What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

আমের জন্মভূমি বাংলাদেশ (1 Viewer)

PZWfl1S.jpg


গ্রীষ্মমণ্ডলীয় অঞ্চলের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অর্থকরী ফল আম। বর্তমান বিশ্বে সবচেয়ে জনপ্রিয় ফলের প্রসঙ্গ উঠে এলে নিঃসন্দেহে আমের অবস্থান হবে শীর্ষে। এত জনপ্রিয় ফলটির জন্মস্থান জানা স্বাভাবিক কারণেই বেশ প্রাসঙ্গিক। আমের উৎপত্তিস্থল বা জন্মভূমি নিয়ে ঐতিহাসিকভাবে এখন পর্যন্ত যে দেশগুলোকে চিহ্নিত করা হয়েছে, বাংলাদেশ তার মধ্যে অন্যতম। বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রাম সেই আদি ভূমি, যেখানে বুনো জাতের আমগাছ প্রথম দেখা গেছে।

আমের বৈজ্ঞানিক নাম ম্যাঙ্গিফেরা ইন্ডিকা। কার্লভন লিনি (১৭০৭–৭৮) ছিলেন সুইডিশ বিজ্ঞানী এবং শ্রেণিবিন্যাসবিদ। তিনি জগতের বহু প্রাণীর শ্রেণিবিন্যাস করে পৃথিবীতে বিখ্যাত হয়ে আছেন। আমের শ্রেণিবন্ধনও তিনিই করেছেন। যে কারণে আমের বৈজ্ঞানিক নাম Mangifera indica–এর শেষে L, অর্থাৎ তাঁর নামের শেষ আদ্যক্ষর ব্যবহৃত হয়।

ম্যাঙ্গিফেরা ইন্ডিকার উৎপত্তিস্থল বাংলাদেশের চট্টগ্রামের পার্বত্যাঞ্চল, ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল এবং মিয়ানমার। চট্টগ্রাম ও পার্বত্য চট্টগ্রামে মাইলাম বা মাইল্ল্যা নামক আমের একটি আলাদা জাত রয়েছে। এই জাতের আম (Mangifera Sylvatica) বুনো অবস্থা থেকে এখন চাষের পর্যায়ে আসতে শুরু করেছে। এটি ক্ষুদ্রাকার, অনেকটা লিচুর সমান। ভীষণ টক স্বাদের এই আম ঔষধি হিসেবে চট্টগ্রাম অঞ্চলে পরিচিত। পাগলা কুকুর কামড়ালে আগে এই আম দিয়ে তৈরি একধরনের স্থানীয় ওষুধ ব্যবহার করা হতো।

বিশ্বের বিভিন্ন দেশের আমবিশারদ এবং ফলবিজ্ঞানীরা আমের প্রকৃত জন্মভূমি সম্পর্কে যে ধারণা পোষণ করেন, তাতে মতভিন্নতা আছে। অধিকাংশ বিশেষজ্ঞের মতে, আমের আদি জন্মভূমি ভারতের উত্তর–পূর্বাঞ্চলীয় হিমালয়সংলগ্ন পাদদেশ, মিয়ানমার, বাংলাদেশের চট্টগ্রামের পার্বত্য এলাকা এবং মালয় (মালয়েশিয়া)। গবেষকদের মধ্যে পপেনো, ভ্যাভিলভ, ডিক্যান্ডোল, মুখার্জি, লাল বিহারী সিং, বোম্পার্ড ও স্নেল—এঁরা সবাই কমবেশি একমত যে আমের উৎপত্তি ইন্দো-বার্মা অঞ্চলে।

