জুতা এখন ফ্যাশনের নিত্য অনুষঙ্গ। জুতার 'রূপ' বদলাচ্ছে চলতি ধারার সঙ্গে তাল মিলিয়ে। বাংলাদেশের রিকশাচিত্র, হাতে করা এমব্রয়ডারিতে ঐতিহ্যবাহী নকশাও যুক্ত হচ্ছে কোনো কোনো জুতায়।
চলতি ধারায় জুতার নকশায় দেখা যাচ্ছে রিকশাচিত্র। মডেল: রিবা, জুতা: লা মোড–প্রতিভা, সাজ: রেড বিউটি স্যালন, পোশাক: কিউরিয়াস, স্থান: গোল্ডেন টিউলিপ, স্টাইলিং: বিপাশা রায়, ছবি: কবির হোসেন আরামদায়ক ও স্টাইলিশ। জুতা: লা মোড
'নিজের দুটি চরণ ঢাকো, তবে
ধরণি আর ঢাকিতে নাহি হবে।'
বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কাব্যের জুতা আবিষ্কারের এই কাহিনি হয়তো আমাদের অনেকেরই জানা। আদ্যিকালে জুতার প্রয়োজন ছিল কেবল চরণযুগলকে ধুলা-ময়লা থেকে বাঁচানোতে। রাজ্যের সব ধুলা যেমন ঝেঁটিয়ে বিদায় করা সম্ভব নয়, তেমনি মাদুর কিংবা চামড়া মুড়িয়ে দিয়ে রাজার চরণযুগলকে রক্ষা করার অভিপ্রায়ও যে পূরণ হওয়ার নয়। সেই থেকে নাকি জুতার ব্যবহার হলো শুরু।
আজকের নবতর পৃথিবীতে জুতা কিন্তু ফ্যাশনের নিত্য অনুষঙ্গ। নিত্যনতুন জুতা আসছে ফ্যাশনধারায়। জুতার 'রূপ' বদলাচ্ছে চলতি ধারার সঙ্গে তাল মিলিয়ে। ব্যক্তিত্ব, পছন্দ, ব্যক্তির পোশাক, আবহাওয়া—এসবের ওপরই নির্ভর করে জুতার ধরনধারণ। হাল জমানার জুতার নকশাকারেরা সেসব বুঝেই করছেন জুতার নকশা। কারিগরেরাও বানিয়ে ফেলছেন তেমন জুতা। এই যেমন রিকশাচিত্র আঁকা জুতা কিংবা হাতে এমব্রয়ডারি করা ঐতিহ্যবাহী নকশার কোনো জুতা।
ব্যবহারের স্বাচ্ছন্দ্যই ক্রেতার প্রথম চাহিদা। জলকাদায় পা ডুবিয়েও যদি হাঁটতে হয়, জুতা নষ্ট হওয়ার ভয়ে যেন পিছপা হতে না হয়, এমনটাই চান আজকের ক্রেতা। তা বলে স্পঞ্জ জোড়া পায়ে গলিয়ে তো আর অফিস যাওয়া চলে না? থাকতে হবে কেতাদুরস্ত। কাজের মাঝখানে পাজোড়া যাতে থাকে আরামে, সে দিকটাও দেখতে হবে।
ফ্যাশনধারায় এখন চলছে হালকা নকশার একটু সাধারণ বা 'সিম্পল' জুতা। খুব জাঁকালো নকশার জুতা পাটি ছাড়া অন্য কোথাও পরার তেমন চল নেই।
জুতা: লা মোড–প্রতিভা
সাধারণ্যে অনন্য
জুতা প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান লা মোডের প্রতিষ্ঠাতা ও ক্রিয়েটিভ হেড ফাহমিদা ইসলাম জানালেন, ভিজলেও নষ্ট হয় না, এই সময় এমন জুতার চাহিদা রয়েছে বাজারে। কাদাজলের ছিটা লাগলেও সহজেই যেন তা ধুয়ে ফেলা যায়। পানিরোধী জুতা লা মোড বাজারে আনছে চার বছর ধরেই। স্লিপার রয়েছে ক্রেতার পছন্দের তালিকায়। একটু খোলামেলা ধরনের জুতা পরলে পা ঘামার ভয়ও তেমন থাকে না। এসব চাহিদা মাথায় রেখেই তৈরি হয়েছে তাঁদের জুতা। কিন্তু সেই জুতা যেন বিষণ্ন বৃষ্টিদিনের নয়, বরং উজ্জ্বল, বৈচিত্র্যময় রঙে প্রাণপ্রাচুর্য তুলে ধরতেই তাঁদের এবারকার আয়োজন।
