What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

চায়ের সামাজিক ও বাণিজ্যিক বিস্তারে নারী (1 Viewer)

Bergamo

Forum God
Elite Leader
Joined
Mar 2, 2018
Threads
9,649
Messages
117,051
Credits
1,241,096
Glasses sunglasses
Berry Tart
Statue Of Liberty
Profile Music
Sandwich
9NKYwPQ.jpg


'চা' ছাড়া একটা দিন কাটানো অনেকের কাছেই অসম্ভব। হাজার বছর ধরে নানা জাতি-বর্ণের মানুষের হাত ঘুরে, বহু ঐতিহাসিক ঘটনার জন্ম দিয়ে চা আধুনিক সময়ের অন্যতম প্রধান সামাজিক পানীয়র মর্যাদা লাভ করেছে। সামাজিকভাবে চায়ের প্রতিষ্ঠা লাভের পেছনের গল্প বলতে গেলে কয়েকজন নারীর অবদান অনস্বীকার্য। না বলা এমনই কয়েকজন নারীর গল্প।

ঐতিহাসিকদের মতে, চায়ের জন্ম চীনে। সে–ও খ্রিষ্টপূর্ব দ্বিতীয় শতকে। চীনের প্রচীনতম রাজ্য শ্যাং ডাইনেস্টির সময়ে। বর্তমানে যা ইউনান প্রদেশ নামে পরিচিত। যদিও বলা হয় চায়ের ইতিহাস কয়েক হাজার বছর পুরোনো এবং বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক গোলকধাঁধার আবর্তে জর্জরিত। তবুও অনেক ঐতিহাসিক মনে করেন, সেই সময় থেকেই চীনের দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের মানুষ বিশেষ এই পানীয় ওষুধ ও জীবনীবর্ধক হিসেবে পান করতেন। এর স্বাদ, গন্ধ ও গুণের কারণে খ্রিষ্টপূর্ব পঞ্চম শতকে এই পানীয় চীন থেকে জাপান, জাপান থেকে কোরিয়া, কোরিয়া থেকে ভিয়েতনাম। ধীরে ধীরে ছড়িয়ে পড়ে এশিয়া মহাদেশজুড়ে। একটি দেশের মানচিত্র ছাপিয়ে চা চাষ শুরু হয় পার্শ্ববর্তী দেশগুলোয়। সেই সঙ্গে চায়ের সংগ্রহ ও সংরক্ষণেও আসে নতুনত্ব। তবে ইউরোপে চা পরিচিতি পায় এরও অনেক পরে। ১৫৫৫ সালে ইতালিয়ান পর্যটক জিওভান্নি বাতিস্তা রামুসিও তাঁর 'ভয়েজেস অ্যান্ড ট্রাভেলস' বইয়ের মাধ্যমে ইউরোপিয়ানদের কাছে চায়ের বার্তা পৌঁছে দেন। ১৫৬০ সালে পর্তুগিজ মিশনারি গ্যাসপার দ্য ক্রজ বিশদভাবে চায়ের কথা লেখেন তাঁর চীন ভ্রমণের ট্রাভেলগে।

V1RpyZm.jpg


বাণিজ্যিকভাবে ইউরোপে চায়ের বিস্তার ঘটে ওলন্দাজ ব্যবসায়িকদের সংগঠন ডাচ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির মাধ্যমে। ১৬০৯ সালের দিকে তারা জাপানের হিরাদো থেকে বর্তমান নেদারল্যান্ডসে প্রথমবারের মতো পরীক্ষামূলকভাবে চা রপ্তানি করে। বলা চলে, ওলন্দাজরাই ফ্যাশনেবল ড্রিংকস হিসেবে চা ফ্রান্স, জার্মানি ও আমেরিকায় পৌঁছে দেয়। যদিও পরবর্তী কয়েক বছরের মধ্যে চা বাণিজ্য দখল করে নেয় ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি। এর সঙ্গেই শুরু হয় চায়ের বিশ্ব ভ্রমণ।

ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি চা বাণিজ্যে নাম লেখালেও ইংল্যান্ডে চা জনপ্রিয় হতে আরও কিছুটা সময় প্রয়োজন হয়। সপ্তদশ শতকের মাঝামাঝি সময়ে ইংল্যান্ডের মানুষের দৈনন্দিন জীবনযাপনে চা জনপ্রিয় হতে শুরু করে একজন নারীর কল্যাণে। তিনি হলেন ব্রিটেনের রাজা ২য় চার্লসের (১৬৬০-১৬৮৫) স্ত্রী রানি ক্যাথরিন অব ব্রাগাঞ্জা (১৬৬২-১৬৮৫)। ক্যাথরিন ছিলেন পর্তুগালের রাজা জন অষ্টম ডিউকের মেয়ে। ২য় চার্লসের সঙ্গে বিয়ের পর ইংল্যান্ডে এসে কুইন কনসোর্ট অব ইংল্যান্ডের সদস্য হয়ে রানি খেতাব লাভ করেন তিনি।

c69xLQ0.jpg


ক্যাথরিন অব ব্রাগাঞ্জা

অপর দিকে ডাচ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সুবাদে পর্তুগিজদের মধ্যে চায়ের প্রচলন ঘটে ইংল্যান্ডের আগেই। ফলে ক্যাথরিন ইংল্যান্ডে আসার সময় চায়ের অভ্যাসটাও সঙ্গে করে নিয়ে আসেন। চা তাঁর এতই পছন্দের পানীয় ছিল যে ব্রিটিশ রয়্যাল কোর্টে যাওয়ার সময়ও তিনি চায়ের পেয়ালা সঙ্গে রাখতেন এবং রাজকার্য চলাকালেও চা পান করতেন। রানির পছন্দ যখন চা, তখন কী আর করা, ব্যাপকভাবে চা আমদানি শুরু করল ইংল্যান্ড। ফলে চা শুধু রাজদরবারে সীমাবদ্ধ না থেকে জনসাধারণের মাঝেও বিস্তার লাভ করে অল্প সময়ের ব্যবধানে। সুতরাং বলা বাহুল্য যে ক্যাথরিন তথা একজন নারী-ই ইংল্যান্ডের মানুষের চা পানের অভ্যাস তৈরি করে দেন।

সেই সময় ইউরোপের আরেক প্রভাবশালী দেশ ফ্রান্সেও চায়ের প্রচলন ঘটে ১৬৩৬ সালের দিকে। ইংল্যান্ডে চায়ের প্রচলন ঘটার প্রায় ২৫ বছর আগে। ওলন্দাজদের হাত ধরে। ফরাসিদের মাঝে চা জনপ্রিয় করে তুলতেও একজন নারীর ভূমিকা অনস্বীকার্য। তিনি তৎকালীন ফরাসি যুবরাজ ষোড়শ লুইয়ের স্ত্রী রানি ম্যারি অ্যান্তিনেত। ষোড়শ লুইয়ের পরবর্তী সময়ে সম্রাটের মুকুটও পরেছিলেন। তাঁদের দুজনেরই ভীষণ প্রিয় পানীয় ছিল চা। সে সময় চলছিল 'দ্য সান কিং' হিসেবে খ্যাত ফরাসি সম্রাট চতুর্দশ লুইয়ের রাজত্ব এবং তিনি বাতব্যথার রোগী ছিলেন। তাঁর ধারণা ছিল চা গেঁটেবাতের উপশম করে। এ জন্য তিনি প্রতিদিন প্রায় ৪০ কাপের মতো চা পান করতেন। সম্রাটের অনুসরণে সে সময়ের ফরাসি উচ্চবিত্ত ও অভিজাত পরিবারগুলোতে চা বেশ জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।

