বাড়িতে আলো হবে নিজের মতো, নিজের প্রয়োজনে ও পছন্দে। কে না চায় বসার ঘর, শোবার ঘর বা খাবার ঘরে আলো থাকুক বৈচিত্র্যময় আবেশে? সবাই চায়। আর সে চাওয়া পূরণ করতেই বাজারে পাওয়া যায় হরেক রকমের ল্যাম্পশেড। পছন্দমতো কিনে ঘর সাজিয়ে ফেলুন। তবে মনে রাখতে হবে, বাতি দিয়ে ঘর সাজানোতেও আছে অনেক কায়দাকানুন। সেগুলোর কিছু জানতে হয়ই।
বাড়িতে আলো হবে নিজের মতো, নিজের প্রয়োজনে ও পছন্দে
ল্যাম্পশেডে অন্দরসজ্জার বিভিন্ন দিক জানালেন ইন্টেরিয়র ডিজাইনার গুলসান নাসরীন চৌধুরী৷ বললেন, কোন ধরনের ল্যাম্পশেড অন্দরে মানানসই হবে, তা নির্ভর করে ঘরের আসবাবের ওপর। বসার ঘরে সোফা, শোকেসসহ অন্যান্য আসবাব অ্যান্টিক ধাঁচের হলে সেখানে মানাবে রাজকীয় নকশায় তৈরি করা আভিজাত্যপূর্ণ ঝাড়বাতি। আবার কিছুটা পুরোনো ধাঁচের আসবাবে যদি হালকা কারুকাজ থাকে, তাহলে একটু হালকা নকশার ঝাড়বাতি ব্যবহার করতে পারেন। এ ক্ষেত্রে ক্রিস্টালের ঝাড়বাতি বেশ মানানসই।
বসার ঘর
বসার ঘরে এখন অনেকেই কাঠ, বেত বা বাঁশের তৈরি দেশীয় ধাঁচের আসবাব ব্যবহার করে থাকেন। এ রকম আসবাব থাকলে স্ট্যান্ডিং ল্যাম্পশেড রাখতে পারেন বসার ঘরে। এ ল্যাম্পশেডগুলো কীভাবে সাজালে ভালো, সেটা নির্ভর করবে আসবাবের উচ্চতা, রং আর গঠনের ওপর। তবে সাধারণভাবে যেটা বলা যায়, বসার ঘরের এক কোণে উঁচু, মাঝারি উঁচু এবং নিচু—এমন তিনটি ভিন্ন উচ্চতার ল্যাম্পশেড রাখা যেতে পারে।
বসার ঘরের ল্যাম্পশেড মানানসই করতে আসবাব ও দেওয়ালের রং, জানালার পর্দা বা কুশন কভারের রঙের দিকে খেয়াল রাখুন
এ ল্যাম্পশেডগুলোর রঙে বৈচিত্র্য আনুন। যেমন মাঝারি উচ্চতার ল্যাম্পশেড লাল হলে ছোটটি রাখতে পারেন সবুজ, গোলাপি বা কমলা রঙের। আর সবচেয়ে উঁচুটি হতে পারে হলুদ বা আকাশি রঙের। এ ক্ষেত্রে বাটিক, মোম বাটিক, ব্লক বা গ্রামীণ চেকের কাপড়ে তৈরি ল্যাম্পশেড ব্যবহার করা যায়। রঙিন কাপড়ের ল্যাম্পশেড যেমন ব্যবহার করা যায়, তেমনি বাঁশ বা বেতের তৈরি ল্যাম্পশেডও সুন্দর দেখায়।
অনেকেই ইউরোপীয় ধাঁচের ল্যাম্পশেড পছন্দ করেন। সেগুলোও ব্যবহার করা যেতে পারে আকৃতির হেরফের করে।
বসার ঘরের ল্যাম্পশেড মানানসই করতে দেওয়ালের রং, জানালার পর্দা বা কুশন কভারের রঙের দিকে খেয়াল রাখুন। বসার ঘরে গোলাপি রঙের ল্যাম্পশেড রাখলে অফ হোয়াইট রঙের সোফায় গোলাপি রঙের কুশন কভার বেশ মানাবে। ল্যাম্পশেডের রঙের সঙ্গে অন্দরের কোনো না কোনো অনুষঙ্গের মিল থাকলে দারুণ দেখাবে।