হাতে তৈরি নাগরায় কাপড় আর সুই–সুতার নকশা। বর্ষাকালে এ জুতা না ভেজানোই ভালো। জুতা: জুতিওয়ালা
ভিন্ন রকম কিছু জুতা
নাগরার চল তো বছরজুড়েই, পরতে পারেন সব বয়সী নারী–পুরুষ। জুতিওয়ালার প্রতিষ্ঠাতা প্রীতি মোদী জানালেন, পেছনের দিকে বন্ধ নাগরা ছাড়াও রয়েছে পেছন খোলা (ব্যাকলেস) নাগরা বেশ আরামদায়ক। তরুণ প্রজন্মের 'ট্রেন্ডি' জুতা এনেছে তারা। তরুণদের জন্য আরও আছে মিউস (পেছনে খোলা হিলযুক্ত জুতা)। কোলাপুরি চপ্পল আছে সব বয়সীর জন্যই। তাদের জুতার নকশা হয় কারিগরদের হাতের স্পর্শে। চামড়ার জুতা পাবেন সেখানে। তাঁদের প্রথম ভাবনাই গ্রাহকের আরাম, এরপর তাঁরা ভেবেছেন ফ্যাশনের দিকটা। এমব্রয়ডারি, জারদৌসি আর পাথরের কাজ পাবেন সেখানকার জুতায়। রেশমি কাপড়ও ঠাঁই পেয়েছে সেথায়। আর ছাপা জুতাও পাবেন বৃষ্টিদিনে রোজকার ব্যবহার্য হিসেবে।
চলতি ধারায় জুতার নকশায় দেখা যাচ্ছে রিকশাচিত্র। মডেল: রিবা, জুতা: লা মোড–প্রতিভা, সাজ: রেড বিউটি স্যালন, পোশাক: কিউরিয়াস, স্থান: গোল্ডেন টিউলিপ, স্টাইলিং: বিপাশা রায়, ছবি: কবির হোসেন আরামদায়ক ও স্টাইলিশ। জুতা: লা মোড
চলতি ধারায় আরও যা
হালের 'ট্রেন্ড' রিকশাচিত্র। ফ্যাশনের অন্যান্য অনুষঙ্গের মতো জুতাতেও উঠে এসেছে রিকশাচিত্র। সঙ্গে থাকতে পারে মাঝারি হিল। লা মোড এনেছে এমন ধারার জুতা। এ ছাড়া জনপ্রিয় নেটফ্লিক্স সিরিজ কুইন'স গ্যামবিটের প্রধান চরিত্র বেথ হারমোনের নামানুসারে তাঁরা এনেছেন ষাটের দশকের ভিন্টেজ স্টাইলের জুতা।
চাই স্বস্তি
আবদ্ধ এবং খোলামেলা দুই ধরনের জুতাই রয়েছে তাঁদের বৃষ্টিদিনের জুতার সম্ভারে। হালকা, নরম, টেকসই ফ্লিপ ফ্লপ বা থং রয়েছে বাটায়। বাটা বাংলাদেশের বিপণন ব্যবস্থাপক জুবায়ের ইসলাম জানালেন, 'স্যান্ডাক' ব্র্যান্ডের জুতাগুলোও আরামদায়ক ও টেকসই। 'পাওয়ার' ব্র্যান্ডের দারুণ সব স্লাইড (স্যান্ডেলের মতোই, তবে একটু ভিন্নধারার জুতা, বেশ আরামদায়ক) এনেছেন তাঁরা। আরাম এবং চলার সময় গোড়ালির ভারসাম্যের দিকটা মাথায় রেখে নতুন প্রযুক্তির (ইনসোলিয়া ফাউন্ডেশন) ব্যবহৃত হয়েছে তাঁদের জুতায়। ঈদ মৌসুম সামনে রেখেও নতুন ধারার ডিজাইন ফুটিয়ে তোলা হয়েছে তাঁদের জুতায়।
চলতি ধারার এই স্যান্ডেলের উপাদান এমন, যাতে অনায়াসে কাদাপানি মাড়ানো যাবে। স্যান্ডেল: লা মোড
আরামে-ফ্যাশনে
ওরিয়ন ফুটওয়্যারের ব্যবস্থাপক (বিজনেস ডেভেলপমেন্ট) মোহাম্মদ মিনহাজ উদ্দিন জানালেন, রাবারের সোল, প্লাস্টিক ম্যাটেরিয়ালের পানিরোধী, হালকা জুতা এনেছেন তাঁরাও। স্লিপার, থং চলছে বেশ। সঙ্গে থাকছে হালফ্যাশনের সমন্বয়। রঙিন জুতা আনা হয়েছে তাঁদের ঈদ আয়োজনে।
