What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট সম্পর্কে যেসব তথ্য আপনার জানা দরকার (1 Viewer)

Bergamo

Forum God
Elite Leader
Joined
Mar 2, 2018
Threads
9,649
Messages
117,051
Credits
1,241,096
Glasses sunglasses
Berry Tart
Statue Of Liberty
Profile Music
Sandwich
DRCkNFk.jpg


অবশেষে সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে ১০ মে ফ্লোরিডা থেকে স্পেসএক্স এর ফ্যালকন-৯ রকেটে চড়ে মহাকাশে নিজের কক্ষপথে যাচ্ছে বাংলাদেশের প্রথম কমিউনিকেশনস স্যাটেলাইট বঙ্গবন্ধু-১। আর এই উড্ডয়নের সাথে সাথেই বাংলাদেশ নাম লেখাতে যাচ্ছে নিজস্ব স্যাটেলাইটের মালিক দেশগুলোর এলিট ক্লাবে। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট এর মাধ্যমে বিশ্বের ৫৭তম স্যাটেলাইট ক্ষমতাধর দেশ হবে বাংলাদেশ।

গত বছরের ১৬ ডিসেম্বর বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট এর উড্ডয়নের কথা থাকলেও হারিকেন আরমায় এর উৎক্ষেপণ স্থান ফ্লোরিডাতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হওয়ায় সেই তারিখ পিছিয়ে এ বছরে আনা হয়।

একাধিকবার পিছিয়ে গত ৪ মে স্যাটেলাইটটি লঞ্চ করার কথা থাকলেও সেটিও পিছিয়ে দেয়া হয় এবং নতুন তারিখ দেয়া হয় ১০মে। ওদিকে একটু বেশি সময় নিয়ে হলেও স্পেসএক্স কোন রিস্ক নিতে চায়নি। তাদের ফ্যালকন ৯ রকেটের নতুন ভার্সন 'ব্লক ৫'কে আরেকটু ঝালাই করে নিতেই উড্ডয়নে এবার দেরি করিয়েছে স্পেসএক্স।

বাংলাদেশের কৃত্রিম উপগ্রহ বঙ্গবন্ধু-১ উড্ডয়নের পুরোটা সময় বরাবরের মতই স্পেসএক্স তাদের ওয়েবসাইটে লাইভ স্ট্রিম করবে।

বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত গৌরবময় এই ঘটনার সাক্ষী হতে দেশের মানুষদের উৎসাহের শেষ নেই। সেই সাথে সাধারণ মানুষদের মাঝে এই স্যাটেলাইট নিয়ে রয়েছে ব্যাপক কৌতূহলও। সেসবেরই উত্তর খুঁজতে এই আর্টিকেল।

XQLDTuV.jpg


যেভাবে শুরু

গত ২০১৫ সালে বঙ্গবন্ধু- ১ স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের সিদ্ধান্ত সরকারিভাবে চূড়ান্ত অনুমোদিত হয়। ঐবছর বিটিআরসি ফ্রান্সের থ্যালেস অ্যালেনিয়া স্পেস নামক কোম্পানির সাথে স্যাটেলাইট সিস্টেম ক্রয় করা বাবদ প্রায় ২ হাজার কোটি টাকার একটি চুক্তি সই করে। এরপর ২০১৬'র সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) স্যাটেলাইটটিকে কক্ষপথে পাঠানোর খরচ জোগানোর অংশ হিসেবে এইচএসবিসি ব্যাংকের সাথে ১৪০০ কোটি টাকার টাকার একটি ঋণ চুক্তি সই করে।

বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট এর জন্য কত খরচ হল?

বঙ্গবন্ধু- ১ স্যাটেলাইট প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য মোট খরচ হচ্ছে ২ হাজার ৯০২ কোটি টাকার মত। এই অর্থের যোগান আসছে দুই ভাবে। এর মধ্যে আছে ১ হাজার ৫৪৪ কোটি টাকার সরকারি তহবিল। আর ঋণ হিসেবে এইচএসবিসি ব্যাংক দিচ্ছে ১ হাজার ৩৫৮ কোটি টাকা।

বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট নির্মাণে লাগল ১ বছরের বেশি

ফ্রান্সে বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইটটি নির্মাণ করতে ১ বছরের বেশি সময় লেগে যায়। স্যাটেলাইট নির্মাতা কোম্পানি থ্যালাসের সাথে বাংলাদেশ সরকারের চুক্তি হয় ২০১৫ সালের ১১ নভেম্বর। ২০১৭ সালের নভেম্বরে বিটিআরসির চেয়ারম্যান শাহজাহান মাহমুদ জানান যে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এরপর ২০১৮'র মার্চে বিশেষ কার্গো বিমানে করে একে উৎক্ষেপণের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের কেনেডি স্পেস সেন্টারে পাঠানো হয়।

HUfKIGH.jpg


বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট এর মহাকাশ যাত্রা

বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইটটিকে পৃথিবীর কক্ষপথে বহন করে নিয়ে যাবে বাণিজ্যিকভাবে মহাকাশ ও মহাকাশযান নিয়ে গবেষণাকারী জনপ্রিয় কোম্পানি যুক্তরাষ্ট্রের স্পেসএক্স। এটি ইলন মাস্কের অন্যতম স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠান। যে রকেটে করে মহাকাশে স্যাটেলাইটটিকে পাঠানো হবে সেটি হলো স্পেসএক্স এর ফ্যালকন-৯ ব্লক ৫ রকেট। স্পেসএক্স এর ফ্যালকন ৯ রকেটের নতুন ভার্সন ব্লক ৫ এর প্রথম মিশনই হতে যাচ্ছে বঙ্গবন্ধু-১। যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার স্থানীয় সময় বিকেল চারটায় কেপ ক্যানাভেরাল লঞ্চ প্যাড থেকে বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করা হবে ১০ মে ২০১৮। বাংলাদেশ সময় অনুযায়ী বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের সময় ১১ মে দিবাগত রাত তিনটা।

