What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

ফেসবুক পোস্টও ভালো করে দেয় মন (1 Viewer)

US15U95.jpg


নিজের প্রতিভা আটকে রাখার সময় এখন নয়। খেলাচ্ছলে অনেকেই নিজের পছন্দের কাজের ভিডিও পোস্ট করেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। হঠাৎ সেটা হতে পারে ভাইরাল। আপনার ভালো কাজের প্রশংসা পাবেন নানাজনের কাছ থেকে। এর ফলে উৎসহ বেড়ে অনেকেই সেদিকে এগিয়ে যাওয়ার সাহস পান। এ ধরনের সৃজনশীল কাজের নানা রকম গ্রুপ আছে ফেসবুকে।

৪ বছর ৫ মাস বয়সী ফারহিন মুশফিকা। সে পড়ছে প্লে গ্রুপে। ফেসবুক গ্রুপ 'পেন্সিল'–এ আবৃত্তি করেছে পল্লিকবি জসীমউদ্‌দীনের কবিতা 'এত হাসি কোথায় পেলে'। একই গ্রুপে লালনের 'আমি অপার হয়ে বসে আছি' গানটি বাঁশিতে তোলার চেষ্টা করেছেন অস্ট্রেলিয়াপ্রবাসী এক যুবক ফয়সাল হাসান। এমনই আরেকটি ফেসবুক গ্রুপের নাম সৃজনশীল জীবনধারা। গাছ লাগানোর গল্প, নিজের আঁকা ছবি বা নিজের করা ক্রাফটিংয়ের মতো নানা ধরনের সৃজনশীল কাজ তুলে ধরা যায় সেখানে। পেন্সিল, সৃজনশীল জীবনধারা, বারান্দা ও বাগান পরিচর্যা, ঝিঁঝিপোকাও রাঁধে ইত্যাদি তেমনই কিছু ভালো উদ্যোগের ফেসবুক গ্রুপ।

শিল্প ও সাহিত্যনির্ভর এসব গ্রুপের প্রতিটিরই সদস্যসংখ্যায় কেউ লাখ পেরিয়েছে, কেউ লাখের কাছে। সৃজনশীল কাজের জনপ্রিয়তায় বেশ কটি গ্রুপ দেশের গণ্ডি পেরিয়ে জনপ্রিয় প্রবাসী বাঙালিদের মধ্যেও। এসব সৃজনশীল পোস্টগুলোতে লাইক আর কমেন্টেরও ছড়াছড়ি। ভিন্নধর্মী চিন্তাচেতনাই প্রাধান্য পায় এসব গ্রুপে। এ ছাড়া বয়সেরও নেই কোনো বাধ্যবাধকতা। অর্থাৎ যেকোনো বয়সের যে কেউ চাইলেই তাঁর প্রতিভা এখানে তুলে ধরতে পারেন।

এই গ্রুপগুলোর বেশির ভাগই করোনার সময়ে গড়ে উঠেছে; যা এই সময়ের মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখতে বেশ উপযোগীও বটে। ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের কাউন্সেলিং সাইকোলজিস্ট এ্যানি বাড়ৈ বলেন, 'মানসিক স্বাস্থ্যের সঙ্গে সৃজনশীল কাজের ও চিন্তার আছে গভীর যোগসূত্র। তবে সুন্দর ও ইতিবাচক চিন্তার বহিঃপ্রকাশের সঙ্গে সঙ্গে এটিও খেয়াল রাখা জরুরি যে এটা যেন আপনার মনের স্বাস্থ্যের জন্য নেতিবাচক না হয়ে যায়।'

সাধারণত এ ধরনের গ্রুপগুলো ইতিবাচকভাবে সময় কাটানোর ভালো মাধ্যম। করোনাকালে এমন গ্রুপগুলো আরও যেসব সুবিধা দিতে পারে—

ইতিবাচক করতে

মনের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে ইতিবাচক চিন্তার ব্যতিক্রম নেই। বিশেষ করে করোনার এই সময়ে চারপাশ থেকে হঠাৎ করেই চলে আসছে খারাপ সংবাদ। সে ক্ষেত্রে দিনে একটা সময়ে সৃজনশীলতার চর্চা মনকে করবে উৎফুল্ল।

