What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষ: কিছু স্মৃতি কিছু কথা (1 Viewer)

Bergamo

Forum God
Elite Leader
Joined
Mar 2, 2018
Threads
9,649
Messages
117,051
Credits
1,241,096
Glasses sunglasses
Berry Tart
Statue Of Liberty
Profile Music
Sandwich
vVxd5BS.jpg


ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলা এবং প্রশস্ত রাস্তাগুলো দেখে আমি এই বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির কোশেশ করি। তখন সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, আনিসুজ্জামান, হুমায়ুন আজাদ, এম এম আকাশ—এঁদের কিছুই বুঝতাম না। ভাইয়ার সঙ্গে প্রথম এখানে বেড়াতে এসে অপরাজেয় বাংলা আর প্রশস্ত রাস্তাগুলোকেই বুঝেছিলাম। মনে হয়েছিল, কী যেন আছে এখানে! গাছগুলোরও কেমন জানি নাক উঁচু উঁচু। নাগকেশরের সারি ছিল বাংলা বিভাগের সামনেই।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়া আর কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের ফরম আমি কিনিনি। ইডেন কলেজে পরীক্ষা দিয়েছিলাম। তার আগেই মাত্র আড়াই মাস কোচিং করে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পাই। আমার আগে আমার দুই খালা এখান থেকে পাস করেছেন। একজন বাংলায়, অন্যজন ফিন্যান্সে। তারও আগে ১৯৭৪-৭৫ সালে আব্বু গণিতে মাস্টার্স করে গেছেন। ফলে মোটামুটি অবচেতনের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছিলই মনে হয়।

বাংলা ছাড়াও লোক প্রশাসন, দর্শন, ভাষাবিজ্ঞান, ইতিহাস, ইসলামের ইতিহাস, সংগীত, পালি প্রভৃতি বিষয় পেয়েছিলাম। মা আর খালা বাংলার হওয়ায় কিছু না ভেবেই চয়েজ দিয়ে দিলাম 'বাংলা'। শুনে তো ছোট মামার কী রাগ! বাংলায় পড়া বেশি, দর্শন বা লোক প্রশাসন নিলাম না কেন?

বাংলা বিভাগেই আমি ভর্তি হলাম। আশ্চর্যের বিষয় হলো, স্কুলজীবনে বরাবরই আমি বাংলায় কম নম্বর পেতাম। তাই ছোট মামার রাগের কারণ অমূলক ছিল না। মাইগ্রেশন যদি করতাম, তবে হয়তো রাষ্ট্রবিজ্ঞান বা সাংবাদিকতা বিষয়টি পেতাম, তবু যাইনি। তখন ছোট মামার আরেক দফা রাগের শিকার হই।

আমি মফস্বল থেকে উঠে আসা একজন 'খ্যাত' এবং মহিলা কলেজ থেকে আসা 'অসামাজিক' (ছেলেবন্ধুদের সঙ্গে মিশতে না পারা) একটি মেয়ে ছিলাম। ছিলাম বোকা ও ভীষণ আবেগি।

বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের ৫২৬ নম্বর রুমে থাকতাম। 'টেক্সট' পড়া, রান্নাবান্না আর বাথরুমে গলা ফাটিয়ে গান গাওয়া ছিল বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে আমার সরল দিনযাপনের অংশ। রুমমেট, ব্লকমেটরা—সবাই মোটামুটি আদরই করত। ভাঁড়ামো করার অভ্যাস বরাবরই ছিল বলেই হয়তো।

ছোট থেকে বেড়ে উঠতে উঠতে আব্বু আর খালাদের কাছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কত গল্প শুনেছি! ছাত্রজীবনে আব্বু যখন শহীদুল্লাহ হলে থাকতেন, তখন নাকি প্রয়াত কবি হাবীবুল্লাহ সিরাজী ও মুক্তিযোদ্ধা হেমায়েত উদ্দীন তালুকদার একসঙ্গে প্রচুর আড্ডা দিয়েছেন।
ফিন্যান্সে পড়া আমার মেজ খালাদের সময় ক্যাম্পাসে চলছিল এরশাদবিরোধী আন্দোলন। তখন ক্যাম্পাসে নাকি রোজই গোলাগুলি হতো।

