সহিহ মুসলিম শরিফের হাদিসে এসেছে- হজরত আয়শা (রা.) থেকে বর্ণিত; তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) সকালে বের হলেন। তাঁর পরনে ছিল কালো নকশি দ্বারা আবৃত একটি পশমি চাদর। হজরত হাসান ইবনে আলী (রা.) এলেন, তিনি তাঁকে চাদরের ভেতর প্রবেশ করিয়ে নিলেন। হজরত হোসাইন ইবনে আলী (রা.) এলেন, তিনিও চাদরের অভ্যন্তরে ঢুকে পড়লেন। হজরত ফাতিমা (রা.) এলেন, তাকেও ভেতরে ঢুকিয়ে ফেললেন। তারপর হজরত আলী (রা.) এলেন তাকেও ভেতরে ঢুকিয়ে নিলেন। তারপর বললেন (সূরা আহযাবের ৩৩ নম্বর আয়াত পাঠ করলেন)- হে আহলে বাইত! আল্লাহতায়ালা তোমাদের থেকে অপবিত্রতাকে দূর করে তোমাদের পবিত্র করতে চান। লিখেছেন-
মুফতি মুহাম্মাদ আকতার আল-হোসাইনআহলে বাইতকে ভালোবাসা আল্লাহর হুকুম
সূরা শুরার ২৩ নম্বর আয়াতে আল্লাহতায়ালা বলেছেন, আল্লাহ তাঁর ইমানদার ও সৎকর্মশীল বান্দাদের জান্নাতের এই সুসংবাদই দিয়ে থাকেন। হে আমার হাবিব (সা.) আপনি বলুন, আমি তোমাদের আল্লাহর পথে ডাকার জন্য তোমাদের কাছে নিকটাত্মীয়দের প্রতি ভালো ব্যবহার ছাড়া কোনো প্রতিদান চাই না। কেউ কোনো ভালো কাজ করলে আমি তার জন্য তাতে কল্যাণ বাড়িয়ে দেই। নিশ্চয়ই আল্লাহ ক্ষমাশীল, প্রতিদান দানকারী।
* হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বর্ণনা করেছেন, যখন এ আয়াত নাজিল হল তখন সাহাবারা (রা.) জিজ্ঞেস করলেন- ইয়া রাসূলুল্লাহ (সা.) কারা আপনার নিকটাত্মীয়? যাদের মুয়াদ্দাত (আনুগত্যপূর্ণ ভালোবাসা) পবিত্র কোরআনে উম্মতের ওপর ফরজ করা হয়েছে। উত্তরে রাসূলুল্লাহ (সা.) বললেন, হজরত আলী (রা.), হজরত ফাতেমা (রা.), হজরত হাসান ও হোসাইন (রা.)-এর মুয়াদ্দাত (আনুগত্য)। (যুরকানি আলাল মাওয়াহীব, দুররে মানসুর, সাওয়ায়িকে মুহরিকা, আশরাফ আলী থানভি (র.) লেখা কোরআন শরিফ, তাফসিরে মাজহারি, তাফসিরে নুরুল কোরআন ও মাদারেজুন নবুয়াতসহ আরও বহু কিতাবে এসেছে)।
* হজরত ইমাম শাফি (র.) বলেন, হে রাসূলের পরিবারবর্গ, আপনাদের ভালোবাসা আল্লাহর পক্ষ থেকে ফরজ করা হয়েছে, সেই কোরআনে যা তিনি নাজিল করেছেন। আপনাদের মর্যাদার জন্য এটুকু যথেষ্ট, যে ব্যক্তি আপনাদের ওপর সালাত পাঠ করে না, তার নামাজ পরিপূর্ণ হয় না। (দিওয়ান)।
