What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

বালাকোটের রণাঙ্গনে (1 Viewer)

arn43

Co-Admin
Staff member
Co-Admin
Joined
Mar 2, 2018
Threads
1,574
Messages
119,132
Credits
374,289
Computer
Glasses sunglasses
Compass
Compass
Camera photo
Logitech Mouse

বালাকোটের রণাঙ্গনে


১.

চলতি বছরের জানুয়ারীতে পেশোয়ার যাওয়ার পথে 'নওশেরা' নামটি চোখে পড়তেই হৃদকম্পন দিয়ে কল্পনায় ভেসে উঠেছিল সাইয়েদ আহমাদ ব্রেলভী (রহ.), শাহ ইসমাঈল শহীদ (রহ.)-এর নেতৃত্বে পরিচালিত উপমহাদেশের প্রথম স্বাধীনতা আন্দোলন তথা বৃটিশ ও শিখবিরোধী 'জিহাদ আন্দোলন'-এর অম্লান স্মৃতি। খাইবার-পাখতুনখোয়া তথা তৎকালীন উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশের বড় একটা অংশ ছিল এই আন্দোলনের প্রধান কেন্দ্র। তখন থেকেই এই জিহাদ আন্দোলনের সর্বাধিক তাৎপর্যময় অধ্যায় ঐতিহাসিক বালাকোট যুদ্ধের স্থানটি স্বচক্ষে দেখার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছিলাম। মাঝখানে দেশে যাওয়া, দুই সপ্তাহ পর দেশ থেকে ফিরে এসে মিড টার্ম পরীক্ষা দেয়া ইত্যাদির কারণে বেশ ব্যস্ততা ছিল। অবশেষে পরীক্ষার পর সর্বপ্রথম পরিকল্পনাতেই বালাকোট সফরটা চূড়ান্ত করে ফেললাম।

মারদানের এক ক্লাসমেট আনওয়ারুল হককে বলে রেখেছিলাম সফরসঙ্গী হওয়ার জন্য। কিন্তু নির্ধারিত দিন ২৫ এপ্রিল'১৪ সকালে সে জানালো বিশেষ কারণবশতঃ যেতে পারছে না। ভাবলাম তাহলে অপর কোন সঙ্গী পাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করি। এমন অপরিচিত গন্তব্যে একাকী যাওয়াটা সুবিবেচনার কাজ হবে না। ভাষাগত সমস্যাও আছে। কেননা ওদিকের লোকজন হিন্দকো ভাষী (যদিও পরে দেখলাম উর্দূ ও হিন্দকোর মধ্যে তেমন একটা তফাৎ নেই)। কিন্তু নিয়ত যখন করে ফেলেছি এবং সফরের প্রস্ত্ততিও যখন নিয়ে ফেলেছি, তখন সফর তো অর্ধেকটা হয়েই গেছে। এমতাবস্থায় পিছুটান দিতেও মনটা সায় দিচ্ছে না। তাছাড়া সত্যি বলতে একাকী সফরে আমার খুব একটা আপত্তি নেই। বরং ভালই লাগে। অনুভূতির জগতকে উজাড় করে দিয়ে নিজের মত করে সব কিছু দেখা, নিজের মত করে বোঝা, নিজের মত করে অনুভব করার মধ্যে অন্য রকম এক আনন্দ আছে। অনেকটা ধ্যানমগ্ন সাধক তার নিবিড় সাধনায় যে পরিতৃপ্তির খোঁজ পায় তেমন। তাই আর দেরী করলাম না। অন্তর্জগতের শত-সহস্র অধরা অনুভবকে সঙ্গী করে বেশ প্রসন্নচিত্তে একাকীই রওনা হলাম। পেশোয়ার অভিমুখী জিটি রোড ধরে টাক্সিলা ওয়াহ ক্যান্টনমেন্ট, তারপর হাসান আবদাল থেকে রাইট টার্ন নিয়ে কারাকোরাম হাইওয়ে (এন-৩৫) ধরে হরিপুর যেলায় ঢোকার পর হায়েস মাইক্রোবাসটি কিছুক্ষণ বিশ্রাম নেয়। তারপর আবার রওনা হয় এ্যাবোটাবাদের পথে। রাস্তার দু'ধারে বেশ দূরে বৃক্ষহীন অথচ সবুজ ঘাস, লতাগুল্মে ভরা পাহাড়ের দীর্ঘ সারি। সমভূমি ছেড়ে ঐসব পাহাড়ে বহু মানুষের বসবাস। গাড়ি এগিয়ে যায় একের পর এক পাহাড়ী জনপদ পেরিয়ে। বিশাল সরীসৃপের মত পাহাড়ের সারিও ধীরলয়ে পিছুপথে হারিয়ে যায়। শূন্য বোবা দৃষ্টি সেদিকে লেগে থাকে আঠার মত। ইত্যবসরে স্মৃতির মণিকোঠায় ডানা ঝাপটা দিয়ে উড়ে বেড়ায় নানান রঙে রঙিন মুক্ত বিহঙ্গরা। দেশের বাইরে আসার পর থেকে একটু অবসর মিললেই এই কাল্পনিক বিহঙ্গদের সাথে দেশের মাটি এক ঝলক ছুঁয়ে আসতে খুব তৃপ্তিবোধ হয়।
 

Users who are viewing this thread

Back
Top