অনেকের মতে, আম এসেছে ইন্দো-চায়না অঞ্চল থেকে। অর্থাৎ ভিয়েতনাম, চীন, থাইল্যান্ড, কম্বোডিয়া, লাওস, ইন্দোনেশিয়া। আমের আদি জন্মভূমির ব্যাপারে যাঁরা উপমহাদেশপন্থী, তাঁরা এই মত গ্রহণ করেন না। তাঁরা প্রাচীন ভারতের বহুবিধ ধর্মীয়, সামাজিক ও প্রাচীন সংস্কৃত সাহিত্যের প্রমাণসমূহ দলিল হিসেবে দেখিয়ে দাবি করেছেন, আমের আদি জন্মভূমি ভারতীয় উপমহাদেশ। ঐতিহাসিকদের যুক্তি, ভারতের প্রাচীন সাহিত্যে, প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনে, প্রাচীন শিল্পকলায় আম, আমের মুকুল, পাতা ইত্যাদির উপস্থিতিই প্রমাণ করে আমের আদি জন্মভূমি এই উপমহাদেশ।

যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রকাশিত 'দ্য ম্যাঙ্গো' (সম্পাদনা আর ইলিটজ) বইয়ে আমের আদি নিবাস সম্পর্কে একটা বর্ণনা আছে। তাতে বলা হয়েছে, 'সাধারণ বুনো আমগাছের রেকর্ড পাওয়া যায় বাংলাদেশ (পার্বত্য চট্টগ্রাম), উত্তর–পূর্ব ভারত ও মিয়ানমারে। এটি প্রশ্নাতীতভাবে আসামের চির সবুজ উপত্যকার আদি বা দেশীয় ফল।'
আমের উৎপত্তিস্থল বাংলাদেশ—এটি বুঝতে আরও সহজ হবে যদি আমরা ফলবিজ্ঞানীদের এই গবেষণামূলক তথ্যের সঙ্গে আরেকটি বাস্তবতা যোগ করি। আর এইচ স্নেইড হ্যাচিনসন বিংশ শতাব্দীর একেবারে গোড়ায় পার্বত্য চট্টগ্রামের পুলিশ সুপার হিসেবে কাজ করেছেন। তিনি 'অ্যান অ্যাকাউন্ট অব দ্য চিটাগাং হিলট্রাক্টস' নামে একটি গ্রন্থ লিখেছেন ১৯০৬ সালে। বইটির ৬০ ও ৬১ পৃষ্ঠায় পার্বত্য চট্টগ্রামের বুনো আম সম্পর্কে বর্ণনা রয়েছে এভাবে—বনে পঞ্চাশ বা তার বেশি প্রজাতির গাছ রয়েছে। এসব গাছের ফল ভক্ষণযোগ্য এবং স্বাদ বিবেচনায় অধিকাংশ ফল খাওয়ার অনুভূতিও অসম্ভব আনন্দের। এর মধ্যে সেরাদের তালিকায় আছে ব্যাশ আম বা বুনো আম। এটি মিষ্টি স্বাদের একটি ক্ষুদ্র ফল।' ক্ষুদ্রাকৃতির মিষ্টি স্বাদের এই বুনো আমসহ হয়তো আরও অনেক জাতের বুনো আম ছিল বা আছে পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে, যেগুলোর খোঁজ আমাদের জানা নেই।

9GXKwqW.jpg


উত্তর-পূর্ব ভারত, মিয়ানমার ও বাংলাদেশের পার্বত্যাঞ্চলে চার হাজার বছর আগে থেকে আম উৎপাদন হয়ে আসছে (ডি, ক্যান্ডোল)। এ কথা নিঃসন্দেহে বলা যায়, এ দেশে প্রাচীন ভারতীয় সভ্যতার (ইন্ডাস ভ্যালি সিভিলাইজেশন) চেয়েও পুরোনো হচ্ছে আম এবং আমের ব্যবহার। সিদ্ধার্থ গৌতম বুদ্ধ আমগাছের ছায়ায় বসে ধ্যান করেছেন।

