ডেস্টিনেশন ওয়েডিং বা গন্তব্য বিয়ের অনুষ্ঠান পরিচিত জায়গার বাইরে হওয়ায় সবকিছুতেই লাগে বাড়তি প্রস্তুতি বা মনোযোগ। কাজগুলো এখানে সময় থাকতেই করে ফেলতে হবে, শেষ মুহুর্তে গিয়ে পড়তে হবে না বিপদে।
ডেস্টিনেশন ওয়েডিং বা গন্তব্য বিয়ের ধারণাটি এখন বেশ জনপ্রিয়। ছোট কিন্তু আন্তরিক, এই ধারণার আদর্শ উদাহরণ হতে পারে গন্তব্য বিয়ে। এ ধরনের বিয়ের স্থান হতে পারে নিজের দেশের বাড়ির উঠান কিংবা অচেনা কোনো শহরে। খুব কাছের মানুষদের সঙ্গেই উদ্যাপিত হয় জীবনের নতুন গল্পের। এ ধরনের বিয়েতে খুব বেশি জাঁকজমকের চেয়ে আনন্দে সময় কাটানোই যেন মুখ্য। তবে চাইলে জমকালোভাবেও আয়োজন করতে পারবেন। ছোট-বড় বিষয়গুলো প্রথম থেকেই চিন্তায় রাখুন। যতটা সম্ভব গুছিয়ে নিন নিজেকে। তাহলেই অনুষ্ঠানের দিনটি স্মরণীয় হয়ে থাকবে আপনার ও প্রিয়জনদের কাছে।
এ রকম বিয়েতে ইচ্ছেমতো সাজানো যায়
সহজেই পৌঁছাতে পারবেন সবাই, এমন গন্তব্য বেছে নেওয়া ভালো। এ ছাড়া অনুষ্ঠান চলার সময়ে অন্যান্য ঝামেলা এড়ানো যাবে সহজে।
পোশাক সঙ্গে বহন করুন। চেষ্টা করুন পোশাকটি যতটা সম্ভব যত্ন করে বহন করা যায়।
অতিথিদের জন্য বিয়ের একটি ফেসবুক পেজ বা ইভেন্ট তৈরি করুন। যেখানে অনুষ্ঠানের বিশেষ নিয়ম বা সূচি, খাবার মেন্যু ইত্যাদি মজা করে তুলে ধরতে পারেন।
অতিথিদের জন্য স্থানীয় উপহারের সন্ধান করুন। অতিথিদের দেওয়ার জন্য সেই এলাকার বিশেষ কিছু খুঁজে ওয়েলকাম বাস্কেট বা অভ্যর্থনা ঝুড়িতে যুক্ত করুন।
স্থানীয় ফুল ব্যবহারে আসবে ভিন্নতা
আপনি আপনার গন্তব্য নির্বাচন করার আগে বিয়ের প্রয়োজনীয় বিষয় নিয়ে গবেষণা করুন। প্রতিটি দেশ, এলাকার নিজস্ব কিছু নিয়ম রয়েছে। সময় সময় এগুলো পরিবর্তিত হতে পারে। এ সম্পর্কে সচেতন থাকা ভালো।
ডায়েরিতে প্রথম থেকেই নোট নিয়ে রাখুন। না হলে অনেক কিছু ভুলে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে হুড়োহুড়িতে।
অনুষ্ঠানে যদি ছোট শিশুদের অংশগ্রহণ থাকে, তাহলে তাদের খাওয়ার পদগুলোও মেন্যুতে রাখুন।
চেষ্টা করুন কাজ ভাগ করে দেওয়ার। যাঁদের বিয়ে তাঁদের ওপর সব দায়িত্ব থাকলে চাপ বেশি পড়ে যাবে। সম্ভব হলে পেশাদার বিয়ের পরিকল্পনাকারী ভাড়া করুন।
স্বাগত বোর্ড থাকতে পারে দোড়গোড়ায়
একজন পেশাদার আলোকচিত্রী নিয়োগ করুন। এই ছবিগুলোই পরবর্তী সময়ে একমাত্র স্পর্শযোগ্য জিনিসগুলোর মধ্যে একটি হবে।
চেষ্টা করুন বিয়ের আগে জায়গাটি একবার ঘুরে আসতে। ওয়েবসাইটের ছবি দেখে অনেক কিছু অনুমান করা যায় না।
ছাড়ের বিষয়ে আলোচনা করতে পারেন কি না, তা জানতে হোটেলগুলোতে কল করুন। বেশি ঘর বুকিং দিলে অনেক সময় ছাড় পাওয়া যায়। তবে অতিথি থাকাকালে হোটেল থেকে প্রয়োজনীয় কোন কোন জিনিসগুলো দেওয়া হবে বা পাওয়া যাবে, সে বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করে নিতে হবে। সাধারণত গন্তব্য বিয়েতে অতিথিদের থাকার ব্যবস্থা করে বর-বধূর পরিবারই। তবে অতিথিরা নিজস্ব খরচে অনুষ্ঠানে উপস্থিত হন। মাঝেমধ্যে অতিথিদের নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থাও থাকে। তবে এ বিষয়গুলো সম্পর্কে অতিথিদের আগে থেকেই পরিষ্কার ধারণা দিয়ে দিতে হবে।
আবহাওয়ার বিষয়টিও মাথায় রাখা উচিত। অতিরিক্ত, রোদ, গরম বা ঠান্ডা অনুষ্ঠানে ব্যাঘাত ঘটাতে পারে। যে অঞ্চলে যাচ্ছেন, সেই এলাকার আবহাওয়ার বিষয়ে আগে থেকেই খবর নিন। সেইমতো বিয়ের পোশাক বেছে নিতে উৎসাহ দিন অতিথিদের।
বিয়ের স্থান সাজানোর ক্ষেত্রে স্থানীয় ব্যক্তিদের সহায়তা নিন। স্থানীয়ভাবে সহজলভ্য সেসব জিনিসের ওপর নির্ভর করেও সাজাতে পারেন। খুব বিশেষ কোনো উপকরণ হলে সেটা বহন করে নিয়ে আসুন।
ছোট ছোট জিনিস নিয়ে বেশি মাথা ঘামাবেন না। অচেনা জায়গায় বিয়ের অনুষ্ঠানে অনেক কিছুই ভুল হতে পারে।
আমন্ত্রণপত্র ২-৩ মাস আগেই পাঠাবেন। যেহেতু নিজস্ব শহরের বাইরে গিয়ে অনুষ্ঠানে অংশ নিতে হবে, পরিকল্পনা করার সময় প্রয়োজন অতিরিক্ত সময়। পরিবার এবং বন্ধুবান্ধবদের কমপক্ষে ৩ মাসের নোটিশ পাওয়া উচিত, যাতে তাঁরা তাঁদের থাকার জায়গা নির্বাচন করতে পারেন, কর্মক্ষেত্রে ছুটির আবেদন করতে পারেন। ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট দলেরও পরিকল্পনা করার জন্য এবং ভ্রমণের সব ধরনের সমস্যা সমাধানের জন্য ব্যবস্থা নিতে হবে।
অতিথিদের মানচিত্র এবং দিকনির্দেশের সঙ্গে আমন্ত্রণের বাইরে লিখিত চিঠিপত্র সরবরাহ করে ভ্রমণটিকে সহজ করুন।
খাবার পরিবেশনে ফুলের ছোঁয়া, ভিন্নভাবে