What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

Other হঠাৎ বিয়ে সেরেই লন্ডন উড়াল দিয়েছিলেন তাঁরা (1 Viewer)

3TkcM3Q.jpg


১৯৭৩ সাল। 'জাঞ্জির' হিট। বন্ধুদের সঙ্গে লন্ডন যাওয়ার উদ্যোগ নিলেন অমিতাভ বচ্চন। বাবা হরিবংশ রাই বচ্চন বললেন, 'কারা যাচ্ছ?' অমিতাভ জানালেন বন্ধুদের নাম। সেখানে আছেন জয়া ভাদুড়ী। হরিবংশ অমিতাভের দিকে তাকালেন। বললেন, 'আগে ওকে বিয়ে করো। তারপর ঘুরতে যাও।'

SPJUq56.jpg


বিয়ের আসরে অমিতাভ ও জয়া, ইনস্টাগ্রাম

তারপর কী হলো বোঝাই যাচ্ছে। 'জাঞ্জির' মুক্তি পায় মে মাসে। অমিতাভ ও জয়া বিয়ে করেছেন ৩ জুন। গত বছর বিবাহবার্ষিকীতে 'আচানক বিয়ে' নিয়ে নিজের ব্লগে লিখেছিলেন অমিতাভ। সেখানে লিখেছিলেন, 'আমিও বাধ্য ছেলের মতো বাবুজির কথা মেনে নিলাম।' অর্থাৎ বিয়েটা সেরেই লন্ডন উড়াল দিয়েছিলেন তাঁরা।

দুজনের যৌথ সংসারের ৪৮ বছর। অর্ধশতক হতে মাত্র দুই বছর বাকি। সংসারে এসেছে ছেলে, মেয়ে, জামাই, পুত্রবধূ। কলকাকলিতে মুখর করে রাখে নাতি-নাতনি। সংসারজুড়ে যেন সুখের পায়রা ওড়ে। তবে ৪৮ বছরের যাত্রায় তো কম ঝড় আসেনি। এটা সবার জানা, অমিতাভ–জয়ার জীবনে আচমকাই একটি নাম ঢুকে পড়ে! অনাবশ্যক জড়িয়ে থাকে। রেখা। ত্রিকোণ প্রেমের পরাজিত নায়িকা। তাঁকে নিয়ে বলা যাবে আরেক দিন। আজ হোক কেবল অমিতাভ-জয়া।

2vaViEr.jpg


অমিতাভ বচ্চন ও জয়া বচ্চন, ইনস্টগ্রাম

দম্পতি হিসেবে তাঁরা তুমুল জনপ্রিয়। জুটি হিসেবেও ছিলেন তুঙ্গে। 'বংশী বিরজু', 'এক নজর', 'জাঞ্জির', 'অভিমান', 'মিলি', 'চুপকে চুপকে', 'শোলে', 'সিলসিলা' ও 'কাভি খুশি কাভি গাম'—এই জুটির জনপ্রিয় সিনেমার তালিকা বেশ বড়। সিনেমার সেটে দেখাদেখি, তারপর ভালো লাগা, ভালোবাসা। অতঃপর সংসার। জয়া এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন 'গুড্ডি' সিনেমার সেটে দেখা হয় তাঁদের। অমিতাভ সেই ছবিতে ছিলেন অতিথি চরিত্রে।

'এক নজর'-এ প্রেম

যদিও বলা হয় এই প্রেমের শুরু জয়ার 'লাভ অ্যাট ফার্স্ট সাইট' থেকে। তবে অনেকে বলেন, প্রথম দেখায় ভালোবাসা বলতে কিছু ছিল না। জয়া ছিলেন অসম্ভব মেধাবী ও বুদ্ধিমতী। তিনি আঁচ করতে পেরেছিলেন। এই তরুণ একদিন বলিউডের 'ব্যানার' হবেন। তাই ভালো লাগাকে ভালোবাসায় পরিণত করতে দেরি করেননি।

