What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

টিনএজারদের বাসায় ফেরা (1 Viewer)

LmPgeHh.jpg


গত মাসের প্রথম সপ্তাহে এ দেশে শুরু হয়েছে গ্রীষ্মকালীন ছুটি। আমার মতো বাচ্চা ডর্মে গেল কেন, বাসাটা নীরব হয়ে গেছে বলে চোখের পানি ফেলা মা–বাবাদের মহা আনন্দদায়ক সময় এই ছুটির দিনগুলো। বাচ্চা বাসায় এসেছে। ঘরে আনন্দ এসেছে ফিরে।

কন্যার কাছে শুনলাম, তার বন্ধু স্যাম, তার পোষা কুকুর বন্ধু ব্রায়ানের বাসায় রেখে গেছে মা–বাবার সঙ্গে মেক্সিকোয় বেড়াতে। ব্রায়ানদের বাসার সবাই কুকুর ভালোবাসেন। সবাই আনন্দে আত্মহারা। স্যাম চলে যাওয়ার পরপরই সেই কুকুর ব্রায়ানকে ছাড়া অন্য কাউকে ধারেকাছে দেখলেই নাকি খেপে যাচ্ছে তাদের বাসায়। কেউ ব্রায়ানের রুমের কাছে এলেই বিকট শব্দে ঘেউ ঘেউ করছে। তাড়া করারও অভিমত প্রকাশ করেছে বলে ব্রায়ানের বোনের ধারণা। তবে কুকুরের মনোভাব সে কীভাবে বুঝল, এ বিষয়ে কৌতূহল প্রকাশ করে আমি তেমন সুবিধা করতে পারিনি। ব্রায়ানের নাওয়া–খাওয়া মাথায় উঠেছে। ঘরের সব টেলিফোন চার্জার, রিমোট, স্যান্ডেল—সব নাকি অর্ধেক অবস্থায় পাওয়া যাচ্ছে। স্যামকে জরুরি ভিত্তিতে বাসায় ফিরে ওর কুকুর নিয়ে যাওয়ার অনুরোধ করা হয়েছে। এ কথা শুনে এক সহকর্মী বললেন, 'ব্যাপারটা মন্দ নয়। আমি ওই কুকুর রাখতে পারি এক সপ্তাহ। যাদের ওপর রাগ আছে, তাদের কাছে বেড়াতে যাব এ সপ্তাহে। বিরক্ত করলেই কুকুর তাড়া করবে। তাড়া খেয়ে বন্ধুবেশী শত্রু অনুযোগ করলেই বলে দেব, টিনএজারের কুকুর, কিছুই শেখাতে পারেনি।' শুনে আমি দ্রুত ওই রুম ছেড়ে চলে এলাম। বলা তো যায় না, বন্ধুবেশী শত্রুর তালিকায় আমার নামও আছে কি না।

বন্ধুর ১৯ বছর বয়সী কন্যা এত দিন নিজে অ্যাপার্টমেন্ট ভাড়া করে থাকত কলেজের কাছে। বিড়াল অ্যাডপ্ট করেছিল। এখন বাসায় ফিরে এসেছে বিড়ালসহ। কন্যার বিড়াল বলে বন্ধু কিঞ্চিৎ ভালোবেসেছিলেন সে বিড়ালকে, কন্যা বিড়াল মায়ের কাছে রেখে মোটামুটি হাওয়া। বিপত্তি বাধল যখন বন্ধুর কয়েকজন বান্ধবী এক দুপুরে খাবার প্লাস আড্ডা দিতে এলেন। তাঁরা বিড়ালের কথা জানেন না, বিড়ালও তাঁদের কথা জানে না। দুপুরে খাবার সময় বিড়াল মেহমান এসেছে, তা দেখতে এল। এক বন্ধু চিলচিৎকার দিয়ে টেবিলের ওপর উঠে পড়লেন। সবার খাবার নিচে গড়াগড়ি করল, অতঃপর ভয়ে টেবিলের ওপর বসা বন্ধুর শ্বাসকষ্ট শুরু হয়েছিল। ৯১১ ডেকে হাসপাতালের পথে তাঁকে রওনা করিয়ে হোস্ট বন্ধু কাঁদতে বসেছিলেন, কি না, জানি না। বন্ধুকন্যা তাঁকে জানিয়েছে, আন্টির এই হৃদয়হীন আচরণে বিড়ালের ফিলিংস হার্ট হয়েছে।
কন্যার কাছে শুনলাম, তার দুই বন্ধুর মধ্যে ঝগড়া চলছে। এক বন্ধু বেড়াতে যাওয়ার সময় মিত্রবন্ধুর কাছে মাছ (গোল্ড ফিশ) রেখে গিয়েছিল। শত্রুবন্ধু সেই মাছ নিজের কাছে নিয়ে রেখেছে। মাফ না চাইলে মাছ ফেরত দেবে না। গল্পটা শুনে হাসতে হাসতে বিছানা থেকে গড়িয়ে মাটিতে পড়ার অবস্থা। পরদিন সকালে হুড়োহুড়ি করে কাজে যাব, দেখলাম ডাইনিং রুমের কোনায় গোল্ড ফিশ। কন্যাকে বললাম, 'এটাই কি সেই গোল্ড ফিশ?' কন্যার জবাব, 'হুঁ।' তাকে বললাম, 'জলদি ফিশ ফেরত দিয়ে এসো, নয়তো কাজ শেষে বাড়ি ফিরে কিন্তু আমি মাছ ভেজে খেয়ে ফেলব। মাছে–ভাতে বাঙালি বলে কথা।' বিকেলে বাসায় ফিরে সে মাছ আমি আর দেখিনি।

