What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

Collected সাঈদা সিদ্দিকীর ভাষা আন্দোলন (1 Viewer)

nuV4h5C.jpg


ব্যক্তির ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র প্রতিবাদ–প্রতিরোধের মধ্য দিয়েই তো বাংলা ভাষার দাবিতে বিস্ফোরণোন্মুখ হয়ে উঠেছিল ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি। তবে বায়ান্নর একুশে ফেব্রুয়ারিতে আন্দোলনের যে দুর্বার প্রকাশ, তা ডানা মেলতে শুরু করেছিল আরও আগে। এখানে থাকল তেমনই এক ভাষাসংগ্রামীর অজানা কাহিনি।

সেই কবে পড়েছিলাম বার্ট্রান্ড রাসেলের লেখা, যেকোনো রাষ্ট্রদর্শনকে বিচার করতে হয় তার আর্থসামাজিক পরিবেশের ভিত্তিতে। পেছন ফিরে তাকিয়ে দেখছি, আমার জীবন বুঝতেও বার্ট্রান্ড রাসেল কতটা প্রযোজ্য। ১৯৭৫ সাল। সদ্য কলেজে ভর্তি হয়েছি। পৃথিবীজুড়ে চলছে সমাজে নারীর অধস্তন অবস্থান নিয়ে নানা লেখালেখি। ঘোষিত হচ্ছে নারী দিবস, নারী সাল আর নারী দশক। আমি কী করে বুঝব নারী ও পুরুষের মধ্যকার সম্পর্কটা একটি সামাজিক নির্মাণ, যা সমাজ এবং রাষ্ট্রভেদে ভিন্ন। আমার তো জানার সুযোগ ছিল না যে প্রতিটি সমাজেই নারী সম্পদহীনতা, অধিকারহীনতা এবং সম্মানহীনতার শিকার। আমি যে জন্মেছি সাঈদা সিদ্দিকীর গর্ভে। যার সম্পর্কে তার শিক্ষকেরা লিখেছেন, 'তেজস্বিনী মেয়ে-নির্ভয় নিঃশঙ্ক, স্পষ্টবাদী নির্ভীক। ও ভয় পেত না কাউকে।' (সূত্র: ড. রাফিয়া খাতুন, ১৯৯৬)।

আমি যে রাতের পর রাত কাটিয়েছি আমার আদরের বড় খালা আয়েশা খাতুন চৌধুরীর বুকে। সে চল্লিশের দশকের সেই সব ক্ষমতায়িত নারীর একজন যে ভাবতে পারত নারীর পূর্ণতা শুধু বিয়ের মাধ্যমেই মেলে না, বিয়ের পিঁড়িতে বসার পরিবর্তে সে বেছে নিয়েছিল জ্ঞানের তপস্যা, সৃষ্টির আনন্দ ও আত্মস্বাধীনতা, এম এ পাস করেই সে উচ্চশিক্ষার জন্য ছুটে চলে গেছে আমেরিকায়। আমি তো বড় হয়েছি ছোট খালা রাজিয়া খাতুনের ছোঁয়ায়, যে সন্তানের মৃত্যু অবশ্যম্ভাবী জেনেও কুসংস্কারে ভোগেনি। স্বামীর অনুরোধে ঢাকার কোনো এক বড় পীরের কাছে গেলেও সে পীরের চরম নিষ্ঠার সঙ্গে দেওয়া দোয়া পড়া পানি উপেক্ষা করে বলতে পারে, 'আমি দিনরাত আল্লাহকে ডাকছি আমার ছেলের আয়ুর জন্য। কিন্তু ওই পানি আমি খাব না। ওতে আপনার মুখের থুতু পড়েছে।' আমি তো জাস্টিস ওয়াদুদ চৌধুরী, অধ্যাপক মতিন চৌধুরী, ড. লতিফ চৌধুরী, ড. রকিব চৌধুরীর ভাগনি, যাঁরা ভাই ও বোনের মধ্যে কখনো তফাত করতে শেখায়নি। যারা নির্লোভে সম্পদ দান করে দিতে পারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে। আমি কী করে বুঝব সেসব মেয়ের কষ্ট, যারা জীবনের শুরু থেকে মাছের বড় মাথাটা ভাইকে খেতে দেখেছে। যারা স্বামী পরিত্যক্ত হয়ে বাপের বাড়ি এলে ভাইয়েদের বোঝা হয়েছে। সে যা-ই হোক, এটা ভাষার মাস। বছর ঘুরেফিরে এল আরেক একুশে ফেব্রুয়ারি। আজ না হয় আমি আমার বিনির্মাণে তেজস্বিনী নির্ভীক সাঈদার কথাই বলি। অন্য একদিন বলব আয়েশা আর রাজিয়াদের গল্প।

