সারা দিন রোজা রাখার পর ইফতারের সময় ছোলা, পেঁয়াজু ও হালিমের স্বাদ পছন্দ করেন অনেকেই। সঙ্গে থাকতে পারে স্বাস্থ্যকর পানীয় আর ফলের সালাদ। এমন কয়েক পদের ইফতারির রেসিপি।
খাসির হালিম
খাসির হালিম
উপকরণ হালিমের মসলার জন্য: এলাচি ৮-১০টি, দারুচিনি ৩টি, লবঙ্গ ৫টি, তেজপাতা ৪টি, আস্ত জিরা ১ টেবিল চামচ, আস্ত ধনে ১ টেবিল চামচ, কালিজিরা ১ চা-চামচ, শাহি জিরা ১ চা-চামচ, মৌরি ১ চা-চামচ, আস্ত শুকনা মরিচ ৭–৮টি, জায়ফল ১টি ও জয়ত্রী দেড় চা-চামচ।
প্রণালি: সব একসঙ্গে তাওয়ায় হালকা টেলে গ্রাইন্ডারে গুঁড়া করে নিন। এর সঙ্গে ১ টেবিল চামচ বিট লবণ মিশিয়ে কাচের বয়ামে ভরে রাখুন।
হালিমের জন্য: খাসির মাংস ১ কেজি, খাসির পায়া ৬ টুকরা, মুগ ডাল ২ টেবিল চামচ, মসুর ডাল ২ টেবিল চামচ, বুটের ডাল ৩ টেবিল চামচ, খেসারি ডাল ২ টেবিল চামচ, মাষকলাই ডাল ৩ টেবিল চামচ, পোলাওয়ের চাল ৩ টেবিল চামচ, গমের গুঁড়া সিকি কাপ, মরিচগুঁড়া ১ চা-চামচ, হলুদগুঁড়া ১ চা-চামচ, আদাবাটা ২ টেবিল চামচ, রসুনবাটা ২ টেবিল চামচ, পেঁয়াজবাটা সিকি কাপ, জিরাবাটা ১ চা-চামচ, ধনেগুঁড়া ১ চা-চামচ, টক দই সিকি কাপ, পেঁয়াজ বেরেস্তা ১ কাপ, তৈরি করা হালিমের মসলা দেড় টেবিল চামচ, ঘন তেঁতুলের ক্বাথ দেড় টেবিল চামচ, আদাকুচি ও পেঁয়াজকুচি ৩ টেবিল চামচ, ঘি সিকি কাপ (বাগারের জন্য), তেল আধা কাপ (রান্নার জন্য), লবণ স্বাদমতো, ধনেপাতা, কাঁচা মরিচকুচি, পুদিনাপাতাকুচি ও লেবুর টুকরা সাজানোর জন্য।
প্রণালি: প্রথমে খাসির পায়া ধুয়ে পরিষ্কার করে নিন। সামান্য লবণ ও হলুদগুঁড়া দিন, সেদ্ধ করুন। মাষকলাই ও মুগ ডাল হালকা ভেজে নিন। এবার সব ডাল ও চাল মিশিয়ে ঘণ্টাখানেক ভিজিয়ে রাখুন। গমের গুঁড়া আলাদা বাটিতে গরম পানিতে ভেজান। এবার বড় হাঁড়িতে তেল দিয়ে সব বাটা ও গুঁড়া মসলা দিন। লবণ দিয়ে একটু ভুনে নিন মসলা। টক দই দিয়ে মসলা আরেকটু ভুনে নিন। খাসির মাংস দিয়ে রান্না করুন। পেঁয়াজের বেরেস্তা ও এক টেবিল চামচ হালিমের মসলা দিয়ে দিন। মাংস যখন তুলতুলে নরম হয়ে যাবে, তখন মসলা থেকে মাংসগুলো তুলে বাটিতে রাখুন।
এবার রান্না করা মাংসের মসলার মধ্যে চাল, ডাল ও গম দিয়ে দিন। আস্ত কাঁচা মরিচগুলো দিন। অনেকটা পানি দিয়ে চাল, ডাল সেদ্ধ না হওয়া পর্যন্ত রান্না করুন। সেদ্ধ হয়ে গেলে ডাল–ঘুঁটনি অথবা হাত ব্লেন্ডারে ঘুঁটে মিক্স করুন। এবার মাংস মেশান। এরপর আধা চা-চামচ হালিমের মসলা ও তেঁতুলের ক্বাথ মিশিয়ে নিন। অন্য একটি প্যানে ঘি গরম করে পেঁয়াজ ও আদাকুচি ভেজে হালিমের বাগার দিয়ে নামিয়ে নিন। আদা কুচি, পেঁয়াজ বেরেস্তা, ধনেপাতা, পুদিনাকুচি ওপরে ছড়িয়ে গরম-গরম পরিবেশন করুন।
আদা-লেবুর পানীয়
আদা-লেবুর পানীয়
উপকরণ: থেঁতলানো আদা ১ কাপ, চিনি দেড় কাপ, পানি ২ কাপ, লেবুর রস ১ কাপ, ঠান্ডা পানি ৪ কাপ, পুদিনাপাতা স্বাদমতো, পাতলা গোল করে কাটা লেবুর টুকরা ও বরফ পরিমাণমতো।
