What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

একটি মেয়ে তার বয়ঃসন্ধিকালে পা দেওয়ার পূর্বেই তাকে তার শারীরিক ও মানসিক পরিবর্তন এবং হরমোনজনিত বিষয়গুলো সম্পর্কে জানিয়ে রাখা প্রয়োজন। এতে করে তার প্রথমবার পিরিয়ড হওয়ার দিনটিতে সে নিজেকে সামলে নিতে পারবে এবং বিভ্রান্তিকর কোনো পরিস্থিতিতে পড়বে না...

PApKxd2.jpg


পিরিয়ড বা মাসিক ঋতুস্রাব নারীদের প্রজননপ্রক্রিয়ায় প্রভাবিত হরমোনজনিত একটি সাধারণ প্রক্রিয়া। তবে রক্ষণশীল সমাজ কাঠামোতে এখনো মেয়েরা পিরিয়ড হলে নিজ পরিবার, কাছের মানুষ কিংবা সমাজ থেকে নিজেকে আড়াল করে রাখে। ছোটবেলা থেকেই আমাদের পিরিয়ড নিয়ে নানান অজ্ঞতা, লজ্জা ও ভ্রান্ত ধারণা থাকার কারণে এই স্বাভাবিক প্রক্রিয়াকেও আমরা অস্বাভাবিক বানিয়ে ফেলি।

J15fryw.jpg


তবে পিরিয়ড হওয়ার আগে অবশ্যই কিছু মানসিক ও শারীরিক প্রস্তুতি থাকা প্রয়োজন। এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রাখেন মা, বড় বোন কিংবা পরিবারের যেকোনো সদস্য।এ জন্য প্রথমেই তাকে পিরিয়ড কী, কেন হয়—এগুলোর ব্যাপারে লজ্জা না রেখে বিস্তারিত জানাতে হবে।

পিরিয়ড কী এবং কেন হয়?

পিরিয়ড বা ঋতুস্রাব একটি মেয়ের জীবনের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি মেয়েদের জন্য একধরনের আশীর্বাদও বটে। কেননা, পিরিয়ড নিয়মিত ও সঠিকভাবে হওয়ার অর্থ হলো সে সন্তান ধারণে সক্ষম।

প্রতি মাসে মেয়েদের যোনিপথ দিয়ে যে রক্তস্রাব হয় তাকে ঋতুস্রাব বা মাসিক বলে। সাধারণত ডিম্বাশয়, ডিম্বাশয় হতে বহির্গত হওয়ার নালি বা ফ্যালোপিয়ান টিউব (Fallopian tube), জরায়ু, এন্ডোমেট্রিয়াম (Endometrium) এবং যোনির সমন্বয়ে গঠিত হয় প্রজনন অঙ্গ, যা তলপেটে অবস্থিত। মাসিক চক্রের সময় শরীরের বিভিন্ন অংশ থেকে হরমোন নিঃসৃত হয়। এই হরমোনে আছে ইস্ট্রোজেন এবং প্রজেস্টেরন, যা একজন নারীর প্রজননের ক্ষমতা তৈরি ও নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে।

সাধারণত প্রতি ২৮ দিন পরপর ডিম্বাশয় থেকে ডিম্বাণু নিঃসৃত হয়, যা জরায়ুর দুই পাশের নালি (Fallopian tube) দিয়ে জরায়ুর মধ্যে প্রবেশ করে। গর্ভধারণ না করলে অনিষিক্ত ডিম্বাণু এবং জরায়ুর আবরণ (এন্ডোমেট্রিয়াম) একত্রে প্রতিটি চক্রে শরীর থেকে ঝরে যায়। একেই মাসিক তৈরি হওয়া বা পিরিয়ড (Menstruation) বলা হয়।

পিরিয়ডের শুরু ও শেষ

সাধারণত ১০-১৬ বছরের মাঝামাঝি যেকোনো বয়সে মেয়েদের পিরিয়ড শুরু হয়। এটি শারীরিক গঠন, বৃদ্ধি ও হরমোনজনিত নানা কারণে কারও আগে কিংবা কারও পরে হয়। আবার ৪০-৫০ বছর বয়সে নারীদের এই পিরিয়ড স্বাভাবিকভাবেই বন্ধ হয়ে যায়। একে মেনোপজ বলে

