What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

স্বাগতম মাহে রমজান (1 Viewer)

57Pe0AY.jpg


করোনাভাইরাস পাল্টে দিয়েছে আমাদের জীবনের বাস্তবতা। আনন্দ–বেদনায় ভরা দিনযাপনের মানবিক কাহিনি। তবুও রমজান বয়ে আনুক অনাবিল শান্তি আর নতুন দিনের বার্তা। করোনাভাইরাস, এক ভিন্ন রমজানের অপেক্ষায় বিশ্বের ১৮০ কোটি মুসলমান।

শা'বান মাস শেষ হতে চলেছে। চাঁদ দেখা সাপেক্ষে এপ্রিলের ১২ অথবা ১৩ তারিখে শুরু হবে পবিত্র রমজান। ইসলামিক আদর্শে বিশ্বাসী মানুষেরা মনে করেন, এক মাস সিয়াম সাধনার পরেই খুশির ঈদের মাধ্যমে বিগত বছরের সব গুনাহ খাতার জন্য আল্লাহর কাছে মাগফিরাত চেয়ে পবিত্র মাসটির সমাপ্তি হবে।

কিন্তু এবারের রমজান মাসটি শুরু হবে বিগত বছরের ন্যায় ভিন্ন এক আঙ্গিকে, ভীতি আর শঙ্কার মধ্যে। এবারের রমজানে অনেকেরই আশঙ্কা, করোনার টিকা নিলে রোজা ভঙ্গ হবে কি না। কিন্তু গালফ নিউজের এক প্রতিবেদনে গ্র্যান্ড মুফতির সূত্রে বলা হয়, করোনার টিকা নিলে রোজার কোনো ক্ষতি হবে না। সূত্র আরও জানায়, নাকের শ্লেষ্মা বা রক্তের ফোঁটা থেকে পরীক্ষা করা হলেও রোজা ভঙ্গ হবে না। তাই, রোজা অবস্থায় করোনার পরীক্ষা করানো যাবে।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধসহ অনেক প্রাকৃতিক দুর্যোগ গেছে। কিন্তু অতীতের কোনো লেখালেখি বা ইতিহাসে বর্তমান পরিস্থিতির মতো কোনো নজির নেই। যুদ্ধ ও দুর্যোগের সময় মুসলমানরা রমজানের সময় এক হয়ে তাদের ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালন করেছেন। আমরা বিগত বছরে রমজান দেখেছি, একদিকে লাশের মিছিল, অন্যদিকে মুসল্লিদের সিয়াম সাধনা শেষে আল্লাহর কাছে মহামারির জন্য মাগফিরাত কামনা। আশা ছিল, এবারের রমজান আসবে স্বাভাবিক রহমতের বার্তা বহে।

এবার পবিত্র রমজানে হয়তো মুসল্লিরা সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে কিছুটা হলেও ইবাদত বন্দেগিতে মশগুল থাকবেন। কিন্তু কতটুকু সম্ভব হবে, তা এখনো কিছু বলা যাচ্ছে না। গত বছরের রমজানে মসজিদ ছিল তালাবদ্ধ। গত এক বছরে মসজিদ হারিয়েছে অনেক নিয়মিত মুসল্লিকে।

এবার নিউইয়র্কে দেখছি কিছুটা ভিন্ন চিত্র। রমজান শুরু হওয়ার আগেই চলছে পুরো মাসের বাজারের প্রস্তুতি। খেজুর, মিষ্টি থেকে শুরু করে ছোলা, শরবত, সুস্বাদু ফলমূল কিছুই বাদ যাচ্ছে না। রেস্তোরাঁয় থাকবে মুখরোচক ইফতারির পসরা। এমনকি মুদি দোকানেও থাকবে জিলাপিসহ বিভিন্ন ধরনের ইফতারির আয়োজন। শিশুরা ভীষণ আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষায় থাকবে ইফতারের স্বাদ নিতে। বাড়ির রোজাদার নারীরা ঘরেই ইফতার সারবেন।

পুরুষেরা দৌড়াবেন মসজিদে। মসজিদগুলোতে রকমারি ইফতারির ব্যবস্থা করা হবে। মুসল্লিরা পালা করে ব্যাপকভাবে ইফতারির ব্যবস্থা করে থাকেন।

ইফতারের ঘণ্টা তিনেক পরেই তারাবি নামাজের প্রস্তুতি নিতে হবে। শেষ রাতে আবার সাহরির আয়োজন। এভাবেই স্বপ্নগুলো বোনা হচ্ছে প্রতিটি মুসলমানের ঘরে ঘরে।

গতবারের কথা চিন্তা করলে এবার মসজিদ থাকবে না তালাবদ্ধ। মানুষজন ঘরে বন্দী থাকবে না। বাইরের রেস্তোরাঁগুলোতে স্বল্প পরিসরে হলেও ইফতারির ব্যস্ততা থাকবে। করপোরেট ইফতারের কোনো চাপ না থাকলেও ছোট করে হলেও ইফতার পার্টি থাকবে। লোক সমাগমে সামাজিক নিরাপত্তা বজায় থাকবে। সবকিছু ছাড়িয়ে থাকতে হবে মহান সৃষ্টিকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষার্থে কায়মনোবাক্যে বিগত দিনের গুনাহের জন্য মাফ চাওয়া।

পবিত্র রমজানকে স্বাগত জানানোর মানসিক প্রস্তুতি নেওয়ার প্রকৃত সময় এটি। আমাদের অতীতের সব ভুলের ক্ষমা চেয়ে আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের চেষ্টায় চিরায়ত মাহে রমজানকে স্বাগত জানানো হবে। প্রকৃত মুসলমানদের জন্য এটা হবে ইমানি পরীক্ষা। ব্রিটেনে মুসলিম সংগঠন মুসলিম কাউন্সিল অব ব্রিটেন এক বিবৃতিতে বলেছে, এবারের রমজান হবে আরেক ভিন্ন অভিজ্ঞতার রমজান। এ পরিস্থিতিকেও খাপ খাইয়ে নিতে হবে। যুক্তরাজ্যসহ ইউরোপের অধিকাংশ দেশে মসজিদে নামাজ পড়া এখনো রীতিমতো চালু হয়নি। মুসলিম কাউন্সিল অব ব্রিটেন রমজানের জন্য যে সুপারিশ জারি করেছে তাতে বলা হয়েছে, মসজিদে তারাবি হবে না এবং কোনো ইফতার পার্টি করা যাবে না।

নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের মুসলমানেরা এখন পর্যন্ত মসজিদ কেন্দ্রিক রমজানের আনুষ্ঠানিকতা রক্ষার চূড়ান্ত প্রস্তুতি নিয়েছেন। তবুও তা নির্ভর করছে বৈশ্বিক করোনা পরিস্থিতির ওপর। বাংলাদেশে রমজানে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে মসজিদে তারাবি পড়া যাবে কিনা, তা এখনো নিশ্চিত নয়।

আসুন, এই মাহে রমজানকে আমাদের তাকওয়া অর্জনের উপলক্ষ বানানোর চেষ্টা করি। এই রমজানের সিয়াম সাধনার মাধ্যমে এই কঠিন মহামারির হাত থেকে রক্ষার জন্য আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের চেষ্টা করি। করোনাকালের এই রমজান গুনাহ মুক্তির শেষ সুযোগ হয়ে আসুক প্রবাসে ও দেশে—এটিই সব মুসলিম উম্মাহর একান্ত প্রার্থনা।
 

Users who are viewing this thread

Back
Top