* রাফিয়া আলম, ঢাকা
চলতি ধারায় জুতার নকশায় দেখা যাচ্ছে রিকশাচিত্র। মডেল: রিবা, জুতা: লা মোড–প্রতিভা, সাজ: রেড বিউটি স্যালন, পোশাক: কিউরিয়াস, স্থান: গোল্ডেন টিউলিপ, স্টাইলিং: বিপাশা রায়, ছবি: কবির হোসেন আরামদায়ক ও স্টাইলিশ। জুতা: লা মোড
'নিজের দুটি চরণ ঢাকো, তবে
ধরণি আর ঢাকিতে নাহি হবে।'
বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কাব্যের জুতা আবিষ্কারের এই কাহিনি হয়তো আমাদের অনেকেরই জানা। আদ্যিকালে জুতার প্রয়োজন ছিল কেবল চরণযুগলকে ধুলা-ময়লা থেকে বাঁচানোতে। রাজ্যের সব ধুলা যেমন ঝেঁটিয়ে বিদায় করা সম্ভব নয়, তেমনি মাদুর কিংবা চামড়া মুড়িয়ে দিয়ে রাজার চরণযুগলকে রক্ষা করার অভিপ্রায়ও যে পূরণ হওয়ার নয়। সেই থেকে নাকি জুতার ব্যবহার হলো শুরু।
আজকের নবতর পৃথিবীতে জুতা কিন্তু ফ্যাশনের নিত্য অনুষঙ্গ। নিত্যনতুন জুতা আসছে ফ্যাশনধারায়। জুতার 'রূপ' বদলাচ্ছে চলতি ধারার সঙ্গে তাল মিলিয়ে। ব্যক্তিত্ব, পছন্দ, ব্যক্তির পোশাক, আবহাওয়া—এসবের ওপরই নির্ভর করে জুতার ধরনধারণ। হাল জমানার জুতার নকশাকারেরা সেসব বুঝেই করছেন জুতার নকশা। কারিগরেরাও বানিয়ে ফেলছেন তেমন জুতা। এই যেমন রিকশাচিত্র আঁকা জুতা কিংবা হাতে এমব্রয়ডারি করা ঐতিহ্যবাহী নকশার কোনো জুতা।
ব্যবহারের স্বাচ্ছন্দ্যই ক্রেতার প্রথম চাহিদা। জলকাদায় পা ডুবিয়েও যদি হাঁটতে হয়, জুতা নষ্ট হওয়ার ভয়ে যেন পিছপা হতে না হয়, এমনটাই চান আজকের ক্রেতা। তা বলে স্পঞ্জ জোড়া পায়ে গলিয়ে তো আর অফিস যাওয়া চলে না? থাকতে হবে কেতাদুরস্ত। কাজের মাঝখানে পাজোড়া যাতে থাকে আরামে, সে দিকটাও দেখতে হবে।
ফ্যাশনধারায় এখন চলছে হালকা নকশার একটু সাধারণ বা 'সিম্পল' জুতা। খুব জাঁকালো নকশার জুতা পাটি ছাড়া অন্য কোথাও পরার তেমন চল নেই।
জুতা: লা মোড–প্রতিভা
সাধারণ্যে অনন্য
জুতা প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান লা মোডের প্রতিষ্ঠাতা ও ক্রিয়েটিভ হেড ফাহমিদা ইসলাম জানালেন, ভিজলেও নষ্ট হয় না, এই সময় এমন জুতার চাহিদা রয়েছে বাজারে। কাদাজলের ছিটা লাগলেও সহজেই যেন তা ধুয়ে ফেলা যায়। পানিরোধী জুতা লা মোড বাজারে আনছে চার বছর ধরেই। স্লিপার রয়েছে ক্রেতার পছন্দের তালিকায়। একটু খোলামেলা ধরনের জুতা পরলে পা ঘামার ভয়ও তেমন থাকে না। এসব চাহিদা মাথায় রেখেই তৈরি হয়েছে তাঁদের জুতা। কিন্তু সেই জুতা যেন বিষণ্ন বৃষ্টিদিনের নয়, বরং উজ্জ্বল, বৈচিত্র্যময় রঙে প্রাণপ্রাচুর্য তুলে ধরতেই তাঁদের এবারকার আয়োজন।