xdJjiD2.jpg


এই ছবিটি দিয়ে বিবাহবার্ষিকীতে পোস্ট দিয়েছেন অমিতাভ বচ্চন

তাঁদের প্রেমের শুরু 'এক নজর' ছবি থেকে। পরস্পর পরিচিত হয়েছিলেন 'গুড্ডি' ছবির সেটে। জয়া বচ্চনকে এক সাক্ষাৎকারে অমিতাভের সঙ্গে প্রথম দেখার স্মৃতিচারাঁ করতে বলা হয়েছিল। তিনি বলেছিলেন, 'আমি তাঁর সঙ্গে পরিচিত হই "গুড্ডি" ছবির সেটে। তাঁকে দেখে ভালো লাগে। হরিবংশ রাইয়ের ছেলেকে দেখছি বলে, কিছুটা রোমাঞ্চিতও ছিলাম। মনে হয়েছিল সে ভিন্ন ধরনের। যদিও এ কথা শুনে সবাই হেসে ফেলে। আমি মনের কথাই বলেছিলাম। বলেছিলাম, সে বড় কিছু একট ঘটাবে। আমি বুঝতে পেরেছিলাম যে সে তথাকথিত নায়ক নন। এরপর আমি দ্রুতই তাঁর প্রেমে পড়ি।'

আচানক এক অনাড়ম্বর বিয়ে

গত বিবাহবার্ষিকীতে অমিতাভ বচ্চন তাঁর ব্লগে স্মৃতিচারণা করেছিলেন এভাবে। 'একটা ভাড়াবাড়িতে সাত নম্বর রোডে থাকি। আমাদের মধ্যে বিয়ের সিদ্ধান্ত হলো। কোনো অতিরঞ্জিত ব্যাপার নেই, কোনো উদ্‌যাপন নেই। শুধু দুই পরিবার একত্র হলো আর বিয়েটা হয়ে গেল। আমরা অপেক্ষায় লন্ডন যাওয়ার। আমার ও তাঁর এটাই প্রথম সফর। "জাঞ্জির" ছবিটি ব্যাপক সফল হয়। আমাদের একটা প্রতিজ্ঞা ছিল। ছবিটি যদি হিট হয় তবে বন্ধুরা সবাই মিলে লন্ডনে ছুটি কাটাতে যাব!'

sj2g64B.jpg


'চুপকে চুপকে' সিনেমাতে অমিতাভ বচ্চন ও জয়া বচ্চন, ইনস্টাগ্রাম

বিগ বি আরও লেখেন, 'আমাদের এই যাওয়ার খবর জেনে গেলেন বাবুজি। বাবুজি জানতে চাইলেন কারা আছে? বন্ধুদের নাম বলা হলো। তিনি দেখলেন জয়াও আছে। তিনি বললেন, জয়াও তোমার সঙ্গে যাচ্ছে। তোমরা দুজনই একা! আগে ওকে বিয়ে করো। তারপর ঘুরতে যাও। পণ্ডিত মশাই প্রস্তুত, পরিবারকেও বলা হলো। আগামী দিনের শিডিউল সব রেডি। রাতে ফ্লাইট। তার আগে বিয়ের কাজ–কারবার সারা হলো। আমি ভারতীয় বিয়ের ফরমাল পোশাক পরলাম, গাড়িতে উঠলাম। মালাবার হিলে এলাম। সেখানে তাঁর বন্ধুরা থাকে, বিয়ের অনুষ্ঠান ওখানেই। আমি ড্রাইভ করতে চেয়েছিলাম, কিন্তু আমার গাড়িচালক নাগেশ আমাকে ঠেলে অন্য সিটে পাঠাল।' বলল, 'তিনি নাকি আমাকে ড্রাইভ করে বিয়েতে নিয়ে যাবেন। গাড়িই ছিল নতুন বরের ঘোড়া! পৌঁছানোর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই বিয়ে সম্পন্ন।'