বাংলায় পড়া ছোট খালাদের একটি দল চাণক্য ও প্রাচীন সাহিত্য নিয়ে কাজ করত। হুমায়ুন আজাদ আর সন্‌জীদা খাতুন তখন তাঁদের প্রিয় শিক্ষক ছিলেন। এঁদের সাহচর্য ও সহযোগিতা ছিল ছোট খালাদের পড়ালেখার অনুপ্রেরণা। তাঁদের মুখে শুনেছি, তখনকার ক্যাম্পাস ছিল ঝঞ্ঝাটবিহীন। ছাত্ররাজনীতির চেয়ে গবেষণার দিকেই বেশি মনোযোগী ছিল শিক্ষার্থীরা। খাটুনিনির্ভর পড়াশোনা চলত তখন।

আমাদের সময়ে, অর্থাৎ ২০০৩-০৪ সেশনে আমরা একটি আন্দোলনে অংশ নিই। সেটি হলো নৈশ কোর্স বন্ধের দাবিতে আন্দোলন। তারপর থেকে বাংলা বিভাগে আর নৈশ কোর্স চলেনি।

মনে আছে, বিভাগের ৮০ বছর পূর্তি উপলক্ষে বর্ণাঢ্য আয়োজন হয়েছিল। সেখানে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে আমাদের ব্যাচটা বিভাগের শিক্ষক মেহের নিগারের নেতৃত্বে সফলভাবে অংশ নেয়। সে এক দারুণ অনুভূতি। তখন বাংলা বিভাগের কিংবদন্তি শিক্ষার্থীদের সান্নিধ্য পাই আমরা।

বাংলা বিভাগে আমাদের ব্যাচই প্রথমবারের মতো নবান্ন উৎসব উদ্‌যাপন শুরু করে। এখনো প্রতিবছর এটি উদ্‌যাপিত হয়।
ক্যাম্পাসে আমাদের গণ্ডি ছিল বটতলা, আমতলা, সেমিনার রুম ও লাইব্রেরি। বন্ধুরা ছিল একেকজন একেক কিসিমের। কেউ খুব সহজেই রেগে যেত, কেউ খুব সহজেই প্রেমে পড়ত, কেউ ছিল কবি, কেউবা বইপোকা। বেশ মজার মজার আড্ডা দিয়ে দিন কাটাতাম আমরা। আমার কবিবন্ধু হামেদীকে আমি একবার নাম দিয়েছিলাম 'কচুপাতা হামেদী'। শরীফ ছিল নাটকপাগল, বিপ্লব রেডিও টুডের জনপ্রিয় রেডিও জকি ছিল। এদের দুজনেরই প্রথম শ্রেণি ছিল মাস্টার্সে। আরেকজন ছিল মাতৃপ্রতীম বন্ধু। তার নাম টপি। সেও প্রথম শ্রেণি।

ফয়সাল ছিল পাগলা, কিন্তু মেধাবী। রুনা, মুন, তাহমিনা, নওরিন, মৌসুমী, সঞ্জয়, কিরণ, কুসুম, শ্রাবণ-১, ২, কাওসার, মনির-১, ২, ৩, রাসেল, আসিফ, মিজবাহ, সবুজ, বাবু, লীনা-১, ২, সাজিয়া, আফজাল, মৌ, সাইফুল,নাজমুল, এলি, তিন্নি-১,২, মীম, মেহেদি-১,২, রুবেল, ঊর্মি, সাইদুর, পপি, ইতি, খুশি, হাসি, মৌমিতা, মাইনুলসহ আরও অনেক অনেক নাম মিলে বিরাট বিরাট সার্কেলে আড্ডা হতো আমাদের। সেই সার্কেল ধীরে ধীরে ছোট হতে লাগল।