nnRJ1XC.jpg


পিরিয়ডের সময় নিজের যত্ন

শারীরিক যত্ন

প্রথমবার পিরিয়ড হলে অবশ্যই বড় কাউকে জানাতে হবে এবং প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা, যেমন স্যানিটারি ন্যাপকিন কীভাবে ব্যবহার করতে হয়, কতক্ষণ পর্যন্ত এটি স্থায়ী হবে, কখন এটি পরিবর্তন করতে হবে এবং কীভাবে করতে হবে, সে সম্পর্কে জেনে নিতে হবে। সংক্রমণ প্রতিরোধের জন্য প্যাড পরিবর্তনের আগে ও পরে ভালোমতো হাত পরিষ্কার করতে হবে। প্রতি তিন বা চার ঘণ্টা পর প্যাড পরিবর্তন করতে হবে। প্যাডটি ভালো করে মুড়ে আবর্জনার ঝুড়িতে ফেলতে হবে। টয়লেটের মধ্যে ফেললে সুয়ারেজ লাইন বন্ধ হয়ে যেতে পারে। এ ছাড়া অবশ্যই নিজের শরীরকে পরিষ্কার–পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে এবং পরিচ্ছন্ন কাপড়চোপড় পরতে হবে।

এ সময়ে নিজের খাদ্যাভ্যাসের প্রতি খেয়াল রাখতে হবে। স্বাভাবিকভাবেই মেয়েরা এই সময়ে দুর্বল হয়ে পড়ে, তাই পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে। দুধ, ডিম, বাদাম, মাছ ও মাংস খেতে হবে। আয়রনসমৃদ্ধ খাবার, যেমন ডিম, শিম, পালংশাক, আলু, কলা, আপেল, গুড়, খেজুর, কালোজাম ইত্যাদির সঙ্গে ম্যাগনেসিয়ামসমৃদ্ধ খাবার, যেমন বাদাম, সয়াবিন, গাঢ় সবুজ শাকসবজি খেতে হবে। ক্যালসিয়ামসমৃদ্ধ খাবার—দুগ্ধজাত খাবার, দুধ, ডিম, বাদাম ও সয়াবিন খেতে হবে। আর কম লবণযুক্ত খাবার খেতে হবে। তা ছাড়া তাজা ফলের রস পান করতে হবে এবং অতিরিক্ত চা-কফি পান থেকে বিরত থাকতে হবে। প্রতিদিন অন্তত ৮-১০ গ্লাস পানি পান করতে হবে।

তলপেটে ব্যথা হলে গরম পানির সেঁক দিতে হবে। ব্যাথা অসহনীয় হলে অবশ্যই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।

মানসিক যত্ন

পিরিয়ড একটি অসুখ—এটি কখনোই ভাবা যাবে না। এ ছাড়া এ সময়ে নিজের মানসিক যত্ন নেওয়াও খুবই গুরুত্বপূর্ণ। পিরিয়ড হলে মেয়েদের অল্পতেই রেগে যাওয়া, মেজাজ খিটখিটে হয়ে যাওয়া, ক্লান্ত লাগা—এগুলো খুবই স্বাভাবিক ব্যাপার। তাই এ সময়ে নিজেকে বেশি বেশি সময় দিতে হবে। পছন্দের গান শোনা, বই পড়া, মুভি দেখা ইত্যাদি মন ভালো রাখতে খুবই কার্যকর ভূমিকা পালন করে। এ সময়ে নানা ধরনের খাবারের ক্রেভিংস আসে, তার অন্যতম হলো চকলেট; যা পিরিয়ডের সময়ে ক্র্যাম্পস কমাতে সহায়ক, আবার এনার্জি লেভেল বাড়াতেও সক্ষম।

AMcYv6w.jpg


প্রথমবার পিরিয়ডে মেয়েদের এসব বিষয়ে জানা না থাকলে নানা ধরনের বিভ্রান্তিকর পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হয়। এতে তারা লজ্জায় নিজেকে আরও সংকুচিত করে ফেলে। পিরিয়ডের দিনগুলোতে তাদের মানসিক বিকাশেও নানা ধরনের বাধার সৃষ্টি হয়। তাই পিরিয়ড নামের এই ট্যাবুকে স্বাভাবিক করে মেয়েদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশের পথ সুগম করে দেওয়ার জন্য পরিবারের বয়ঃসন্ধি উপযুক্ত ছেলেমেয়ে উভয়কেই এই ব্যাপারে অবগত করা প্রয়োজন।
 

Users who are viewing this thread

Back
Top