What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

জামাইষষ্ঠীর আনন্দ আয়োজন (1 Viewer)

n2zlJMc.jpg


বারো মাসে তেরো পার্বণ কথাটা তাই যথার্থ। কারণ, বাঙালির জীবনকে আনন্দময় করতে, উদ্‌যাপনে মেতে উঠতে উপলক্ষ, উৎসব আর পালাপার্বণের অভাব হয় না। জাতি, ধর্মনির্বিশেষে আচরিক অনুষ্ঠানে বাইরে সবাই কিন্তু মেতে ওঠে যে যার মতো করে। সাজসজ্জা তো থাকেই। আর থাকে রসনাবিলাসের বিশেষ আয়োজন। সেখানে প্রাধান্য পায় ষোলো আনা বাঙালিয়ানা।

Q2MPI92.jpg


এই যেমন ধরা যাক জামাইষষ্ঠীর কথা। আষাঢ় এল বলে। আর এলেই জামাইদের নিমন্ত্রণ করে খাওয়ানো হবে। এর একটা ধর্মীয় দিক আছে। সনাতন ধর্মাবলম্বীরা এটা পালন করে থাকেন। এখানে আচরিক দিকটা বাদ দিলে পুরোটাই কিন্তু উদ্‌যাপনের। এই উদ্‌যাপন আসলে সম্পর্কের। বলা যায় সম্পর্কের নবায়ন। মজার ব্যাপার হলো, এই সম্পর্ক জামাই আর শাশুড়ির। তা সে জামাই নতুনই হোক বা পুরোনো।

প্রতিবছর নিয়ম করে চলে সম্পর্ককে নবায়িত করার প্রয়াস। সেখানে অনুসৃত হয় কিছু ধর্মীয় অনুশাসন। ওটুকু বাদ দিলে পুরোটাই তো জীবনের উদ্‌যাপন। সেখানে পোশাক একটা বড় ভূমিকা রাখে। বিশেষ গুরুত্ব পায় না রসনাসম্ভার। আর সেখানে মাছের মুড়ো কিংবা মাংসের পদ যতই থাকুক মধ্যমণি কিন্তু ফল। বাঙালির ফলমাসের মধুফলে আপ্যায়িত হবেন জামাই।

DuC91V9.jpg


বাঙালি জীবনে ব্যতিক্রম বাদ দিলে জামাইদের কদর কিন্তু সব সময়ই আছে। বাঙালি মুসলমান জামাইষষ্ঠী হয়তো পালন করে না; কিন্তু এ সময় জামাইকে দাওয়াত করে যে খাওয়ানো হয় না, তা নয়। আবার মেয়ের শ্বশুরবাড়িতে ফলও পাঠানো হয়।

তবে ফিনফিনে আর্দির গিলা করা ধুতি কিংবা হালের সিল্কের রঙিন ধুতির সঙ্গে আর্দি বা সিল্কের পাঞ্জাবি পরে আসনে বসেছেন জামাই, সামনে সাজানো নানা পদ, শাশুড়ি পরিবেশন করছেন, শ্যালিকারা জামাইবাবুর সঙ্গে মজা করছেন। এ দৃশ্য বাঙালির আবহমানকালের।

জামাইষষ্ঠী হিসেবে পালন না করা হলেও স্থান, কাল, পাত্র-পাত্রী, বসন আর সজ্জা বদলে গেলেও অন্য ধর্মাবলম্বী বাঙালি পরিবারে এ দৃশ্য অবিকল। এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে বাঙালির ঐতিহ্য আর সংস্কৃতির অন্যবদ্য উপাদান।

WYktTwS.jpg


এবারও আসছে জামাইষষ্ঠী। জামাইদের জন্য শাশুড়িরা যেমন কিনবেন উপহার, তেমনি জামাইরাও কিনবেন। তবে এই উপহার দেওয়াটা মূলত জামাই আর শাশুড়ির মধ্যকার হলেও, সেখানে পুরোপুরি সীমাবদ্ধ থাকে না। বরং অন্যদের জন্যও কেনা হয়। তা ছাড়া জামাইকে দিলে মেয়েটাকেই বাদ দেওয়া হয় কীভাবে? আবার অন্যভাবে বললে শ্বশুরকেও তো বাদ দেওয়া হয় না। এর সঙ্গে পরিবারের অন্যরাও থাকেন। আর শ্বাশুড়ি যে কেবল নিজেরই হতে হবে, এমন তো নয়। ফলে উপহার কেনাই হয়।
ফলে উভয় পক্ষই খোঁজেন মানসম্মত পোশাক।

nkxeqTR.jpg


সেই বিষয়টি মাথায় রেখেই বিশ্বরঙ কয়েক বছর ধরেই আয়োজন করছেন জামাইষষ্ঠীর বিশেষ সংগ্রহের। শাড়ি, ধুতি আর পাঞ্জাবিই মূলত থাকে এ আয়োজনে। ধুতির বৈশিষ্ট্য বদল হয়েছে অনেক আগেই। সাদা থেকে বেরিয়ে এসেছে। এখন নানা রঙের, নানা ধরনের কাপড়ের ধুতি পাওয়া যায়। বিশ্বরঙও সেভাবেই তাদের সংগ্রহে ধুতি রেখেছে, বললেন প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার এবং ডিজাইনার বিপ্লব সাহা। জানালেন, আসলে মানুষের মনে সেই আনন্দটা তো নেই। তবু একটা উপলক্ষে কিছুটা হলেও যাতে খুশিটা ফেরে, সেটা ভেবেই তৈরি করা হয়েছে এই সংগ্রহ।

