What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

চোখ ও মনের নির্মল প্রশান্তি যেথায় পেয়েছি (1 Viewer)

abHa2UD.jpg


প্রকৃতিকে নানাভাবে আমরাই ধ্বংস করছি। তাই সে ক্ষুব্ধ। তার বুক চিড়ে তাণ্ডবের যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ, ফলে একের পর এক আসছে দুর্যোগ। এরই মধ্যে বিশ্বজুড়ে চলছে মহামারি করোনা। প্রায় দেড় বছর ঘরবন্দী জীবনযাপন। প্রিয় মাতৃভূমি, নিকটাত্মীয়দের থেকে বহু দূরে। পরবাস নামক কারাগারে। হাজারো দুঃখ-কষ্ট-বেদনা ও ব্যস্ততা ভুলে; ক্ষণিকের আনন্দ খোঁজা! তবে সেটা প্রকৃতির কাছে! প্রকৃতির দেওয়া প্রতিদানহীন নির্মল সে আনন্দ ক্ষণকালের জন্য সব অপ্রাপ্তি যেন মিটিয়ে দিয়েছে। অতি চমৎকার, নৈসর্গিক ও শৈল্পিক সৌন্দর্য, যা কল্পনাকেও হার মানায়! এর মাঝে অনুকূল আবহাওয়া অভূতপূর্বভাবে আমাদের সহায় হওয়ায় আনন্দের কোনো ঘাটতি হয়নি। কোথায় যেন পড়েছিলাম 'যদি স্রষ্টাকে পেতে চাও, সৃষ্টির দিকে তাকাও।' সত্যি কী বিচিত্র স্রষ্টার সৃষ্টি! সে সুন্দর কল্পনাতীত; বর্ণনাতীত তো বটেই।

'তোমরা রবের কোন কোন অবদানকে অস্বীকার করবে? তাকাও। আবার তাকাও। তোমার দৃষ্টি বারবার পরিশ্রান্ত হয়ে ফিরে আসবে।'

দিগন্তবিস্তৃত সবুজের সমারোহ ও বিশাল স্বচ্ছ নীল জলরাশি যেন সৌন্দর্য সৃষ্টিতে একে অন্যের প্রতিদ্বন্দ্বী, যা অবলোকন করে দৃষ্টিকেও ছাড়িয়ে যাই।

u6Djdhl.jpg


VwqDOtr.jpg


সত্যি দেখার মতো 'আইল অব উইট' (Isle of Wight)। এটি ইংল্যান্ডের বৃহত্তম এবং দ্বিতীয় জনবহুল দ্বীপ, যা ইংলিশ চ্যানেল ও হ্যাম্পশায়ারের উপকূলে দুই থেকে পাঁচ মাইলের মধ্যে, সেখান থেকে এটি সোলেন্ট দ্বারা পৃথক করা হয়েছে। এই দ্বীপে এমন রিসোর্ট রয়েছে, যা ভিক্টোরিয়ার সময় থেকেই ছুটি কাটানোর গন্তব্য ছিল। এখানে হালকা আবহাওয়া—জলবায়ু, উপকূলীয় দৃশ্য, মাঠ, নিম্নভূমি এবং চেইনগুলোর মনোরম প্রাকৃতিক দৃশ্যের জন্য পরিচিত। দ্বীপটি হ্যাম্পশায়ারের ঐতিহাসিক কাউন্টির অংশ। এটি ইউনেসকোর বায়োস্পিয়ার রিজার্ভ হিসেবে মনোনীত।