মল চত্বরের কৃষ্ণচূড়ার পাশে যে একই উচ্চতার হলুদ ফুলের রাধাচূড়া ছিল, তা আমাকে চিনিয়েছিল শরীফ। আর কৃষ্ণের হাতের তালুর রং যে কৃষ্ণচূড়ার মতো লাল ছিল, তা আমরা জেনেছি বেগম আকতার কামাল ম্যামের কাছ থেকে। বর্ষায় জারুল, কৃষ্ণচূড়া, রাধাচূড়ার যে রূপ দেখেছি, তা শ্রেণিকক্ষের জ্ঞানরূপের থেকে কোনো অংশে কম নয়। অনেক ঘটন-অঘটনের জন্য আমাদের এই ব্যাচটা বেশ পরিচিত ছিল শিক্ষকদের কাছেও।

মাস্টার্সের একটি অঘটনের কথা বলি: একবার বিশ্বজিৎ ঘোষ স্যার সকাল ৮ টার ক্লাসে ঢুকেছেন। সামনের বেঞ্চে বসা ছিল রাসেল। সে শব্দ করে বিরাট এক হাই তুলল। সঙ্গে সঙ্গে ঘোষ স্যার ক্লাসরুম ত্যাগ করলেন। পেছনের কোনো সতীর্থ টেরই পেল না, কেন স্যার ক্লাসরুম ত্যাগ করলেন!

হলের দুটি 'মুড়ির টিন' মার্কা বাস আমাদের ফজিলাতুন্নেছা আর মৈত্রী হলের জন্য বরাদ্দ ছিল। দীর্ঘদিন এই বাসে আমরা যাতায়াত করেছি।

তবে বাসটি ধরা নিয়ে চলত মধুর প্রতিযোগিতা। কার্জন হল টু ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল। মাঝখানে কলাভবনের সামনে এক দণ্ড থামত। তাই বাস ধরার জন্য ক্লাস শেষ হওয়ার আগেই সবাই পেছন থেকে পালাত।

বাসের গল্প যখন হলো, তখন হলের গল্পও একটু বলা যাক। আমাদের সময়ে হলে সিট পাওয়া বিরাট ঝক্কির ব্যাপার হলেও সিট পাওয়া নিয়ে আমার আছে মধুর স্মৃতি। তখন হলের প্রভোস্ট ছিলেন 'বাংলা' ব্যান্ডের মেইন ভোকালিস্ট আনুশেহ আনাদিলের শাশুড়ি অধ্যাপক ড. নাসরীন আহমাদ। কিছুতেই হলে সিট হচ্ছিল না আমার। এই হলে সিট পাওয়া বেশ টাফ ছিল। তো আমার শিক্ষাগত যোগ্যতার ঝুলিতে কিছু সংগীতের সনদ ছিল। আমি সেগুলো আবেদনপত্রের সঙ্গে জমা দিয়েছিলাম। তবু আমার ডাক পড়ত না। ইনফ্যাক্ট, আমাদের বিভাগের কারোরই তখনো সিট হয়নি।

প্রতিদিন হলে যেতাম, আর হতাশ হয়ে মামার বাসায় ফিরে আসতাম।

একদিন হলো কি, লাঞ্চ পিরিয়ডে আমি হুট করে প্রভোস্টের রুমে ঢুকে গেলাম। হাউস টিউটররা কেউই ঢুকতে দিতে চাইছিলেন না আমাকে। তাঁদের বিনীতভাবে বললাম, আমি প্রভোস্ট ম্যাডামের সঙ্গে একটু জরুরি কথা বলব। অগত্যা ঢুকতে দিলেন।
প্রভোস্ট আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, 'বলো, কী তোমার জরুরি কথা।'

আমি সপ্রতিভ হয়ে বললাম, ম্যাডাম, আমাদের আবেদনের সঙ্গে যে এক্সট্রা কারিকুলার অ্যাকটিভিটিজের সার্টিফিকেট চাওয়া হয়েছিল, তা কী জন্য?
তিনি বললেন, 'তুমি কী পারো?'
বললাম, গান পারি।
তিনি গাইতে বললেন।
আমি গাইতে শুরু করলাম, 'সকাতরে ওই কাঁদিছে সকলে...'

