What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

বাবরি মসজিদ-রাম মন্দির বিতর্ক (1 Viewer)

Nadim hasan

Member
Joined
Sep 26, 2020
Threads
10
Messages
107
Credits
1,476
১৯৯২ সালে বাবরি মসজিদ ধ্বংস করা হয়েছিল ভারতের উত্তরাঞ্চলের শহর অযোধ্যায়। ধর্মীয়ভাবে পবিত্র হিসেবে বিবেচিত এই অঞ্চলে বহুবছর ধরেই হিন্দু ও মুসলিমদের মধ্যে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে।

১৫২৮: কিছু হিন্দুদের মতে, হিন্দুধর্মের অন্যতম আরাধ্য দেবতা রাম যেখানে জন্ম গ্রহণ করেছিলেন সেখানে একটি মসজিদ তৈরি করা হয়।

১৮৫৩: ধর্মকে কেন্দ্র করে প্রথমবারের মত সহিংসতার ঘটনা ঘটে বলে জানা যায়।

১৮৫৩: ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক প্রশাসন দুই ধর্মের উপাসনার জায়গা আলাদা করার উদ্দেশ্যে বেষ্টনী তৈরি করে। বেষ্টনীর ভেতরের চত্বর মুসলিমদের জন্য এবং বাইরের চত্বর হিন্দুদের ব্যবহারের জন্য নির্ধারিত হয়।

১৯৪৯: মসজিদের ভেতর ইশ্বর রামের মূর্তি দেখা যায়। হিন্দুদের বিরুদ্ধে মূর্তিগুলো রাখার অভিযোগ ওঠে। মুসলিমরা প্রতিবাদ জানায় এবং দুই পক্ষই দেওয়ানি মামলা করে। সরকার ঐ চত্বরকে বিতর্কিত জায়গা বলে ঘোষণা দেয় এবং দরজা বন্ধ করে দেয়।

১৯৮৪: বিশ্ব হিন্দু পরিষদের (ভিএইচপি) নেতৃত্বে ইশ্বর রামের জন্মস্থান উদ্ধার এবং তার সম্মানের একটি মন্দির প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে একটি কমিটি গঠন করে হিন্দুরা। তৎকালীন বিজেপি নেতা লালকৃষ্ণ আদভানি (পরবর্তীতে ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী) ঐ প্রচারণরা নেতৃত্ব নেন।

১৯৮৬: জেলার বিচারক আদেশ দেন যেন বিতর্কিত মসজিদের দরজা উন্মুক্ত করে দিয়ে হিন্দুদের সেখানে উপাসনার সুযোগ দেয়া হয়। মুসলিমরা এর প্রতিবাদে বাবরি মসজিদ অ্যাকশন কমিটি গঠন করে।

১৯৮৯: বিতর্কিত মসজিদ সংলগ্ন জায়গায় রাম মন্দিরের ভিত্তি স্থাপান করে নতুন প্রচারণা শুরু করে ভিএইচপি।

১৯৯০: ভিএইচপি'র কর্মীরা মসজিদের আংশিক ক্ষতিসাধন করে। প্রধানমন্ত্রী চন্দ্রশেখর আলোচনার মাধমে বিতর্ক সমাধানের চেষ্টা করলেও তা পরের বছর বিফল হয়।

১৯৯১: অযোধ্যা যে রাজ্যে অবস্থিত, সেই উত্তর প্রদেশে ক্ষমতায় আসে বিজেপি।

১৯৯২: ভিএইচপি, বিজেপি এবং শিব সেনা পার্টির সমর্থকরা মসজিদটি ধ্বংস করে। এর ফলে পুরো ভারতে হিন্দু ও মুসলিমদের মধ্যে হওয়া দাঙ্গায় ২ হাজারের বেশি মানুষ মারা যায়।

১৯৯৮: প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারি বাজপেয়ির অধীনে জোট সরকার গঠন করে বিজেপি।

২০০১: মসজিদ ধ্বংসের বার্ষিকীতে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। ঐ স্থানে আবারো মন্দির তৈরির দাবি তোলে ভিএইচপি।

জানুয়ারি ২০০২: নিজের কার্যালয়ে অযোধ্যা সেল তৈরি করেন প্রধানমন্ত্রী বাজপেয়ি। সিনিয়র কর্মকর্তা শত্রুঘ্ন সিংকে নিয়োগ দেয়া হয় হিন্দু ও মুসলিম নেতাদের সাথে আলোচনার জন্য।

ফেব্রুয়ারি ২০০২: উত্তর প্রদেশের নির্বাচনের তফসিলে মন্দির তৈরির বিষয়টি বাদ দেয় বিজেপি। ভিএইচপি ১৫ই মার্চের মধ্যে মন্দির নির্মানকাজ শুরু করার ঘোষণা দেয়। শত শত স্বেস্বচ্ছাসেবক বিতর্কিত স্থানে জড়ো হয়। অযোধ্যা থেকে ফিরতে থাকে হিন্দু অ্যাক্টিভিস্টদের বহনকারী একটি ট্রেনে হামলার ঘটনায় অন্তত ৫৮ জন মারা যায়।