আরেক বন্ধুর কাছে শুনলাম, বাচ্চা কিছুতেই গাড়ি চালাতে চায় না। তাকে মাথায় হাত বুলিয়ে গাড়ি চালানো শেখাচ্ছেন বন্ধু। বাচ্চা ভালোই গাড়ি চালায়। সেদিন ফ্রিওয়ে দিয়ে বাচ্চা চালাচ্ছে গাড়ি, বন্ধু ফোনে মাত্র ফেসবুকে ঢু মেরে চেকইন দিয়েছেন, 'পোলা চালায় গাড়ি, আরাম করি আমি।' অতঃপর মুখ তুলে দেখে বাচ্চা উল্টো রাস্তায় গাড়ি তুলে বসে আছে। রাস্তাটা ব্যস্ত। তাদের সামনে গাড়ি, পিছে গাড়ি, দোয়াদরুদ যা মনে ছিল, সব পড়ে কোনোরকমে তাঁরা বাসায় ফিরেছেন। আমি সুযোগ পেলেই পুত্র–কন্যার সঙ্গে ছবি তুলে ফেলি। তারা ইদানীং চরম বিরক্তি দেখাচ্ছে মায়ের এ ধরনের আচরণে। নিজে বেড়ে ওঠার সময় কোনো কোনো ছেলেকে দেখেছি (ছেলেই বলব। কারণ, এ ব্যাপারে মেয়েরা একটু পিছিয়ে), কোনোভাবে ছবিতে নিজের চেহারা রাখতে পারলে জীবন ধন্য টাইপ ভাব নিয়ে ঘুরত। মাঝেমধ্যে পুরো চেহারা না পারলেও মুখের হাফ, হাত বা আঙুলের অংশ ছবির ফ্রেমে রাখতে পারলেও জীবন ধন্য হতো তাদের। আমার দশা হয়েছে সে রকম। সেদিন ত্যাড়া হয়ে পাশে ছবি তুলতে যেতেই পুত্র বলল, 'ছবি তুলব না, আম্মু।' বললাম, 'তুই এমন কোনো সেলিব্রিটি না যে ছবি তুলতে সমস্যা।' পুত্রের সাফ জবাব, 'সেলিব্রিটি হলেই বরং ছবি তুলতে চাইতাম মা। যাও একা একা নিজের ছবি তোলো।' অতঃপর গেলাম সাগরের পাশে একা একা, ছবিও তুললাম। তাদের সঙ্গে তোলা ছবির ধারেকাছেও না এ ছবি। কোভিডে জনসচেতনতামূলক আপডেট ডেলটা ভেরিয়েন্টের কথা মাথায় রেখে ফাইজার কোম্পানি বুস্টার টিকা নেওয়ার সুপারিশ করে আমেরিকার ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের কাছে আবেদন করেছে। সবাই টিকা নিয়ে সুস্থ থাকি। পুরো কোর্স টিকা নিয়েও কোভিড রোগী ভর্তি হচ্ছেন না, তা নয়, তবে সংখ্যা অনেক কম। সবাই সুস্থ ও নিরাপদে থাকুন।

* লেখক: ফারহানা আহমেদ লিসা, চিকিৎসক (আমেরিকা)
 
These are the rules that are to be followed throughout the entire site. Please ensure you follow them when you post. Those who violate the rules may be punished including possibly having their account suspended.

যারা কমেন্ট করবেন, দয়া করে বানান ঠিক রাখুন। উত্তেজিত অবস্থায় দ্রুত কমেন্ট করতে গিয়ে বানান ভুল করবেন না। আমরা যারা কমেন্ট পড়তে আসি, আমাদের কমেন্ট পড়তে অনেক অসুবিধা হয়।

Users who are viewing this thread

Back
Top