের গন্তব্যে রওয়ানা হতে পারে। হয়েছেও তাই! বাংলাদেশের স্বপ্ন পূরণ হয়েছে।

বাংলাদেশ সময় ১২মে ২০১৮ (অথবা ১১মে শুক্রবার দিবাগত) রাত ২টা ১৪ মিনিটে যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইটটি সফলভাবে উৎক্ষেপণ করা হয়। উৎক্ষেপণের ৩৩ মিনিট ৪৭ সেকেন্ডে বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট পৌঁছে যায় জিওস্টেশনারি ট্রান্সফার অরবিটে।

এই উড্ডয়নের সাথে সাথেই বাংলাদেশ নাম লেখাল নিজস্ব স্যাটেলাইটের মালিক দেশগুলোর এলিট ক্লাবে। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট এর মাধ্যমে বিশ্বের ৫৭তম স্যাটেলাইট ক্ষমতাধর দেশ হল বাংলাদেশ।

বঙ্গবন্ধু ১ স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করা হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের বেসরকারি মহাকাশ গবেষণা প্রতিষ্ঠান স্পেসএক্স এর বহুল আলোচিত ফ্যালকন ৯ ব্লক৫ মডেলের একটি রকেটের মাধ্যমে। এই উৎক্ষেপণের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ যেমন ইতিহাস গড়েছে, তেমনি বাংলাদেশের সাথে সাথে ইলন মাস্কের কোম্পানি স্পেসএক্সও নতুন রেকর্ড গড়েছে তাদের অত্যাধুনিক রকেটের মাধ্যমে। স্পেসএক্স ফ্যালকন ৯ রকেটের নতুন ভার্সন ব্লক ৫ এর প্রথম মিশনই ছিল বঙ্গবন্ধু-১। তাই বাংলাদেশ সহ পুরো প্রযুক্তি বিশ্বও তাকিয়ে ছিল এই উৎক্ষেপণের দিকে।

xZ1lfJP.jpg


স্পেসএক্স ফ্যালকন ৯ রকেট তৈরিই করেছিলে পুনরায় ব্যবহারযোগ্য রকেট হিসেবে। অরবিটাল রকেট, যেগুলো মহাকাশে কক্ষপথে পাঠানো হয় সেগুলো এতদিন শুধু একবারই ব্যবহার করা যেত। অর্থাৎ প্রতি মিশনে ১০ থেকে শত শত মিলিয়ন ডলারের রকেট বানানোর দরকার হত যা অত্যন্ত ব্যয়বহুল।

কিন্তু মার্কিন উদ্যোক্তা ইলন মাস্ক তার স্পেসএক্স কোম্পানি থেকে তৈরি করেছেন ফ্যালকন ৯ রকেট, যেগুলো একাধিকবার ব্যবহার করা যায়। এই রকেটগুলোর একটা বড় অংশ মহাকাশের মিশন শেষ করে আবার পৃথিবীতে ফিরে আসে এবং সেগুলোকে পুনরায় মহাকাশে মিশনে পাঠানো যায়।

২০১১ সাল থেকে স্পেসএক্স তাদের ফ্যালকন ৯ রিইউজ্যাবল রকেট তৈরি করার কাজ করছিল। অবশেষে ২০১৭ সালের মার্চ মাসে একটি ফ্যালকন ৯ রকেট তার দ্বিতীয় মিশন নিয়ে মহাকাশে যায় এবং এর পুনরায় ব্যবহারযোগ্য অংশ পৃথিবীতে ফিরে আসে। ২০১৭ সালের মার্চের ঐ দ্বিতীয় মিশনে ফ্যালকন ৯কে পুনরায় মহাকাশে পাঠিয়ে রেকর্ড সৃষ্টি করে স্পেসএক্স।