মূলত 'আইল অব উইট' একটি লেগুন, যা মূল ভূখণ্ডের অংশকে পৃথক করে ওয়ার্সেস্টার কাউন্টি, মেরিল্যান্ডের মিডটাউন অংশ থেকে ওশান সিটি, ওয়ার্সেস্টার কাউন্টিতে সংযুক্ত করেছে। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর শ্যাঙ্কলিন চেইন, ক্লিফ লিফট, ব্রেডিং ডাউন লোকাল নেচার রিজার্ভ, ব্ল্যাকগ্যান চাইন, স্যান্ডাউন সমুদ্রসৈকতসহ নানা দর্শনীয় স্থান। আছে স্বচ্ছ নীল পানির ঢেউ, সমুদ্রের বালুকণার মাঝে সূর্যের উত্তাপ। সাজানো-গোছানো পাহাড়, সমুদ্রসৈকত, ঘরবাড়ি, ফোয়ারা, নদী, গাছপালা, প্রকৃতির অপরূপ সাজ। এমনকি সমুদ্রপাড়ে ছোট বাচ্চাদের জন্য বিনোদনের নানা উপকরণ। কচিকাঁচাদের আনন্দের এ লাফালাফিতেই চোখ আটকে যায়! পাশেই স্বচ্ছ নীল জলরাশির বিশাল সমুদ্র। অথচ স্বাভাবিক প্রকৃতির কোনোরকম ব্যাঘাত না ঘটিয়ে সবকিছুই যেন নিজের মতো করে প্রযুক্তি দিয়ে প্রাকৃতিক করে সাজিয়ে নিয়েছে। অবশ্য ইউরোপের যেথায় গেছি, এ রূপই দেখেছি। পাহাড়, পর্বত, প্রকৃতি যেখানে যে অবস্থায় আছে; সে অবস্থানে রেখেই তথায় বসবাসযোগ্য করে তুলেছে।

nR5NeMU.jpg


9hqVx0e.jpg


লন্ডন থেকে 'আইল অব উইট' মিনিবাসে প্রায় ৮০ মাইলের পথ। শহর–বন্দর পেরিয়ে কখনো পাহাড়, কখনো পর্বত, পাহাড়ের ভাঁজে ভাঁজে বিশাল বিশাল রাস্তা, অরণ্য, সমতল ও সাউথাম্পটনের 'রেড ফানেল' দীর্ঘ ফেরি পার হয়ে সেথায় যাওয়া। আগেও অন্যান্য দুর্গম এলাকায় গিয়ে খেয়াল করেছি, এখানে এসেও দেখলাম; যুক্তরাজ্যের সীমানায় যে কোথাও থাকেন না কেন; সেখানকার এবং শহরের (রাজধানী) নাগরিক সুবিধা সব একই রকম। যাবতীয় উপাদান, সুযোগ-সুবিধা একই। অবশ্য এখানে নির্মল প্রকৃতির বাড়তি সুবিধা। এসব দেখলে অবাক হওয়া ছাড়া উপায় নেই। কীভাবে তারা এমনটি করতে পেরেছে। ইউরোপে যা দেখি, তাতেই অবাক হই। আসলে...দেশপ্রেম, সততা, নিষ্ঠা-আন্তরিকতা আর পরিকল্পিত পরিশ্রমের কোনো বিকল্প নেই।
যাক, মূল প্রসঙ্গে আসি।

'ইউনিভার্সেল ভয়েস ফর হিউম্যান রাইটস' (ইউভিএইচআর) ইউকে গ্রীষ্মকালীন ভ্রমণ ও বনভোজনের জন্য এ জায়গা নির্ধারণ করে। প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের আন্তরিক এবং বুদ্ধিদীপ্ত সৌহার্দ্যে ভরপুর ছিল এর সার্বিক আয়োজন। প্রতিটি মুহূর্ত যেন কেটেছে পারস্পরিক মধুরতায়পূর্ণ এক সজীব–নির্মলতায়। এতে যাঁরা অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন 'ইউভিএইচআর ইউকে'র সভাপতি জাকের আহমদ চৌধুরী। তাঁকে সার্বিক সহযোগিতা করেছেন আবু বকর, মাহিদুর রহমান, শাহান বিন নিজাম, মুসলিম খান, জয়নাল আবেদীন, দেলোয়ার হোসাইন, এমদাদুল হক, লায়েক আহমেদ, ইশতিয়াক হোসেন, রায়হান চৌধুরী, বেলাল আহমদ, হোসেন আলী, মাসুদ আহমদ, মারুফ আহমদ, তাহমিদ আহমদ, আবুল কালাম, জসিম উদ্দিন, সাইফুর রহমান, জাহাঙ্গীর আলম, হেলাল আহমদ, শামীম আহমদ, নজরুল ইসলাম, কামরুল ইসলাম চৌধুরী, আরিফুর রহমান, খায়রুল আমিন, তাহমিদ খান, রুহুল আমিন প্রমুখ।

