What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

যে কফিন জীবন বাঁচাত (1 Viewer)

JdOflgx.jpg


কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের 'ছায়াসঙ্গী' গল্পের কথা অনেকেরই মনে থাকার কথা। ওই যে এক ১০–১১ বছরের গ্রাম্য বালক মন্তাজ মিয়া, প্রচণ্ড জ্বরে ভুগে যে মারা যায়। তাকে কবর দেওয়া হলো। গভীর রাতে মন্তাজের বড় বোন এসে হাজির; তার দাবি, ভাইটা তার মরেনি। এখনই মন্তাজকে কবর খুঁড়ে বের করতে হবে। তার অনেক চেষ্টার পর অবশেষে কবর খোঁড়া হলো। সত্যিই দেখা গেল, মন্তাজ বেঁচে আছে। অদ্ভুত ও রোমাঞ্চকর এক গল্প। গল্পটির কথা মনে পড়ল ১৮৪৩ সালে উদ্ভাবিত এক বিশেষ কফিন প্রসঙ্গে। কফিনটি 'আইজেনব্র্যান্ট কফিন' নামে পরিচিত ছিল। ধরুন, মারা গেছে মনে করে কাউকে কফিনে ভরা হলো। এরপর যদি লোকটি জেগে ওঠে গল্পের মন্তাজের মতো—তাহলে? কফিনটি যদি 'আইজেনব্র্যান্ট কফিন' হয়, তাহলে অন্তত কবরের যাওয়ার আগে কফিনের ঢাকনা অনেকটা স্বয়ংক্রিয়ভাবে খুলে যাবে! এই কফিনে শ্বাস নেওয়ারও ব্যবস্থা ছিল। এই হলো আইজেনব্র্যান্ট কফিনের বিশেষত্ব। সে সময় এটি ছিল এক বিস্ময়কর উদ্ভাবন।

6nhvto8.jpg


আইজেনব্র্যান্ট কফিন, উইকিমিডিয়া কমনস

ক্রিস্টিয়ান হেনরি আইজেনব্র্যান্ট ছিলেন জার্মান কাঠ ও কাঁসাশিল্পের কারিগর। তাঁর নামেই 'আইজেনব্র্যান্ট কফিন'। জার্মানির গোটিঙেন শহরে ১৭৯০ সালে তাঁর জন্ম। ১৮১১ সালে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ফিলাডেলফিয়ায় পাড়ি জমান। ১৮১৯ সালে বাল্টিমোরে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। কাঠের বিভিন্ন আসবাব তৈরি করতেন আইজেনব্র্যান্ট। পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্র তৈরিতেও হাত দেন। যুক্তরাষ্ট্রে তাঁর কাজের সুনাম ছড়িয়ে পড়ে। লন্ডনে আয়োজিত ১৮৫১ সালের 'গ্রেট এক্সিবিশন'–এ অংশ নেন তিনি। সে সময় আইজেনব্র্যান্টের ব্যবসা ছিল রমরমা। তাঁর প্রতিষ্ঠানের নাম ছিল 'বোবেথ অ্যান্ড শুলেনবার্গ'।

আইজেনব্র্যান্টের কফিনটিকে বলা হতো সবচেয়ে কার্যকর। কেননা তাঁর কফিন কবর দেওয়ার আগেই কাজে লাগার মতো ছিল। অন্যান্য বিশেষ কফিন কাজ করত কবর দেওয়ার পর—তখন হয়তো বেঁচে ফেরা দুষ্কর হয়ে উঠত।

১৮৪৩ সালের ১৫ নভেম্বর আইজেনব্র্যান্ট অভূতপূর্ব কফিনটির নকশার পেটেন্ট বা স্বত্ব পান। তিনি এর শিরোনামে লিখেছিলেন, 'মৃত্যু নিয়ে অনিশ্চয়তায় জীবন রক্ষাকারী কফিন'। খুবই জটিল এক কাঠামো ছিল কফিনটির। ওতে থাকা ব্যক্তির সামান্য নড়াচড়ায় অনেকটা স্বয়ংক্রিয়ভাবে ছিটকিনি খুলে যেত। কফিনে লাগানো থাকত একাধিক স্প্রিং ও লিভার। কফিনে শোয়া ব্যক্তি যাতে শ্বাস নিতে পারেন, সে জন্য কফিনের ঢাকনায় বিশেষ ছিদ্রও রাখা হতো। এই কফিনের ঢাকনায়—শুয়ে থাকা ব্যক্তির ঠিক কপালের ওপরে থাকত একটি 'হেড প্লেট'। কোনো ব্যক্তির কপাল প্লেটে লাগলে তা লিভারের মতো কাজ করত এবং কফিনের ঢাকনার ছিটকিনি খুলে যেত। ছিটকিনি খোলার আরেকটি পথ ছিল। তারের সঙ্গে যুক্ত একটি রিং ব্যক্তির আঙুলে পরিয়ে দেওয়া হতো। এই তারে টান পড়লেও ছিটকিনি খুলে যেত। আইজেনব্র্যান্টের কফিনটিকে বলা হতো সবচেয়ে কার্যকর। কেননা তাঁর কফিন কবর দেওয়ার আগেই কাজে লাগার মতো ছিল। অন্যান্য বিশেষ কফিন কাজ করত কবর দেওয়ার পর—তখন হয়তো বেঁচে ফেরা দুষ্কর হয়ে উঠত।

আদতে জীবিত অবস্থায় সমাধিস্থ হয়ে যাওয়ার ভয়কে পুঁজি করে এই কফিনের বিক্রি সে সময় বেড়ে গিয়েছিল। মনোবিজ্ঞানীরা সেই ভয়কে বলেন, 'ট্যাফোফোবিয়া'। ১৮৬০ সালে যুক্তরাষ্ট্রেই আইজেনব্র্যান্টের মৃত্যুর পর তাঁর ছেলে ব্যবসাটা টিকিয়ে রাখেন ১৯৪৯ সাল পর্যন্ত। অনলাইনে কেনাকাটার ওয়েবসাইট ইবেতে এখন এই আইজেনব্র্যান্ট কফিন কিনতে পাওয়া না গেলেও কফিনের প্রথম বিজ্ঞাপনী পোস্টারটি অবশ্য আপনি পাবেন।

সূত্র: অক্সফোর্ড মিউজিক অনলাইন, বার্মিংহাম কনজারভেশন ট্রাস্ট ও এডগার অ্যালান পো: হিজ লাইফ অ্যান্ড লিগ্যাসি
 
These are the rules that are to be followed throughout the entire site. Please ensure you follow them when you post. Those who violate the rules may be punished including possibly having their account suspended.

যারা কমেন্ট করবেন, দয়া করে বানান ঠিক রাখুন। উত্তেজিত অবস্থায় দ্রুত কমেন্ট করতে গিয়ে বানান ভুল করবেন না। আমরা যারা কমেন্ট পড়তে আসি, আমাদের কমেন্ট পড়তে অনেক অসুবিধা হয়।

Users who are viewing this thread

Back
Top