প্রণালি: আদা, চিনি ও ২ কাপ পানি একসঙ্গে প্যানে ঢেলে চুলায় জ্বাল দিতে হবে ১০ মিনিট। চুলা থেকে নামিয়ে ঠান্ডা করে নিন। ছেঁকে নিয়ে ফ্রিজে রেখে ঠান্ডা করুন। এবার তৈরি করে রাখা আদার সিরাপের সঙ্গে বাকি সব উপকরণ মিলিয়ে পরিবেশন করুন।
দই চিড়া
দই চিড়া
উপকরণ: চিড়া ১ কাপ, পানি ঝরানো টক দই ১ কাপ, কনডেন্সড মিল্ক ২ টেবিল চামচ, কলা, আম ও শুকনা ফল পছন্দমতো ও লবণ সিকি চা-চামচ।
প্রণালি: চিড়া ধুয়ে নিন। পানি ঝরিয়ে লবণ মেখে রেখে দিন ১ ঘণ্টা। এতে চিড়া ভিজে নরম হবে এবং ঝরঝরে থাকবে। এবার একটি বাটিতে টক দইয়ের সঙ্গে কনডেন্সড মিল্ক দিয়ে ফেটিয়ে নিন। দেখতে অনেকটা ক্রিমের মতো হবে। পরিবেশনের পাত্রে সব একসঙ্গে মিশিয়ে ঠান্ডা করতে ফ্রিজে রাখুন কিছুক্ষণ। ইফতারের সময় নামিয়ে ঠান্ডা পরিবেশন করুন দই চিড়া।
দুই ডালের পেঁয়াজু
দুই ডালের পেঁয়াজু
উপকরণ: মসুর ও ছোলার ডাল আধা কাপ, বেসন সিকি কাপ, পেঁয়াজকুচি ২ কাপ, আদাবাটা ১ টেবিল চামচ, রসুনবাটা ১ টেবিল চামচ, মরিচগুঁড়া ১ চা-চামচ, হলুদগুঁড়া আধা চা-চামচ, গরমমসলার গুঁড়া আধা চা-চামচ, জিরাগুঁড়া আধা চা-চামচ, কাঁচা মরিচকুচি স্বাদমতো, ধনেপাতা ও পুদিনাকুচি স্বাদমতো, লবণ স্বাদমতো ও তেল ভাজার জন্য।
প্রণালি: ডাল ৩ ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখুন। ভেজানো ডাল ভালো করে ধুয়ে নিন। পাটায় বা ব্লেন্ডারে তা আধা ভাঙা করে নিন। মিহি করে ভাঙা যাবে না। এবার ডালের সঙ্গে সব বাটা ও কাটা মসলা আলতো হাতে মেখে নিন। মথবেন না একদমই। কড়াইয়ে তেল দিন। ডালের মিশ্রণ থেকে কিছুটা হাতে নিয়ে ছোট আকারের পেঁয়াজু গড়ে নিন। গরম তেলে ছেড়ে দিন। মচমচে করে ভেজে নিন।
ছোলা ভুনা
ছোলা ভুনা
উপকরণ: ছোলা ১ কাপ, আলু ১টি বড় (আধা ভাঙা করে নেওয়া), পেঁয়াজকুচি আধা কাপ, আদা ১ টেবিল চামচ, রসুনবাটা ১ টেবিল চামচ, হলুদগুঁড়া সিকি চা-চামচ, মরিচগুঁড়া সিকি চা-চামচ, ভাজা জিরাগুঁড়া আধা চা-চামচ, গরমমসলার গুঁড়া সিকি চা-চামচ, কাঁচা মরিচ ৩-৫টি, লবণ পরিমাণমতো, শর্ষের তেল ১ কাপের তিন ভাগের এক ভাগ, টমেটোকুচি ১টি ও ধনেপাতা কুচি প্রয়োজনমতো।
প্রণালি: প্রথমে ছোলা ৫-৬ ঘণ্টা ভিজিয়ে রেখে দিন। হাঁড়িতে বেশি করে পানি ও সামান্য লবণ দিয়ে সেদ্ধ করে নিন। ছোলা থেকে যে অতিরিক্ত কালো পানি বের হবে, তা ফেলে দিন। প্যানে শর্ষের তেল গরম করে প্রথমে কয়েকটা শুকনা মরিচ ভেজে উঠিয়ে নিন। এরপর সেই তেলেই পেঁয়াজ দিয়ে আদাবাটা, রসুনবাটা, হলুদগুঁড়া, ধনেগুঁড়া, মরিচগুঁড়া ও সামান্য লবণ দিয়ে একটু ভেজে নিন। এরপর আধভাঙা আলু দিয়ে সামান্য পানি দিন।
একটু নেড়েচেড়ে ছোলা দিয়ে অনেকক্ষণ ভুনতে হবে। ছোলা মাখা মাখা হলে টমেটোকুচি, ভাজা জিরা ও গরমমসলার গুঁড়া দিয়ে আরেকটু ভুনে নিন। কাঁচা মরিচ ও ধনেপাতা দিয়ে নেড়েচেড়ে নামিয়ে নিন। এরপর গরম-গরম পরিবেশন করুন।