Xxkwu9s.jpg


তবে, এতদিন স্পেসএক্স তাদের পুনরায় ব্যবহারযোগ্য রকেট ফ্যালকন ৯ এর প্রতিটি রকেট সর্বোচ্চ দুই বার মহাকাশে পাঠাতে পেরেছে। অর্থাৎ, একটি ফ্যালকন ৯ রকেট সর্বোচ্চ ২ বার ব্যবহৃত হতে পেরেছে, যা আসলে স্পেসএক্সের মূল উদ্দেশ্যকে সার্থক করেনা।

কিন্তু ১২ মে (বাংলাদেশ সময়) বাংলাদেশের স্যাটেলাইট বঙ্গবন্ধু-১ নিয়ে স্পেসএক্স ফ্যালকন ৯ রকেটের নতুন ভার্সন মহাকাশে গিয়েছে, যার নাম 'ফ্যালকন নাইন ব্লক ফাইভ'। এই মডেলের প্রতিটি রকেট কমপক্ষে ১০ বার থেকে সর্বোচ্চ ১০০ বার পর্যন্ত ব্যবহার করা যাবে। আগে যেখানে ফ্যালকন ৯ মাত্র ২ বার ব্যবহার করা যেত, সেখানে ফ্যালকন ৯ এর আপডেট ভার্সন ব্লক ফাইভ ১০-১০০ বার পর্যন্ত ব্যবহার করা যাবে। তাই বঙ্গবন্ধু ১ উৎক্ষেপণের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ যেমন নতুন ইতিহাস লিখেছে, তেমনি বাংলাদেশের সাথে সাথে স্পেসএক্সও নতুন কিছু অর্জন করেছে।

OV131N7.jpg


প্রায় ২৩০ ফুট উচ্চতার ফ্যালকন-৯ রকেটে চারটি অংশ রয়েছে। একদম ওপরের অংশে থাকে স্যাটেলাইট বা অন্য যেকোনো সাবজেক্ট/পেলোড (যখন যেটা উদ্দেশ্য), তারপর অ্যাডাপটর। এরপর স্টেজ-২ এবং সবচেয়ে নিচে থাকে স্টেজ-১।

৫,৪৯,০৫৪ কেজি ওজনের স্পেসএক্স ফ্যালকন ৯ ব্লক ৫ আকাশে উৎক্ষেপিত হওয়ার পরপরই স্টেজ ওয়ান চালু হয়ে ওপরের দিকে উঠতে শুরু করে রকেট। কয়েক মিনিট পর রকেটের স্টেজ-১ খুলে নিচের দিকে নামতে থাকে, পাশাপাশি স্টেজ-২ চালু হয়। রকেটের পুনরায় ব্যবহারযোগ্য অংশ স্টেজ-১ পৃথিবীতে চলে আসে এবং স্টেজ-২ একটি নির্দিষ্ট দূরত্ব পর্যন্ত স্যাটেলাইট নিয়ে গিয়ে মহাকাশেই থেকে যায় অথবা স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ ছাড়া অন্য কোনো কাজ থাকলে তখন স্টেজ ২ সেটা করে।

tPTPssy.jpg


এদিকে স্টেজ-১ স্পেসএক্স এর পূর্ব-নির্ধারিত জায়গায় অবতরণ করে। স্পেসএক্স ফ্যালকন ৯ এর স্টেজ-১ এ থাকে রকেটটির মূল ইঞ্জিন এবং উৎক্ষেপিত হওয়ার জন্য দরকারী বেশিরভাগ জ্বালানীও এই অংশেই থাকে। রকেটটির ব্যাস ১২ ফুট।

5rkMY1a.gif


স্টেজ-১ ফিরে আসার পর সেটিকে পরের মিশনের জন্য কিছু মেরামত দরকার হয়, কিন্তু আস্ত একটি রকেট তৈরির খরচ অনেকটাই বাঁচিয়ে দেয় এ ধরণের পুনরায় ব্যবহারযোগ্য রকেট। এখন ১০-১০০ বার যদি ফ্যালকন ৯ ব্লক ৫ ব্যবহার করা যায়, তাহলে সেটা সবার জন্যই মঙ্গল।

আশা করি এই পোস্টটি আপনাকে দারুণ কিছু তথ্য দিয়েছে।
 

Users who are viewing this thread

Back
Top