রামায়ণের অনেক শ্লোকে আমের উল্লেখ রয়েছে। বৌদ্ধদের ধর্মীয় অনুষ্ঠানে আম্রপল্লবের ব্যবহার হয়ে আসছে দুই হাজার বছর ধরে। খ্রিষ্টপূর্ব ৩২৭ সালে মহাবীর আলেকজান্ডার সিন্ধু উপত্যকায় এসে আমবাগান এবং আমের সঙ্গে পরিচিত হয়েছিলেন। ভারতীয় উপমহাদেশের সবচেয়ে প্রাচীন ফল হচ্ছে আম। এই ফল ভারতের বৈদিক ধর্মের সঙ্গেও অঙ্গাঙ্গিভাবে সম্পর্কিত। হিন্দু পুরাতত্ত্বের অনেক কাহিনিতে আমের প্রসঙ্গ রয়েছে। প্রাচীন সংস্কৃত ভাষায় আমের মুকুল, মুকুলের গন্ধ, পরিপক্ব আম, আম্রকুঞ্জ—এসব নিয়ে অনেক কাব্য আছে।

আমগাছ, আম্রকানন, আম—এ নিয়ে বাংলাদেশসহ দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় প্রাচীনকাল থেকে যত কাব্য, সাহিত্য ও শিল্প সৃষ্টি হয়েছে, তেমনটি পৃথিবীর অন্য কোনো ফল নিয়ে হয়নি। ভারতবর্ষের প্রাচীন সাহিত্য ও পুরাণে বিশেষ করে রামায়ণ ও মহাভারতে আম্রকানন, আম্রকুঞ্জ ইত্যাদি শব্দ একাধিকবার ঘুরেফিরে এসেছে। মহাকবি কালিদাস তাঁর মেঘদূত কাব্যে মেঘমালাকে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন যে পর্বতের সঙ্গে, সেটির নাম ছিল 'আম্রকূট'। 'শকুন্তলা' নাটকের ষষ্ঠ সর্গে আম্রমঞ্জরির উল্লেখ রয়েছে। মহাকবি কালিদাস আম্রমুকুলকে হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রেমের দেবতা মন্মথ বা মদনের পঞ্চশরের একটি শর হিসেবে উল্লেখ করেছেন।

সরস্বতী পূজার প্রধান উপকরণ হিসেবে আমের মুকুলের ব্যবহার লক্ষণীয়। বৈদিক শাস্ত্রমতে, অতি উৎকৃষ্ট সুপক্ব আম দেবতা গণেশের পছন্দের একটি ফল। ভক্তের সিদ্ধিলাভে, মনের উৎকর্ষ বাড়ানোর জন্য এ–জাতীয় আম পূজার একটি উপকরণ। ভারতের বিভিন্ন বিবাহ উৎসব, কিংবা গণেশ চতুর্থীজাতীয় ধর্মীয় উৎসবে আমপাতার ব্যবহার লক্ষণীয়। এ ছাড়া ভারতের অনেক বাড়িঘরের দরজার খিলানে আমপাতার অলংকরণ যুগ যুগ ধরে ব্যবহার হয়ে আসছে।

ফলের রাজা আম শুধু আস্বাদনের মাধ্যমেই আমাদের অন্তরে স্থান করে নেয়নি, বরং আমরা যে পোশাক–পরিচ্ছদ পরিধান করছি, সেগুলোর মাধ্যমেও হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছে। শত শত বছর ধরে আম, আমপাতা, আমবৃন্ত বাংলাদেশের বয়নশিল্পীদের তাঁদের নিখুঁত এমব্রয়ডারি তৈরিতে অনুপ্রাণিত করেছে। বাংলাদেশসহ ভারতের বিভিন্ন রাজ্যের এ–জাতীয় শিল্পীরা বহুকাল আগ থেকেই তাঁদের বয়নশিল্পের বিভিন্ন স্থানে আমকে প্রতিফলিত করে আসছেন। আম্বি মোটিফ সম্পূর্ণরূপে আমকে কেন্দ্র করে প্রণীত বিশেষ ধরনের ডিজাইন। বর্তমানে এটি ভারতীয় সূচিশিল্পের অন্যতম প্রতীক। বিশ্বের বহু দেশে এই নকশা এখন জনপ্রিয়।