বিয়ের পরে অভিনয় ছেড়ে দিলেন জয়া

জয়া ভাদুড়ি নয়, এখন তিনি জয়া বচ্চন। বিয়ের পরে বেশ কয়েক বছর অভিনয় করেন জয়া। তারপর সিদ্ধান্ত নেন, নিয়মিত আর অভিনয় নয়। সংসার সামলাবেন তিনি। সন্তানদের বড় করে তুলতে জয়া কাঁধে তুলে নেন সংসারের ভার। এই বিষয়ে অমিতাভ একবার বলেছিলেন, 'প্রতিটা বিয়েই একটা চ্যালেঞ্জ। আমার বিয়েও তার ব্যতিক্রম ছিল না। জয়াকে একটা বিষয়ে আমি শ্রদ্ধা জানাই, সে ঘরকে বেছে নিয়েছে, সিনেমা নয়। আমি তাঁকে চাপিয়ে দিইনি, এটা ছিল তাঁর সিদ্ধান্ত।'

QwZVRQT.jpg


অমিতাভ বচ্চন, জয়া বচ্চন, ঐশ্বরিয়া, আরাধ্য ও অভিষেক, ইনস্টাগ্রাম

বিশ্বাসে মোড়া সম্পর্ক

বলিউডে অমিতাভ-রেখা সম্পর্ক স্মরণীয়! আলোচিত, বিতর্কিত। কিন্তু জয়া বচ্চনের অগাধ আস্থা ছিল স্বামী অমিতাভ বচ্চনের ওপর। সহশিল্পীর প্রতি কখনো কি টলেছেন অমিতাভ, কী বলেন জয়া? সাফ জানিয়ে দিয়েছিলেন, 'আমার স্বামীর ওপর সম্পূর্ণ বিশ্বাস রাখি। আমি জানি এই ইন্ডাস্ট্রিকে। আমি কখনোই হারানোর ভয় করিনি। তিনি যা করেন, তাতে কখনো অনিশ্চয়তায়ও ভুগিনি।'

x8WCj0F.jpg


অমিতাভ বচ্চন ও জয়া বচ্চন

জয়ার 'ঠোঁটকাটা' আচরণ ও অমিতাভ

তুখোড় মেধাবী ছিলেন জয়া বচ্চন। অভিনেত্রী হিসেবেও ছিলেন জনপ্রিয়। তাই কাউকে খুব একটা সমীহ করে চলেননি। যা বুঝতেন অকপট বলে দিতেন মুখের ওপর। তাই অনেকে তাঁকে 'ঠোঁটকাটা'ও উপাধি দিয়েছেন। অমিতাভের কাছে কেমন ছিল জয়ার এই স্বভাব। এক সাক্ষাৎকারে অমিতাভ বলেন, 'যেকোনো সংসারে ভালো ও খারাপ সময় থাকে। কিন্তু সবকিছুই জীবনের অংশ। জয়া খুবই খোলামেলা এবং একেবারে সরাসরি কথা বলে। কখনো কখনো এতে বিব্রতকর মুহূর্ত তৈরি হয় কিন্তু এটাই তাঁর স্বভাব। আমি কখনোই তাঁর এই গুণকে বিঘ্নিত করার চেষ্টা করিনি, কারণ সেও আমার কোনো গুণের মধ্যে অনুপ্রবেশ করেনি। যখন আমি একাকী থাকতে চেয়েছি, সে আমাকে একাকী থাকার সুযোগ করে দিয়েছে।'

xQOw3wQ.jpg


অমিতাভ বচ্চন ও জয়া বচ্চন, ইনস্টাগ্রাম

বুড়িয়ে যাওয়া মানেই, ফুরিয়ে যাওয়া নয়

দুজনই সত্তরোর্ধ্ব। তাতে কী! বয়স যত বাড়ে, ভালোবাসা ততই গাঢ় হয়। এখন তাঁরা পরস্পর 'সুইটহার্ট'। একটি সাময়িকীর সাক্ষাৎকারে অমিতাভ নিজেই এ কথা জানিয়েছিলেন। এত কাজের ভিড়েও ইনস্টাগ্রামে নিজেদের বিবাহবার্ষিকী নিয়ে স্ট্যাটাস দিতে ভোলেননি বিগ বি। নিজেদের বিয়ের দুটি ছবির কোলাজ দিয়ে লিখেছেন, 'জুন ৩, ১৯৭৩...। আমাদের বিবাহবার্ষিকীতে যাঁরা শুভেচ্ছা জানিয়েছেন, সবাইকে ধন্যবাদ।'
 

Users who are viewing this thread

Back
Top