hNUu1BU.jpg


ইউরোপের মানুষকে দুধ চায়ের স্বাদ দেন মাদাম দে লা সাবলিয়ে

ইউরোপের মানুষের কাছে চায়ের লিকারে দুধ মিশিয়ে 'মিল্ক টি' বা দুধ চায়ের পরিচিতিও ঘটে একজন ফরাসি নারীর হাত ধরে। তাঁর নাম ম্যাডাম দে লা সাবলিয়ে। বলা হয় তিনি অনন্য গুণের অধিকারী ছিলেন। ১৬৮০ সালে ম্যাডাম দে লা সাবলিরে নিজ উদ্যোগে গড়ে তোলেন নারীদের আড্ডাখানা 'প্যারিস স্যালুন'। যা পরবর্তী সময়ে বেশ খ্যাতি লাভ করে। তিনিই প্রথম চায়ের সঙ্গে দুধ মিশিয়ে আগত অতিথিদের পরিবেশন করেন, যা চায়ের স্বাদে নতুনত্ব যোগ করে। নতুন স্বাদের এই চা দ্রুতই ইউরোপজুড়ে ছড়িয়ে যায়।

রাশিয়ান সাম্রাজ্যে চায়ের বিস্তার ঘটানোর মূল কারিগরও কিন্তু একজন নারী। তিনি রাশিয়ান সম্রাজ্ঞী এলিজাবেথ পেত্রনোভা বা এলিজাবেথ অব রাশিয়া। তাঁর শাসনামল ছিল ১৭৪১ সাল থেকে ১৭৬২ সাল পর্যন্ত। বলা হয় বেশ কঠোর হাতেই তিনি সামলেছেন রাজকার্য। চীনের সঙ্গে বাণিজ্য যোগাযোগ স্থাপনে রাশিয়ার চেষ্টা ছিল এলিজাবেথেরও প্রায় এক শ বছর আগে থেকে। এলিজাবেথ পেত্রনোভা যখন সিংহাসনে অধিষ্ঠিত হন, তখন তাঁর বৈদেশিক বাণিজ্য নীতির কারণে এই পথ খুলে যায়। অবশেষে প্রাথমিকভাবে চীন থেকে রাশিয়ায় আসে চা এবং সম্রাজ্ঞী এলিজাবেথ পেত্রনোভা নিজে চা পান করতে পছন্দ করতেন এবং রাজসভায়ও পরিবেশন করা হতো চা। পরবর্তী সময়ে অন্যান্য দেশের মতো রাশিয়ার মানুষও বেশ সাদরেই গ্রহণ করে নেয় চা নামের এই অতুলনীয় পানীয়।

dnTKHkQ.jpg


রাশিয়ান সম্রাজ্ঞী এলিজাবেথ পেত্রনোভা

বাণিজ্য লক্ষ্মীর কল্যাণে হরেক রকম চা এখন প্যাকেটজাত হয়ে চলে আসে আমাদের ঘরে। কিন্তু শুনে হয়তো অবাকই হবেন, এই চা-বাণিজ্যের পেছনে কালে কালে বিশ্বজুড়ে বেশ কয়েকজন নারীর অবদান প্রায় অনালোচিতই থেকে যায়। তাঁরা কে ছিলেন, কীভাবে চা-বাণিজ্যে এতটা অবদান রাখলেন। ইতিহাসের নানা গলিঘুঁজি ঘুরলেই পাওয়া যাবে এমন অনেক তথ্য।

নারী চা ব্যবসায়ীদের তালিকায় প্রথমেই চলে আসে ইংল্যান্ডের ম্যারি তুকেসের নাম। ১৬৯৫ সালে ইয়র্কশায়ারে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। মাত্র ২৮ বছর বয়সে বাবা–মায়ের মৃত্যুর পর, পরিবারের বড় সন্তান হিসেবে ভাইবোনসহ সবার দায়িত্ব চাপে তাঁর কাঁধে। একজন নারী হিসেবে সময়টা ছিল বেশ কঠিন। কারণ, আঠারো শ শতকে যখন নারী স্বাধীনতা বলে কিছু ছিল না। এবং সে সময় নারীরা নিজ নামে কোনো সম্পত্তি বা প্রতিষ্ঠান রাখতে পারতেন না। ম্যারি এমন সময় ১৭২৫ সালে আয়ের পথ হিসেবে ইয়র্কশায়ারের ওয়ালম্গেট এলাকায় একটি মুদিদোকান শুরু করেন। দোকানে তিনি নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের পাশাপাশি চা বিক্রি শুরু করেন।

