What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

বৈধ যৌনতা ও যৌন সম্পর্ক (1 Viewer)

mujab

Member
Joined
Sep 4, 2020
Threads
15
Messages
125
Credits
1,904
বিবাহ

মূল নিবন্ধসমূহ: ইসলামী বৈবাহিক আইনশাস্ত্র, ইসলামে বিবাহ ও মাহরাম

ইসলামী আইন অনুসারে, বিবাহের মাধ্যমে স্বামী এবং স্ত্রীর মধ্যকার শারীরিক সম্পর্ক ও যৌনমিলন বৈধ করা হয়।[Ahlul Bayt Digital Islamic Library Project ১] এবং দৈহিক ও মানসিক যৌন চাহিদা পূরণের জন্য বিবাহের প্রতি ব্যাপকভাবে উৎসাহিত করা হয়েছে। ইসলামে বৈবাহিক সম্পর্ককে আবেগীয় সম্পর্ক অথবা প্রজনন প্রক্রিয়ায় সীমিত রাখা হয় নি, বরং ইসলামে বিবাহকে এজন্য ব্যপকভাবে উৎসাহিত করা হয়েছে যে, এটি কোন ব্যক্তির যৌন চাহিদা পূরণের জন্য বৈধ প্রতিষ্ঠানের জোগান দেয়।[১১][৪৭][৪৮][৪৯][৫০] ইসলামে যৌনতাকে কেন্দ্র করে বিস্তৃত পরিসরের নীতিমালা দেয়া হয়েছে; যাই হোক,কুরআন ও হাদিসে বিবাহের চুক্তিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানের মাঝে সীমাবদ্ধ যৌনতার বহু নীতিমালার সূত্র প্রদান করা হয়েছে, যেগুলো মানবজাতির কল্যাণ ও তাদের প্রাকৃতিক যৌন প্রবণতাকে উচ্চ মর্যাদা প্রদান করে। সূরা বাকারায় [৫১](২ঃ২২২) বৈবাহিক জীবনে যৌনতাকে সরাসরি অণুমোদন দেয়া হয়েছে:



"যখন তারা [স্ত্রীরা] তাদের নিজেদের রজঃস্রাব হতে পরিচ্ছন্ন করে নেয়, তখন তোমরা তাদের সাথে সম্মিলিত হও যেভাবে আল্লাহ তোমাদের নির্দেশ দিয়েছেন।"

— (২ঃ২২২)


বলা হয়েছে যে:



"যারা তাদের সতীত্বকে (গোপন অঙ্গকে, অবৈধ যৌন কর্মকাণ্ড থেকে) নিরাপত্তা দেয় তাদের স্ত্রীর বা যা তাদের যা তাদের হাত ধারণ করে (যুদ্ধবন্দী ও দাসীগণ) তাদের হতে ব্যতীত, তারা দোষারোপ হতে মুক্ত।"

— [মুমিনুন ২৩ঃ৫-৬][৫২]


পাশাপাশি, হাদিসের উৎসও বিবাহের মাধ্যমে বৈধপন্থায় যৌন আকাঙ্ক্ষা পূরণের স্বীকৃত মর্যাদাকে অণুরূপভাবে ব্যাখ্যা করেছে। ওয়াসায়লুশ শিয়া নামক শিয়াদের হাদীস গ্রন্থে সাহাবীদেরদের বিবাহে উৎসাহিতকরণের উদ্দেশ্যে বলা মুহাম্মাদের বানীকে উদ্ধৃত করা হয়েছে, যা হল:



"হে যুবক পুরুষেরা, আমি তোমাদেরকে বিয়ে করার পরামর্শ দিচ্ছি।"

— ওয়াসায়লুশ শিয়া (vol. 14, p. 25)


[৫৩]

এছাড়া হাদীসে আছে[৫৩],



"হে যুব সম্প্রদায়, তোমাদের মধ্যে যাদের বিয়ে করার সামর্থ আছে তাদের উচিত বিয়ে করা; এটি দৃষ্টিকে নত রাখে এবং যৌনাঙ্গের হেফাযত করে। আর যাদের বিয়ে করার সামর্থ নেই তারা যেন রোজা রাখে, কেননা তা যৌন উত্তেজনাকে প্রশমিত করে।"

