What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

ইয়েলোস্টোনের পথে পথে (1 Viewer)

Bergamo

Forum God
Elite Leader
Joined
Mar 2, 2018
Threads
9,649
Messages
117,051
Credits
1,241,096
Glasses sunglasses
Berry Tart
Statue Of Liberty
Profile Music
Sandwich
K11JMns.jpg


আমি যে দুনিয়ার হিসাব না রাখা প্রাণীদের একজন, সবাই জানে। তারপরও সবাই ভালোবাসায় আগলে রাখে। পাগলামি নামের ভালোবাসাটুকুকে ভালোবেসে আমায় ভালোবাসে। এমন পাগলের আশপাশে টাইম টেস্টেড লোকজন ছাড়া চলে না। টাইম টেস্টে পাস না হলে যে কাউকে কাট অফ করতে আমি দুবার ভাবি না। লোকজন ভাবে, আমি ভীষণ বোকা, বোকাই। তবে নিজের নিরাপত্তা সবার আগে। আমার ছেলেমানুষি দেখে তার অন্যায্য হিস্যা নেবার চেষ্টা করলে পরিণাম ভালো হবার কথা নয়। আমি বোকা নই। চালাকও নই। কারও চালাকিতে আমি পস্তাতেও চাই না। দুষ্ট গরুর চেয়ে শূন্য গোয়াল ভালো।

সেফ জোনে আমার ছেলেমানুষি ভালোবাসা পাবার অধিকার শুধু তাদেরই, যারা আমায় সেফ রাখে। যা বলছিলাম, কোথায় যাব, ভুলে গিয়েছিলাম। কর্তা আমার মোবাইলে লাস্ট মিনিটে বোর্ডিং পাস চেক করতে গিয়ে, না পেয়ে মেয়েকে তারটায় চেক করতে বলল। তার ফোনে সব আপডেট! আমি ভীষণ ব্যাকডেটেড। স্মার্টফোন আমার জন্য ভীষণ স্মার্ট। দরকার ছাড়া তার ব্যবহার করি না। আমার বন্ধু বলে, মানুষজন স্মার্টফোনের পুরো ব্যবহার করতেই জানে না। আমি যে সেসব মানুষের একজন, সে তা জেনেই বলে। মহা মূর্খ আমি তার চোখে।
সে যা–ই হোক! কথা সত্য।
গত বছরের পর প্রথম এয়ার ট্রাভেল। সবাই ভ্যাক্সিনেটেড, তবু টেনশন কম নয়; আবার এক্সাইটমেন্টও কম নয়!

Jei1Lkl.jpg


মেয়ের ফোনে যেহেতু সবার বোর্ডিং পাসের কনফারমেশন আর বাপ–ছেলে যাবে টিএসএ দিয়ে, আমি আর মেয়ে রেগুলার। আমি এখন মা হলেও মেয়ের ওপর ডিপেনডেন্ট। মন্দ নয়। নো টেনশন, বাচ্চাদের মতো শুধু ফলোই নয়, কোলে তুলে নিয়ে যাবে ভালোবাসায়!

আটলান্টার ট্রাফিক, মানে জ্যাম ব্যাক করেছে। করোনার টিকা নেওয়ায় আর সবকিছু মোটামুটি স্বাভাবিক হয়ে যাওয়ায়, আমরা রাস্তায় সেই পুরোনো জ্যাম খুঁজে পাচ্ছি ইদানীং।

এয়ারপোর্টও মোটামুটি আগের মতোই পরিপূর্ণ লোকজন ট্রাভেল করছে বলে। চেকইনে মেয়েই চেকইন করল আমাদের। আমি খালি জিজ্ঞাসা করলাম কোন গেটে যেতে হবে। আটলান্টায় দুনিয়ার একটা বিজিয়েস্ট এয়ারপোর্টে শাটল ট্রেন ছাড়া ভাবাই যায় না। সেই শাটলে করে গেটে পৌঁছে, পরবর্তী প্রশ্ন, আমার সিট নাম্বার কত?
মানে, যে কেউ আমারে হারায়ে ফেললেই আমি হারিয়ে যাব! জানি না কোন ফ্লাইটে, কোন সিটে, কোন গন্তব্যে যাবার কথা আমার। সকালবেলা ভাগ্যিস মনে করে জিজ্ঞেস করেছিলাম, কয়টার ফ্লাইট!