FjIe2qI.jpg


সকাল সাড়ে সাতটায় পূর্ব লন্ডনের আলতাব আলী পার্ক থেকে দুটি মাইক্রোবাসযোগে যাত্রা শুরু হয় 'আইল অব উইট'–এর উদ্দেশে।
দিনব্যাপী এ ভ্রমণে যাওয়া-আসা এবং সমুদ্রপাড়ের সময়টুকু এমনই সৃজনশীল ছিল যে যেসব লোক কখনো মাইক্রোফোনের কাছেও ভিড়েনি; সে–ও তার মধ্যে থাকা নানা ভাব-কথন উজাড় করে দিয়েছেন। সবার পরিচিতি পর্ব শেষে গান, গল্প, কৌতুক, কবিতা, চুটকি, আঞ্চলিক গান, কৃষ্টি-কালচার উপস্থাপনে মাতিয়ে রাখা হয়। সব পরিবেশনায় এটা প্রতীয়মান হয়েছে, সবার মধ্যেই সৃষ্টিকর্তা কিছু প্রতিভা দিয়েছেন। আর যারা মাইক্রোফোন ধরেনি; তারা আরও বেশি সঙ্গ দিয়ে পুরো ভ্রমণকে প্রাণবন্ত করতে কার্পণ্য করেনি।
সমুদ্রের নীল জলরাশির উদাত্ত হাতছানি কার সাধ্য এড়িয়ে যাওয়া। তীরে এসে বাস থামতেই সবাই নেমে পড়ে। লাফালাফি, সাঁতার কাটা, ফুটবল নিয়ে মাতামাতি, সেলফি, ফটোশেসন, লম্ফঝম্ফ...। এর মাঝে ঘণ্টাখানেকের মধ্যে সমুদ্রের জোয়ার–ভাটা। ফলে আমরা যেখানে লাফালাফি, দাপাদাপি করেছি কিছুক্ষণের মধ্যে সেখানে বিশাল মরুভূমি! ধূ ধূ বালুচর! প্রকৃতির মাধ্যমে স্রষ্টার এ কী লীলাখেলা! সত্যি অবাক করে। চিন্তায় ফেলে। এ আকর্ষণ রেখে কি ফিরতে ইচ্ছে করে?! মন চায়.... জোয়ারভাটার এ খেলা দেখতে দেখতে সন্ধ্যা নামুক। জোনাকি জ্বলুক। চাঁদের আলো পড়ুক নীল জলরাশির ঢেউয়ে। সব কোলাহলে তৃপ্তির প্রশান্তি ঘিরে কেটে যাক না সময়...! কিন্তু যান্ত্রিক এ জীবনে তা কি সম্ভব? এবার যে ফেরার পালা। ফিরতে মন নাহি চায়। তবু ফিরতে হয়। তবে আবার আসব এ আশায়। এ ভ্রমণে তিন পর্বে ছিল সুস্বাদু খাওয়ার আয়োজন। সকালের নাশতা, দুপুরের খাবার এবং ফিরতি পথে হালকা নাশতা।

উদ্যোক্তাদের প্রতি অংশগ্রহণকারীদের আবদার ছিল, প্রতিবছর যেন এ রকম আয়োজন করা হয়। আয়োজকেরাও আশার বাণী শোনান।

* ওয়াহিদুজ্জামান মৃধা, লন্ডন
 
These are the rules that are to be followed throughout the entire site. Please ensure you follow them when you post. Those who violate the rules may be punished including possibly having their account suspended.

যারা কমেন্ট করবেন, দয়া করে বানান ঠিক রাখুন। উত্তেজিত অবস্থায় দ্রুত কমেন্ট করতে গিয়ে বানান ভুল করবেন না। আমরা যারা কমেন্ট পড়তে আসি, আমাদের কমেন্ট পড়তে অনেক অসুবিধা হয়।

Users who are viewing this thread

Back
Top