What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

রমজানে ডায়াবেটিস ও অন্যান্য রোগ ব্যবস্থাপনা (1 Viewer)

পবিত্র রমজান মাসে আমাদের দৈনন্দিন রুটিনে আর খাদ্যাভ্যাসে ব্যাপক পরিবর্তন আসে। এর ফলে যাদের ক্রনিক রোগ আছে, যেমন ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, থাইরয়েড, হাঁপানি ইত্যাদির কারণে সারা বছর খেতে হয় অনেক ওষুধ, তাদের সতর্ক থাকতে হয়। ডায়াবেটিসের সঙ্গে খাদ্য ব্যবস্থাপনা ওতপ্রোতভাবে জড়িত। তাই খাদ্যাভ্যাসের বিষয়েও সাবধানতা চাই।

umPkBOc.png


কেমন হওয়া উচিত খাবার

রোজার সময় মানুষকে ভোর থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত না খেয়ে থাকতে হয়। ভৌগোলিক অবস্থান ও মৌসুমভেদে এ সময়কাল ১৪ ঘণ্টা থেকে সর্বোচ্চ ২৩ ঘণ্টা পর্যন্ত হতে পারে। আমাদের দেশে সাহ্‌রি ও ইফতারের মধ্যবর্তী সময় সর্বোচ্চ ১৮ ঘণ্টা হতে পারে। এ দীর্ঘ সময় একজন ডায়াবেটিস রোগীর না খেয়ে থাকা উচিত হবে কি না, তা নিয়ে অনেক বিতর্ক আছে। পবিত্র কোরআন শরিফেও রোগাক্রান্ত ব্যক্তিদের রোজা রাখা থেকে রেহাই দেওয়া হয়েছে (সুরা আল বাকারা: আয়াত ১৮৩-১৮৫)। ডায়াবেটিসের রোগীর বিপর্যস্ত বিপাকীয় তন্ত্রের কারণে দীর্ঘ সময় না খেয়ে থাকলে শারীরিক নানাবিধ সমস্যা হতে পারে। কিন্তু কোনো ডায়াবেটিসের রোগী যদি ধর্মীয় আগ্রহের কারণে রোজা রাখতে চান, তবে তাকে নিষেধ করাও সম্ভব নয়। তাই রোজা রাখলেও সতর্ক থাকতে হবে।

রোজা রাখার সময় ডায়াবেটিসের রোগীর যেসব ঝুঁকি দেখা দিতে পারে, তা হলো রক্তের গ্লুকোজের মাত্রা কমে যাওয়া (হাইপোগ্লাইসেমিয়া), রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ বেড়ে যাওয়া (হাইপারগ্লাইসেমিয়া), ডায়াবেটিক কিটোঅ্যাসিডোসিস, পানিশূন্যতা ও থ্রম্বোএম্বোলিজম।

খাদ্য ব্যবস্থাপনা

  • সাহ্‌রির খাবার শেষ সময়ের অল্প কিছুক্ষণ আগে খেতে হবে। সাহ্‌রি বাদ দেবেন না।
  • ইফতারের সময় অধিক পরিমাণে মিষ্টি ও চর্বিজাতীয় খাবার গ্রহণ না করা উচিত। অতিরিক্ত ভাজাপোড়া খাবার কেবল শর্করা, রক্তচাপ ও রক্তের কোলেস্টেরল বাড়ায় তা নয়, বদহজম, পেপটিক আলসারের উপসর্গ করতে পারে।
  • পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি ও পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে, যেন তার পানিশূন্যতা না হয়। প্রচুর ফলমূল, শাকসবজি, ডাল ও টকদই তালিকাভুক্ত করতে পারেন। ডাবের পানি পান করতে পারেন।
  • খাদ্যের ক্যালরি ঠিক রেখে খাওয়ার পরিমাণ এবং ধরন ঠিক করতে হবে। সঠিক সময়ে সঠিক পরিমাণ খাওয়া প্রয়োজন। সঠিক ওজন ও ক্যালরির মাত্রা বজায় রাখুন।
  • রমজানের আগে যে পরিমাণ ক্যালরি যুক্ত খাবার খেতেন, রমজানে ক্যালরির পরিমাণ ঠিক রেখে খাবার সময় এবং ধরন বদলাতে হবে। প্রয়োজন হলে পুষ্টিবিদের সঙ্গে যোগাযোগ করে খাবার তালিকা ঠিক করে নিতে হবে। লক্ষ রাখতে হবে, ওষুধের সঙ্গে খাবারের যেন সামঞ্জস্য থাকে। ইফতারের সময় যথেষ্ট এবং শেষ রাতে অল্প আহার পরিহার করতে হবে। জটিল শর্করাজাতীয় খাবার সাহ্‌রির সময় খেতে হবে। আর ইফতারিতে সহজপাচ্য খাবার খেতে হবে।

পরীক্ষা করুন

রোজাদার ডায়াবেটিস রোগীকে ঘন ঘন রক্তের গ্লুকোজের মাত্রা দেখতে হবে। গ্লুকোমিটারে রক্ত পরীক্ষা করলে রোজা ভাঙে না। প্রতিদিন বেশ কয়েকবার (কমপক্ষে তিনবার) রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা দেখা ভালো। কখনো খারাপ লাগলে অবশ্যই দেখতে হবে। রক্তের গ্লুকোজ ৪ মিলিমোলের কম বা ১৬ মিলিমোলের বেশি হলে রোজা ভাঙতে হবে।

এ ছাড়া মাঝেমধ্যে রক্তচাপও মাপবেন। লবণাক্ত ও তৈলাক্ত খাবার বেশি খাওয়ার কারণে আর ঘুমের সময়সূচির পরিবর্তনে রক্তচাপের ওঠানামা হতে পারে। পানিশূন্য হচ্ছে কি না, বুঝতে পারবেন প্রস্রাবের পরিমাণ ও রং দেখে, আর জিব শুষ্ক ত্বক বিবর্ণ হলে।

ব্যায়াম ও পরিশ্রম

স্বাভাবিক শারীরিক কর্মকাণ্ড চালানো যেতে পারে, তবে খুব বেশি কঠোর শ্রম বা ব্যায়াম না করাই ভালো। এতে হাইপোগ্লাইসেমিয়া হতে পারে। আর তারাবিহ নামাজ পড়লে, তাকে শারীরিক শ্রম হিসেবে গণ্য করা যেতে পারে।

প্রাক্‌–রমজান মূল্যায়ন

যেসব ডায়াবেটিস রোগী সব ঝুঁকির কথা জেনেও রোজা রাখতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ, তাঁদের রোজা শুরুর আগে প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে নিতে হবে। এর মধ্যে রক্তের গ্লুকোজ, লিপিড, লিভার, কিডনি ও হৃৎপিণ্ডের কার্যকারিতার পরীক্ষা, এইচবিএ১সি ইত্যাদি পরীক্ষা করে নিতে হবে। রমজানের আগেই ওষুধ বা ইনসুলিনের নতুন শিডিউল চিকিৎসকের কাছে জেনে নিন।

যারা উচ্চ রক্তচাপ, হার্ট বা অন্যান্য ওষুধ খান, তারাও রমজানের আগেই ফলোআপ করে ওষুধের নিয়মকানুন জেনে নিন।

* ডা. শাহজাদা সেলিম | সহযোগী অধ্যাপক, এন্ডোক্রাইনোলজি বিভাগ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা
 

Users who are viewing this thread

Back
Top