What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

আঁধারে মোর বসতি (1 Viewer)

মদন গুহ

Exclusive Writer
Story Writer
Joined
Nov 17, 2018
Threads
6
Messages
1,197
Credits
7,918
Rocket
Pen edit
পর্বঃ১ - Cancer

ক্যান্সার আক্রান্ত স্ত্রীর হাত ধরে পাশে বসে আছে রফিক। ওরা এখন একটা সরকারি হাসপাতালের আই সি ইউ তে। গত পনেরদিন যাবত আই সি ইউ বেডে শুয়ে আছে মৌনতা, রফিকের স্ত্রী। কোন নড়াচড়া নেই, পনেরদিন একটানা শুয়ে আছে। মাঝেমাঝে পাশ ফিরে শুইয়ে দিতে হয় কিছুক্ষনের জন্য যাতে পিঠে বাতাস লাগে, নাহলে আবার বেডসোর হবার ভয় আছে।

মৌনতা এখন রফিকের দিকে পাশ ফিরে রয়েছে। ওর শরীরটা হরেক রকম ওষুধের প্রভাবে দুর্বল। কিন্তু যে দৃষ্টিতে ও রফিকের দিকে এখন তাকিয়ে আছে তার শক্তি মারাত্মক। রফিক এটার নাম দিয়েছে সূচালো দৃষ্টি, যেন সুইয়ের মত বিধিয়ে দিচ্ছে রফিককে। মৌনতা যখন এভাবে তাকায়, রফিক তখন ওর চোখের দিকে বেশিক্ষন তাকিয়ে থাকতে পারে না, অস্বস্তি লাগে।

"একটা মজার কথা শুনবে?" মৌনতা বলল।
রফিক সাড়া দেয়,
"বলো"
"সকালে যে আয়াটা থাকে না, ওর সাথে তো অনেক গল্প হয়। আজ একটা নতুন জিনিস জানলাম। তুমি শুনলে অবাক হয়ে যাবে!"
"কি?"
"হাসপাতালে যে প্রসটিটিউশন চলে এটা জান?"

রফিক জানে, যদিও কখনো নিজে ওসবের দিকে পা বাড়ায়নি। তারপরও অসুস্থ স্ত্রীর সামনে ভাল সাজার ট্রাই করল,

"কি! কি বলছ এসব! হাসপাতালে!! হোয়াট!!!"

মৌনতা হাসে, "তুমি তো ভাল মানুষ, এসবের কিছুই তাই জানো না। আজকে রাবেয়া আমার কাছে গল্প করছিল। মজার ব্যাপার কি জানো, বাইরের কেউ না, হাসপাতালের আয়ারাই এই কাজ করে। ওরা দিনের বেলা ওদের ডিউটি করে আর রাতে নাইট ডিউটির নাম করে এসব সার্ভিস দেয়।"

রাবেয়া আয়ার সঙ্গে রফিকের কথা হয় প্রতিদিনই। ওরা দুই শিফটে ডিউটি করে। সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা হল ডে শিফট আর রাত ৮ টা থেকে সকাল ৮টা নাইট শিফট। যেসব রোগীর সঙ্গে কোন আত্মীয় স্বজন থাকে না, আয়ারা তাদের সঙ্গে এই পুরো সময়টা থাকে, রোগীর দেখাশোনা করে। বিনিময়ে প্রতি শিফটের জন্য এক হাজার করে টাকা দিতে হয়। কেউ চাইলে দুই শিফটেই আয়া রাখতে পারে। রফিক শুধু দিনের জন্য রাবেয়াকে ঠিক করেছে। রাতে ও নিজেই থাকে মৌনতার কাছে।

রাবেয়া আয়া বেশ হাসিখুশি, ভদ্র, শান্ত স্বভাবের মহিলা। স্বামী আর সাত বছরের একটা ছেলেকে নিয়ে বস্তিতে থাকে। স্বামী আজিজ রিকশা চালায়। ছেলেটাকে দিয়েছে মাদ্রাসায় পড়তে। রাবেয়া দু বছর হল চাকরি নিয়েছে হাসপাতালে। তার আগে বাসাবাড়িতে কাজ করত।

এসব তথ্য রাবেয়ার কাছ থেকেই জেনেছে রফিক। যেহেতু বেশ কিছুদিন ওর বউয়ের সেবা করছে, তাই সৌজন্যের খাতিরে টুকটাক কথা হয়। কিন্তু রাবেয়া যে ওর অসুস্থ স্ত্রীকে এসব গল্প শুনিয়েছে তা জেনে বেশ অবাকই লাগল ওর, রাগও হল। মানুষজন অসুস্থ লোকের সঙ্গে কতরকম গল্পই তো করে, কিন্তু তাই বলে এসব বলতে হবে!

