What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

ডায়ালাইসিস রোগীরা যেভাবে ভালো থাকবেন (1 Viewer)

Phn9CR8.jpg


দীর্ঘমেয়াদি কিডনি রোগ হলে তা সাধারণত সারে না। এমন ক্রনিক কিডনি ডিজিজ বা কিডনি ফেইলিউরের শেষতম ধাপে পৌঁছে গেলে চিকিৎসা এসে থামে তিন প্রকারে—হিমোডায়ালাইসিস, পেরিটোনিয়াল ডায়ালাইসিস অথবা কিডনি প্রতিস্থাপন। কিডনি প্রতিস্থাপনের আগে চতুর্থ ধাপেই হিমোডায়ালাইসিসের জন্য রোগীকে প্রস্তুত করার দরকার হয়। এই প্রস্তুতি শারীরিক ও মানসিক দুই রকমেরই।

প্রথমেই আশু ডায়ালাইসিস সমাধা করার জন্য একটি দরকারি অস্ত্রোপচার (এভিএফ ক্রিয়েশন) বা ফিস্টুলা তৈরি করতে হয়। তার সঙ্গে হেপাটাইটিস বি, নিউমোনিয়া ও ইনফ্লুয়েঞ্জার টিকা চতুর্থ ধাপে দেওয়া শুরু করতে হবে। কিডনি প্রতিস্থাপনের সুযোগ থাকলে এর জন্য আইনভিত্তিক কিডনিদাতাকে প্রস্তুত করার চেষ্টা করা জরুরি। সেই সঙ্গে রোগীকে মানসিক ভরসা দেওয়ার কাজটিও শুরু করতে হয়।

পেরিটোনিয়াল ডায়ালাইসিস পঞ্চম ধাপের আরেকটি চিকিৎসাপদ্ধতি। যাতে রোগী বাড়িতে বসেই ডায়ালাইসিসের কাজটি করতে পারেন। কিন্তু বাংলাদেশে এর উপকরণ প্রস্তুত হয় না, ব্যয়ভার বেশি, সংক্রমণের ঝুঁকি বেশি বলে এটি জনপ্রিয় হয়ে ওঠেনি। ফলে বাংলাদেশের সিংহভাগ এন্ড স্টেজ কিডনি ডিজিজ বা পঞ্চম ধাপের কিডনি রোগী হিমোডায়ালাইসিস নিয়ে থাকেন।

হিমোডায়ালাইসিস হলো এমন একটি ব্যবস্থা, যেখানে কিডনির কিছু কাজ হিমোডায়ালাইসিস যন্ত্রের মাধ্যমে সম্পন্ন করা হয়। সপ্তাহে দু–তিন দিন নির্দিষ্ট একটি হাসপাতালে ডায়ালাইসিস নেওয়ার জন্য আসতে হয়, প্রতিদিন চার ঘণ্টা হিসাবে রক্ত পরিশোধন করা হয়। পঞ্চম ধাপের ক্রনিক কিডনি ডিজিজের রোগীদের বেলায় এটি জীবনভর চলতে থাকে। তবে সাময়িক কিডনি বিকলের বেলায় বিষয়টি ভিন্ন, সাধারণত কয়েকটি ডায়ালাইসিসের পর তাদের কিডনি রোগ ভালো হয়ে যায়।

পঞ্চম ধাপের হিমোডায়ালাইসিস রোগীদের নিয়মিত নির্দেশনা মোতাবেক ডায়ালাইসিসের জন্য আসতে হয়, অনিয়মিত হলে অসুস্থতার মাত্রা বেড়ে যায়, জটিলতাও বাড়ে। এর পাশাপাশি ডায়ালাইসিস রোগী প্রতি মাসে একবার কিডনি বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে বলা হয়। ডায়ালাইসিস শুরু হওয়ার পর ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপের ওষুধের মাত্রা ও সময়সূচি পরিবর্তিত হতে পারে। তখন চিকিৎসকের কাছ থেকে তা জেনে নিতে হবে। ডায়ালাইসিস চলা অবস্থায় রক্তচাপ ও ডায়াবেটিস নিম্নগামী হলে চিকিৎসককে দ্রুত অবহিত করতে হবে।