রাতারাতি তাঁর দোকানটি জনপ্রিয়তাও পায়। কিন্তু বাদ সাধে সেখানকার আইন। তখন ইয়র্কশায়ারের 'সোসাইটি অব মার্চেন্ট অ্যাডভেঞ্চার'-এর সদস্য ব্যতীত অন্য কারও ব্যবসা করার অনুমতি ছিল না। ব্যবসার ছাড়পত্র নেই তার ওপর ব্যবসা করছে একজন নারী, বিষয়টা মেনে নিতে পারেনি কেউ। নানামুখী হুমকির পাশাপাশি জেল-জরিমানার শাস্তি বরণ করতে হয় তাঁকে। এসবের মধ্য দিয়েও আট বছর তিনি দোকান চালিয়ে যান এবং অবশেষে জরিমানা প্রদান করে ব্যবসার অনুমতি পান। ইতিমধ্যে ম্যারির চা ব্যবসা বেশ প্রসার লাভ করে। চায়ের সঙ্গে চকলেট বানিয়েও বিক্রি করতে থাকেন। তাঁর প্রতিষ্ঠানের চা ও চকলেটের সুনাম ছড়িয়ে পড়ে চারদিকে। ইয়র্কশায়ারে তাঁকে অনুসরণ করে অনেকেই চা এবং চকলেট ব্যবসায়ে নাম লেখান পরবর্তী সময়ে।

ম্যারি তুকেসের সাফল্যের কয়েক দশক পর চা ব্যবসায় সাফল্য দেখান ইংল্যান্ডের আরেক নারী, ম্যারি লিটল টু্ইনিং। তিনি ছিলেন ব্রিটেনের প্রাচীনতম এবং বর্তমান সময়ের অন্যতম চা আমদানি-রপ্তানি ও প্রক্রিয়াজাতকারী ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান টু্ইনিংসের প্রতিষ্ঠাতা থমাস টিটু্ইনিংয়ের ছেলে ড্যানিয়েল টু্ইনিংয়ের স্ত্রী। সাধারণ ব্রিটিশদের কাছে চা সহজলভ্য ও জনপ্রিয় করে তুলতে টু্ইনিংসের ভূমিকার কথা স্বীকার করতেই হয়। ১৭০৬ সালে যাত্রা শুরু করা প্রতিষ্ঠানটি, থমাস ও ড্যানিয়েল টু্ইনিংয়ের কল্যাণে বেশ বড় আকারই ধারণ করে। ১৭৬২ সালে ড্যানিয়েল টিউইনিংয়ের মৃত্যুর পর ব্যবসার হাল ধরেন ম্যারি টুইনিং। ইংল্যান্ড তথা পুরো ইউরোপেই চা ব্যবসা যখন তুঙ্গে, ওই সময় ম্যারি টুইনিং ১৭৮৩ পর্যন্ত টানা ২১ বছর সাফল্যের সঙ্গে টু্ইনিংয়ের ব্যবসায়িক দায়িত্ব পালন করে যান।