গান শেষ হওয়ার পর নাসরীন ম্যাডাম আমাকে গানের প্র্যাকটিস জারি রাখার শর্তে হলে সিট বরাদ্দের জন্য সুপারিশ করলেন। এরপর থেকে হলের যেকোনো অনুষ্ঠানেই রুম নম্বর আর নাম ধরে আমার ডাক পড়ত। কী যে আনন্দের অনুভূতি ছিল সেটা, বলে বোঝাতে পারব না। বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পাওয়ার চেয়েও বেশি খুশি হয়েছিলাম সেদিন। মেধাক্রম আর পলিটিক্যাল লিংকের জটের মধ্যে নিজ যোগ্যতায় এমন করে হয়তো কেউ কোনো দিন হলে সিট পায়নি সে সময়ে। আমার জানা নেই অন্তত।
সতীর্থদের কেউ কেউ আমাকে এই বলে খোঁচাত, তাদেরও যেন একটু গানের তালিম দিই। তাতে তাদেরও হলের সিট হোক। আমি হলে ওঠার প্রায় এক বছর পর আমার বিভাগের আর একজনের সিট হয়, তা-ও রাজনৈতিক বিবেচনায়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরিতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা কাটিয়ে হলের বাসের শেষ ট্রিপে করে হলে ফিরতাম। ফিরে রাতের রান্না করে পড়তে বসতাম। মাঝেমধ্যে রুমমেটরা মিলে পিকনিক করতাম। উচ্চ স্বরে গান করতাম।

বিদ্যুৎ চলে গেলে হলের ছাদে গিয়েও গান করতাম। নির্মল বাতাস আর আস্ত চাঁদের এমন মধুময় স্বাদ আর কোথাও পাইনি কোনো দিন।

আমাদের হলের পাশেই ছিল শাহনেওয়াজ হল। চারুকলার ছাত্ররা থাকত সেখানে। মনে আছে, ওরা একবার ভূত উৎসবের নামে আমাদের হলে ভূত সেজে হই হই করতে করতে ঢুকে গেল। অকস্মাৎ এ কাণ্ডে হাউস টিউটর, ছাত্রী—সবাই হকচকিয়ে গিয়েছিলেন। এটা ছিল এক চাঁদনি রাতের কারসাজি।

প্রিয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে নিজের অভিজ্ঞতা দিয়ে যেভাবে দেখেছি ও দেখতে চাই, তার কিছু নমুনা এখানে দিলাম:
বিশ্ববিদ্যালয়ে তিন কিসিমের শিক্ষার্থী দেখতাম:
১. যেকোনো টেক্সট-পাঠক, যারা বইকে জ্ঞানের একমাত্র উৎসজ্ঞান করে।
২.বইয়ের ফ্ল্যাপ-পাঠক, যারা খালি পৃষ্ঠা উল্টিয়ে জ্ঞান লাভ করে থাকে।
৩. নোট শিট-পাঠক, যারা জ্ঞানের উৎস হিসেবে স্রেফ সার্টিফিকেটই জীবনের একমাত্র সিদ্ধি মনে করে থাকে।
টেক্সট-পাঠক শিক্ষার্থীদের যে সব সময় একাডেমিক ঘরানার মনে হতো, তা বলব না। কেননা এমন নজির প্রচুর আছে যাদের পড়া বইয়ের তালিকায় অগণিত বই থাকলেও একাডেমিক রেজাল্ট খারাপ।
ফ্ল্যাপ-পাঠক শিক্ষার্থী মূলত ছিল 'ধান্দাবাজ' ধরনের। এদের অনেকেই ভালো ফলাফল করত পরীক্ষায়।
আর নোট-শিট পাঠকেরা সার্টিফিকেটের ধান্দার সঙ্গে সঙ্গে চাকরির প্রস্তুতি চালায় বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের শুরু থেকেই। এদের জীবনে কোনো দিন কোনো টেক্সট থাকে না। শিক্ষাজীবনের শুরু থেকেই এরা শিটনির্ভর। জীবনের প্রাচীন এই অভ্যাস পাল্টানোর কোনো সুযোগ বিশ্ববিদ্যালয়ও করে দেয়নি, নিজেদের মধ্যে চেষ্টার বালাইও ছিল না।
অথচ, যেটা করার দায়িত্ব বিশ্ববিদ্যালয়ের এবং তা পরিপূর্ণ করার দায়িত্ব সব শিক্ষার্থীর।
বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজটা আসলে কী শেষ পর্যন্ত?

