What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

৭ রকমের বিশ্রামে মন খুশ (1 Viewer)

8tgoATC.jpg


শরীরে বল–শক্তি নেই, তাই দিই এক পাক্কা ঘুম। হলো? না। অবসাদ রয়েই গেল।

তাহলে? ঘুম আর বিশ্রাম যে এক নয়, তা আর কতভাবে বোঝাই। বেশ ঘুমিয়েছি, তাহলে তো বেশ বিশ্রাম হয়েছে; এমন মনে করি আমরা। তবে বিশ্রাম যে সত্যি অন্য রকম, তা জানা গেছে গবেষণায়। আর বিশ্রামের রকম, ধরনও আছে ভিন্ন ভিন্ন।

নানা কারণে আমরা সত্যিকারের বিশ্রাম নিই না। জীবনে সাত ধরনের বিশ্রাম আনে পুনর্জীবন; যা আপনাকে দিতে পারে সজীব অনুভব।

১. প্রথম ধরনের বিশ্রাম হলো দৈহিক। এমন বিশ্রাম হতে পারে পরোক্ষ, আবার প্রত্যক্ষ। পরোক্ষ এমন বিশ্রাম মানে ঘুমিয়ে যান। দিবানিদ্রা নিতে পারেন। আর প্রত্যক্ষ বিশ্রাম হলো ধ্যান, যোগব্যায়াম, হাত–পা ছোড়াছুড়ি, মালিশ—একে বিজ্ঞানীরা বলেন সঞ্জীবনী বিশ্রাম। শরীরে বাড়ে রক্ত চলাচল। বাড়ে নমনীয়তা। এই যে করোনার এমন কঠিন সময়ে এমন সঞ্জীবনী চাই আপনি যাতে বাউন্স ব্যাক করতে পারেন। পড়লে উঠে দাঁড়াতে পারেন।

২. দ্বিতীয় ধরন হলো মানসিক বিশ্রাম। মনের বিশ্রাম বললেও চলে। এই যে আপনার পাশে সহকর্মী, ঢাউস এক কাপে কফি নিয়ে বসেছেন, চুমুক দিচ্ছেন; শেষ হলে আবার ভরছেন। সারা দিন মেজাজ ম্যালা ত্যক্তবিরক্ত। ভুল হচ্ছে কাজে। মনোযোগ নেই। বসে আছেন তো বসেই আছেন, নড়নচড়ন নেই। রাতে বিছানায় ঘুমিয়েছেন, সারা রাত এপাশ–ওপাশ, সারা দিনের কথাবার্তা সব মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে। একে ঘুম বলে? ৭-৮ ঘণ্টা শয্যায় কাটালেন ঠিক, কিন্তু ওঠার পর মনে হচ্ছে আদৌ ঘুমিয়ে ছিলেন তো?

মানে তার মানসিক বিশ্রামের বেজায় ঘাটতি। তবে সুসংবাদ, আপনাকে চাকরি ছাড়তে হবে না বা লম্বা ছুটিতে যেতেও হবে না। কর্মদিবসে দুই ঘণ্টা পরপর ছোট্ট করে বিরতি। এই বিরতি জানাল আপনাকে, 'ধীরে বন্ধু ধীরে। একটু বিশ্রাম নাও। হাত–পা ছোড়ো। তাকাও বাইরে। সবুজ দেখ। দাঁড়াও। একটু পায়চারি করো। একটু না হয় হাসলে।' এমন দাওয়াই দিলাম, নিয়ে বলবেন কী হলো।

৩. এরপর যা, তা হলো চেতনার বিশ্রাম। উজ্জ্বল আলো। কম্পিউটার, মোবাইল ফোনের পর্দা। আগপাছ কোলাহল, কলরব। হুল্লোড়। অফিসে হোক বা জুম কলে হোক, আমাদের চেতনাকে কেমন আচ্ছন্ন করে ফেলে, মনে হয় এ যেন মাথায় আকাশ ভেঙে পড়া। কী করবেন দিনের মধ্যে, একসময় চোখ মুদে থাকুন কয়েক মিনিট। নয়তো প্লাগ খুলে নিন ইলেকট্রনিক যন্ত্রটির। দিনের শেষে।

৪. চতুর্থ ধরন হলো সৃজনশীল বিশ্রাম। যাঁদের অনেক ভেবেচিনতে সমাধান বের করতে হয় নানা সমস্যার বা ব্রেন স্ট্রম। করতে হয় ম্যালা, এদের দরকার বিশ্রাম। এমন বিশ্রামে আমাদের ভেতরে যেসব অবাক জিনিস আছে, বিস্ময় লুকিয়ে আছে, সেগুলো বেরিয়ে আসে। মনে করুন কবে গিয়েছিলেন কক্সবাজার সাগরবেলায়, ঝিনুক খোঁজার ছলে দেখেছিলেন প্রথম প্রেম আর তখন সূর্য নামছিল আর এক পশলা হাওয়া আপনাকে ছুঁয়ে গেল। 'সে কি গন্ধ বিধুর সমীরণে'।

