অটিজম হলো স্নায়ুবিকাশজনিত সমস্যা। এতে আক্রান্ত শিশুর ভাষার দক্ষতা অর্জন ও সামাজিক মিথস্ক্রিয়া স্বাভাবিকভাবে করতে পারে না। অটিজম বৈশিষ্ট্যপূর্ণ শিশুদের জন্য একটি সমন্বিত চিকিৎসাপদ্ধতির দরকার হয়। এ চিকিৎসাপদ্ধতিতে ফিজিওথেরাপিরও ভূমিকা আছে।
গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত ব্যায়াম ও শারীরিক কার্যক্রমে অটিজম বৈশিষ্ট্যপূর্ণ শিশুদের সামাজিক মিথস্ক্রিয়া বৃদ্ধি পায়। অর্থাৎ শিশুরা অন্যদের সঙ্গে মিশতে পারে ও যোগাযোগ স্থাপন করতে পারে, যা অটিজমের একটি কঠিন চ্যালেঞ্জ। বেশির ভাগ অটিজম শিশুর মাংসপেশি সমন্বয়, মাংসপেশির কার্যক্ষমতা দুর্বল বা কম থাকে।
নিয়মিত ফিজিওথেরাপি দিয়ে এ সমস্যাগুলো কমিয়ে আনা সম্ভব। আর স্পিচ থেরাপির ভূমিকা তো আছেই।
বাড়িতে যা করতে পারেন
■ হাতের আঙুলের মাংসপেশির দুর্বলতার কারণে অনেকেই পেনসিল ধরতে পারে না বা খুব সূক্ষ্ম কাজ করতে পারে না। এ ক্ষেত্রে শিশুর আঙুলের সমন্বয় ও কার্যক্ষমতা বৃদ্ধিতে তাকে ডো, কাদামাটি বা ময়দার খামি দিয়ে খেলতে দিন। নিজেও তার সঙ্গে খেলায় মেতে উঠুন।
■ স্কোয়াটিং খুবই কার্যকর একটি ব্যায়াম। প্রথমে শুরু করুন চেয়ারে বসা এবং ওঠা দিয়ে। এভাবে ১০ বার করুন। শিশু দিনে দুবার এ ব্যায়াম করবে। এরপর ধীরে ধীরে চেয়ার সরিয়ে দিন। এ ক্ষেত্রে চেয়ার ছাড়াই একইভাবে হাঁটু ভাঁজ করে অর্ধ বসার ও ওঠার ভঙ্গি করবে শিশু। দিনের কিছুটা সময় টয়লেট সিটিংয়ের চেষ্টাও করতে হবে।
■ শিশুকে যত বেশি বাইরে খেলাধুলায় আগ্রহী করা যায়, ততই ভালো। যেমন বল ছুড়ে দেওয়া, বাস্কেটে বল ছুড়তে বলা। এই একটি কাজই বারবার করবে। প্রতিদিন একই নিয়মে একটি কাজ করলে শিশুর মনোযোগ যেমন বাড়বে, তেমনি মাংসপেশির কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে। ফলে শিশু আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠবে এবং সামাজিকভাবে অন্যদের সঙ্গে মিশতে সহজ হবে।
■ শিশুর সঙ্গে রং নিয়ে খেলার জন্য দিনের একটা নির্দিষ্ট সময় ঠিক করুন। এ সময়ে তার সঙ্গে মেতে উঠতে পারেন নানা রকমের খেলায়। যেমন একটা ত্রিভুজ এঁকে তাতে রং করা। খেয়াল রাখতে হবে, শিশু যেন ধীরে ধীরে ও সময় নিয়ে কাজটা শেষ করে। এর ফলে তার মনোযোগ বাড়বে।
* উম্মে শায়লা রুমকি | ফিজিওথেরাপি পরামর্শক