fKAKROO.jpg


সদা হাস্যময়ী সাঈদা সিদ্দিকী।

পাকিস্তান সবে স্বাধীন হয়েছে। সাঈদা আর রাজিয়া, যাদের সবাই চেনে অলি আর লুলু বলে। তারা ভর্তি হয়েছে ইডেন কলেজে। তাদের কত স্বপ্ন, তারা কলেজে পড়বে! কিন্তু হায়! ইডেন কলেজকে ইডেন বিল্ডিংয়ে রূপান্তরিত করে সরকারি কার্যালয়ে পরিণত করা হয়েছে। মাসের পর মাস চলে যাচ্ছে, ক্লাস বন্ধ। সাঈদা তো বসে থাকার পাত্রী নয়। সেই যুগের 'মণিমেলা' নামে 'আনন্দবাজার'-এর যে হাতে লেখা পত্রিকা বের হতো, তার কপি করার এবং তাতে ছবি আঁকার দায়িত্ব ছিল তার। সে জড়ো করে ফেলল তার বেশ কিছু বান্ধবী। সবাইকে নিয়ে চলে গেল সেই ইডেন বিল্ডিংয়ে। ২০-২৫ জন ছাত্রীর কোলাহল দেখে দারোয়ান তাদের গেটেই আটকে দেয়। উচ্চপদস্থ কোনো কর্মকর্তা তখন কাজে যোগ দিতে ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করেন। সাঈদার নেতৃত্বে ছাত্রীরা সব পুরো পথ বন্ধ করে দাঁড়িয়ে যায়। ভদ্রলোক জোরপূর্বক ঢোকার চেষ্টা করলে বেধে যায় গোলযোগ। মহা শোরগোলে শিক্ষাসচিব বাধ্য হন তাদের সঙ্গে দেখা করতে। শিক্ষাসচিবের সামনে তাদের চিঠি উপস্থাপন করা হলে তিনি বলেন, জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ কাজে অধিগ্রহণ করা হয়েছে তাদের কলেজ। সাঈদা বলে ওঠে, 'আপনাদের কাজ যেমন গুরুত্বপূর্ণ, আমাদের শিক্ষাও তেমনি গুরুত্বপূর্ণ। হয় অন্যত্র আমাদের কলেজ খোলার ব্যবস্থা করুন অথবা আমাদের কলেজ বিল্ডিং ছাড়ুন।' পরবর্তীকালে টিকাটুলীতে কামরুনন্নেসা স্কুলে অস্থায়ীভাবে শুরু হয় ইডেন কলেজ। বুদ্ধি হওয়ার পর থেকেই দেখেছি মা আজিমপুর গার্লস হাইস্কুলের একজন ডাকসাইটে শিক্ষিকা। সাঈদা আপার মেয়ে হিসেবে সর্বত্র পেয়েছি রাজকন্যার সম্মান।

ooHrcMM.jpg


ডান থেকে সাঈদা, আয়েশা এবং রাজিয়ারা তিন বোন

১৯৪৮ সাল। কলেজ সবে খুলেছে। কলেজের প্রধান অধ্যক্ষ বিলেতি শিক্ষাপ্রাপ্ত ফজিলাতুন্নেসা জোহা ছিলেন খুব কড়া। তবে ছাত্রীদের মধ্যে সব বিষয়ে নেতৃত্বে আছে সাঈদা। প্রধান অধ্যক্ষকে কিছু জানাতে হলে সাঈদাই মুখপাত্র। সাঈদার এ নেতৃত্বদানের ক্ষমতা কি শুধু পারিবারিক সূত্রে তৈরি? তা বোধ হয় নয়। তাদের ভেতর আদর্শ ও নেতৃত্বের বীজ বুনে দিয়েছিলেন খাস্তগীর স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা তাদের প্রাণপ্রিয় মিনি দি (সুপ্রভা দাসগুপ্তা)। সাঈদার বান্ধবী হোসনে জাহান লুসি ইডেন কলেজের ১৯৯৭-এর স্মরণিকায় লিখেছেন, শীতকালে দ্বিতীয় ব্যাচের ঘোড়াগাড়িতে বাড়ি ফিরতে মেয়েদের সন্ধ্যা হয়ে যেত। সাঈদা একদিন অধ্যক্ষ মিসেস জোহার জিপের সামনে দুহাত প্রসারিত করে দাঁড়িয়ে গেল। সে বলল, 'আমাদের ফেরার নিরাপত্তা নিশ্চিত না করে কলেজে একলা রেখে আপনাদের চলে যাওয়া ঠিক হচ্ছে না।' ফজিলাতুন্নেসা জোহা ছিলেন বড়মাপের একজন বিচক্ষণ শিক্ষক। তিনি সাঈদার কথার গুরুত্ব অনুধাবন করে মেয়েদের না যাওয়া পর্যন্ত একজন শিক্ষিকার কলেজে থাকা নিশ্চিত করেন।