রাষ্ট্রের মেধাবী সম্পদ তৈরি করা, নাকি কেবল খোরপোশ দিয়ে কামলা তৈরি করা?
রাষ্ট্রের অনেক মেধাবী এবং 'টেক্সট পাঠক'কে দেখা যায় জ্ঞানজগতে মূল্যায়িত হওয়ার জন্য বিদেশে গিয়ে ডিগ্রি এবং ওখানেই চাকরি করতে। ধরুন, কোনো একজন সাহিত্যের শিক্ষার্থীর পরিগণ্ডি মূলত সাহিত্য। কিন্তু রাষ্ট্র তাকে সেই বিষয়ের শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দিতে গিয়ে উচ্চতর গণিত, রাষ্ট্রবিজ্ঞান কিংবা বায়োলজির পরীক্ষা নিচ্ছে। আর এ-সংক্রান্ত ভূরি ভূরি তথ্য মনে রাখতে গিয়ে তার ক্রিস্টিনা রসেটির ওপর করা গবেষণাটি হয়তো কোনো কাজেই লাগাতে পারল না সে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন কোর্সের টেক্সটের পাশাপাশি কিছু সহায়ক গ্রন্থের বরাত দেওয়া থাকে। শিক্ষার্থীরা সেই সহায়ক বইগুলো পড়ে একটি টেক্সট কীভাবে পড়তে হয়, তার ধারণা পেয়ে থাকে। অনেকেই সেই সহায়ক বইগুলো থেকে হুবহু 'পেস্ট করে' পরীক্ষার খাতায়। এর ফলে কিছু শিক্ষকের কাছে তারা সর্বোচ্চ নম্বর পেয়ে থাকে। কিন্তু শিক্ষার্থীদের এসব ফাঁকিবাজি ধরার মতো শিক্ষক থাকার কথা বিশ্ববিদ্যালয়গুলাতে; এবং সেটা আছেও। তবে সংখ্যায় বেশি নয়।
জীবনানন্দের 'আট বছর আগে একদিন' নিয়ে অম্বুজ বসু যা বলছেন, তার বরাত পরীক্ষার খাতা পর্যন্তই যদি সীমাবদ্ধ থাকে, 'আট বছর আগে একদিন' কবিতাটির নতুন কোনো পঠনপাঠন যদি তৈরি না হয়, তবে বিশ্ববিদ্যালয় পাস করে কী এমন লাভ?
শতবর্ষের প্রহরে প্রিয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এই ধারা থেকে বেরিয়ে আসুক।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি চত্বরের পাশে ও সামনে, কলাভবনের সামনে ও পেছনে, মল চত্বরে, রোকেয়া হল, অ্যানেক্স বিল্ডিংয়ের আশপাশে, বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাবে আরও কিছু প্রাচীন বৃক্ষরাজি আছে, যাদের দেখলে আমার জলজ্যান্ত 'টেক্সট' মনে হয়। এদের কোনো কোনোটার বয়স নাকি ষাটোর্ধ্ব—বলছিলেন গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক শামীম রেজা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষ থেকে লাইব্রেরি আর এসব প্রাচীন প্রাচীন বৃক্ষরাজি এবং এই বিদ্যায়তনের সংস্কৃতির ইতিহাস যদি কাউকে 'টেক্সট' পড়া শেখাতে পারে, তবেই শতবর্ষী এই প্রতিষ্ঠানটি সার্থক হবে।

* সেঁজুতি জামান
 

Users who are viewing this thread

Back
Top