What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

লাউয়াছড়ার বৃষ্টি অরণ্যে (1 Viewer)

Bergamo

Forum God
Elite Leader
Joined
Mar 2, 2018
Threads
9,649
Messages
117,051
Credits
1,241,096
Glasses sunglasses
Berry Tart
Statue Of Liberty
Profile Music
Sandwich
RZK3JXV.jpg


টিলার ঢালু পাদদেশে থরে থরে সাজানো ছোট একটা আনারসের বাগান। তারপর শণ ও বেতের কুঁড়েঘর ঘিরে থাকা লেবুর বন পেরিয়ে অরণ্যের শুরু হয়েছে। লাউয়াছড়ার বৃষ্টি অরণ্য। বনে ঢুকতে ঢুকতে পথের ওপর দুই পাশ থেকে নেমে এসেছে গাছপালার চাঁদোয়া। এতক্ষণ অনুভূত হওয়া রোদেলা দুপুরের উষ্ণতা কোথায় যেন হারিয়ে গেছে! চারপাশ থেকে ঝাপটে ধরছে অরণ্যের হিম শীতলতা। বাহন সর্পিল পথের বাঁক পেরোতে থাকে। ঘ্রাণেন্দ্রিয় জুড়ে অরণ্যের গহিন গন্ধমাখা নিশ্বাসের মুগ্ধতা।

EV6RmcY.jpg


বিরল বৃক্ষ আফ্রিকান টিক ওক

লাউয়াছড়ার অভ্যন্তরে জাতীয় উদ্যানের ফটকে বাহন থামলে আমরা নেমে পড়ি। উদ্যানের প্রবেশপথের দুই পাশজুড়ে বিশাল সব আকাশচুম্বী বৃক্ষরাজি। ছায়াঢাকা সে পথে আমরা এগোতে থাকি। গাছের প্রতিটির গায়ে নেমপ্লেটে বৈজ্ঞানিক নামসহ প্রজাতি উল্লেখ করা হয়েছে। তাদেরই একটি দুর্লভ আফ্রিকান টিক ওক। গাছটি নাকি কারও কারও কাছে 'ক্লোরোফিল ট্রি' নামেও পরিচিত। পথের শেষে বন বিভাগের বাংলোসংলগ্ন টিলার পাশ দিয়ে রেলপথ চলে গেছে। অরণ্যের বুক ছুঁয়ে চলে যাওয়া সেই রেলপথের পাশে গিয়ে আনমনে দাঁড়িয়ে থাকি কিছুক্ষণ।

ওখানে, হ্যাঁ, ঠিক ওই জায়গায় রেলপথের পাশে হুমায়ূন আহমেদ আরাম কেদারায় আয়েশ করে বসেছিলেন। পাশেই বসে ছিলেন তাঁর স্ত্রী শাওন। ঘাসের ওপর পেতে রাখা মাদুরে বসে খেলছিল ছোট্ট নিনিদ। 'আমার আছে জল' ছবির চিত্র গ্রহণ চলছিল সেদিন। ছবির সেট একদম প্রস্তুত। বিদ্যা সিনহা মীম রেলপথের পাশে দাঁড়িয়ে আছেন। অপর পাশের টিলার ওপর ফেরদৌস আহমেদ। আমরা টিলার ওপর উঠে যাই দৃশ্যায়ন উপভোগ করতে। শ্রীমঙ্গলের দিক থেকে ট্রেন আসবে। সুইসাইডের শঙ্কায় ফেরদৌস ছুটে আসবেন মীমের দিকে, তার আগেই ট্রেন চলে আসবে, দৃশ্যটা এ রকম।

UFDqv5Y.jpg


শ্রীমঙ্গলের দিকে চলে গেছে রেলপথ

দূরে আরণ্যক বাঁকের আড়ালে ট্রেনের ছুটে আসা টের পেয়ে সবাই নড়েচড়ে বসে। হুইসেল বাজিয়ে ট্রেন কাছাকাছি আসতেই ফেরদৌস দৌড় দেন। তবে দুর্ভাগ্যবশত টিলার ওপর থেকে নামার সময় পা পিছলে পড়ে যান। দৃশ্যায়ন বিফল হয়। ইচ্ছা ছিল চিত্র গ্রহণ পর্ব শেষে হুমায়ূন স্যারের সঙ্গে ভ্রমণসঙ্গী বন্ধু সৌরভসহ দেখা করব। কিন্তু দৃশ্যায়নটি বিফল হওয়ার পর তাঁকে গম্ভীর চেহারায় বসে থাকতে দেখে উচ্ছ্বাসে ভাটা পড়ে। আগ্রহ আর দেখাতে ইচ্ছা করেনি। সে জন্য আজও আফসোস হয়।