9gPCq9R.jpg


যেখান থেকে উৎক্ষেপণ করা হবে বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট

যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যে অবস্থিত নাসার জন এফ কেনেডি স্পেস সেন্টার কমপ্লেক্সের ৩৯এ লঞ্চপ্যাড থেকে বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট নিয়ে উড্ডয়ন করবে স্পেসএক্স এর ফ্যালকন ৯ রকেটের নতুন ভার্সন ব্লক ৫ রকেট। ১৯৬৯ সালে এই লঞ্চ কমপ্লেক্স থেকেই চন্দ্রাভিযানে রওনা হয়েছিল অ্যাপোলো-১১। স্যাটেলাইটটি ৩৫৭০০ কিলোমিটার উচ্চতায় যাওয়ার পর রকেটের স্টেজ ১ অংশ থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে এবং ৩৬০০০ কিঃমিঃ উপর থেকে এটি পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করবে। এটিকে নিয়ন্ত্রণ করে এর জন্য নির্ধারিত কক্ষপথ ১১৯.১ পূর্ব দ্রাঘিমাংশে একে চূড়ান্তভাবে বসানো হবে। বাংলাদেশ ১৫ বছরের জন্য এই অরবিটাল স্লট কিনেছে রাশিয়ান স্যাটেলাইট কোম্পানি ইন্টারস্পুটনিক এর কাছ থেকে যাতে খরচ হয়েছে প্রায় ২১৯ কোটি টাকা।

বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট এর স্পেসিফিকেশন

বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট এর ওজন প্রায় ৩৬০০ কেজি এবং এতে থাকবে স্যাটেলাইট যোগাযোগের জন্য ৪০টি ট্রান্সপন্ডার। এর মধ্যে ২০টি বাংলাদেশ নিজে ব্যবহার করবে আর বাকি ২০টি ট্রান্সপন্ডার বিভিন্ন দেশ বা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাছে টাকার বিনিময়ে ভাড়া দেয়া হবে।

দেখতে কেমন হবে বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট?

আপনি হয়ত ইতোমধ্যেই ফেসবুকে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের বিভিন্ন কাল্পনিক ছবি দেখেছেন। এখানে দেখুন স্যাটেলাইটটির নির্মাতা কোম্পানির প্রকাশিত একটি ছবি।

0o5KNj7.jpg


বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট প্রকল্প প্রধানের কাছ থেকে জানা গেছে, স্যাটেলাইটটিতে বিবি লেখা থাকতে পারে এবং এর সাথে সরকারি একটি লোগো আঁকা থাকতে পারে। পরবর্তীতে আরও ছবি পেলে এই পোস্টে আপডেট করে দেয়ার প্রত্যাশা রইল।

উৎক্ষেপণের পরেও অনেক কাজ!

উড্ডয়নের পর বিভিন্ন ধাপ পেরিয়ে স্যাটেলাইটটির পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আনতে সময় লাগবে ২০ দিন (মোট ৩০ দিনের মত)। এসময় স্যাটেলাইটটিকে নিয়ন্ত্রণ করবে যুক্তরাষ্ট্র, কোরিয়া ও ইতালির তিনটি গ্রাউন্ড স্টেশন। পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আনার পরেই স্যাটেলাইটটির নিয়ন্ত্রণ বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষের হাতে দেয়া হবে। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট নিয়ন্ত্রণের জন্য ইতোমধ্যে গাজীপুরের জয়দেবপুর ও রাঙ্গামাটির বেতবুনিয়াতে দুটি গ্রাউন্ড স্টেশন নির্মাণ করেছে বাংলাদেশ সরকার। গঠিত হয়েছে 'বাংলাদেশ কমিউনিকেশন স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেড' নামের বিশেষ রাষ্ট্রীয় কোম্পানি।

যেসব সুবিধা পাওয়া যাবে বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট থেকে

বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট অন্তত ৪০ ধরনের সেবা দেবে যেমন- স্যাটেলাইট টেলিভিশন সম্প্রচার, বেতার, ভি-স্যাট, ডিটিএইচ (ডাইরেক্ট টু হোম) সেবা, ইন্টারনেট প্রভৃতি। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের মাধ্যমে বাংলাদেশের বছরে প্রায় ১৪ মিলিয়ন ডলার সাশ্রয় হবে। কারণ নিজেদের স্যাটেলাইট হলে বাংলাদেশকে আর বিদেশি স্যাটেলাইট চড়া মুল্যে ভাড়া নিতে হবেনা। আশা করা যাচ্ছে স্যাটেলাইটটি কমপক্ষে ১৫ বছর কর্মক্ষম থাকবে।

আশা করি এই পোস্টটি আপনাকে দারুণ কিছু তথ্য দিয়েছে। ইমেজ ক্রেডিটঃ কেনেডি স্পেস সেন্টার, স্পেসএক্স, থ্যালেস অ্যালেনিয়া স্পেস।
 

Users who are viewing this thread

Back
Top