মার্চ ২০০২: ট্রেন হামলার জের ধরে গুজরাটে হওয়া দাঙ্গায় ১ হাজার থেকে ২ হাজার মানুষ মারা যায়।

এপ্রিল ২০০২: ধর্মীয়ভাবে পবিত্র হিসেবে বিবেচিত জায়গাটির মালিকানার দাবিদার কারা, তা নির্ধারণ করতে তিনজন হাইকোর্ট বিচারক শুনানি শুরু করেন।

জানুয়ারি ২০০৩: ঐ স্থানে ইশ্বর রামের মন্দিরের নিদর্শন আছে কিনা, তা যাচাই করতে আদালতের নির্দেশে নৃতত্ববিদরা জরিপ শুরু করেন।

অগাস্ট ২০০৩: জরিপে প্রকাশিত হয় যে মসজিদের নিচে মন্দিরের চিহ্ন রয়েছে, কিন্তু মুসলিমরা এই দাবির সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে। হিন্দু অ্যাক্টিভিস্ট রামচন্দ্র পরমহংসের শেষকৃত্য অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বাজপেয়ি বলেন তিনি মৃত ব্যক্তির আশা পূরণ করবেন এবং অযোধ্যায় মন্দির তৈরি করবেন। তবে তিনি আশা প্রকাশ করেন যে আদালতের সিদ্ধান্তে এবং আলোচনার মাধ্যমে এই দ্বন্দ্বের সমাধান হবে।

সেপ্টেম্বর ২০০৩: বাবরি মসজিদ ধ্বংসের পেছনে উস্কানি দেয়ায় সাত জন হিন্দু নেতাকে বিচারের আওতায় আনা উচিত বলে রুল জারি করে একটি আদালত। তবে সেসময়কার উপ-প্রধানমন্ত্রী লালকৃষ্ণ আদভানির - যিনি ১৯৯২ সালে ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন - বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ আনা হয়নি।

অক্টোবর ২০০৪: বিজেপি নেতা আদভানি জানান তার দল এখনও অযোধ্যায় মন্দির প্রতিষ্ঠা করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং তা 'অবশ্যম্ভাবী।

নভেম্বর ২০০৪: উত্তর প্রদেশের একটি আদালত রায় দেয় যে মসজিদ ধ্বংস করার সাথে সম্পৃক্ত না থাকায় মি. আদভানিকে রেহাই দিয়ে আদালতের জারি করা পূর্ববর্তী আদেশ পুনর্যাচাই করা উচিত।

জুলাই ২০০৫: সন্দেহভাজন ইসলামি জঙ্গীরা বিস্ফোরক ভর্তি একটি জিপ দিয়ে বিতর্কিত স্থানটিতে হামলা চালিয়ে সেখানকার চত্বরের দেয়ালে গর্ত তৈরি করে। নিরাপত্তা রক্ষাকারী বাহিনী'র হাতে নিহত হয় ছয়জন, যাদের মধ্যে পাঁচজনই জঙ্গি বলে দাবি করে নিরাপত্তা রক্ষীরা।

জুন ২০০৯: মসজিদ ধ্বংস হওয়া সম্পর্কে অনুসন্ধান করতে থাকা লিবারহান কমিশন তদন্ত শুরু করার ১৭ বছর পর তাদের প্রতিবেদন জমা দেয়।

নভেম্বর ২০০৯: প্রকাশিত লিবারহান কমিশনের প্রতিবেদনে মসজিদ ধ্বংসের পেছনে বিজেপি'র শীর্ষ রাজনীতিবিদদের ভূমিকার বিষয়টি উল্লেখ করা হয় এবং এনিয়ে সংসদে হট্টগোল হয়।

সেপ্টেম্বর ২০১০: আল্লাহাবাদ হাইকোর্ট রায় দেয় যে স্থানটির নিয়ন্ত্রণ ভাগাভাগি করে দেয়া উচিত। কোর্টের রায় অনুযায়ী এক-তৃতীয়াংশের নিয়ন্ত্রণ মুসলিমদের, এক-তৃতীয়াংশ হিন্দুদের এবং বাকি অংশ 'নির্মোহী আখারা' গোষ্ঠীর কাছে দেয়া উচিত। যেই অংশটি বিতর্কের কেন্দ্র, যেখানে মসজিদ ধ্বংস করা হয়েছিল, তার নিয়ন্ত্রণ দেয়া হয় হিন্দুদের কাছে। একজন মুসলিম আইনজীবী বলেন যে এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করবেন।

মে ২০১১: ২০১০ সালের রায়ের বিরুদ্ধে হিন্দু ও মুসলিম দুই পক্ষই আপিল করায় হাইকোর্টের পূর্ববর্তী রায় বাতিল করে সুপ্রিম কোর্ট ।

নভেম্বর ২০১৯: সে জায়গাটিতে মন্দির তৈরির পক্ষেই চূড়ান্ত রায় দিয়েছে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট
 

Users who are viewing this thread

Back
Top