আপনার বন্ধুদের মধ্যে কেউ হয়তো এখনো অবিবাহিত। দেখা হলেই তাকে কোন কথাটি বলেন আপনি? মনে করে দেখুন, কুশলাদি জিজ্ঞাসার পরই হয়তো তাকে জিজ্ঞাসা করেন, 'এখনো বিয়ে করিস না কেন?'
মনের ভুলে হোক, আর ইচ্ছা করে হোক, এমন প্রশ্ন করা মানে তাঁকে বিব্রত করা। যাঁরা অবিবাহিত, তাঁদের এমন নানা প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয় প্রায়ই, যা তাঁকে হতাশ করে তুলতে পারে। অনেকে মানসিকভাবেও ভেঙে পড়েন। তাই আপনি যদি তাঁর বন্ধু হয়ে থাকেন, তাহলে অন্যদের মতো এই ধরনের প্রশ্ন করা থেকে আপনাকে বিরত থাকতে হবে।
'এখনো বিয়ে করিস না কেন?'
এখনো বিয়ে করিস না কেন' এই ধরনের প্রশ্ন করা থেকে বিরত থাকুন
এই ধরনের প্রশ্ন করা মানে আপনি বোঝাতে চাইছেন, বিয়ে করা অবিবাহিত থাকার চেয়ে ভালো। আপনার কাছে যেটা ভালো, আপনার বন্ধুর কাছে সেটা ভালো না-ও মনে হতে পারে।
তাই আর দশজন লোকে এমন প্রশ্ন করলেও বন্ধুকে আপনি এমন প্রশ্ন করা থেকে বিরত থাকুন। এতে সে আপনার প্রতি আরও অনুগত থাকবে। হয়তো তাঁর একান্ত ভাবনাগুলোও আপনার সঙ্গে ভাগ করে নেবে।
'কোনো সমস্যা?'
নানা কারণে কেউ একা থাকার সিদ্ধান্ত নিতে পারে। আবার কারও বিয়ে করতে দেরি হওয়ার পেছনে পারিবারিক বিভিন্ন বিষয় জড়িত থাকতে পারে। তাই সরাসরি 'বিয়ে করছিস না, কোন সমস্যা?' জাতীয় প্রশ্ন করবেন না। এই প্রশ্নের মধ্যে এক ধরনের নেতিবাচক ইঙ্গিতও রয়েছে। অনেক সময় যাঁকে প্রশ্ন করছেন, তিনি বিষয়টি ভালোভাবে না-ও নিতে পারেন। নিয়মিত এই প্রশ্ন আপনাদের মধ্যে দূরত্ব তৈরি করতে পারে।
'চিন্তা করিস না, তোরও হবে'
বন্ধুকে শান্তনা দিতে গিয়ে হতাশায় ফেলবেন না
বন্ধুর সঙ্গে গল্প করতে করতে নিজের কাণ্ডজ্ঞান বজায় রাখা জরুরি। হয়তো কারও বিয়ে বাড়িতেই গেলেন দুজনে। সেখানে হঠাৎ অবিবাহিত বন্ধুকে বলে বসলেন, 'চিন্তা করিস না, তোরও বিয়ে হবে।' এই ধরনের সান্ত্বনা অনেকটা কাঁটার মতো বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।
তিনি যদি নিজের দুঃখের কথা আপনার সঙ্গে ভাগাভাগি করেন, সেটা ভিন্ন কথা। অন্যথায়, হঠাৎ কোনো ঘটনা ছাড়াই আপনি গায়ে পড়ে এমন সান্ত্বনা বাক্য দিয়ে বন্ধুকে তুষ্ট করতে যাওয়ার দরকার নাই। এতে হিতে বিপরীত হতে পারে।
'তোর সিদ্ধান্ত ভুল ছিল'
অনেক সময় নিজেকে গুছিয়ে নেওয়ার আগেই হঠাৎ বিয়ের প্রস্তাব আসতে পারে। ছেলে হোক বা মেয়ে, অনেকেই নিজের পড়াশোনা, চাকরি, পরিবার, সচ্ছলতা প্রভৃতিকে লক্ষ্য করে বিয়ের কথা ভাবেন। কেউ ভাবেন পড়াশোনা শেষ করে একটা চাকরি পেলে বিয়ে করবেন। মাঝপথে হয়তো একটা বিয়ের প্রস্তাব এসেছিল কিন্তু নিজের লক্ষ্যের কথা ভেবে সেটা না করে দিয়েছিলেন আপনার বন্ধু। অনেক বছর পর সেই পুরোনো কথা তাঁকে মনে করিয়ে আপনি যদি বলেন, 'তোর ওই সময়ে বিয়েটা করে নেওয়া দরকার ছিল। তুই সিদ্ধান্ত নিতে ভুল করেছিস।' এমন কথায় বন্ধুর হতাশা আরও বেড়ে যাবে। তাই কাছের মানুষ হিসেবে আপনার উচিত তাঁর সিদ্ধান্তকে সমর্থন করা। বরং সেই সিদ্ধান্তের ফলে তাঁর পরবর্তী জীবনে কী কী সুবিধা হয়েছে, সেগুলো মনে করিয়ে দিতে পরেন।
'ক্যারিয়ারের পেছনে ছুটে বিয়েটাই হলো না'
ক্যারিয়ার গুছিয়ে বিয়ে করার সিদ্ধান্তকে দায়ী করা নয়
কেউ হয়তো নিজের ক্যারিয়ার গুছিয়ে তারপর বিয়ের কথা ভাবতে চাইছেন। এদিকে বয়সও বেড়ে যাচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে সেই বন্ধুকে বিয়ে না হওয়ার জন্য ক্যারিয়ার গড়াকে দোষারোপ করা থেকে বিরত থাকুন। আগে জানুন তাঁর কাছে কোন বিষয়টা অগ্রাধিকার পাচ্ছে। এমনও তো হতে পারে, তিনি নিজের ওপর নির্ভরশীল না হয়ে বিয়ে করতে চাইছেন না।
* সূত্র: রিডার্স ডাইজেস্ট, ফেমিনা, ম্যানারিজম