মনে আছে, সে কি বিশাল গর্জন নায়াগ্রার জলপ্রপাতে, আপনার স্ত্রী, মেয়েজামাই সঙ্গে। একটি পায়রা এসে বসল সেই পাথরের খণ্ডে, কথা নেই বার্তা নেই। আপনি সেদিন সে সময় কোথায় ছিলেন, তাই তো আপনি অন্য ভুবনে এখন। আর একে বলে ক্রিয়েটিভ রেস্ট, মানে সৃজনশীল বিশ্রাম। আপনার মনভাবনা আপনাকে উদ্ভাবনের জগতে নিয়ে যাবে। স্বপ্ন দেখতে শিখুন। আকাশপাতাল ভাবতে শিখুন।

কিন্তু এর মানে কেবল প্রকৃতি দেখা নয়। একে সপ্রশংস দৃষ্টিতে দেখা নয়। শিল্পের কদর করাও আছে। আপনার কাজের জায়গায় আপনাকে প্রাণিত করার জন্য থাক এমন ছবি। থাক আশ্চর্য শিল্পকর্মের ছবি, যা দেখে মন প্রসন্ন হয়। মাঝেমধ্যে তাকাবেন, ভাববেন। আচ্ছা, টানা ৩০ ঘণ্টা একই প্লেট, একই কাগজের তাল দেখতে কেমন লাগে? অন্যদিকে চোখ সরাতে মন চায় না? কী করে আপনি হবেন প্যাশনেট, বলুন।

৫. চাই আবেগের বিশ্রাম। ইমোশনাল রেস্ট। এ হলো মনের অনুভূতি খোলাখুলি বলার সময় আর স্থান। এমন এক লোকের কথা বলছি, সে খুব ভালো মানুষ। তার ওপর সবাই নির্ভর করে, যেকোনো কাজের জন্য বলা যায় না করে না, কিন্তু এ অনেক অনিচ্ছায় হ্যাঁ বলা। সত্যি যে না তা বলতে পারে না, এমন সে মানুষ। কিন্তু মানুষটি যখন একা, তখন সে মনে করে কত কাজ করি করে দিই কিন্তু স্বীকৃতি নেই, প্রশংসা নেই। আমাদের অনেক ডাক্তার যারা এখন করোনা ডিউটি করেন, তাঁরা একা বসে এমন ভাবেন। তিনি বোঝেন সবাই সুবিধা নিচ্ছে।

এমন বিশ্রামে মানুষকে প্রীত করার তাগিদ নেই। মন খুলে আলাপ। কেমন আছ? সত্য বলো। কি? ভালো নেই। সত্য বলার সাহস থাকতে হবে। এরপর কঠিন কিছু সত্য বলা, প্রকাশ করা। মনটা সাফ হলো। এমন বিশ্রাম দরকার।

৬. আবেগীয় বিশ্রামের ঘাটতি থাকলে দরকার সামাজিক বিশ্রাম? আমরা কি সেসব সম্পর্ক এড়াতে পারি না, যা আরও জটিল করে তোলে, ঘোলাটে করে ফেলে সম্পর্ক। আমরা সব সময় থাকব পজিটিভ। আর সাপোর্ট দেয়, এমন সম্পর্কের চারপাশে থাকব। তাহলে পাব সামাজিক বিশ্রাম। ভার্চ্যুয়াল হলেও এদের দিকে মনোযোগ দিন, চ্যাটবক্স ক্যামেরা থাক এদের সঙ্গে।

৭. শেষ আর সপ্তম বিশ্রাম হলো স্পিরিচুয়াল রেস্ট। আত্মিক বিশ্রাম। এ যেন শরীর মন পেরিয়ে আরও দূরে বাইরে। অন্তরে অন্তরে। আমার সত্ত্বা, ভালোবাসা আর লক্ষ্য অনুভব। গভীর অনুভব। করুন ঈশ্বরবন্দনা, প্রার্থনা, ধ্যান, লোকের উপকার—এসব হোক আপনার দৈনিক রুটিনের মধ্যে।

আপনি বুঝবেন ভেতরে–বাইরে অন্তরে অন্তরে আছ তুমি হৃদয়জুড়ে। ভালো থাকুন।

* ডা. শুভাগত চৌধুরী
 

Users who are viewing this thread

Back
Top