মৌনতা নিরবতা ভাঙে,
"শোনো"
"বলো"
"তোমার যে অনেক কষ্ট হচ্ছে তা আমি জানি"
রফিক হাসল,
"নিজের স্ত্রীকে আই সি ইউ তে শুয়ে থাকতে দেখলে কোন স্বামীর মন ভাল থাকে?"
"না না, আমি সেটা বলছি না।"
"তাহলে?"

মৌনতা আশেপাশে তাকিয়ে একবার দেখে নেয়। এই রুমে মোট চারটা বেড। এখন মৌনতা ছাড়া বাকি দুটো বেডে পেশেন্ট আছে। একটা বেডের পেশেন্ট ছিলেন বয়স্ক এক বৃদ্ধ। আজ সকালে মারা গেছেন। ওই বেডটা এখন খালি।
নাহ, কেউ খেয়াল করে নেই এদিকে। ও রফিকের আরেকটু কাছে আসার চেষ্টা করল। তারপর ফিশফিশিয়ে বলতে লাগল,

"তুমি কি এখন প্রতিদিন মাস্টারবেট করো?"
রফিকের কপাল কুচকে গেল ওর কথা শুনে।
"এসব জানতে চাইছ কেন এখন?"
"কেন? আমি জানতে চাইতে পারি না? আজ দুইমাস হয়ে গেল আমি হাসপাতালে, পনেরদিন আই সি ইউতে আছি। তুমিও তো একটা মানুষ। স্ত্রী হিসেবে আমার কর্তব্য ছিল তোমার চাহিদা পুরন করা। তা আর এখন করতে পারছি কই?"

রফিক বিরক্ত ভঙ্গিতে বলল, "এসব কি চিন্তা করছ মৌনতা? এখন কি এসব ভাবার সময় আমাদের? তুমি আগে সুস্থ হও"
"আমি যে আর সুস্থ হব না তা ভালমতই জানি রফিক। ডাক্তার সাহেব সেদিন কি যেন আলাপ করছিলেন আরেক পেশেন্ট এর লোকদের সাথে। তারও আমার মত অবস্থা। স্টেজ থ্রি ক্যান্সার। সাড়া শরীরে ছড়িয়ে পরেছে…"
রফিক বাঁধা দিল, "আহ! চুপ করো তো মৌনতা। তুমি সুস্থ হয়ে যাবে। এখন এসব বাদ দাও তো।"

মৌনতা আবার বলতে শুরু করে, "না রফিক, আমাকে বলতে দাও। ডাক্তার সাহেবের একটা কথা আমার কানে এসেছিল সেদিন। প্যালিয়েটিভ ট্রিটমেন্ট। যেসব রোগীদের আর কোন আশা নেই তাদের ওরা প্যালিয়েটিভ ট্রিটমেন্ট দেয়, রোগীর সাময়িক কষ্ট দূর করার জন্য, আমাকেও দিচ্ছে,"
"চুপ করো মৌনতা, এমন কিছুই হচ্ছে না।" রফিকের কণ্ঠস্বর কেঁপে ওঠে কথাটা বলতে গিয়ে। ওর চোখের কোণায় জল জমতে শুরু করেছে। সেটা আড়াল করতে মাথাটা ঘুরিয়ে পাশের টেবিলে রাখা ওষুধপত্র গোছানোর ভান করে রফিক।

"আমার একটা কথা রাখবে রফিক?", মৌনতা বলে।
"আবার কি কথা?"
"তুমি আয়াদের ওই সেক্স সার্ভিসটা নাও"
"কি!"
রফিক স্বপ্নেও ভাবেনি মৌনতা এটা বলতে পারে।
"এসব কি বলছ মৌনতা? নিজের স্বামীকে কেউ এসব বলে?"

