What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

মানসিক স্বাস্থ্যে মিউজিক থেরাপি (1 Viewer)

DY6gPxv.jpg


সুর আর গানের সঙ্গে প্রত্যেক মানুষেরই আছে আত্মার সম্পর্ক। গান শুনতে ভালোবাসে না, এমন মানুষ পাওয়া ভার। সারা দিনের ক্লান্তির শেষে ঠান্ডা শাওয়ার নিয়ে নিজের রুমে এক কাপ গরম কফি আর একটু রিলাক্সিং মিউজিক; আহা! ভাবতেও কেমন ফ্রেশ লাগছে, তাই না?

kARkVn9.jpg


তাহলে ভেবে দেখুন এই মিউজিককে কেন্দ্র করেই যদি একটা আস্ত থেরাপির ব্যবস্থা থেকে থাকে, তাহলে তা কতটা প্রশান্তির হতে পারে। এই ধরনের চিন্তারই বাস্তবিক রূপ মিউজিক থেরাপি। এটা বর্তমানে ব্যাপক পরিচিত হলেও এই ব্যাপারে সঠিক ধারণা অনেকেরই নেই। তরুণ প্রজন্মের মধ্যে ধীরে ধীরে এই থেরাপি প্রক্রিয়া পাচ্ছে বিস্তর পরিচিতি। এটি কম বয়সীদের মানসিক স্বাস্থ্য উন্নয়নের জন্য হতে পারে ভীষণভাবে উপকারী। ডা. স্যাম হোগুডের মতে, 'মিউজিক থেরাপি তরুণ রোগীদের মধ্যে একধরনের প্রশান্তি ও শক্তি সঞ্চার করে।'

বুঝতেই পারছেন মিউজিক থেরাপি এখন চিকিৎসার ক্ষেত্রেও ব্যাপকভাবে ব্যবহার হচ্ছে। ঠিক এই জায়গায় প্রশ্ন আসে, আসলে মিউজিক থেরাপি কী? কীভাবে এটি কাজ করে?

RyOzQ8r.jpg


মিউজিক থেরাপি ও এর ব্যবহারের ধরন

মিউজিক থেরাপি হলো সংগীত ও সুরের প্রাকৃতিক যে মন ভালো করার ক্ষমতাকে কাজে লাগিয়ে সার্বিক স্বাস্থ্যের উন্নয়ন নিশ্চিত করা। এতে যা যা থাকতে পারে তা হলো: সুর তৈরি, গান শোনা, গান লেখা, গান ও সুর-ছন্দ নিয়ে আলোচনা, সুরের সঙ্গে মেডিটেশন ইত্যাদি।

মূলত গান শোনা, নিজের মনের মতো সুর, তাল সৃষ্টি, গান ও সুরের তালে নৃত্য, গান শুনে মনে কী ভাব তৈরি হলো, তা নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে মানসিক অবস্থার উন্নয়নই এর লক্ষ্য। তবে কিছু সাধারণ ধরন ও নিয়ম মেনেই তা করা হয়, যেহেতু এর উদ্দেশ্য মানসিক ও সার্বিক সুস্থতা।

যদিও যেকোনো মানুষের পক্ষেই মিউজিক থেরাপি শুরু করা সম্ভব, তবে এর কিছু নির্দিষ্ট স্টাইল ও ধরন আছে, যা মেনে চলা উচিত। বেশ কিছু জনপ্রিয় ও বহুল আলোচিত মিউজিক থেরাপির ধরন হলো—

বিশ্লেষণধর্মী মিউজিক থেরাপি

এই পদ্ধতিতে মূলত গান গাওয়া বা কোনো যন্ত্র বাজানোর মাধ্যমে মনের ভেতরের আবেগকে প্রকাশ করতে বলা হয়। পরবর্তী সময়ে এসব চিন্তাকে বিশ্লেষণ করে যিনি থেরাপি দেন, তাঁর সঙ্গে হয় একান্ত আলোচনা। তাই অবশ্যই বিশেষজ্ঞের তত্ত্বাবধানে এই পদ্ধতি অনুসরণ করা উচিত।