— (বুখারী, মুসলিম)


[Ahlul Bayt Digital Islamic Library Project ২]

সীমারেখা

মূল নিবন্ধসমূহ: মাহরাম ও ইসলামে আন্তঃধর্ম বিবাহ

মুসলিম পুরুষগণ মুসলিম, ইহুদি ও খ্রিস্টান নারী বিয়ে করতে পারবে, তবে অন্যান্য ধর্মাবলম্বী ও বিধর্মী নারীর সঙ্গে বিবাহ (ও সঙ্গম) নিষিদ্ধ। তারা একই সময়ে সর্বোচ্চ চারটি বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ থাকতে পারবে। অপরদিকে মুসলিম নারীগণ মুসলিম ব্যতিরেকে অন্য ধর্মের ও বিধর্মী পুরুষকে বিয়ে করতে পারবে না,এবং তারা একইসময়ে শুধু একটি বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ থাকতে পারবে।[৫৪](২ঃ২২১)।[৫৫] পারিবারিক সম্পর্কের দিক থেকে একজন মুসলিম পুরুষ যাদেরকে বিয়ে করতে পারবে না তারা হলঃ পিতার স্ত্রীগণ ([৫৬] ৪ঃ২২), মাতা, কন্যা, বোন, পিতার বোন, মাতার বোন, ভাইয়ের কন্যা, বোনের কন্যা, দুধ-মাতা, দুধ-বোন, শাশুড়ি, পূর্বে বৈবাহিক বা বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক ছিল এমন নারীর কন্যা, পালক পুত্রের মাতা, এবং একই পরিবারের দুই বোন [৫৭](৪ঃ২৩) ও নিজ ক্রয়কৃত দাসী ব্যতীত সকল বিবাহিত নারী (৩ঃ২৪)।[৫৫]

উপপত্নী

মূল নিবন্ধসমূহ: ইসলাম ধর্মে দাসত্ব ও মা মালাকাত আইমানুকুম

উপপত্নীত্ব (সুরাইয়া) হল কোন পুরুষের সাথে তার "অধিকৃত ক্রীতদাসী (জারিয়া) এবং অধিকৃত যুদ্ধবন্দী দাসী"র যৌন সম্পর্ক।[২৫] "সুরাইয়া" শব্দটি কুরআনে উল্লেখিত হয় নি, সেখানে মূলত দাসদাসী এবং উপপত্নীদের বোঝাতে মোট ১৫ বার "মা মালাকাত আইমানুকুম" (তোমার ডান হাত যার মালিকানা ধারণ করে) বাগধারাটি ব্যবহার করা হয়েছে। ইসলাম পূর্ব আরবে দাসপ্রথা চলাকালীন সময়ে উপপত্নীত্ব প্রচলিত ছিল এবং ইসলাম আগমনের পর এর উপর কিছু সীমারেখা ও নীতি নির্ধারণ করে একে বৈধতা দেয়া হয়।[৫৮] একজন মুসলিম পুরুষ তার ক্রয়কৃত মুসলিম বা অমুসলিম ক্রীতদাসী বা অধিকৃত মুসলিম বা অমুসলিম যুদ্ধবন্দিনীর সঙ্গে যৌন সম্পর্ক গড়তে পারবে, গর্ভধারণ এড়াতে জন্মনিয়ন্ত্রণ (কয়শাস ইন্টারাপশাস) করতে পারবে এবং তার সন্তানের পিতা হতে পারবে, তবে যদি উক্ত দাসী তার সন্তানের মা হয় তবে সেই দাসী উম্মে ওয়ালাদ (সন্তানের মা) উপাধি পাবে, যার ফলে তার মালিক পর তাকে আর অন্য কোথাও বিক্রি করতে পারবে না। একজন মুসলিম পুরুষ তার নিজের মালিকানাধীন একাধিক দাসী এবং/অথবা যুদ্ধবন্দীনীর সাথে উপপত্নীত্বের সম্পর্ক করতে পারবে, কিন্তু সে তার স্ত্রীর অধিকৃত দাসীর সাথে এ ধরনের সম্পর্ক করতে পারবে না। একজন মুসলিম চাইলে তার অধিকৃত দাসী/বন্দীনীকে বিয়ে করতে পারবে, তবে বিয়ের পূর্বে তাকে দাসত্ব হতে মুক্তি দিতে হবে, এবং মুশরিক হলে ধর্মান্তরিত করতে হবে। হাদিসেও দাসীকে ধর্মান্তরিত ও মুক্ত করে বিয়ে করার প্রতি উৎসাহ দেয়া হয়েছে।[৫৯][৬০] উপপত্নীদের গর্ভে জন্ম নেয়া তার সন্তান বৈধ বলে বিবেচিত হবে এবং তার মৃত্যুর পর উপপত্নী ও তার সন্তানগণ স্বাধীন বলে বিবেচিত হবে[৫৮] এছাড়াও, বিবাহিত স্ত্রী ও তাদের সন্তানদের অণুরুপ তারাও একই পরিমাণে উক্ত মুসলিম পুরুষের সম্পত্তির ভাগ পাবে।