rrNi7lX.jpg


টুইনিং হাউস

আঠারো শ শতকে যখন ইউরোপ তথা ব্রিটেনে ম্যারি তুকেস আর ম্যারি টু্ইনিং চা ব্যবসায় সফল, তখন ঊনবিংশ শতকের মাঝামাঝি এশিয়া তথা জাপানের নারী ব্যবসায়ী আওরা কেই চা ব্যবসায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন অনেন। ইউরোপের বাজারে প্রথম জাপান থেকে চা রপ্তানি করেন তিনি। তবুও বহির্বিশ্বের সঙ্গে চা বাণিজ্যে জাপান তেমন আগ্রহী হয়নি। স্থানীয় চাষিদের উৎপাদিত বিভিন্ন ধরনের চা নিজ দায়িত্বে কিনে নিয়ে যেতেন অন্য দেশের ব্যবসায়ীরা। চা উৎপাদন ও রপ্তানিকে জাপানে বাণিজ্যিক শিল্প হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেন আওরা কেই। জাপানের নাগাসাকির এক ধনাঢ্য তেল ব্যবসায়ী পরিবারের মেয়ে আওরা।

সে হিসেবে ছেলেবেলা থেকেই ব্যবসায়িক আবহে বড় হয়ে ওঠেন। নিজে নিজে কিছু করতে চান বলেই মাত্র ২৫ বছর বয়সে ১৮৫৩ সালে তিনি জাপানে ব্যবসার কাজে আসেন। পরে তিনি এক ওলন্দাজ ব্যবসায়ীর মাধ্যমে স্থানীয় বিশেষায়িত 'উরেসিনো-চা' তথা 'গ্রিন টি'র কিছু নমুনা ইংল্যান্ড, আমেরিকা ও মধ্যপ্রাচ্যে পাঠান। এর তিন বছর পর এক ব্রিটিশ ব্যবসায়ী কয়েক টন গ্রিন টির অর্ডার দেন। অল্প দিনের মধ্যেই মোট ৭২ টন চায়ের অর্ডার পান তিনি। কিন্তু সে সময় পুরো নাগাসাকিতে ৬ টনের বেশি চা উৎপাদিত হতো না। হঠাৎ করে গ্রিন টির কদর বেড়ে যাওয়ায় সাধারণ চাষিরা উৎসাহী হয়ে ওঠেন এবং অল্প সময়ের ব্যবধানে বেশ কয়েকটি চা ফ্যাক্টরি গড়ে ওঠে সেখানে। জাপান সরকারও অনেকটা বাধ্য হয়েই মুক্ত বাণিজ্যের পথে হাটে।

আঠারো শ শতকে ব্রিটেনের কাছ থেকে স্বাধীনতা ছিনিয়ে নিতে কয়েক দশকের আমেরিকান রেগুলেশন চায়ের প্রভাব ছিল দীর্ঘমেয়াদি। ব্রিটিশদের টি-অ্যাক্ট আইন ও নানা অন্যায় বাণিজ্যিক কর আরোপের প্রতিবাদে ১৭৭৩ সালে ইস্ট-ইন্ডিয়া কোম্পানির ৯২ হাজার টন চা–পাতা ধ্বংস করে দেয় বোস্টনের কিছু প্রতিবাদী মানুষ, যা ইতিহাসে 'বোস্টন টি-পার্টি' নামে পরিচিত। ওই সময়ের এক নারী অ্যাকটিভিস্ট পেনেলোপি বার্কার। ব্রিটিশ পণ্য বর্জনে নারীদের সচেতন করতে ১৭৭৪ সালের অক্টোবর মাসের ২৫ তারিখে 'এডিটন টি পার্টি' এক সভার আয়াজন করে এবং সেখান থেকে এক প্রতিবাদলিপি পাঠানো হয় ব্রিটেনের রাজদরবারে। সেই সময়ের পুরুষশাসিত সমাজে নারীদের এই যৌথ প্রতিবাদ পুরো আমেরিকা ও ব্রিটেনে বেশ আলোড়ন তোলে।