বর্তমানে ফিরে রেলপথ পার হয়ে ডান পাশের ট্রেইল ধরে হাঁটতে শুরু করি। বাঁক খেয়ে ঢালু হয়ে নেমে যাওয়া সেই ট্রেইলের দুপাশে বনের ঘন বুনট। বনতল রাঙিয়ে রেখেছে কয়েক জাতের বুনোফুল। ওপরের দিকে বুনোলতা উঠে গেছে বয়সী বৃক্ষের গা জড়িয়ে। কিছুটা পথ এগিয়ে সামনে পড়ে শুকনা একটি ছড়া। ধবধবে বালুর ওপর ছড়িয়ে থাকা সবুজ, হলুদ, কমলা রঙের ঝরে পড়া পাতা। যেন নিসর্গের কোনো আল্পনা! শতবর্ষী বিশাল এক বৃক্ষ দেখে দুহাত ছড়িয়ে দুপাশে জড়িয়ে ধরে থাকি কিছুক্ষণ। যদিও আমার প্রসারিত দুই হাত তার শরীরের অর্ধেকেরও নাগাল পায় না। গাছের বাকল কানে ঘষা দিয়ে কানে কানে যেন শতবর্ষের গল্প বলতে চায়।

GCP2Pjx.jpg


লাউয়াছড়ায় বুনোফুল

লাউয়াছড়ার অন্দরে যাঁরা প্রবেশ করেছেন, তাঁদের অনেকের কাছে ব্যাপারটা অবাক করার মতো যে এই বনের পত্তন মানুষের হাত ধরেই। ব্রিটিশ শাসনামলে ১৯২৫ সালে সংরক্ষিত বন হয়ে যাওয়া পশ্চিম ভানুগাছ বনাঞ্চলের বর্তমান রূপই লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান। লাউয়াছড়ার বৃষ্টি অরণ্যের ব্যাপ্তি মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল ও কমলগঞ্জ উপজেলাজুড়ে। বনের ভেতর থেকে ট্রেইলটি থেমেছে একটি লেবুবাগানের পাশে। টিলার ঢালুতে গুল্মের মতো লেবুঝোপ।

টিলার মাথায় খাসিয়াদের কুটির। বনের সীমানায় গাছপালার প্রাচীরের প্রান্তে চোখে পড়ে মাঝারি উঁচু গাছের শাখে হালকা হলদেটে ফুল। গাছের কালচেটে সবুজ পাতা যেন হারিয়ে গেছে হলুদ আভার দাপটে! এই গাছের নাম চেস্টনাট বা কাঠবাদাম। ফুল একসময় কাঁটার গোলকে পরিণত হয়। যার ভেতরে থাকে সুস্বাদু বাদাম। সিলেটের টিলাঞ্চলের বিরল এই উদ্ভিদের সঙ্গে আমাদের পাঠশালার দিনগুলোর দস্যিপনার স্মৃতি জড়িয়ে আছে। প্রাণীবৈচিত্র্যের পাশাপাশি এই বন এমন উদ্ভিদ বৈচিত্র্যেও সমৃদ্ধ। লাউয়াছড়ায় বসবাস রয়েছে ২৭৬ প্রজাতির উভচর, সরীসৃপ ও স্তন্যপায়ী প্রাণী এবং পাখির। এদের মধ্যে এশীয় উল্লকের জন্য এই বন বিশেষভাবে সমাদৃত।

