What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

মায়ের জন্য বিশেষ কিছু (1 Viewer)

বছর ঘুরে ফিরে এল মে মাসের দ্বিতীয় রোববার। সারা বিশ্বেই অত্যন্ত শ্রদ্ধা আর আবেগের সঙ্গে এই দিনটি মা দিবস হিসেবে পালিত হয়। এই বছরের মে মাসের ৯ তারিখ অর্থাৎ আজকের দিনটিই মা দিবস।

DyFMdW2.jpg


আজকে হৃদয়ের উৎসারিত সবটুকু আবেগ দিয়ে বলতে ইচ্ছে করে, 'মা, তোমাকে খুব ভালোবাসি, শুধু আজকে নয়, প্রতিদিনই।' অনেকেই ভাবেন বা বলেন যে মায়ের প্রতি ভালোবাসা প্রদর্শনের জন্য কোনো বিশেষ দিবস দরকার নেই। আবার অপর দিকে অনেকে শুধু এই দিনে মাকে নিয়মরক্ষার জন্য উপহার, কার্ড, ফুল, কেক পাঠিয়ে বা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মায়ের ছবিসহ মা দিবসের বিশেষ পোস্ট দিয়েই কর্তব্য সারেন। অথচ এই দিবসটির সত্যিকারের উদ্দেশ্য হলো, মা এবং মাতৃত্বের সর্বজনীন রূপটির প্রতি সবার শ্রদ্ধা আর ভালোবাসা জাগিয়ে তোলা।

VkqTcw2.jpg


আমাদের দেশেও তৈরি হচ্ছে উপহারসামগ্রী

এখন এই বিশ্বজুড়ে ভয়াল অতিমারিতে যেন কিছুটা হলেও মানুষ মায়েদের মূল্য বুঝতে শিখছে। কেউ মা হারিয়েছে, কেউ বা অনেক যুঝে মাকে ফেরত পেয়েছে যমের দুয়ার থেকে; কেউবা আশপাশে মৃত্যুর মিছিল আর স্বজনদের আহাজারি দেখে নিজের মাকে আরও বেশি বেশি যত্ন নিতে, ভালোবাসতে উদ্‌গ্রীব হয়ে উঠছে। হয়তো এবারের মা দিবসে মাকে নিয়ে বাইরে খেতে যাওয়া, শপিং ইত্যাদি হয়ে উঠবে না পরিস্থিতি-বাস্তবতায়। কিন্তু খুব ছোট ছোট বিষয় খেয়াল করলে মা দিবসটি একেবারে হৃদয়গ্রাহী করে তোলা যায় নিজের মা, নিজের জীবনসঙ্গীর মা অথবা নিজের সন্তানের মায়ের জন্য।

মা মানেই মায়া। মা মানেই মমতার অশেষ ফল্গুধারা। একেবারে নিঃস্বার্থভাবে মায়ের অসীম কষ্ট সয়ে গর্ভধারণ, নিজে খেয়ে না খেয়ে সন্তানকে খাইয়ে পরম স্নেহে লালন–পালন, অসুস্থতায় নির্ঘুম শুশ্রূষা, প্রার্থনায় সন্তানের সর্বাঙ্গীণ কল্যাণ কামনা—সারা জীবনে মায়ের ভালোবাসা আর অবদানের কথা বলে শেষ করা সম্ভব নয়। বিনিময়ে একেবারে কিছুই না চাইলেও প্রতিটি মায়ের সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি হচ্ছে স্বীকৃতি, ভালোবাসা আর সম্মান। তাই তো সহজে না বলা হয়ে ওঠা 'মা, তোমাকে খুব ভালোবাসি' বলার জন্য এর চেয়ে ভালো সময় খুঁজে পাওয়া কঠিন।

sTF58BI.jpg


কাছে থাকলে তো বটেই, দূর থেকেও ভিডিও কল বা দূরালাপনীর মাধ্যমে মায়ের সঙ্গে কথা তো বলাই যায় লম্বা সময় ধরে। নিজের জীবনসঙ্গীকেও কাজের ফাঁকে সময় বের করে তার মায়ের সঙ্গে দেখা করা, কথা বলা ও সময় কাটানোর ব্যাপারে সহায়তা ও উৎসাহিত করা উচিত।

মায়ের কোল, মায়ের গায়ের চিরচেনা সুবাসের পরেই আসে মায়ের হাতের রান্নার কথা। পৃথিবীর সবচেয়ে দামি তারকাখচিত রেস্তোরাঁর সবচেয়ে দামি আর বিখ্যাত খাবারটিও সেই শৈশবে মায়ের হাতের মাখানো ভাতের লোকমার ধারেকাছেও যেতে পারবে না। সেই কথা ভেবে আজকের দিনে মায়ের জন্য বরং তাঁর প্রিয় কোনো খাবার তৈরি করে তাঁকে চমকে দেওয়া যায়।

iMFi39h.jpg


মায়ের জন্য ভালোবাসা সুনির্মল

স্বামী, সন্তানের বা পরিবারের অন্যদের পছন্দের খাবারগুলো রান্না করতে করতে হয়তো মা ভুলেই গেছেন যে একসময় তিনি শুঁটকি ভর্তা দিয়ে খুদের ভাত খেতে খুব ভালোবাসতেন। বাসায় কেউ খায় না বলে হয়তো শেষ কবে খুব প্রিয় এঁচোড়ের তরকারি বা ঝালে ঝোলে বোয়াল মাছ খেয়েছেন, হয়তো তাঁর মনেই নেই। আবার, নিজ হাতে বানানো আর সাজানো কেকে প্রিয় দুটি কথা লিখেই মায়ের মন কেড়ে নেওয়া যায়।

