What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

নতুন বছরে ভালো থাকা (1 Viewer)

5mMNGcH.jpg


২০২০ সালে স্বাস্থ্য, পুষ্টি, ফিটনেস, রোগ প্রতিরোধক্ষমতা, টিকা ইত্যাদি বিষয় নিয়ে যতটা ভাবনাচিন্তা আর আলোচনা হয়েছে, তা বোধ হয় গত ১০০ বছরেও হয়নি। বছরজুড়ে পরিবার বা বাড়ি থেকে শুরু করে রাষ্ট্রীয় সংস্থা বা গণমাধ্যম, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সবচেয়ে আলোচ্য বিষয় ছিল স্বাস্থ্য। করোনা মহামারি এ বছর আমাদের যে শিক্ষা দিয়েছে তা হলো সুস্বাস্থ্য ও ফিটনেস মানুষের টিকে থাকার জন্য সবচেয়ে জরুরি, আর সবকিছুর চেয়ে।

বিজ্ঞানীরা বলছেন, এই মহামারির পর মানুষের স্বাস্থ্যবিষয়ক ধ্যানধারণা, আচরণ ও জ্ঞানের পরিবর্তন হবে অভূতপূর্ব। আর আগামী বিশ্বও নিজেকে নতুনভাবে সাজাতে বাধ্য হবে মানুষের সুস্বাস্থ্যকে সবচেয়ে বেশি অগ্রাধিকার দিয়ে। ২০২১ সালে কেমন হওয়া উচিত আমাদের জীবনাচরণ, সুস্বাস্থ্যের জন্য কীভাবে লড়াই করব আমরা?

3iovlxO.png


পরিচ্ছন্নতাবোধ ও স্বাস্থ্যবিধি

সংক্রামক ব্যাধি গুরুত্ব ফিরে পেয়েছে এ বছর। ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া ও অন্যান্য জীবাণুর সঙ্গে লড়াই-ই যে মানবজাতির আসল যুদ্ধে পরিণত হবে, তা গত বছরও কেউ ভাবেনি। সংক্রামক ব্যাধির সঙ্গে লড়াইয়ে ব্যক্তিগত ও সামষ্টিক পরিচ্ছন্নতাবোধ, হাইজিন ও স্বাস্থ্য-সতর্কতা সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ অস্ত্র বলে স্বীকৃত। হাত ধোয়া, হাঁচি-কাশির আদবকেতা, যেখানে-সেখানে থুতু-কফ না ফেলা, বিশুদ্ধ খাবার ও পানি গ্রহণ, বাইরের যেকোনো বস্তু আগে জীবাণুমুক্ত বা পরিষ্কার করে ব্যবহার করা, গণপরিবহন বা কমন স্পেস ব্যবহারে সতর্কতা, পারস্পরিক স্পর্শের আগে হাত পরিষ্কার করা ইত্যাদি সু-অভ্যাস মানুষকে চর্চা করে যেতে হবে এখন থেকে সব সময়। কেবল নিজেকে নয়, পরিবেশ, বাড়িঘর, আশপাশের মানুষগুলোকেও পরিচ্ছন্ন ও স্বাস্থ্যকর না রাখতে পারলে বাঁচা সম্ভব নয়। জনসাধারণের এ ব্যাপারে সচেতনতা গড়ে তুলতে হবে।

অসংক্রামক ব্যাধির নিয়ন্ত্রণ

দীর্ঘমেয়াদি অসংক্রামক ব্যাধি মানুষের স্বাস্থ্যকে কীভাবে নাজুক করে তোলে আর জীবাণুর আক্রমণের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করে, তা-ও প্রমাণিত হলো নতুন করে। করোনাভাইরাসের আক্রমণে সবচেয়ে বেশি পর্যুদস্ত হলেন তাঁরা, যাঁদের ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, হৃদ্‌রোগ, কিডনি জটিলতা, ক্যানসার, হাঁপানি বা ব্রঙ্কাইটিস রয়েছে। তাই জীবাণু প্রতিরোধের সঙ্গে অসংক্রামক ব্যাধি রোধের দিকেও মনোযোগ দিতে হবে সামনে। সুশৃঙ্খল জীবনাচরণ, সুষম খাদ্যাভ্যাস, নিয়মিত ব্যায়াম, ধূমপান বর্জন ইত্যাদি পারে এই রোগগুলোকে প্রতিহত করতে।

