What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

ঋণ পরিশোধে টালবাহানা অন্যায়: (1 Viewer)

antiks

Member
Joined
Jan 31, 2019
Threads
27
Messages
101
Credits
4,029
ঋণ আদান-প্রদান আমাদের জীবনের এক অনস্বীকার্য বাস্তবতা। প্রয়োজনের সময় আমরা অন্যের কাছ থেকে ঋণ নেয়। ঋণগ্রহীতা ঋণের টাকা নিয়ে উপকৃত হয় এবং তার প্রয়োজন পূরণ করে। আর ঋণদাতাও এর মধ্য দিয়ে বিপদগ্রস্ত ব্যক্তির সাহায্যে এগিয়ে আসে।
কোরআন ও হাদিসে ঋণ প্রদানকে উৎসাহিত করা হয়েছে, অপরদিকে ঋণ পরিশোধের বিষয়ে যথেষ্ট গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। যারা সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও ঋণ পরিশোধে টালবাহানা করবে তাদের জন্যে হুঁশিয়ারিও উচ্চারিত হয়েছে।
ঋণ পরিশোধের বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ঋণ পরিশোধ কোনো অনুগ্রহ নয়, বরং ঋণগ্রহীতার ওপর এক অবধারিত দায়িত্ব এবং ঋণগ্রহীতার ওপর এটি ঋণদাতার অধিকার।
তাই ইসলাহী বিধান মতে, যদি ঋণগ্রহীতা ঋণ পরিশোধ করার পূর্বে মারা যায়, তাহলে কাফন-দাফনের পর প্রথমেই তার রেখে যাওয়া সম্পদ থেকে ঋণ পরিশোধ করে দিতে হবে। ঋণ পরিশোধের পর যদি অতিরিক্ত কিছু থাকে, তাহলেই কেবল তার ওয়ারিশদের মাঝে তা বণ্টন করা হবে এবং তাতে তার অসিয়ত কার্যকর হবে।
অতএব ঋণ পরিশোধের বিষয়টি বাধ্যতামূলক। তাই ঋণগ্রহীতার জন্য উচিত সর্বদা ঋণ পরিশোধের জন্য চেষ্টা করা। হাদিস শরিফে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সা:) ইরশাদ করেন:
من أخذ أموال الناس يريد أداءها أدى الله عنه،
যে ব্যক্তি পরিশোধ করে দেওয়ার নিয়তে কারও নিকট থেকে ঋণ গ্রহণ করে আল্লাহতায়ালা তার পক্ষ থেকে তা আদায় করে দেন।
(সহিহ বোখারি, হাদীস : ২৩৮৭)
ওয়াদা মতে যথাসময়ে ঋণ পরিশোধ না করা ওয়াদা খেলাফের নামান্তর। তাই হাদীসে সময়মতো ঋণ পরিশোধ করার জন্য আগে থেকেই প্রস্তুতি নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। আবু যর (রা.) বলেছেন, আমি একদিন রাসূলুল্লাহ (সা.) এর সঙ্গে ছিলাম। একপর্যায়ে উহুদ পাহাড় তার দৃষ্টিগোচর হলে তিনি বললেন, 'আমি চাই না- উহুদ পাহাড় আমার জন্যে স্বর্ণে পরিণত করে দেওয়া হলেও এর একটি দিনার আমার নিকট তিনদিনের বেশি সময় থাকুক; হ্যাঁ, যদি কোনো দিনার আমি আমার ঋণ পরিশোধের জন্যে রেখে দিই সেটা ভিন্ন।
(সহিহ বোখারি: ২৩৮৮)
রাসূলুল্লাহ (সা.) অন্যের কাছ থেকে ঋণ মুক্ত থাকার জন্য দোয়া করতেন এবং বলতেন:
اللَّهُمَّ اكْفِنِي بِحَلاَلِكَ عَنْ حَرَامِكَ ، وَأَغْنِنِي بِفَضْلِكَ عَمَّنْ سِوَاكَ
(উচ্চারণ: আল্লাহুম্মাকফিনী বিহালালিকা আন হারামিক, ওয়া আগনিনী বিফাজলিকা আম্মান সিওয়াক।)
অর্থাৎ : হে আল্লাহ! আপনি আমাকে আপনার হালাল বিষয়ের মাধ্যমে হারাম থেকে বাঁচান। এবং আপনার দয়া ও করুণা দিয়ে অন্যদের থেকে আমাকে অমুখাপেক্ষী করে দিন।