* এখানে ইমাম শাফি (র.)-এর কবিতা বা বাণীতে দুটি বিষয় লক্ষণীয়- এক. তিনি বলছেন আহলে বাইতকে ভালোবাসা আল্লাহ ফরজ করে দিয়েছেন কোরআন শরিফের আয়াত নাজিল করে। আর এ আয়াতটি সূরা শুরার ২৩ নম্বর আয়াত হওয়ার সম্ভাবনা বেশিই, যেহেতু অনেকেই সে মত ব্যক্ত করেছেন। দুই. আহলে বাইতের মর্যাদার গর্ব করার জন্য তিনি বলেছেন, তাদের ওপর সালাত পাঠ করাই যথেষ্ট, কেননা তাদের ওপর সালাত পাঠ না করলে নামাজ পরিপূর্ণ হয় না। যেমন- আমরা নামাজের শেষ বৈঠকে যখন দুরুদ শরিফ পাঠ করি, তখন বলি- আল্লাহুম্মা সাল্লি আলা মুহাম্মাদ ওয়া আলা আলি মুহাম্মাদ এখানে আলি মুহাম্মদ অর্থ হল মুহাম্মাদ (সা.)-এর পরিবারবর্গ। এবং এ দুরুদ ছাড়া নামাজের পূর্ণতা আসে না।
এখানে উল্লেখ্য, যারা আহলে বাইত বিদ্বেষী তারা সূরা শুরার এ আয়াতের তাফসিরে বুখারি শরিফের একটি হাদিস দিয়ে বলেন যে, এখানে কুরাইশদের কথা বলা হয়েছে। হাদিসটি হচ্ছে- হজরত ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদা তাকে ইল্লাল মাওয়াদ্দাতা ফিল ক্কুরবা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করার পর (কাছে উপস্থিত) হজরত সাঈদ ইবনে যুবায়ের (রা.) বললেন, এর অর্থ নবী পরিবারের আত্মীয়তার বন্ধন। (এ কথা শুনে) হজরত ইবনে আব্বাস (রা.) বললেন, আপনি তাড়াহুড়া করে ফেললেন। কেননা কুরাইশের এমন কোনো শাখা ছিল না যেখানে রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর আত্মীয়তা ছিল না। রাসূলুল্লাহ (সা.) তাদের বলেছেন, আমার এবং তোমাদের মাঝে যে আত্মীয়তার বন্ধন রয়েছে তার ভিত্তিতে তোমরা আমার সঙ্গে আত্মীয়সুলভ আচরণ কর। এ আমি তোমাদের থেকে কামনা করি।
সুতরাং আমরা তাদের উত্তরে বলব, এখানে দুটি হাদিসের মধ্যে কোনো মতবিরোধ নেই, যেহেতু আহলে বাইতের সদস্যরা কুরাইশ বংশের মানুষ। সুতরাং দুই হাদিসকে আমরা মেনে আহলে বাইতকে ভালোবাসতে কোনো বাধা নেই।
লেখক : ইমাম ও খতিব ওল্ডহাম জামে মসজিদ, যুক্তরাজ্য
সূরা শুরার ২৩ নম্বর আয়াতে আল্লাহতায়ালা বলেছেন, আল্লাহ তাঁর ইমানদার ও সৎকর্মশীল বান্দাদের জান্নাতের এই সুসংবাদই দিয়ে থাকেন। হে আমার হাবিব (সা.) আপনি বলুন, আমি তোমাদের আল্লাহর পথে ডাকার জন্য তোমাদের কাছে নিকটাত্মীয়দের প্রতি ভালো ব্যবহার ছাড়া কোনো প্রতিদান চাই না। কেউ কোনো ভালো কাজ করলে আমি তার জন্য তাতে কল্যাণ বাড়িয়ে দেই। নিশ্চয়ই আল্লাহ ক্ষমাশীল, প্রতিদান দানকারী।
* হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বর্ণনা করেছেন, যখন এ আয়াত নাজিল হল তখন সাহাবারা (রা.) জিজ্ঞেস করলেন- ইয়া রাসূলুল্লাহ (সা.) কারা আপনার নিকটাত্মীয়? যাদের মুয়াদ্দাত (আনুগত্যপূর্ণ ভালোবাসা) পবিত্র কোরআনে উম্মতের ওপর ফরজ করা হয়েছে। উত্তরে রাসূলুল্লাহ (সা.) বললেন, হজরত আলী (রা.), হজরত ফাতেমা (রা.), হজরত হাসান ও হোসাইন (রা.)-এর মুয়াদ্দাত (আনুগত্য)। (যুরকানি আলাল মাওয়াহীব, দুররে মানসুর, সাওয়ায়িকে মুহরিকা, আশরাফ আলী থানভি (র.) লেখা কোরআন শরিফ, তাফসিরে মাজহারি, তাফসিরে নুরুল কোরআন ও মাদারেজুন নবুয়াতসহ আরও বহু কিতাবে এসেছে)।