দ্বাদশ শতকে কবি সন্ধ্যাকর নন্দী রচিত সংস্কৃত ভাষার কাব্যগ্রন্থ 'রামচরিতম'। এই গ্রন্থে বরেন্দ্র অঞ্চলে উৎপন্ন বিভিন্ন ফলের মধ্যে শ্রীফল অর্থাৎ আমের উল্লেখ রয়েছে। এ ছাড়া বিদ্যাকর সম্পাদিত একাদশ শতাব্দীর শেষ ভাগে রচিত গ্রন্থ 'সুভাষিতরত্নকোষ' এবং দ্বাদশ শতকে সংকলিত সংস্কৃত ও প্রাকৃত ভাষায় রচিত 'সদুক্তিকর্ণামৃত' গ্রন্থে আম প্রসঙ্গ রয়েছে। এসব প্রাচীন শিল্প ও সাহিত্যের উদাহরণ প্রমাণ করে যে আমের আদি জন্মভূমি এই উপমহাদেশ।

ভারত, পাকিস্তান ও ফিলিপাইনে আম জাতীয় ফল হিসেবে রাষ্ট্রীয়ভাবে স্বীকৃত। আমাদের দেশে কাঁঠাল জাতীয় ফল হিসেবে স্বীকৃতি পেলেও জনপ্রিয়তার বিচারে আম অনেক এগিয়ে। এ কারণে ১৫ নভেম্বর ২০১০ সালে আম জাতীয় বৃক্ষ হিসেবে রাষ্ট্রীয়ভাবে স্বীকৃতি পেয়েছে। একটি দেশের জাতীয় বৃক্ষ সে দেশের অহংকার ও ঐতিহ্যের পরিচায়ক। এতে দেশের মানুষের মধ্যে নির্দিষ্ট সেই বৃক্ষটিসহ আরও শত শত উদ্ভিদ সম্পর্কে জানার আগ্রহ বেড়ে যায়। এর পাশাপাশি গবেষণার ব্যাপারেও বিশেষজ্ঞরা এগিয়ে আসেন।

সুদূর অতীতকাল থেকেই আম বাঙালির মননে গভীরভাবে প্রোথিত। বাঙালির রসনা তৃপ্তিকারী ফলের মধ্যে আম সবার ওপরে। বাংলাদেশের সব অঞ্চলে একটি বাড়িও খুঁজে পাওয়া যাবে না, যেখানে আমের গাছ নেই। এই বিষয়গুলো বিশ্লেষণ করলে অতি সহজেই উপলব্ধি করা যাবে যে আমের আদি জন্মভূমি এই বাংলাদেশ।

l8inJ4Z.jpg


প্রথমাবস্থায় আম ছিল বনের ফল। মানুষ ক্রমান্বয়ে সামাজিক জীবনে অভ্যস্ত হতে শুরু করলে বাগানের ফল হিসেবে প্রথম যেগুলো মানুষের হাত দিয়ে উৎপন্ন হতে থাকে, আম তার মধ্যে একটি। বিশেষজ্ঞদের মতামতের ভিত্তিতে এখন নির্বিঘ্নে এ কথা বলা যাবে যে আম বাংলাদেশ, মিয়ানমার, উত্তর-পূর্ব ভারতসহ (আসাম, মনিপুর, ত্রিপুরা) মালয় উপদ্বীপ (মালয়েশিয়া) এই অঞ্চলগুলোতে প্রথম বন্য ফল হিসেবে উদ্ভব ঘটে। সভ্যতার বিকাশ লাভের সঙ্গে সঙ্গে এটি ছড়িয়ে যায় বাংলাদেশের উত্তর–পশ্চিমাঞ্চল ও বিহারসহ আর্যাবর্তে। এরপর আম দক্ষিণ ভারতে ছড়িয়ে পড়ে। আমের নামকরণ থেকেই উল্লিখিত ভৌগোলিক বিশ্লেষণের যৌক্তিকতা প্রমাণিত হয়।