খাবার ঘরের ল্যাম্পশেড
ছাদে ঝোলানোর জন্য বিশেষ একধরনের ল্যাম্পশেড পাওয়া যায় সেগুলো ব্যবহার করেত পােরন খাবার ঘরের জন্য
বিভিন্ন সবজির আকারের ল্যাম্পশেড কিনতে পাওয়া যায় বাজারে। সেগুলো খাবার ঘরের জন্যই মানানসই। কিনতে পারেন পছন্দেরটি। এ ছাড়া আজকাল বাজারে ছাদে ঝোলানোর জন্য বিশেষ একধরনের ল্যাম্পশেড পাওয়া যায়। এগুলোর সুবিধা হলো, ছাদে ঝোলানো হলেও প্রয়োজনে এগুলোকে টেনে নির্দিষ্ট দূরত্বে আসা যায়। বেত, চট, বাঁশ বা ক্রিস্টালের তৈরি ল্যাম্পশেড খাবার ঘরের জন্য মানানসই।
শোবার ঘরের ল্যাম্পশেড
শোবার ঘরে আলো যত কম থাকে, ততই ভালো
শোবার ঘরে আলো যত কম থাকে, ততই ভালো। কারণ তীক্ষ্ণ আলো ঘুমের ব্যাঘাত ঘটায়। বেডসাইড টেবিল থাকলে তাতে টেবিলবাতি রাখুন। খুব বেশি উচ্চতার টেবিলবাতি রাখবেন না। তাতে শেড থাকলেও আলো ছড়িয়ে পড়বে।
শোবার ঘরের কোণে বসার ঘরের মতোই বিভিন্ন উচ্চতার তিনটি ল্যাম্পশেড রাখতে পারেন। ছোট থেকে বড়—এভাবে সাজিয়ে রাখুন ল্যাম্পশেডগুলো। পুরোটাই কাগজে পেঁচিয়ে তৈরি, এমন ল্যাম্পশেডও মিলবে বাজারে। এগুলোর জন্য আলাদা রঙের আলো বা একই রঙের আলোর জন্য আলাদা আকারের ল্যাম্পশেড ব্যবহার করা যায়। ঘরের এক কোণে সাজানোর জন্য এমন ল্যাম্পশেডও বেছে নিতে পারেন।
আলো বাড়ানো ও কমানো যায়, এ রকম কিছু বাতি পাওয়া যায় স্ট্যান্ডসহ। চাইলে সেসব ল্যাম্পস্ট্যান্ডও ব্যবহার করতে পারেন। এগুলোর সুবিধা হলো, যতটুকু আলো চাইবেন, ততটুকুই পাওয়া যাবে। তাকে আকর্ষণীয় করার জন্য বিভিন্ন রঙের ল্যাম্পশেড ব্যবহার করতে পারেন। আকৃতি ও ধরনভেদে এই বাতিগুলোর জন্য বিভিন্ন ধরনের ল্যাম্পশেড পাওয়া যায় কিনতে।
শিশুর ঘরের জন্য
উজ্জ্বল রঙের ফুল, পাখি বা লতাপাতা আঁকা ল্যাম্পশেড ব্যবহার করা যায় শিশুর ঘরের জন্য
ল্যাম্পশেড ভেদ করে আসা আলোয় ফুটে ওঠা নকশা দেখে শিশু যেন ভয় না পায়, শিশুর ঘরের জন্য ল্যাম্পশেড বাছাইয়ের সময় সেটা খেয়াল রাখতে হবে। উজ্জ্বল রঙের ফুল, পাখি বা লতাপাতা আঁকা ল্যাম্পশেড ব্যবহার করা যায় শিশুর ঘরের জন্য। শিশুর পড়ার টেবিল, দেয়ালের রং, জানালার পর্দার রং ইত্যাদি সবকিছুর সঙ্গে মানানসই ল্যাম্পশেড দিতে পারেন শিশুর জন্য।