মৌনতা বলল, "জানিগো, আমারও বলতে খারাপ লাগছে। কিন্তু কি করব? তোমার যে খুব কষ্ট হচ্ছে সেটা ভেবেই বলছি। যে মানুষ প্রতিরাতে একবার সেক্স না করে ঘুমোতে পারত না সে এখন কি করে থাকছে, ভাবতেই ভীষণ কষ্ট হচ্ছে আমার। তুমি চাইলে ওই মাগিগুলোকে লাগাতে পারো, আমি পারমিশন দিলাম।"

রফিকের আর কথা বলার অবস্থা নেই। ও রুম থেকে বের হবার জন্য উঠে দাঁড়াল। একবার মনে হল, মৌনতা ওকে পরীক্ষা করছে না তো! তার স্বামী কতখানি সৎ এটা দেখার জন্য!?

মৌনতা আবার ডাক দিল, "রফিক"

অনিচ্ছা সত্ত্বেও রফিক ঘুরে তাকাল।

"আমার রাবেয়ার সাথে কথা হয়েছে। ওই তোমাকে ম্যানেজ করে দেবে সব। আর তুমি চাইলে রাবেয়াকেও ভোগ করতে পারো যদি তোমার পছন্দ হয়। শরীরের গঠন ভাল আছে মহিলার। যদিও একটু মোটা…"

রফিক আর এক মুহূর্ত দাঁড়াল না। মৌনতার কথা শেষ হবার আগেই ছুটে বেরিয়ে গেল আই সি ইউ রুম থেকে।

বাইরে বের হতেই রাবেয়ার সাথে দেখা। রাবেয়া ওর দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসল,
"আসসালামু আলাইকুম, ভাইজান।"
"ওয়ালাইকুম আসসালাম।"
"ভাবিরে কেমন দেখলেন?"
"আজকে একটু ভাল মনে হচ্ছে, আপনার কি খবর?"
"এইত ভাইজান, নাইট ডিউটি করতেছি।"

রাবেয়া আরেকটা হাসি দিয়ে চলে গেল আই সি ইউ রুমের দিকে।

আজ এই প্রথমবারের মত রফিকের চোখ যেন অজান্তেই চলে গেল রাবেয়ার শরীরের ওপর। রফিক তার এই হঠাৎ পরিবর্তন দেখে নিজেই অবাক হল।

রাবেয়ার বয়স পঁয়ত্রিশ-ছত্রিশ এর মত হবে। চেহারা মোটামুটি। খাটো মহিলা, উচ্চতা পাঁচ ফিটের মত হবে। কিন্তু শরীর বেশ ভরাট। ওর বুকের দিকে আজ প্রথম খেয়াল করেই রফিক দেখতে পেল মহিলার নিপল কাপড়ের ওপর থেকে পরিষ্কার বোঝা যায়। কালচে শ্যামলা গায়ের রঙ, ঝুলন্ত মাইএর ওপর কুচকুচে কালো অ্যারিওলা ঘেরা বড়সড় বোঁটা, সাদা কামিজের ওপর থেকে পরিষ্কার দেখা যাচ্ছিল। বোঝাই যাচ্ছে ও ভেতরে কোন ব্রা পরেনি।

রফিক মনে মনে নিজেকে দোষারোপ করে। কিন্তু আবার কোন এক নিষিদ্ধ আকর্ষণে চোখ চলে যায় রাবেয়ার দিকে।

রাবেয়া পেছন ফিরে হাঁটা দিতেই ওর পেছন ভাগটাও নজরে আসে রফিকের।

আজ রফিক প্রথমবারের মত খেয়াল করল যে রাবেয়ার পাছাটা একটু বেঢপ রকমের বড়। হাঁটার তালে তালে ভয়ানক দোলে। চর্বি জমে সেটা কোমরের ওপরে একটা খাঁদ তৈরি করেছে। সেই খাঁদে কয়েক ভাঁজ হয়ে টানটান লেগে আছে রাবেয়ার কামিজের পেছনের অংশ। মহিলা পাঁচ ফিটের, কিন্তু তার পাছা দেখ! নির্ঘাত চল্লিশ সাইজের হবে!