রেলপথের পাশে ফিরে এবার বাঁয়ের ট্রেইল ধরে হাঁটতে থাকি। পামগাছের সৃজিত বন পেরিয়ে আঁকাবাঁকা চিকন পথের দুপাশে বনের গহিন রূপ দুই চোখ ভরিয়ে দিচ্ছে। হঠাৎ হঠাৎ ডেকে উঠছে অচেনা পাহাড়ি বিহঙ্গ। বাঁকে বাঁকে অরণ্যের প্রাকৃতিক প্রাচীর ঘুরে ঘুরে আমরা অরণ্যের সফেদ ঘ্রাণ উপভোগ করতে করতে হেঁটে চলেছি। পাহাড়ি বাঁশের বন পেরিয়ে সামনে পড়ে খাসিয়াদের পানের জুম। ট্রেইল ঢালু হয়ে তারপর থেমেছে স্রোতস্বিনী এক ছড়ায়। টলটলে জলের ছড়ার বালুর ওপর ভেসে খেলা করছে ছোট ছোট মাছ। এই ছড়ার নাম লাউয়াছড়া। এর নামেই অরণ্যের নামকরণ। লাউয়াছড়ার অরণ্যের ভেতর দিয়ে এমন তিনটি স্রোতস্বিনী ছড়া বয়ে চলেছে। অন্য দুটোর নাম চাগছড়া ও জানাকছড়া। পারাপারের জন্য পানির ওপর ফেলে রাখা গাছের গুঁড়ির ওপর সাবধানে পা ফেলে ছড়া পার হই।

v5Vg0br.jpg


এই ছড়ার নাম 'লাউয়াছড়া'

চারপাশে জঙ্গলঘেরা ছোট্ট একটা মাঠের পাশ হয়ে পথ গিয়ে থামে মাগুরছড়া খাসিয়াপুঞ্জিতে। পড়ন্ত দুপুরে পুঞ্জিতে খাসিয়া রমণীরা তাঁদের পানজুম থেকে আহরিত পান নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। চলছে পান বাছাই আর আঁটি বাঁধার কাজ। এই পান চলে যাবে স্থানীয় আর দূরদূরান্তের হাটে। তকতকে পরিচ্ছন্ন উঠানের এক পাশে নিজের কুটিরের বারান্দায় ঝুড়িতে পান নিয়ে বসেছেন মধ্যবয়সী এক নারী। আশপাশে ঘুরঘুর করছিলেন স্থানীয় একজন ব্যাপারী। দাম নিয়ে দুজনের দফারফা হচ্ছিল না। পুঞ্জির গির্জার উঠানে খেলা করছিল একদল খাসিয়া শিশু। ডাকতে ওরা কাছে এল। ছবির জন্য হাসিমুখে পোজ দিল। ফেরার পথে দেখা হয় সেই পান ব্যাপারীর সঙ্গে। কিনে নেওয়া পান কাঁধে করে বয়ে নিয়ে চলেছেন। কথায় কথায় বললেন, উভয় পক্ষ থেকে শেষতক দামাদামিতে কিছুটা ছাড় দেওয়ায় কাঙ্ক্ষিত পান কিনতে পেরেছেন। লাউয়াছড়ার পাশেই ভানুগাছ বাজারে বিক্রি করবেন এই পান।

ছড়ার কাছে ফিরে ভাবলাম স্রোতের উজানের দিকে একটু ঢুঁ মারব। তবে ছড়ায় স্রোতে পানি ওঠে আবার গোড়ালির ওপরে। বালুতে পা ডুবে গিয়ে হাঁটু অবধি ডোবারও সম্ভাবনা। তাই বনের ভেতর অন্য পথে ট্রেইল ধরে ছড়ার কিছুটা উজানে চলে যাই। কিন্তু ওখানেও একই রকম পানি। ভাবছিলাম কী করা যায়। শেষতক বনের ভেতর থেকে গাছের ছোটখাটো একটা গুঁড়ি খুঁজে বের করে আনি। পানির ওপর সেটা ছুড়ে ফেলে তার ওপর দিয়ে লাফিয়ে ওপাশের বালুচরে চলে যাই।