শিক্ষিকা ড. রাফিয়া খাতুন আরও লেখেন, 'কলেজের যেকোনো অনুষ্ঠানে মুখ্য ভূমিকায় থাকত সাঈদা। "মার্চেন্ট অব ভেনিস" নাটকে সাঈদা হয়েছিল শাইলক, হোসনে আলম পর্শিয়া আর সাঈদার ছোট বোন রাজিয়া হয়েছিল বাসানিও।' কলেজের ঘোড়াগাড়িগুলো একটা কাপড় দিয়ে ঘেরা থাকত। ভেতরে গরমে সেদ্ধ হতো মেয়েরা। সাঈদার প্রতিবাদী মন আবারও জেগে উঠল। একদিন সে একটানে খুলে ফেলল সেই চাদর। বলল 'জন্তু-জানোয়ারের মতন করে আসব না, মানুষের মতন করে কলেজে যাব।'

১৯৫০-এর উত্তাল সেই সময়ে কলেজের এক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে এলেন তদানীন্তন মন্ত্রী ফজলুর রহমানের স্ত্রী মিসেস ফাতেমা রহমান। তিনি এসে উর্দুতে বক্তৃতা দিতে শুরু করলেন। পেছনের সারিতে বসা সাঈদা কি আর চুপ থাকতে পারে! প্রধান অতিথির বক্তৃতার মাঝেই উঠে দাঁড়িয়ে পড়ল। বলল, 'আমাদের প্রধান অতিথি বাঙালি, আমরা ছাত্রীরা ও শিক্ষকবৃন্দ সবাই বাঙালি। তবে কেন প্রধান অতিথি উর্দুতে বক্তৃতা দিচ্ছেন? আমরা বাংলায় শুনতে চাই।' মন্ত্রীর স্ত্রী বেদম চটে গেলেন। বললেন, 'উর্দু আওর বাংলা-ইসকা জওয়াব মেরে কায়েদে আজম দে গিয়া।' হলের মধ্যে গুঞ্জন শুরু হয়ে গেছে। সাঈদার ছোট বোন রাজিয়া তখন চিত্কার দিয়ে উঠল 'লজ্জা লজ্জা, শেইম শেইম!'