আরও কিছু বিষয়

  • কিডনি রোগীদের আমিষ কম খেতে বলা হলেও ডায়ালাইসিস শুরুর পর পর্যাপ্ত আমিষ খেতে হবে। ডায়ালাইসিস শুরুর আগের পর্যায় থেকে বেশি খেতে বলা হয়।
  • ডায়ালাইসিস মেশিন কিডনির মূল কাজ বর্জ্য পদার্থ, অতিরিক্ত পানি ইত্যাদি পরিশোধনে সক্ষম, কিন্তু এর বাইরে কিডনির কিছু কাজ করতে অক্ষম। যেমন ফসফেট নিষ্কাশনের জন্য আলাদা ওষুধ নিতে হবে।
  • ডায়ালাইসিস রোগীদের রক্তাল্পতা, আয়রনের অভাব ইত্যাদি সমস্যা দেখা দেয়। তাই রক্ত তৈরির ইনজেকশন, আয়রন ও ক্ষেত্রবিশেষে চিকিৎসকের পরামর্শে রক্ত নেওয়া লাগতে পারে।
  • প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময় অ্যারোবিক এক্সারসাইজ করুন।
  • কতটুকু পানি পান করবেন, তা চিকিৎসকের কাছ থেকে জেনে নিতে হবে। সাধারণত গড়ে রোজ এক লিটার। পানির হিসাব করার সময় ওষুধ খাওয়া, চা–কফি ইত্যাদিও বিবেচনায় আনতে হবে।
  • আলগা, অর্থাৎ পাতে লবণ নেওয়া যাবে না।
  • কলা, ডাবের পানি, কৌটাজাত শুকনা ফলমূলে পটাশিয়াম বেশি থাকে। আপেল, নাশপাতি, পেয়ারা, পেঁপে অপেক্ষাকৃত নিরাপদ।
  • কৌটাজাত খাবার বা প্রক্রিয়াজাত খাবার এবং জাঙ্ক ফুড খাবেন না। কোল্ড ড্রিঙ্কস বা আইসক্রিম খাওয়া যাবে না।
  • হিমোডায়ালাইসিসে হেপারিন ব্যবহার করা হয়। এর জন্য এবং অন্যান্য কিছু কারণে হাড়ক্ষয় দেখা দিলে আলাদা চিকিৎসা নিতে হবে।
  • কিডনি রোগীদের হার্টের অসুখ হওয়ার প্রবণতা বেশি। তাই নির্দিষ্ট বিরতিতে হার্টের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে হবে। প্রয়োজনে চিকিৎসা নিতে হবে।
  • প্রচুর শাকসবজি খেতে হবে। অবশ্য রক্তের পটাশিয়াম, ফসফেট বিবেচনায় রেখে চিকিৎসক বা পুষ্টিবিদ ঠিক করে দেবেন।
  • সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে, গেঁটে বাত না থাকলে ইউরিক অ্যাসিডের উৎস সমৃদ্ধ খাবার খেতে সমস্যা নেই, যেমন ফুলকপি ও বাঁধাকপি।
  • ডায়ালাইসিসের রোগীদের কোভিডের টিকা নিতে কোনো বাধা নেই। বরং পৃথিবীর অনেক দেশের চিকিৎসাবিজ্ঞানীরা ডায়ালাইসিস রোগীদের করোনা টিকার অগ্রাধিকার তালিকায় রাখার আহ্বান জানিয়েছেন।

* ডা. শুভার্থী কর | সহকারী অধ্যাপক, নেফ্রোলজি বিভাগ, সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ
 

Users who are viewing this thread

Back
Top