* হজরত ইমাম শাফি (র.) বলেন, হে রাসূলের পরিবারবর্গ, আপনাদের ভালোবাসা আল্লাহর পক্ষ থেকে ফরজ করা হয়েছে, সেই কোরআনে যা তিনি নাজিল করেছেন। আপনাদের মর্যাদার জন্য এটুকু যথেষ্ট, যে ব্যক্তি আপনাদের ওপর সালাত পাঠ করে না, তার নামাজ পরিপূর্ণ হয় না। (দিওয়ান)।
* এখানে ইমাম শাফি (র.)-এর কবিতা বা বাণীতে দুটি বিষয় লক্ষণীয়- এক. তিনি বলছেন আহলে বাইতকে ভালোবাসা আল্লাহ ফরজ করে দিয়েছেন কোরআন শরিফের আয়াত নাজিল করে। আর এ আয়াতটি সূরা শুরার ২৩ নম্বর আয়াত হওয়ার সম্ভাবনা বেশিই, যেহেতু অনেকেই সে মত ব্যক্ত করেছেন। দুই. আহলে বাইতের মর্যাদার গর্ব করার জন্য তিনি বলেছেন, তাদের ওপর সালাত পাঠ করাই যথেষ্ট, কেননা তাদের ওপর সালাত পাঠ না করলে নামাজ পরিপূর্ণ হয় না। যেমন- আমরা নামাজের শেষ বৈঠকে যখন দুরুদ শরিফ পাঠ করি, তখন বলি- আল্লাহুম্মা সাল্লি আলা মুহাম্মাদ ওয়া আলা আলি মুহাম্মাদ এখানে আলি মুহাম্মদ অর্থ হল মুহাম্মাদ (সা.)-এর পরিবারবর্গ। এবং এ দুরুদ ছাড়া নামাজের পূর্ণতা আসে না।
এখানে উল্লেখ্য, যারা আহলে বাইত বিদ্বেষী তারা সূরা শুরার এ আয়াতের তাফসিরে বুখারি শরিফের একটি হাদিস দিয়ে বলেন যে, এখানে কুরাইশদের কথা বলা হয়েছে। হাদিসটি হচ্ছে- হজরত ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদা তাকে ইল্লাল মাওয়াদ্দাতা ফিল ক্কুরবা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করার পর (কাছে উপস্থিত) হজরত সাঈদ ইবনে যুবায়ের (রা.) বললেন, এর অর্থ নবী পরিবারের আত্মীয়তার বন্ধন। (এ কথা শুনে) হজরত ইবনে আব্বাস (রা.) বললেন, আপনি তাড়াহুড়া করে ফেললেন। কেননা কুরাইশের এমন কোনো শাখা ছিল না যেখানে রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর আত্মীয়তা ছিল না। রাসূলুল্লাহ (সা.) তাদের বলেছেন, আমার এবং তোমাদের মাঝে যে আত্মীয়তার বন্ধন রয়েছে তার ভিত্তিতে তোমরা আমার সঙ্গে আত্মীয়সুলভ আচরণ কর। এ আমি তোমাদের থেকে কামনা করি।
সুতরাং আমরা তাদের উত্তরে বলব, এখানে দুটি হাদিসের মধ্যে কোনো মতবিরোধ নেই, যেহেতু আহলে বাইতের সদস্যরা কুরাইশ বংশের মানুষ। সুতরাং দুই হাদিসকে আমরা মেনে আহলে বাইতকে ভালোবাসতে কোনো বাধা নেই।
লেখক : ইমাম ও খতিব ওল্ডহাম জামে মসজিদ, যুক্তরাজ্য