শুধু পুষ্টিকর খাবার খেলেই রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ে না। এর সঙ্গে আরও অনেক বিষয় জড়িত, যেগুলো সমন্বিতভাবে মানুষের শরীরের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ায়।
সুষম খাবার: সুষম খাবার রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ানোর প্রথম ধাপ। রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বৃদ্ধিকারী প্রয়োজনীয় উপাদানের বেশির ভাগই আসে খাবার থেকে। যেমন অ্যান্টিবডি, অ্যান্টিজেন, লিউকোসাইট, লিম্ফোসাইট উপাদানগুলো তৈরি হয় প্রোটিন থেকে। অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট আসে ভিটামিন ও মিনারেলসমৃদ্ধ ফল ও সবজি থেকে।
পানি: দৈনিক পানির চাহিদা পূরণ না হলে রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বৃদ্ধিকারী খাবার কাজ করে না।
পর্যাপ্ত ঘুম: পর্যাপ্ত ঘুম রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ায়। ঘুমানোর সময় আমাদের শ্বাসপ্রশ্বাস ধীর হয় ও মাংসপেশির কার্যকারিতা কমে যায়। ফলে দেহে শক্তি সঞ্চিত হয়। এ সময় দেহের সব অসামঞ্জস্যতা বা ক্ষত প্রাকৃতিক উপায়ে সেরে ওঠে। এ ছাড়া ঘুমের সময় শরীরে সাইটোকিন প্রোটিন তৈরি হয়, যাকে শ্বেত রক্তকণিকার মেসেঞ্জার বলে। যখন শরীর প্যাথোজেন, ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়ার সংস্পর্শে আসে, তখনই সাইটোকিন শ্বেত রক্তকণিকাকে সতর্ক করে।
মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ: মানসিক চাপের কারণে শরীরের সব অ্যান্টিজেন ও অ্যান্টিবডির স্বাভাবিক প্রতিরক্ষা ক্ষমতা কমে যায়। এতে রোগ সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ে। এ ছাড়া স্ট্রেস হরমোন করটিকোস্টেরয়েড, নর-এপিনেফ্রিন, অ্যাড্রিনালিন পরিমাণে অনেক বেশি নিঃসৃত হয়, যা রোগপ্রতিরোধক উপাদান লিউকোসাইট, লিম্ফোসাইটের পরিমাণ কমিয়ে দেয়।
শারীরিক পরিশ্রম: দৈনিক হাঁটা বা যেকোনো শারীরিক পরিশ্রমের ফলে রক্ত চলাচল ও শ্বেত রক্তকণিকার পরিমাণ বৃদ্ধি পায়। এ ছাড়া দৈনিক ব্যায়াম বা হাঁটার ফলে শরীরে অ্যান্টিজেন-অ্যান্টিবডির পরিমাণ বাড়ে ও রোগ সংক্রমণের হার কমে। এ জন্য দৈনিক অন্তত ৬০ মিনিট হাঁটতে হবে।
সঠিক স্বাস্থ্যবিধি মানা: সঠিকভাবে স্বাস্থ্যবিধি না মানলে ক্রমাগত প্যাথোজেন, ভাইরাস-ব্যাকটেরিয়ার সংস্পর্শে আসে শরীর। বারবার সংক্রমণের ফলে সামগ্রিক রোগ প্রতিরোধক্ষমতা দুর্বল হয়ে পড়ে। তাই কার্যকর রোগ প্রতিরোধক্ষমতার জন্য হাত ধোয়া, শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখাসহ সব স্বাস্থ্যবিধি সঠিকভাবে মানতে হবে।
নিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন: ধূমপান, অ্যালকোহল, জর্দা, তামাকসহ সব নেতিবাচক অভ্যাস বাদ দিয়ে নিয়ন্ত্রিত উপায়ে জীবন যাপন করতে হবে।
* ফাহমিদা হাশেম | জ্যেষ্ঠ পুষ্টিবিদ, ল্যাবএইড কার্ডিয়াক হাসপাতাল