হাতে তৈরি নাগরায় কাপড় আর সুই–সুতার নকশা। বর্ষাকালে এ জুতা না ভেজানোই ভালো। জুতা: জুতিওয়ালা
ভিন্ন রকম কিছু জুতা
নাগরার চল তো বছরজুড়েই, পরতে পারেন সব বয়সী নারী–পুরুষ। জুতিওয়ালার প্রতিষ্ঠাতা প্রীতি মোদী জানালেন, পেছনের দিকে বন্ধ নাগরা ছাড়াও রয়েছে পেছন খোলা (ব্যাকলেস) নাগরা বেশ আরামদায়ক। তরুণ প্রজন্মের 'ট্রেন্ডি' জুতা এনেছে তারা। তরুণদের জন্য আরও আছে মিউস (পেছনে খোলা হিলযুক্ত জুতা)। কোলাপুরি চপ্পল আছে সব বয়সীর জন্যই। তাদের জুতার নকশা হয় কারিগরদের হাতের স্পর্শে। চামড়ার জুতা পাবেন সেখানে। তাঁদের প্রথম ভাবনাই গ্রাহকের আরাম, এরপর তাঁরা ভেবেছেন ফ্যাশনের দিকটা। এমব্রয়ডারি, জারদৌসি আর পাথরের কাজ পাবেন সেখানকার জুতায়। রেশমি কাপড়ও ঠাঁই পেয়েছে সেথায়। আর ছাপা জুতাও পাবেন বৃষ্টিদিনে রোজকার ব্যবহার্য হিসেবে।
চলতি ধারায় জুতার নকশায় দেখা যাচ্ছে রিকশাচিত্র। মডেল: রিবা, জুতা: লা মোড–প্রতিভা, সাজ: রেড বিউটি স্যালন, পোশাক: কিউরিয়াস, স্থান: গোল্ডেন টিউলিপ, স্টাইলিং: বিপাশা রায়, ছবি: কবির হোসেন আরামদায়ক ও স্টাইলিশ। জুতা: লা মোড
চলতি ধারায় আরও যা
হালের 'ট্রেন্ড' রিকশাচিত্র। ফ্যাশনের অন্যান্য অনুষঙ্গের মতো জুতাতেও উঠে এসেছে রিকশাচিত্র। সঙ্গে থাকতে পারে মাঝারি হিল। লা মোড এনেছে এমন ধারার জুতা। এ ছাড়া জনপ্রিয় নেটফ্লিক্স সিরিজ কুইন'স গ্যামবিটের প্রধান চরিত্র বেথ হারমোনের নামানুসারে তাঁরা এনেছেন ষাটের দশকের ভিন্টেজ স্টাইলের জুতা।
চাই স্বস্তি
আবদ্ধ এবং খোলামেলা দুই ধরনের জুতাই রয়েছে তাঁদের বৃষ্টিদিনের জুতার সম্ভারে। হালকা, নরম, টেকসই ফ্লিপ ফ্লপ বা থং রয়েছে বাটায়। বাটা বাংলাদেশের বিপণন ব্যবস্থাপক জুবায়ের ইসলাম জানালেন, 'স্যান্ডাক' ব্র্যান্ডের জুতাগুলোও আরামদায়ক ও টেকসই। 'পাওয়ার' ব্র্যান্ডের দারুণ সব স্লাইড (স্যান্ডেলের মতোই, তবে একটু ভিন্নধারার জুতা, বেশ আরামদায়ক) এনেছেন তাঁরা। আরাম এবং চলার সময় গোড়ালির ভারসাম্যের দিকটা মাথায় রেখে নতুন প্রযুক্তির (ইনসোলিয়া ফাউন্ডেশন) ব্যবহৃত হয়েছে তাঁদের জুতায়। ঈদ মৌসুম সামনে রেখেও নতুন ধারার ডিজাইন ফুটিয়ে তোলা হয়েছে তাঁদের জুতায়।
চলতি ধারার এই স্যান্ডেলের উপাদান এমন, যাতে অনায়াসে কাদাপানি মাড়ানো যাবে। স্যান্ডেল: লা মোড
আরামে-ফ্যাশনে
ওরিয়ন ফুটওয়্যারের ব্যবস্থাপক (বিজনেস ডেভেলপমেন্ট) মোহাম্মদ মিনহাজ উদ্দিন জানালেন, রাবারের সোল, প্লাস্টিক ম্যাটেরিয়ালের পানিরোধী, হালকা জুতা এনেছেন তাঁরাও। স্লিপার, থং চলছে বেশ। সঙ্গে থাকছে হালফ্যাশনের সমন্বয়। রঙিন জুতা আনা হয়েছে তাঁদের ঈদ আয়োজনে।
* রাফিয়া আলম, ঢাকা