diRkkPF.jpg


প্রতিবাদী নারী পেনেলোপি বার্কার

মার্কিনদের কাছে পেনেলোপি হয়ে ওঠেন আলোচিত এক নাম। আমেরিকান বিপ্লবে 'এডিটন টি পার্টি' ও পেনেলোপি বার্কারের দেখানো পথেই অর্জিত হয় আমেরিকার নারী স্বাধীনতা। সমঅধিকার সর্বোপরি নারীদের ভোটাধিকারের দাবিতে দীর্ঘ ৫০ বছর ধরে প্রায় একক আন্দোলন চালিয়ে যান এলিজাবেথ কেডিস্ট্যানটন। ঊনবিংশ শতাব্দীর মধ্যভাগে শুরু হয় তাঁর এই প্রচেষ্টা। নারী স্বাধীনতার পক্ষে সচেতনতা তৈরিতে তিনি নারীদের নিয়ে চা-চক্র আয়োজন করতেন। সমাজে নারীদের অবস্থান, অধিকার, ভোটাধিকারসহ নানা বিষয়ে তিনি কথা বলতেন। একটা সময় এমন হয়, এলিজাবেথ কেডিস্ট্যানটনকে তাঁর তিন পায়ার চাকাওয়ালা চায়ের টেবিলের মাধ্যমে সিম্বলাইজ করা হতো।

সামাজিকভাবে চায়ের কদর বাড়িয়ে তুলতে আরেকজন নারীর নাম উল্লেখ করতেই হয়। তিনি হলেন অ্যানা মারিয়া রাসেল, ডাচেস অব বেডফোর্ড। রানি ভিক্টোরিয়ার ঘনিষ্ঠজন আনা মারিয়া। ব্রিটেনের মানুষদের খাদ্যাভ্যাসে দারুণ পরিবর্তন আনেন 'আফটার নুন টি' তথা বিকেলের নাশতা প্রথা চালু করার মাধ্যমে। লাঞ্চ ও ডিনারের মধ্যভাগে বিকেলের সময় কিছু খাবার তেমন চল ছিল না। কেক কিংবা হালকা নাশতাসহ চায়ের মাধ্যমে 'আফটার নুন টি' তথা বিকেলের নাশতা চালু করেন। ব্রিটিশ সমাজে তো বটেই ধীরে ধীরে এই রীতি ছড়িয়ে পড়ে বিশ্বজুড়ে।

3KwAmcF.jpg


অ্যানা মারিয়া রাসেল, ডাচেস অব বেডফোর্ড

ঊনবিংশ শতকের শেষ ভাগে স্কটিশ নারী ক্যাথরিন কারন্সটন বা মিস কারন্সটন স্বল্প পরিসরে বাণিজ্যিকভাবে সাধারণের চা খাওয়ার বাসনা মেটাতে একটি টি-রুম কিংবা চায়ের দোকান স্থাপন করেন। ১৮৭৮ সালে স্কটল্যান্ডের গ্লাসগোতে আরগাইল স্ট্রিটে ' মিস কারন্সটন'স টি রুমস' নামের এই চা ঘর অল্প সময়ের মধ্যে বেশ সাড়া ফেলে। প্রচলিত রেস্টুরেন্ট ধারণার বাইরে গিয়ে তিনি স্বল্প মূল্যে চায়ের সঙ্গে নাশতার ব্যবস্থাও রাখেন, যা ছিল সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে। স্কটিশদের মধ্যে চায়ের নেশা ধরাতে ক্যাথরিনের এই সাফল্যের সত্যিই কোনো জুড়ি ছিল না।

* মো. আবদুল্যা আল মামুন | ছবি: উইকিপিডিয়া
 
These are the rules that are to be followed throughout the entire site. Please ensure you follow them when you post. Those who violate the rules may be punished including possibly having their account suspended.

যারা কমেন্ট করবেন, দয়া করে বানান ঠিক রাখুন। উত্তেজিত অবস্থায় দ্রুত কমেন্ট করতে গিয়ে বানান ভুল করবেন না। আমরা যারা কমেন্ট পড়তে আসি, আমাদের কমেন্ট পড়তে অনেক অসুবিধা হয়।

Users who are viewing this thread

Back
Top