bP0HTrH.jpg


ছড়ার ধবধবে সাদা বালুর ওপর ঝরাপাতা

শুকনা নরম বালুতে পা ডুবে যাচ্ছিল। কয়েক কদম হেঁটে চোখে পড়ে ছড়ার পাশের পাহাড়ের খাড়া গা থেকে ছড়ার ওপর হেলে পড়া গাছ। বর্ষায় উন্মত্ত থাকে এই ছড়া। তখন স্রোতের তোড়ে পাহাড়ের ভাঙনে গাছগুলো ঢলে পড়েছে পানির ওপর। ছড়ার পাশে পাহাড়ের খাড়া গা জুড়ে ঢাউস আকৃতির ফার্ণের ঝোপ। বালুর ওপর কয়েক জায়গায় ছোট খালি পায়ের চিহ্ন। বুঝতে বাকি রইল না খাসিয়াদের লোকজন ছড়ার পথ ধরে বনের গহিনে যাতায়াত করে।

আমরা দুজন ছাড়া ধারেকাছে কোনো জনমানবের চিহ্ন নেই। বনের ভেতর অবাক করা সুনসান নীরবতা। শিকার কাহিনির আমি একনিষ্ঠ ভক্ত। কেনেথ অ্যান্ডারসন আর জিম করবেটের শিকারের গল্প পড়ে জেনেছি সাধারণত জঙ্গলে বাঘ বা শিকারি প্রাণীর আবির্ভাব টের পেলে জঙ্গলের অন্য প্রাণীরা একদম নীরব-নিশ্চুপ হয়ে যায়। ঝিঁঝি পোকাও নাকি তখন ডাকাডাকি ভুলে যায়! অবশ্য লাউয়াছড়ায় সাম্প্রতিককালে বাঘ থাকার সম্ভাবনা নেই। যদিও চিতা বাঘের বিচরণ থাকার সম্ভাবনাকে উড়িয়ে দেওয়া যায় না। হেলে পড়া একটি গাছের ওপর পা দুলিয়ে বসে এসব ভাবতে ভাবতে ডুবেছিলাম মৌনতার ভাষায়। তারপর বালুচরের শেষ প্রান্তে, যেখান থেকে বনের শুরু হয়েছে, তার একপাশে লতায় আবৃত বালুর ওপর হঠাৎ কিছু একটার পদচিহ্ন দেখে থেমে পড়ি। বালুর ওপর বন্য প্রাণীর পায়ের ছাপ। ভালো করে অবলোকন করে পূর্ব অভিজ্ঞতার আলোকে মনে হলো, সেটি মেছো বাঘ বা বেড়াল গোত্রের অন্য কোনো বন্য প্রাণীর পাগমার্ক।

lo7v7L5.jpg


লাউয়াছড়ার গহীনে বেড়াল গোত্রীয় বন্যপ্রাণীর পাগমার্ক

সেখান থেকে ফিরে এসে টিলার ওপর ফরেস্ট রেঞ্জারের বনবাংলো ঘুরে আমরা রেলপথের কাছে ফিরে আসি। রেলের ধাতব পাতের ওপর বসে কিছুটা জিরিয়ে নিতে নিতে ভ্রমণসঙ্গী শাহাদাতকে বললাম, যদি আমরা যানবাহনে না ফিরে রেলপথ ধরে হেঁটে হেঁটে শ্রীমঙ্গলে চলে যাই, কেমন হবে! সে অবাক চোখে একবার তাকিয়ে ধাতস্থ হয়ে খানিক পর প্রত্যুত্তর দিল, চলেন স্যার, হাঁটা শুরু করি। শাহাদাত আমার অফিসের সহকারী। ভ্রমণে ওর বেশ আগ্রহ। অনেক দিন ধরে বলছিল, ঘুরতে বের হলে তাকে যেন সঙ্গী করি। আমার এবারকার একমাত্র ভ্রমণসঙ্গী সে। অন্য রকম উদ্দীপ্ত একটা অনুভূতি নিয়ে আমরা হাঁটা শুরু করি। রেলপথের ধাতব লোহা, কাঠ, পাথরের পথের পাশজুড়ে অরণ্যের বুনট প্রাকৃতিক দেয়ালের মতো রূপ দিয়েছে।