(জামে তিরমিজি: ৩৫৬৩)
আমাদের সমাজে অনেকে ঋণ পরিশোধে উদাসীন। এবং তারা ঋণ পরিশোধে ইচ্ছাকৃত বিলম্ব করে থাকে। যা সুস্পষ্ট অন্যায়।
ঋণগ্রহীতার মনে রাখা উচিত- ঋণদাতা তার ওপর ঋণপ্রদানের মাধ্যমে যে অনুগ্রহ করেছে, তার পরিবর্তে তার সঙ্গে সুন্দর আচরণ করাই কর্তব্য। সময়মতো যদি তার ঋণ পরিশোধের সামর্থ্য না থাকে, তাহলে সে সৌজন্য রক্ষা করে ঋণদাতাকে তা জানাতে পারে, তার কাছ থেকে আরও কয়েকদিন সময় চেয়ে নিতে পারে। কিন্তু সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও ঋণ যথাসময়ে আদায়ে টালবাহানা করা, ঋণদাতার উপর একপ্রকার জুলুম।
আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন,
مطل الغنى ظلم
"সচ্ছল ব্যক্তির (ঋণ পরিশোধে) টালবাহানা করা অন্যায়।"
(সহিহ বোখারি: ২৪০০)
ঋণদাতা তার পাওনার জন্য ঋণগ্রহীতাকে কঠোর ভাষায় ঋণ চাওয়া জায়েয। বর্ণিত আছে যে, এক ব্যক্তির কাছ থেকে রাসূলুল্লাহ (সা.) কিছু ঋণ নিয়েছিলেন। সে এসে তার সঙ্গে কঠোর ভাষায় কথা বলতে লাগল। তা দেখে সাহাবায়ে কেরাম তাকে মারতে উদ্যত হচ্ছিলেন। কিন্তু রাসূলুল্লাহ (সা.) বললেন : তাকে ছেড়ে দাও, কেননা পাওনাদারের একটু কথা বলার অধিকার রয়েছে। (সহিহ বোখারি: ২৪০১)
উত্তম বস্তু দ্বারা ঋণ পরিশোধ করা নবী সা: এর শিক্ষা। জাবের (রা.) বলেছেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) আমার কাছ থেকে একবার ঋণ নিয়েছিলেন। পরে যখন তিনি তা আমাকে পরিশোধ করলেন, তখন আমার পাওনার চেয়েও বাড়িয়ে দিলেন।
(সুনানে আবু দাউদ: ৩৩৪৯)
তেমনিভাবে পাওনা পরিশোধকালে পাওনাদারের কৃতজ্ঞতা জানানো এবং তার জন্যে কল্যাণের দোয়া করা ইসলামের এক অনন্য শিক্ষা। রাসূলুল্লাহ (সা.) একবার সাহাবি হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আবি রবিয়া (রা.)-এর থেকে চার হাজার দিরহাম ঋণ করেছিলেন। যখন তা পরিশোধ করলেন, তখন তিনি তার জন্য এ দোয়া করলেন, আল্লাহতায়ালা তোমার পরিবার-পরিজন ও ধন-সম্পদে বরকত দান করুন।
(সুনানে নাসায়ি: ৪৬৮৩)
পরিশেষে বলবো, ঋণ এমন একটি বান্দার হক্ক যা আল্লাহ কখনো ক্ষমা করেন না। হাদীসে বর্ণিত, আল্লাহর রাস্তায় শাহাদত বরণকারী শুহাদাদের সকল পাপ ক্ষমা করা হবে, কিন্তু ঋণ ক্ষমা করা হবে না। তাই আমাদের উচিৎ এ ব্যাপারে যত্নশীল ও দায়িত্বশীল হওয়া।
আল্লাহ আমাদের তাওফীক দান করুন।

মূল লেখকঃ
আরিফুল হক এনামী
 
These are the rules that are to be followed throughout the entire site. Please ensure you follow them when you post. Those who violate the rules may be punished including possibly having their account suspended.

যারা কমেন্ট করবেন, দয়া করে বানান ঠিক রাখুন। উত্তেজিত অবস্থায় দ্রুত কমেন্ট করতে গিয়ে বানান ভুল করবেন না। আমরা যারা কমেন্ট পড়তে আসি, আমাদের কমেন্ট পড়তে অনেক অসুবিধা হয়।

Users who are viewing this thread

Back
Top