রাবেয়া আই সি ইউ রুম থেকে একটা অল্পবয়েসি মেয়েকে নিয়ে বের হয়। এই মেয়েটাকে রফিক চেনে। ওর নাম বেণু। সেও আয়ার কাজ করে। মৌনতার বেডের বরাবর বিপরীত দিকের বেডটাতে এক বৃদ্ধা আছেন গত সাত-আট দিন। ওই মহিলার আত্মীয় স্বজন কেউ রাতে থাকে না। তারা বেণুকে নাইট শিফটে বৃদ্ধার দেখাশোনা করার জন্য ভাড়া করেছে। বৃদ্ধা সম্ভবত এখন ঘুমোচ্ছে। সেই সুযোগে ওকে নিয়ে বেরিয়ে পরেছে রাবেয়া।

আই সি ইউ কমপ্লেক্স টা তিনতলার দক্ষিন দিকে। তার বিপরীত দিকে হাসপাতালের উত্তর সাইডে আছে কিছু পরীক্ষা নিরিক্ষাগার, অক্সিজেন স্টোরেজ, আরও নানান রকম কক্ষ। একটা করিডোর পার হয়ে যেতে হয় ওপারে। রফিক পনেরদিন আই সি ইউ তে আছে যদিও তারপরও এদিকের বেশিকিছু চেনে না।

সরকারি হাসপাতাল, বিশাল জায়গা নিয়ে তৈরি। আর তার নকশাটাও এমন অদ্ভুত, অলিগলি দিয়ে ভরা। যেন ভুল্ভুলাইয়ার ফাঁদে এসে পরেছে। রফিক তো একদিন চেনা জায়গায় এসেও হারিয়ে গিয়েছিল মাতব্বরি করে অন্য সিঁড়ি দিয়ে উঠতে গিয়ে।
ওরা আই সি ইউ কমপ্লেক্স থেকে বের হয়ে হাসপাতালের উত্তর দিকে হাঁটতে শুরু করে। এখন এই দিকটায় কোন মানুষজন নেই, থমথমে ঠাণ্ডা পরিবেশ। অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে আছে উত্তর দিকটা। ওদিকে যাওয়ার পথে মাঝখানে বিশাল কম্পাউণ্ডের মত খোলা যায়গা। এই যায়গাটা মৃদু আলোকিত। মাথার ওপরে একটা ফ্লোরোসেন্ট বাতি জ্বলছে। এখানে কিছু বড় বড় বেঞ্চ রাখা আছে রোগীর লোকদের বসবার জন্য। তাদের মধ্যে কেউ কেউ এখানে রাতে ফ্লোরে বিছানা করেও থাকে।

কোণার দিকে মশারি খাটিয়ে নাক ডেকে ঘুমোচ্ছে এক রোগীর লোক।

পেছনের সারির ডানদিকের বেঞ্চটাতে বসে ঝিমাচ্ছিল এক মাঝবয়েসী পুরুষ। পঞ্চাশের কাছাকাছি বয়স হতে পারে। পরনে ভারী জ্যাকেট আর জিন্সের প্যান্ট, গলায় একটা মাফলার প্যাঁচানো। নভেম্বর মাসের কেবল শুরু, শীত তেমন জাকিয়ে বসে নি। তবে ওর ভাব দেখে মনে হচ্ছে মাঘ মাসের মাঝামাঝি এখন। লোকটার মুখ বেশ গোলগাল, মাথায় টাক। দাড়িগোঁফ ক্লিনশেভ করা। হাইট বেশি নয়, তবে উঁচু সোলের কেডস পরে আছে দেখে লম্বা লম্বা লাগছে।

এই লোকটা এতক্ষণ আবছা অন্ধকারের দিকে বসে ছিল, প্রথমে খেয়ালই করেনি রফিক। ওকে দেখল তখন যখন রাবেয়া উত্তর দিকে যাওয়ার সময় ওর দিকে তাকিয়ে ডাক দিল,

"ওই মিয়া, আহেন।"

গোলগাল টেকো লোকটা উঠে দাঁড়াল ডাক শুনে। তারপর রাবেয়া আর বেণুর পেছন পেছন যেতে লাগল। সামনে অন্ধকার বেড়ে যাওয়ায় ওদের ভালমত দেখা যাচ্ছে না, শুধু শরীরের আকৃতি আবছা বোঝা যাচ্ছে। কিন্তু এখন এই রাত দশটায় হাসপাতালের এমন সুনসান নিরব পরিবেশে রাবেয়ার হাসির শব্দ দূর থেকে ঠিকই কানে আসছে রফিকের। কেন যেন কৌতূহলী বোধ করল রফিক। ঘটনা কি সেটা দেখা দরকার। ও বেশ খানিকটা দূরত্ব বজায় রেখে ওদেরকে অনুসরণ করতে শুরু করল . . .

(চলবে)
 
Last edited:

Users who are viewing this thread

Back
Top