What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

চৈত্রসংক্রান্তির খাবার (1 Viewer)

sWqdk5h.jpg


বছরের শেষ হোক বা শুরু, উৎসব হবে আর খাওয়া হবে না বাংলাদেশে, এটা ভাবা যায় না। নাচুনি বুড়ির নাচার জন্য যেমন ঢাকের শব্দই যথেষ্ট, বাহারি খাবার রান্নার জন্য বাঙালির তেমন একটা দিন হলেই হলো। তবে হ্যাঁ, আবহমান কালের রীতি অনুসারে একেক উৎসবের জন্য একেক রকমের খাবার নির্ধারিত আছে। এর কারণ সম্ভবত এই অঞ্চলের প্রায় সব আদি উৎসবই কৃষিসংস্কৃতির সঙ্গে জড়িত। এ জন্যই দেখা যায়, যে ঋতুতে যে উৎসব হয়, সে ঋতুতে যা পাওয়া যায়, তাই হয় সে উৎসবের খাবারের প্রধান উপকরণ।

সংক্রান্তি শব্দটি প্রচলিত অর্থে 'শেষ' নির্দেশ করে। মাসের শেষ। এর আভিধানিক অর্থ সংক্রমণ, সূর্যাদির রাশি অতিক্রমণ; ব্যাপ্তি; সঞ্চার; মাসের শেষ তারিখ। চৈত্র মাসের শেষ তারিখটি চৈত্রসংক্রান্তি, ঠিক যেমন পৌষ মাসের শেষ দিনটি পৌষ বা মকরসংক্রান্তি। প্রতি মাসের শেষ দিনটিই আসলে সংক্রান্তি। চৈত্রসংক্রান্তি বাঙালির জীবনে বিশেষ। কারণ, এটি বাংলা বছর পরিক্রমার শেষ দিন। পরের দিনটিই পয়লা বৈশাখ, অর্থাৎ নতুন বছরের শুরু।

বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে চৈত্রসংক্রান্তির খাবার ভিন্ন ভিন্ন হয়ে থাকে। তবে কিছু বিষয়ে মিলও আছে, যেমন তিতা স্বাদের খাবার। এর মধ্যে নিমপাতাভাজা, শুক্ত প্রধান। ঘিয়ে ভাজা নিমপাতা দিয়ে গরম ভাত, সঙ্গে আলু, কুমড়া, পটোল, বেগুন, করলাভাজা—এ পাঁচ রকমের ভাজা, ঢেঁকিশাক, পাটশাক, গিমাশাক, বথুয়াশাক, থানকুনি শাক ভাজা, ডালের বড়া মেশানো শুক্ত, পুঁটি মাছভাজা এগুলো চৈত্রসংক্রান্তির একেবারে 'ট্রেডমার্ক' খাবার। খেয়াল করলে দেখবেন, এ খাবারগুলোর কয়েকটি তিতা স্বাদের। ধারণা করা হয়, তিতা খাবার শরীরের রোগ প্রতিরোধ করতে সক্ষম।

বাংলাদেশের উত্তর অঞ্চলে শাক ও সবজির সঙ্গে সকালবেলা খাওয়া হয় চাল-বুট-গম-তিলভাজা। আর অবধারিতভাবে খাওয়া হবে শুকনা বরই কিংবা কচি আমের টক। তীব্র গরমে টক খাবার শরীরকে কিছুটা হলেও স্বস্তিতে রাখে। নোয়াখালী অঞ্চলের সংক্রান্তির খাবারের বড় আকর্ষণ পাঁচন বা পাজন। একসময় ১০৮ রকম উপাদানে রান্না হলেও এখন সেটা কমতে কমতে ২০–২৫টি উপকরণে এসে ঠেকেছে। পাজনে থাকে বিভিন্ন বনজ ওষধি লতাপাতা এবং শাকসবজি। করলা, কাঁকরোল, ঢেঁড়া, পটোল, বেগুন, পেঁপে, কাঁচকলা, শিম, বরবটি, ঝিঙে, চিচিঙ্গা, কুমড়াসহ গ্রীষ্ম ঋতুতে যেসব শাকসবজি পাওয়া যায়, তার সবকিছু দিয়ে রান্না করা হয় এ পাজন। একেবারে নিরামিষ এ রান্নায় শেষে মেশানো হয় ভাজা নারকেল কোরা, আখের গুড় আর ভাজা শিমের দানা।

3wdv08i.jpg


এর সঙ্গে সকালে খাওয়া হয় ফলার বা ফলাহার। খইয়ের ছাতু, ভেজানো চিড়া, দই, কলা, সন্দেশ মেখে এ ফলার খাওয়ার চল। এ ছাড়া খইয়ের ছাতু আর গুড় দিয়ে একপ্রকার নাড়ু বানানোর চল আছে চট্টগ্রাম অঞ্চলে।

চৈত্রসংক্রান্তির খাবারের অন্যতম আকর্ষণ টক স্বাদের বিভিন্ন ধরনের শরবত। আম পোড়া শরবত তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য। কাঁচা আম পুড়ে চটকে নিয়ে বানানো হয় এ শরবত। চাইলে স্বাদ বাড়াতে বিভিন্ন ধরনের মসলা যোগ করা যেতে পারে সঙ্গে ঠান্ডা পানি।

তিতা দিয়ে শেষ হোক করোনাক্লান্ত এ বছর। নতুন বছর শুরু হোক মিষ্টিমুখে।

কৃতজ্ঞতা: সোনম সাহা
 

Users who are viewing this thread

Back
Top