সঠিক ও সুষম পুষ্টি

পুষ্টি ও রোগ প্রতিরোধক্ষমতার সঙ্গে এর সম্পর্ক—এটি ছিল এ বছরের সবচেয়ে আলোচিত বিষয়। মহামারির শুরু থেকেই বিজ্ঞানীরা বলছেন যে আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বা ইমিউনিটি বাড়াতে হলে সঠিক ও সুষম পুষ্টি থাকা চাই। জনপ্রিয় সব ডায়েট, যেমন কিটো, প্যালিউ, নো কার্ব, হোল ৩০ ইত্যাদি জনপ্রিয়তা হারিয়েছে এ বছর। ক্রাশ ডায়েটের প্রতি ক্রাশ কমেছে, অপরদিকে পুষ্টিকর ভিটামিন মিনারেলযুক্ত খাবারের প্রতি আগ্রহ বেড়েছে। শাকসবজি, ফলমূল ও প্রোটিন গ্রহণের মাত্রা বেড়েছে। কোন খাবারে ভিটামিন সি এবং ডি ইত্যাদি বেশি, তার খোঁজ অনেকে নিয়েছেন, অনেকেই ভিটামিন সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করেছেন। যাঁরা বাইরের খাবার, বেশি প্রক্রিয়াজাত খাবার খেতেন, তাঁরা সে অভ্যাস থেকে সরে আসছেন। বাড়িতে তৈরি তাজা বা ফ্রেশ খাবারের প্রতি ঝুঁকেছেন সবাই। ২০২০ সালের পর মানুষের অন্যতম চিন্তাভাবনার বিষয় হতে যাচ্ছে পুষ্টিকর খাবার, ভিটামিন ও খনিজসমৃদ্ধ খাবার, অর্গানিক খাবার আর তার যথাযথ ব্যবহার।

0VdFQ2v.jpg


ফিটনেস

এ বছর ফিটনেস বাড়াতে মনোযোগী হয়েছেন সবাই। লকডাউনের সময় বাড়িতে ব্যায়াম, শারীরিক কসরত, যন্ত্রপাতির ব্যবহার, ভিটামিন ডি পেতে সূর্যের আলোতে নিয়মিত হাঁটা, পর্যাপ্ত ও সময়মতো ঘুমানোর চেষ্টা ইত্যাদির দিকে মনোযোগ বেড়েছে। গুরুত্ব পেয়েছে নানা ধরনের ফিজিওথেরাপি, শ্বাসপ্রশ্বাসের ব্যায়াম (ব্রিদিং এক্সারসাইজ), ফিটনেস এক্সারসাইজ। ঘরোয়া পদ্ধতি, যেমন হারবাল ড্রিংক, আদা ও গরমমসলার চা, প্রোটিনযুক্ত স্যুপ, ফলের রস, ভাপ বা স্টিম ইত্যাদি জনপ্রিয় হয়েছে। শর্করা, উচ্চ রক্তচাপ, চর্বি কমাতে উদ্যোগী হয়েছেন সবাই।

বয়স্কদের যত্ন

কোভিড মহামারি বয়স্কদের জীবনকে ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলেছিল। এ বছর বহু পরিবার তাদের বয়োজ্যেষ্ঠ সদস্যকে হারিয়েছে বা তাঁকে নিয়ে হাসপাতালে লড়াই করেছে। তাই পরিবারে বয়স্কদের স্বাস্থ্যের গুরুত্ব নতুন করে সামনে এসেছে। তাঁদের পুষ্টি ব্যবস্থাপনা, হাইজিন বা পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা, ফিটনেস বাড়ানো, রোগবালাইয়ের সঠিক চিকিৎসা ইত্যাদি দিকে নজর বাড়ানো উচিত আরও। বয়স্কদের মধ্যে নানা রকম টিকা দেওয়া, পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার প্রবণতাও বেড়েছে এ বছর।