এর মধ্যে ভাষাকে ঘিরে চলছে উত্তেজনা। ডাকা হয়েছে ধর্মঘট। অঙ্কের শিক্ষক ক্লাস নিচ্ছিলেন। প্রত্যুত্পন্নমতী সাঈদা, আমিনা মাহমুদসহ আরও কয়েকজন ক্লাসের সামনের বারান্দায় ডুগডুগি বাজাতে শুরু করে (সূত্র: আমিনা মাহমুদ ১৯৮৮, 'রোববার', ভাষাসংখ্যা)। শিক্ষক রেগে বেরিয়ে এসে সেরা ছাত্রীদের দেখে কপট রাগ দেখিয়ে মুচকি হেসে চলে যান। এরই মধ্যে ১৯৪৮ সালের ২১ মার্চে মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ তদানীন্তন পূর্ব পাকিস্তানের রমনা রেসকোর্স ময়দানে বক্তৃতা দিয়ে গেছেন, 'উর্দু এবং উর্দুই হবে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা।' সাঈদাদের ৩৭ নাজিমুদ্দিন রোডের বাড়িতে তখন এ বিষয়ে দিনরাত চলছে তর্কবিতর্ক। বাম রাজনীতিতে যুক্ত পরবর্তী সময়ে সর্বদলীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ভাই আবদুল লতিফ চৌধুরীর মারফত সাঈদারা পেত সব তাজা খবর। ১৯৫০-এর উত্তাল সেই সময়ে কলেজের এক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে এলেন তদানীন্তন মন্ত্রী ফজলুর রহমানের স্ত্রী মিসেস ফাতেমা রহমান। তিনি এসে উর্দুতে বক্তৃতা দিতে শুরু করলেন। পেছনের সারিতে বসা সাঈদা কি আর চুপ থাকতে পারে! প্রধান অতিথির বক্তৃতার মাঝেই উঠে দাঁড়িয়ে পড়ল। বলল, 'আমাদের প্রধান অতিথি বাঙালি, আমরা ছাত্রীরা ও শিক্ষকবৃন্দ সবাই বাঙালি। তবে কেন প্রধান অতিথি উর্দুতে বক্তৃতা দিচ্ছেন? আমরা বাংলায় শুনতে চাই।' মন্ত্রীর স্ত্রী বেদম চটে গেলেন। বললেন, 'উর্দু আওর বাংলা-ইসকা জওয়াব মেরে কায়েদে আজম দে গিয়া।' হলের মধ্যে গুঞ্জন শুরু হয়ে গেছে। সাঈদার ছোট বোন রাজিয়া তখন চিত্কার দিয়ে উঠল 'লজ্জা লজ্জা, শেইম শেইম!' সঙ্গে সঙ্গে হলসুদ্ধ ছাত্রীরা সমস্বরে বলতে থাকল 'লজ্জা, লজ্জা'। মন্ত্রীপত্নী তৎক্ষণাৎ হলত্যাগ করলেন (সূত্র: আক্তার ইমাম, 'বেগম রোকেয়া ও নারী জাগরণ', রোকেয়া হল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ১৯৯৫, পৃ. ৯৬-৯৭)। প্রধান অধ্যক্ষকে বলে গেলেন এর সমুচিত শাস্তি নিশ্চিত করতে। এ রকম একটি ঘটনার ফলাফল কী হতে পারে, সে তো আমাদের সবার জানা। সমন করা হলো সাঈদাকে। রাগে ফেটে পড়লেন মিসেস জোহা। বললেন, 'আই অ্যাম গোয়িং টু এক্সপেল ইউ সাঈদা।' খবরটি সঙ্গে সঙ্গে ছড়িয়ে পড়ল ছাত্রীদের মধ্যে। পুরো কলেজের ছাত্রীরা এসে ঘিরে ধরল প্রধান অধ্যক্ষার অফিস। সমস্বরে সবাই বলতে থাকল, 'সাঈদা আপাকে বহিস্কার করার আগে আমাদের সবাইকে বহিস্কার করতে হবে।' মিসেস জোহা পরবর্তী সিদ্ধান্তের জন্য সময় নিয়ে বিচক্ষণতার সঙ্গে উত্তেজনা প্রশমন করলেন। তবে পরে তিনি সাঈদাকে বহিস্কার করেননি।'

rzGOqRc.jpg


আজিমপুর স্কুলের পাঁচ ডাকসাইটে শিক্ষিকা। এঁদের দুজন মনোয়ারা ইসলাম ও ফিরোজা খাতুন ছিলেন সাঈদার ইডেন কলেজের সহপাঠী

বদরুউদ্দীন উমর তাঁর 'পূর্ব বাংলার ভাষা আন্দোলন এবং তত্কালীন রাজনীতি' গ্রন্থের প্রথম খণ্ডে এ ঘটনার উল্লেখ করেছেন (পৃ. ২১১-২১২)। সাঈদার তাৎক্ষণিক নেতৃত্বে সংঘটিত ইডেন কলেজের সেই ঘটনাটিকে উমর ভাষার প্রশ্নে ছাত্রীদের প্রথম প্রতিবাদ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। তাঁর বইয়ে বলা আছে, নেতৃত্বদানকারী ছাত্রী দুজন সহোদরা। কিন্তু তাদের নাম-পরিচয় তিনি বের করতে পারেননি। ১৯৫০ সালে সংঘটিত এই ঘটনার ৭০ বছর পর আজ আমার ইচ্ছা হচ্ছে বদরুদ্দীন উমরকে অনুরোধ করতে, তাঁর বইয়ের পরবর্তী সংস্করণে তিনি যেন সাঈদা সিদ্দিকী ও রাজিয়া হকের পরিচয়টুকু সংযুক্ত করেন।

সাঈদা, আয়েশা, রাজিয়ারা ক্ষমতায়িত নারী। তাদের কখনো স্বীকৃতির প্রয়োজন হয়নি। তাই এত দিন পরে এই লেখা কোনো স্বীকৃতির জন্য নয়। এই লেখা আবারও আমার সেই চিন্তাটি পুনরায় প্রতিষ্ঠিত করে যে কোনো বড় রাজনৈতিক আন্দোলন শুধু গুটি কয়েকের নয়, তা সবার। সেই সময়কার ইডেন কলেজের ছাত্রী সাঈদা সিদ্দিকীর, রাজিয়া হকের, ফিরোজা খাতুনের, মনোয়ারা ইসলামের, হোসনে জাহানের, আমিনা মাহমুদসহ আরও অনেক নাম না জানা ছাত্রীর।
 
সত্যি অনেক ভালো লাগলো লেখাটা পড়ে
 

Users who are viewing this thread

Back
Top