সাহরি আর ইফতারের সময় সহজেই বানানো যায় নানা পদ।
সেদ্ধ করে ডিপ ফ্রিজে রেখে দেওয়া যায়
লকডাউনে সব বন্ধ। বাড়ি থেকেই হচ্ছে সব কাজ। ব্যস্ততার মধ্যেও পরিবারের জন্য তৈরি করতে হচ্ছে ইফতারি ও সাহ্রির খাবার। প্রত্যেকেই চান সময় বাঁচিয়ে সহজ কিছু রান্না করতে।
ইফতারির পাতে বুট, পেঁয়াজু পছন্দ করেন অনেকেই। সে ক্ষেত্রে দুই–তিন কেজি বুট সেদ্ধ করে রাখা যায় একসঙ্গে। প্রতিদিনের জন্য যেটুকু প্রয়োজন, আলাদা আলাদা বাক্স করে ডিপ ফ্রিজে রেখে দিতে পারেন। প্রতিদিন একটি বাক্স বের করলেই হলো রান্নার কিছুক্ষণ আগে। পেঁয়াজুর সব উপকরণ মেখে পেঁয়াজু বানিয়ে ডিপ ফ্রিজে রাখুন। পেঁয়াজু বরফ হয়ে গেলে প্রতিদিনের প্রয়োজন অনুযায়ী আলাদা আলাদা বাক্স অথবা জিপার ব্যাগে সংরক্ষণ করতে পারেন। ইফতারের আগে ফ্রিজ থেকে বের করে ভেজে নিলেই চলবে।
ডিম আলুর মজাদার পদ
এ লকডাউনের সময় আলু, পেঁয়াজ, ডিম সব বাসায়ই থাকে। বেগুনির বিকল্প হিসেবে বেগুনের পরিবর্তে পেঁয়াজ গোল করে কেটে ব্যবহার করতে পারেন। এ ছাড়া আলু পাতলা করে কেটে ব্যবহার করতে পারেন। আলু ও ডিম সেদ্ধ করে তাতে সামান্য পুদিনাকুচি, লেবুর রস, চাট মসলা ও লবণ মেখে সালাদ তৈরি করে নিতে পারেন। সেদ্ধ বুট থাকলে এর সঙ্গে দিয়ে দিন। বুটের ডাল ভিজিয়ে পানি ঝরিয়ে রেখে দিন। এরপর নরম কাঁচা বুটের ডালের সঙ্গে আদাকুচি, টমেটোকুচি, লবণ, পুদিনাকুচি, লেবুর রস, কাঁচা মরিচকুচি মেখে নিলেই তৈরি হয়ে গেল সালাদ। সকালে বুট ভিজিয়ে রেখে সব উপকরণ মিশিয়ে এ সালাদ ইফতারিতে খেতে পারেন।
ঘরে টকদই থাকলে বিভিন্ন রকম ফলের সঙ্গে দই মিশিয়ে সালাদ তৈরি করে খেতে পারেন। শসা, গাজর দইয়ের সঙ্গে মিশিয়েও সালাদ খেতে পারেন। এসব সালাদ শুধু ইফতারিতে নয়, খেতে পারেন সাহ্রিতেও।
ঘরে পাউরুটি থাকলে রুটি টোস্ট তৈরি করতে পারেন। পটেটো ওয়েজেস কিংবা ফ্রেঞ্চ ফ্রাইও খেতে পারেন। গাজর, পেঁপে অথবা চালকুমড়াকুচি অল্প সেদ্ধ করে পানি ঝরিয়ে ডিপ ফ্রিজে রেখে দিন। ইফতারির আগে তরল দুধে চিনি, গরম মসলা ও ফ্রোজেন সবজি দিয়ে সেমাই তৈরি করে নিতে পারেন।
মুরগির মাংসে সব মসলা ও তেল মেখে ডিপ ফ্রিজে রেখে দিতে পারেন
পানীয় হিসেবে লেবুপানি, ডাবের পানি, জিরাপানি, বিভিন্ন ফলের জুস খাদ্যতালিকায় প্রতিদিন রাখুন। এসব পানীয়তে পিংক সল্ট ব্যবহার করুন। পিংক সল্ট না থাকলে সাধারণ লবণ ব্যবহার করুন। চিনি পরিহার করার চেষ্টা করুন। চিড়া, কলা, দইয়ের সালাদ অথবা ব্লেন্ড করে পানীয় হিসেবে খেতে পারেন। পছন্দমতো বাদামকুচি ও খেজুরকুচির সালাদ যেমন খাওয়া যায়, তেমনি দুধের সঙ্গে ব্লেন্ড করে পানীয় হিসেবে খেতে পারেন।
সাহ্রিতে তৈরি করতে পারেন ডিম–আলুর তরকারি। যেসব মাছ রান্না করতে সময় কম লাগে, যেমন চিংড়ি, ইলিশ এসব মাছ ভাজি বা তরকারি হিসেবে খেতে পারেন। এ গরমে খেতে পারেন আমডাল, চিংড়ি–ডালের চচ্চড়িও সহজে রান্না করে নিতে পারেন।
মুরগির মাংসে সব মসলা ও তেল মেখে ডিপ ফ্রিজে রেখে দিতে পারেন। রান্নার আগে মাংস সাধারণ তাপমাত্রায় এনে সরাসরি রান্না করে নিতে পারেন। গরু কিংবা খাসির মাংস রান্না করে তবেই ডিপ ফ্রিজে রেখে দিতে পারেন। সে ক্ষেত্রে শুধু গরম করে নিলেই সাহ্রির পাতে দিতে পারেন।
লেখক: জেবুন্নেসা বেগম, রান্নাবিদ, ঢাকা