আমের নামকরণ থেকে অনেকটা স্পষ্ট হওয়া যায় যে আমের জন্মভূমি এই উপমহাদেশে। তামিল, তেলেগু ও মালয়ালম—দক্ষিণ ভারতের এই তিন ভাষায় আমের একাধিক সমার্থক নাম রয়েছে। যেমন মালয়ালম ভাষায় আমের একটি নাম হলো মামপালাম (mampalam)। মালয়েশিয়া ও ফিলিপাইনেও আমের সমার্থক শব্দগুলোর মধ্যে মামপালামও একটি নাম। ইন্দোনেশিয়ার সুমাত্রায় আমের একাধিক নামের মধ্যে একটি হচ্ছে আমপালাম (ampalam)। তামিল ভাষায় আম মান্ডি ম্যাঙ্গাস, ম্যাঙ্গাস মারাম নামে পরিচিত। মালয়ী ভাষাতেও আমকে বলা হচ্ছে ম্যাঙ্গা। সিয়াম (থাই) ভাষায় আমের সমার্থক নাম মামুয়াং (mamuoug), মামোং (mamong)। সুমাত্রান ভাষাতেও আমের অনেক নামের একটি মামুয়াং।

দক্ষিণ ভারতের বিভিন্ন ভাষাভাষী অঞ্চলের সঙ্গে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যান্ড, ফিলিপাইন—এসব দেশের ভাষা ও কৃষ্টির মিল নেই। বিস্ময়ের ব্যাপার হচ্ছে, আমের নামের সঙ্গে রয়েছে চমৎকার মিল। ইতিহাস বলছে, হিন্দু ও বৌদ্ধ যুগে অর্থাৎ খ্রিষ্টপূর্ব পঞ্চম ও চতুর্থ শতকে ভারত থেকে সমুদ্রপথে অভিযাত্রী; উপনিবেশ-স্থাপনকারী, ব্যবসায়ী এবং ধর্ম প্রচারকেরা জাভা, সুমাত্রা, বালি, লম্বক, কম্বোডিয়া, মালয়, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার এসব দেশে গিয়ে স্থায়ীভাবে বসতি স্থাপন করেন। সেই যুগে ভারতীয় উপনিবেশ স্থাপনকারীদের মাধ্যমেই আমের বীজ কিংবা চারা মালয়, জাভা, বালি এলাকায় গিয়েছিল, এতে কোনো সন্দেহ নেই।

সবশেষে বলতে দ্বিধা নেই, অতি উৎকৃষ্ট জাতের পাকা আমের সঙ্গে জগতের কোনো ফলেরই তুলনা চলে না। বিষয়টি আস্তে আস্তে পশ্চিমা দুনিয়ার নাগরিকেরা আরও সচেতনভাবে বুঝতে শিখেছেন। ভালো জাতের আমের কদর এখন পশ্চিমের দেশগুলোতে আগের চেয়ে অনেক গুণ বেশি। বিংশ শতাব্দীর শুরু পর্যন্ত দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে ভালো জাতের আমের একক পৃষ্ঠপোষক ছিলেন নবাব, রাজা, মহারাজা, জমিদার, সামন্ত এবং ধনাঢ্য ব্যক্তিরা। সময় পাল্টে গেছে। এখন একজন সাধারণ চাষি তাঁর ছোট আঙিনায়ও ভালো জাতের আমগাছ রোপণ করছেন। আরও উন্নত জাতের আশায় মেধা, শ্রম ও সময় দিচ্ছেন। এই জনপ্রিয় ফল এখন গণমানুষের ফলে পরিণত হয়েছে। আসলে আমরা আমের ঐতিহ্যপরম্পরায় বহন করে চলেছি। কারণ, আমরাই তো এর ধারক ও বাহক।

* মাহবুব সিদ্দিকী (গবেষক ও লেখক)
 

Users who are viewing this thread

Back
Top