একাকিত্ব কমাতে

এ ধরনের সৃজনশীল চর্চা কমাতে পারে একাকিত্ব। করোনার বিধিনিষেধের সময়ে দিনের লম্বা একটা সময় ফেসবুকে থাকা হয়, বিধিনিষেধ না থাকলেও এখন খুব একটা বাইরে যাওয়ার সুযোগ নেই। তাই একধরনের একাকিত্ব তৈরি হতে পারে। কিন্তু এ ধরনের সৃজনচর্চা নতুন বন্ধু ও যোগাযোগ বাড়াতে বেশ উপযোগী। এ ছাড়া অন্যের প্রশংসা করার মানসিকতাও তৈরি হয় এর মাধ্যমে।

শিশুদের ক্ষেত্রে প্রভাব

শিশুদের মধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের সঠিক ব্যবহার বাড়াতে এ ধরনের কার্যক্রম বেশ জরুরি। সৃজনশীল কাজ প্রদর্শনে শিশুরা প্রশংসা পেলে তাদের মধ্যে একধরনের আগ্রহ তৈরি করবে। অনেক মা–বাবাই তাঁদের সন্তানদের সঙ্গে নিয়েই গান, নাচ বা আবৃত্তি করছেন। আবার কেউ কেউ শুধু সন্তানের প্রতিভাগুলোই তুলে ধরছেন। এতে মা–বাবা সঙ্গে শিশুর বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক তৈরি হয় বলে জানালেন বিশেষজ্ঞ এ্যানি বাড়ৈ।

নেতিবাচকতা পেলে

কাজের জন্য প্রংশসা পাওয়া মানুষের প্রবৃত্তি। কিন্তু অনেক সময় কাজের যথাযথ প্রশংসা পাওয়া যায় না। লাইক, কমেন্টে দেখা যায় নেতিবাচকতা। সে ক্ষেত্রে কি আপনি নিজেকে সৃজনশীল বলবেন না? এমন হলে একেবারেই মন খারাপ না করার পরামর্শ দেন এ্যানি বাড়ৈ। এ ছাড়া শিশুকেও নেতিবাচক কথা বলা, আরও ভালো করার চাপ দেওয়া মনের স্বাস্থ্যের জন্য অস্বাস্থ্যকর।

নিজেকে খুশি করাই উদ্দেশ্য

গ্রুপে পোস্ট করার পর অন্যের প্রশংসা পাওয়াই যেন প্রধান উদ্দেশ্য না হয়ে যায়। এ ধরনের কাজের একমাত্র উদ্দেশ্য হওয়া উচিত নিজেকে খুশি করা। কাজটি করার পর আমার অনুভূতি বিবেচ্য বিষয়। এ ধরনের চিন্তাই আপনাকে মানসিকভাবে প্রশান্তি দেবে। প্রথমে নিজেকেই নিজের কাজ উপভোগ করতে হবে।

অন্যের সঙ্গে তুলনা নয়

গ্রুপে অনেক ধরনের পোস্ট দেখে সব ধরনের কাজই আমাকে করতে হবে বা পারতে হবে, এমন চিন্তা ঠিক নয়। এমন চিন্তা থেকে হারাতে থাকবে আপনার সৃজনশীলতা। এ ছাড়া কোনো কাজ করেই আপনি আত্মতুষ্টি পাবেন না। আপনার বা সন্তানের যে প্রতিভাটি আছে, তা–ই সুন্দর করে তুলে ধরুন। প্রতিযোগিতামূলক মনোভাব আপনার ও শিশুর মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য একেবারেই ভালো নয়।

মোটকথা একাকী থাকার এই সময়টা যাতে আপনাকে দুর্বল করে দিতে না পারে, সে জন্যই এমন কাজে অংশ নিতে হবে।

* রিফাত পারভীন, ঢাকা
 

Users who are viewing this thread

Back
Top