সবাই মিলে মায়ের পছন্দ অনুযায়ী বিশেষ কোনো খাবার যেমন ঘরে বানানো পিৎজা, চটপটি, ফুচকা, বিরিয়ানি ইত্যাদির সঙ্গেও মা দিবসটি উৎসব মুখর করে তোলা যায়।
উপহারের ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যঝুঁকি থাকায় কেনাকাটার ব্যাপারটি আপাতদৃষ্টিতে একটু কঠিন মনে হলেও আজকাল অনলাইনে মায়ের জন্য অনায়াসে যেকোনো বিশেষ উপহারের বন্দোবস্ত করা খুবই সোজা। শাড়ি, বই, প্রিয় সুগন্ধি, বিশেষ মেসেজ লেখা চায়ের মগ, প্রয়োজনীয় ব্লেন্ডার বা গরম পানির কেতলি—কত কিছুই তো দেওয়া যায় মাকে ভালোবাসার টোকেন হিসেবে! চটজলদি হঠাৎ কিছু করতে চাইলে সর্বজনপ্রিয়, চির আবেদনময় ফুল তো আছেই একেবারে সেরা উপহার হিসেবে।

iEct1V5.jpg


হোক না একটি দিন মায়ের জন্য

এখন বেলি আর বকুল ফুলের ভরা মৌসুমে গতানুগতিক ফ্লাওয়ার ব্যুকে না দিয়ে এক গোছা ফুলের মালা দিয়ে মায়ের দিনটা সুবাসে আর আনন্দে ভরিয়ে তোলা যায়। একান্ত বাইরের কিছু না আনতে চাইলে নিজের শিল্পীমনকে কাজে লাগিয়ে হাতে বানানো শখের ক্র্যাফট পিস, কার্ড ইত্যাদির সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন সময়ের স্মরণীয় সব পারিবারিক ছবি কোলাজ আকারে ফ্রেমবন্দী করে বা স্মৃতির অ্যালবাম বানিয়ে মাকে উপহার দেওয়া যায়। আবার বাগানপ্রেমী হলে মাকে নতুন কোনো গাছও উপহার দেওয়া যায়।

সন্তান বড় হয়ে গেলে যখন নানা কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়ে, মায়ের জন্য তখন সবচেয়ে প্রিয় উপহার হয়ে দাঁড়ায় সন্তানের সঙ্গে কাটানো লম্বা আনন্দময় সময়। নিজে সময় কাটানোর সঙ্গে সঙ্গে মায়ের বহুদিন না দেখা হওয়া আত্মীয়-পরিজন বা প্রিয় বন্ধুদের সঙ্গে আগে থেকেই পরিকল্পনা করে গ্রুপ ভিডিও কলের ব্যবস্থা করে দিলে খুব মজার একমুঠো সময় কাটবে তাঁর। এ ছাড়া নিজেরা কাজ ভাগ করে নিয়ে মাকে সব কাজ থেকে ছুটি দেওয়া যায় সারা দিন। যে কড়া রোদ উঠছে আজকাল, মায়ের বিয়ের শাড়িসহ আরও সব বিশেষ আর স্মৃতিময় শাড়িগুলো তাঁর সঙ্গে রোদে মেলে দিতে গিয়ে কত শত স্মৃতিচারণে কেটে যাবে একটা সুন্দর সময়! এই ছোট ছোট ব্যাপারগুলোও কিন্তু মা দিবসের বিশেষত্ব বাড়িয়ে তুলতে পারে বহুগুণে।ৎ

lk6uSS1.jpg


মাকে চমকেও দেয়া যেতে পারে

সন্তানেরা ছোট হলে সন্তানের বাবাদেরই উদ্যোগ নিতে হবে বাচ্চাদের সঙ্গে মিলে নিজের সন্তানের মায়ের জন্য মা দিবসটি স্মরণীয় আর আনন্দঘন করে তুলতে। মায়ের অগোচরে রঙের আঁকিবুঁকি এমনকি হাতের রঙিন ছাপেও ছোট শিশুদের দিয়ে কার্ড বানিয়ে নিয়ে আজকের দিনে উপহার দিলে সেই স্মৃতি হয়তো চিরকাল থাকবে মায়ের কাছে। বিভিন্ন কেক, কুকিজ ইত্যাদি বা সকালের নাশতাটি বাচ্চাদের অংশগ্রহণে তৈরি করে সুন্দর করে সাজিয়ে পরিবেশন করে মায়ের দিনের শুরুটি অসাধারণ আর অনন্য করে তোলা যায়।

আবার যেসব দুঃখী–অভাবী মা সন্তানের মুখে দুটি ভাত দিতে না পারার অক্ষমতা আর অপারগতায় অসহায় হয়ে পড়েছেন এই মহামারির সময়ে, তেমন কিছু মায়ের পাশে অন্তত এক দিনের জন্য হলেও দাঁড়ানো যায় আজ নিজের সীমিত সাধ্যের মধ্যেও।
মা, মাতৃত্ব, মাতৃস্নেহ এই বিষয়গুলো একেবারেই সর্বজনীন।

LqeXobf.jpg


মা আর তাঁদের মাতৃত্বের আন্তরিক উদ্‌যাপন হোক আজ

চাকরিজীবী হোক, ব্যবসায়ী হোক অথবা হোক গৃহিণী, সব মা আর তাঁদের মাতৃত্বের আন্তরিক উদ্‌যাপন হোক, স্বীকৃতি পাক সব মায়ের অবিরাম আত্মত্যাগ, মা দিবসে এই হোক আমাদের অঙ্গীকার।
 

Users who are viewing this thread

Back
Top