DdcH2QR.jpg


এয়ারপোর্ট আর ডেস্টিনেশনের অবস্থা বোঝানোর জন্য বলি, এয়ারপোর্টে পার্কিং লট পরিপূর্ণ। আমাদের বাইরের পারকিং লটে পার্ক করতে হয়েছে! আর সেখান থেকেও শাটলে করে এয়ারপোর্ট যেতে হয়েছে।

গত সপ্তাহেই জানি, ডেস্টিনেশনে আপাতত আর কোনো রেন্টাল কার পাওয়া যাবে না। সব লোকজন যেন সব সেখানেই যাবে বলে রওনা দিয়েছে। রেন্টাল হোটেলও বুক! ভাগ্যিস, আমাদের রেন্টাল কার, হোটেল মাসখানেক আগেই এই ভদ্রলোক করে রেখেছিলেন; নয়তো যত ভোলাভালাই হই, গালি একটাও মাটিতে পড়বে না, জানে সে!
প্লেনে উঠে বসতে বসতেই পাইলট বলে চলছে, আমরা এখন ২৪ হাজার ফুট ওপরে আছি। আমি বাইরে তাকিয়ে মেঘের সমুদ্রের ওপর নিজেদের আবিষ্কার করি!
বিড়ালের মতো স্বভাব আমার, কমফোর্ট ফার্স্ট! কর্তা তা বুঝে নিজেদের গায়ের চামড়া বাঁচাতে ঘুমানোর ব্যবস্থা করে দিয়ে মুক্ত।

1MhT7VI.jpg


ঘুম ভাঙতেই দেখি, তিনি শিয়রে দাঁড়ানো সিটে ফিরিয়ে নিতে—একটু পরই ল্যান্ডিং। এই এয়ারপোর্ট টু ফ্লাইট আমাদের ডিনার, স্ন্যাক্স ডান। এখন আমি ঘুমিয়ে রিচার্জও। বাচ্চাদের সঙ্গে সিলি টাইম! বাইরে দেখি প্রিয় দৃশ্য—রাতের আকাশ! ঝড়ের কারণে কালো মেঘ, এয়ার টার্বুলেন্স, তারপরও সে সুন্দর রাতের আকাশে আমি নিমগ্ন। এর মাঝে চলে গেছে অনেকগুলো ঘণ্টা। বুঝে হয়রান সে টার্বুলেন্স কি আমার কারণেই হচ্ছে নাকি!

এক ফাঁকেও আমি একটা কমেডি সিনেমা দেখে ফেলেছি। ছেলের কয়েকটা শেষ। আর আমরা আমেরিকার এক প্রান্ত থেকে আমেরিকার পেট চিরে অন্য প্রান্তে পৌঁছে গেছি। আমাদের টাইম জোনও চেঞ্জ হয়ে গেছে।

এয়ারপোর্টে দোকানে লেখা 'Salt visit lake' ছেলেকে পড়তে বললাম। বলে 'Salt lake city'।

az2mayM.jpg


বললাম, আবার পড়—বলে, 'মা, আমি ঘুমাই নাই, অলরেডি দুইটা মুভি দেখেছি। চোখে ঠিকঠাক দেখি না!' এই না হলে আমার ছেলে! আমার পেটে এমন কমিক্যাল বাচ্চাকাচ্চা ছাড়া আর কী হবে!?
মাত্রই আমরা Salt lake এর ওপর দিয়ে এসেছি।
শহরের লাল, সবুজ, হলুদ, নীল বাত্তি জ্বলছে।

রেন্টাল কার নিয়ে আজ রাতের হোটেল। বলে, 'সায়ান সিটি' বানান দেখে তব্দা খেয়ে নিজেই নিজের মনে হাসি।

সকালে নাশতা করে ড্রাইভার বলে, চলো, হেঁটে আসি। এক হাতে কফি, অন্য হাতে পানি নিয়ে হাঁটতে গিয়ে মনে হলো ওয়ার্কআউট করে ফেলছি দু মিনিটেই! শহর মোড়ানো পাহাড় দেখে বলি, দেখা শেষ ইউটাহ—নেক্স্ট ফ্লাইট ধরে ঘরে ফিরে যাই।
গন্তব্য এখনো অনেক দূর!

YIiK1sw.jpg


পাশেই দেখি নেপালি খাবারের দোকান, লোভী মনে ভাবছি সেখানেই লাঞ্চ করে নেব। মেয়ে চেক করে বলে, মা, এরা আজ বন্ধ! কেমন লাগে—আমার নিজের একটা আপডেট ভার্সন নিজের জন্যই লাগবে! এই হাইটেক বাচ্চাগুলারে সামলানো আমার কাজ না। বাদ দিলাম আজকে থেকে—খালি ফলো করে যাব ঠিক করেছি।

* লেখক: শারমীন বানু আনাম, আমেরিকা
 

Users who are viewing this thread

Back
Top