বিশ্বরঙের জামাইষষ্ঠীর সংগ্রহে হালকা কাজের পাঞ্জাবি আর শাড়ি যেমন আছে, তেমনি আছে ভারী কাজেরও। আবার সুতি ও সিল্ক উভয় কাপড়েরই তৈরি করা হয়েছে পোশাক; যাতে ক্রেতারা তাঁদের সামর্থ্য অনুযায়ী কিনতে পারেন।

তিনি আরও বললেন, পূজার সময় যে ক্রেতারা বিশ্বরঙে আসেন, জামাইষষ্ঠীতেও তাঁরা খোঁজেন। মূলত তাঁদের কথা মাথায় রেখেই এই আয়োজন করা হয়। তবে এবার একটু বেশিই ভাবা হয়েছে।

বিশ্বরঙ এবার জামাইষষ্ঠীর পোশাকের আয়োজন ছাড়াই মিউজিক ভিডিও করেছে। সেখানে গানে কণ্ঠ দিয়েছেন হৈমন্তী। জামাইষষ্ঠী নিয়ে একটি গান পশ্চিমবঙ্গে আছে। আর এটা হলো দ্বিতীয় কোনো গান জামাইষষ্ঠী নিয়ে, যোগ করলেন বিপ্লব সাহা।

জামাইষষ্ঠীর আচরিক দিক

জামাইষষ্ঠী একটি লোকায়ত প্রথা। ষষ্ঠীদেবীর পার্বণ থেকে এই প্রথার উদ্ভব। বৈদিক যুগ থেকেই জামাইষষ্ঠী পালিত হয়ে আসছে। প্রতিবছর জ্যৈষ্ঠ মাসের ষষ্ঠী তিথিতে প্রথম প্রহরে ষষ্ঠীপূজার আয়োজন করা হয়। ষষ্ঠীর প্রতিমা কিংবা আঁকা ছবিতে পূজা নিবেদন করা হয়। কেউ কেউ ঘট স্থাপন করেও এই পূজা করে থাকেন।

MU2N77J.jpg


কথিত রয়েছে, একবার এক গৃহবধূ স্বামীর ঘরে নিজে মাছ চুরি করে খেয়ে দোষ দিয়েছিলেন বিড়ালের ওপর। ফলে তাঁর সন্তান হারিয়ে যায়। তাঁর পাপের ফলেই এই ঘটনা ঘটে বলে মনে করা হয়। তখন সেই নারী বনে গিয়ে ষষ্ঠী দেবীর আরাধনা শুরু করেন৷ একসময় দেবী তুষ্ট হন এবং সেই নারী নিজের সন্তান ফিরে পান।

এদিকে মাছ চুরি করে খাওয়ার জন্য শ্বশুর-শাশুড়ি ওই বধূর পিতৃগৃহে যাওয়া বন্ধ করে দেন। এই অবস্থায় মেয়েকে দেখার জন্য ব্যাকুল মা-বাবা একবার ষষ্ঠীপূজার দিন জামাইকে সাদর নিমন্ত্রণ জানান। জামাই ষষ্ঠীপূজার দিনে সস্ত্রীক উপস্থিত হলে আনন্দের বন্যা বয়ে যায় বাড়িতে। ষষ্ঠীপূজা রূপান্তরিত হয় জামাইষষ্ঠীতে।

TSyrMFy.jpg


বাঙালি হিন্দুসমাজে এ উৎসবের সামাজিক গুরুত্ব অনস্বীকার্য। বিশেষত যে পরিবারে সদ্য বিবাহিতা কন্যা রয়েছে, সেই পরিবারে এই পার্বণ ঘটা করে পালন করা হয়। পূজার সময় পরিবারের সবার জন্য নতুন কাপড়, ফলফলাদি, পান-সুপারি, ধান-দূর্বা ও তালের পাখা রাখা হয়। ভক্তরা উপোস থেকে মায়ের পূজা করেন।

জামাইষষ্ঠী কোনো কোনো পরিবারে আবার অমাবুচি হিসেবে পালন করা হয়ে থাকে।
তবে যেটাই হোক না কেন, শেষমেশ পরিণত হয় উৎসবে, উদ্‌যাপনে। হাসি, আড্ডা, গল্পগুজব, খাওয়া-দাওয়া আর উপহার আদান-প্রদানে দিনটা ভরপুর হয়ে ওঠে।

এখানে বলে রাখা ভালো, কেবল আয়োজন নয়, জামাইষষ্ঠীর আনন্দকে বাড়িয়ে দিতে বিশ্বরঙ তাদের সব পণ্যে দিচ্ছে ২০ শতাংশ ছাড়।

ডিজাইন, কনসেপ্ট, ডিরেকশন: বিপ্লব সাহা

হেয়ার অ্যান্ড মেকআপ: পারসোনা

স্টাইলিং: রিজভী হোসেন

ছবি: অনীক চন্দ ও ফাহিম হোসেন
 

Users who are viewing this thread

Back
Top