ZkrNPYq.jpg


বেনেনজোন মিউজিক থেরাপি

এটিতে মূলত নিজের চিন্তা ও আবেগের সঙ্গে বাহ্যিক বিভিন্ন আবেগকে মেলাতে বলা হয়। এর মাধ্যমে বুঝে নেওয়া হয় ঠিক কোন ধরনের মানসিক সমস্যা বা উদ্বেগের ভেতর দিয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি যাচ্ছেন। এই ধরনের থেরাপির ক্ষেত্রেও তাই পেশাদার থেরাপিস্ট আবশ্যক।

জ্ঞানধর্মী ও আচরণগত মিউজিক থেরাপি

এটি ব্যক্তিকেন্দ্রিক না হলেও অনেক বেশি কাঠামোগত পদ্ধতি। নির্দিষ্ট মিউজিকে কীভাবে কে কী রকম আচরণ করেন ও এর প্রভাব ঠিক কেমন ও কতটা গুরুত্বপূর্ণ—এসব আলোচনা করা হয়।

এই ধরনগুলোর বাইরের আরও বেশ কিছু ধরনের মিউজিক থেরাপি প্রচলিত আছে, যেমন কমিউনিটি মেথড, ভয়েস সিস্টেম ইত্যাদি।

CLGL3Jx.jpg


এ তো গেল ধরন আর মিউজিক থেরাপি নিয়ে প্রাথমিক আলোচনা। এবার যেই প্রশ্ন সবারই মনে আসে, তা হলো এর ব্যাপক জনপ্রিয়তার কারণ কী? কারণ, মূলত মানুষের সঙ্গে বিশেষত তরুণ জনগোষ্ঠীর সঙ্গে সংগীতের সম্পৃক্ততাকে কেন্দ্র করেই এই থেরাপির কার্যকলাপ। অনেকে সাউন্ড থেরাপিকেও মিউজিক থেরাপি মনে করে ভুল করেন। তবে বাস্তবে দুটি সম্পূর্ণ দুই জিনিস। মিউজিক থেরাপি তুলনামূলকভাবে নতুন হলেও এর কাঠামো অনেক বেশি সুন্দর ও সুগঠিত।

এই জন্য বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীদের মানসিক সুস্থতার পাশাপাশি বিষণ্নতা কাটাতে এই থেরাপিকে ব্যাপকভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে। বর্তমানে হাসপাতাল ছাড়াও রিহ্যাব সেন্টারেও এই পদ্ধতি ব্যবহৃত হচ্ছে ব্যক্তিকে উৎসাহিত করতে; যাতে তিনি তার শিল্পীমনকে ব্যবহার করে আত্ম–উন্নয়ন করতে সক্ষম হন।

মিউজিক থেরাপি যেসব ক্ষেত্রে ব্যাপকভাবে ব্যবহার করা হয় তা হলো—

বিষণ্নতা, অটিসম, হৃদ্‌রোগ, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, আচরণগত সমস্যা ও যোগাযোগবৈকল্য, হঠকারিতা, পিটিএসডি, মাদকাসক্তি, শ্বাসপ্রশ্বাসে সমস্যা, সিজোফ্রেনিয়া, ইনসোমনিয়া ইত্যাদি।

ooI4zrD.jpg


এ ছাড়া মানসিক সক্ষমতা বৃদ্ধি, আবেগ নিয়ন্ত্রণ, যোগাযোগ ক্ষমতার উন্নয়নসহ আরও অনেক লক্ষ্য নিয়ে অনেকে এই থেরাপিতে অংশ নিয়ে থাকেন। তবে উদ্দেশ্য যা–ই হোক, এই থেরাপি মানসিক শান্তির পাশাপাশি মস্তিষ্ককে সচল ও এর রক্ত চলাচল নিশ্চিত করে। এটি এন্ডোরফিন নামক হরমোন নিঃসরণ করে ও পেশিকে শিথিল করে রক্তচাপকে নিয়ন্ত্রণে আনে। তাই আচরণে স্থিরতা আনতে বিশেষভাবে এই থেরাপি গ্রহণে উৎসাহিত করা হয়।

অতএব সার্বিক সুস্থতায় মিউজিক থেরাপি প্রভূত কার্যকর হলেও ওষুধ ও রুটিনের সঙ্গে সঠিক সমন্বয়ের প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য। তাই সচেতনতার সঙ্গে এই থেরাপি অবলম্বন হতে পারে সার্বিক বিকাশের জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত।

* লেখক: মাহজাবিন রশীদ লামিশা | অর্থনীতি বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
 

Users who are viewing this thread

Back
Top