মানসিক স্বাস্থ্য

মহামারির নানামুখী আঘাতে মানসিকভাবে পর্যুদস্ত হওয়ার হার বেড়েছে, বেড়েছে বিষণ্নতা, অতি উদ্বেগ, নির্ঘুম ইত্যাদি। এ-ও প্রমাণিত হয়েছে যে স্ট্রেস বা মানসিক চাপ রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা (ইমিউনিটি) কমায়। সামনের দিনগুলোতে টিকে থাকতে হলে মানসিক সুস্বাস্থ্য বজায় রাখার গুরুত্ব অপরিসীম। সে জন্য বারবার বলা হচ্ছে পরিবারে আনন্দময় সময় কাটানো, সঠিক ও পর্যাপ্ত ঘুম, স্ক্রিন টাইম কমানো, খেলাধুলা ও পারিবারিক বিনোদন, শখের পরিচর্যা ও পারস্পরিক যোগাযোগ বাড়াতে। এ বছর উল্লেখযোগ্যসংখ্যক মানুষ মানসিক সমস্যার জন্য চিকিৎসকের দ্বারস্থ হয়েছেন। এই প্রবণতা হয়তো সামনে আরও বাড়বে।

বাড়ি থেকে স্বাস্থ্যসেবা

অনেক ক্ষেত্রেই বাইরে না গিয়েও বাড়িতে বসে স্বাস্থ্যসেবা নেওয়া, বাড়ি থেকে পরীক্ষা-নিরীক্ষার নমুনা দেওয়া, অনলাইনে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া ইত্যাদি যে সম্ভব, তা প্রমাণিত হয়েছে আর সামনে এ প্রবণতা আরও বাড়বে। আগামী বছরে হয়তো এ খাতে প্রযুক্তিগত উন্নয়ন ও বিনিয়োগ বাড়বে। আরও বেশি মানুষ প্রযুক্তির সহায়তা নিয়ে বাড়ি বসে চিকিৎসাসেবা নিতে আগ্রহী হবেন।

Oxi967y.jpg


টিকা

নতুন বছরে নিশ্চয় সবচেয়ে আগ্রহ-উদ্দীপনার বিষয় হবে করোনার টিকা। তবে বিজ্ঞানীরা বলছেন, টিকা পাওয়ার পরও স্বাস্থ্যকর অভ্যাস ও চর্চাগুলো চালিয়ে যেতে হবে আরও দীর্ঘকাল। মাস্ক পরা, হাত ধোয়া, দূরত্ব বজায় রাখা ইত্যাদি অভ্যাস বাদ দেওয়া চলবে না। তার সঙ্গে বাড়াতে হবে ইমিউনিটি, ফিটনেস, চাই যথার্থ পুষ্টি ও সুস্বাস্থ্য। টিকার বিরুদ্ধে নানা প্রকার গুজব ও কুসংস্কার নিয়ে একশ্রেণির মানুষ ইতিমধ্যে মাঠে নেমে পড়েছেন। তবে ভাইরাসের বিরুদ্ধে হার্ড ইমিউনিটি গড়ে তুলতে অধিকাংশ মানুষকে টিকার আওতায় আনার কোনো বিকল্প নেই। তাই এসব কুসংস্কারে কান না দেওয়াই ভালো।

সব মিলিয়ে ২০২০ মানবজাতির জন্য একটি দৃষ্টান্তমূলক পরিবর্তন (প্যারাডিম শিফট)। আমাদের নিত্যদিনের সমস্ত জাগতিক ভাবনাচিন্তার পরিবর্তন এনে নিজের শরীর ও মনের সঠিক যত্ন নেওয়া, পরিবারের প্রতি আরও মনোযোগী হওয়া আর সুশৃঙ্খল পরিচ্ছন্ন জীবনাচরণের প্রতি আগ্রহ বাড়ানোই হবে আগামী দিনের ভালো থাকার মূলমন্ত্র।
 
নতুন বছর হোক সুন্দর সাজানো গোছানো।
 
These are the rules that are to be followed throughout the entire site. Please ensure you follow them when you post. Those who violate the rules may be punished including possibly having their account suspended.

যারা কমেন্ট করবেন, দয়া করে বানান ঠিক রাখুন। উত্তেজিত অবস্থায় দ্রুত কমেন্ট করতে গিয়ে বানান ভুল করবেন না। আমরা যারা কমেন্ট পড়তে আসি, আমাদের কমেন্ট পড়তে অনেক অসুবিধা হয়।

Users who are viewing this thread

Back
Top