অরণ্যের চাঁদোয়া ভেদ করে বিকেলের মিঠে মৃদু সূর্যালোক তির্যকভাবে রেলপথের ওপর হেলে পড়ছে। ডানে মোড় নিয়ে বাঁক ঘোরার সময় শাহাদাত কিছু একটা দেখে ডাক দিল। টিলার ঢালে এক অচেনা জাতের ফল পড়ে আছে। পরে জেনেছিলাম এই ফলের নাম পাইন কর্ন। আমরা হাঁটতে থাকি। এই রেললাইনের ওপর এককালে বসে ছিল হলিউডের লাইট ক্যামেরা! জুলভার্নের উপন্যাস অবলম্বনে 'অ্যারাউন্ড দ্য ওয়ার্ল্ড ইন এইটি ডেজ' ছবির চিত্র গ্রহণ হয়েছিল এই রেলপথে।

VcB8yLj.jpg


পাখি দেখিয়েদের জন্য বনপথে নিদেশিকা

পথের পাশ থেকে ক্রমশ ওপরে উঠে যাওয়া পাহাড়ের ঢালে ঢালে চোখে পড়ে খাসিয়াদের পানজুম। তাপের মাত্রা কমের আসার সঙ্গে সঙ্গে বনের জীববৈচিত্র্যের প্রাণচাঞ্চল্যও ক্রমশ যেন বাড়তে থাকে। কাছেই কোথাও ডেকে চলেছে ঝিঁঝি পোকা। সঙ্গে হাড়িচাঁচা আর অন্য পাখির কলকাকলি। দূরে কোথাও থেকে উল্লুকের ক্ষীণ ডাক ভেসে আসে। বর্ণিল প্রজাপতির চঞ্চলা ওড়াউড়ি পাখার রং ছড়িয়ে। বনের শেষ মাথায় একদম চিকন চিকন কালো বর্ণের পাতা শোভিত বিরল জাতের বাঁশের বন। বেশ দুর্ভেদ্য, যে বাঁশ ঝোপের ভেতর দৃষ্টি সামান্যও এগোয় না।

পথের ওপর পাশে টিলার মাথায় বেশ পুরোনো একটি স্থাপনা। ক্ষয়ে যাওয়া ইট-সিমেন্ট যেন দাঁত বের করে আছে। রেলওয়ের পুরোনো একটা স্থাপনা ওটা। বর্তমানে পরিত্যক্ত। ট্রেনযাত্রায় ট্রেন থেকে দেখে এত দিন আগ্রহ হতো। পুরোনো স্থাপনাটির সামনে ঝোপঝাড়ের দঙ্গল। পথের পাশে ঘাস কাটছিলেন এক চা শ্রমিক। পরিত্যক্ত দালানটির ধারেকাছে ঘেঁষতে চাইলে তিনি সাবধান করলেন। ভেতরে নাকি বিষধর সাপের আস্তানা!

BNXbdRi.jpg


রেলপথে যখন গোধূলী নামে

আমরা আবার হাঁটতে থাকি। বনের শেষে এবার পথের একপাশে রাবার বন। অন্য পাশে ঝোপঝাড়ঢাকা টিলা। তার কোনোটিতে লেবুর চাষ করা হয়েছে। রাবারের বন পেরিয়ে চা–বাগান ধরে হাঁটতে থাকার সময় পড়ন্ত বিকেলে সূর্য পাটে নামতে শুরু করেছে। গোধূলির লালিমায় লালাভ হয়ে গেছে চা–বাগান, চারপাশ। আবছা আলো চারপাশে। হঠাৎ দূর থেকে ট্রেনের হুইসেল ভেসে আসে। খানিক পর শ্রীমঙ্গল স্টেশন থেকে ছেড়ে আসা পাহাড়িকা এক্সপ্রেস ট্রেন হেডলাইটের আলোয় চোখ ধাঁধিয়ে দিয়ে লাউয়াছড়ার হয়ে সিলেটের দিকে ছুটে যায়। তারপর চোখ চলে যায় সরু রেলপথ ধরে দূরে। ইশারায় যেন গন্তব্যের দিকে ডাকছে শ্রীমঙ্গল রেলস্টেশনের মিটমিটে আলো।

* লেখক: শিমুল খালেদ | সদস্য, বাংলাদেশ ট্রাভেল রাইটার্স অ্যাসোসিয়েশন।
 

Users who are viewing this thread

Back
Top