যৌনতার পদ্ধতি

ইসলামী যৌন ফিকহের অন্যতম ক্ষেত্র যাতে আলোচনায় খুব বেশি নিষেধাজ্ঞা নেই তা হল বৈবাহিক যৌন কর্মকাণ্ডের পন্থাসমূহ। ইসলামী আইনের অধীনে চর্চাকৃত যৌনসঙ্গম ও যৌনতার পদ্ধতিসমূহের সবগুলোই হাদিস থেকে এসেছে, যা প্রকৃতিগতভাবে নিষেধপ্রবণ নয়, কিন্তু পারস্পারিক শিষ্টাচার দ্বারা নিয়ন্ত্রিত, যাকে সাধারণত পূর্বরাগ বলা হয়।



ইমাম দায়লামি আনাস ইবনে মালিক হতে বর্ণিত মুহাম্মাদের একটি হাদিস উদ্ধৃত করেন, তোমাদের কেউ যেন তাদের যৌন কামনা পূরণ করতে স্ত্রীর উপর পশুর ন্যায় পতিত না হয়, তারা যেন প্রথমে তোমাদের মাঝে একজন দূত উপস্থিত করে" "কি সেই দূত?" তারা জিজ্ঞেস করলেন, তিনি উত্তর দিলেন: "চুম্বন ও কথোপকথন"।"

— দায়লামি রচিত "মুসনাদ আল-ফেরদৌস", ২/৫৫




ইমাম আল-কায়িম জাবির ইবনে আবদুল্লাহ হতে তার গ্রন্থ তিব্ব আল-নববি" গ্রন্থে উদ্ধৃত করেন যে, মুহাম্মাদের শৃঙ্গারের পূর্বে সহবাসে অংশ নিতে নিষেধ করেছেন।

— আল তিব্ব আল নববি, ১৮৩


এই হাদিসগুলোর মধ্যকার মূল প্রবণতা হল শয়নকক্ষে মুসলিমদের অণুসরণের জন্য প্রদত্ত বানী, যেগুলো "স্পষ্টভাবে দেখায় যে, স্বামী ও স্ত্রীকে পূর্বরাগ নামে পরিচিত পারস্পারিক উদ্দীপনায় অংশ নেয়ার সময় সম্পূর্ণ স্বাধীনতা অনুভব করা উচিত। এই হাদিসগূলো পূর্বরাগের পরামর্শ দেয়, এবং পায়ুসঙ্গম ছাড়া পূর্বরাগের ও সঙ্গমের আর কোন পারস্পারিক পদ্ধতিতে সরাসরি কোন বিধিনিষেধ আরোপ করে না।উদ্ধৃতি ত্রুটি: শুরুর <ref> ট্যাগ সঠিক নয় বা ভুল নামে রয়েছে[৬১][৬২][৬৩]

যৌন বাধ্যতা

ইসলামে, স্বামী তার স্ত্রীকে পূর্ণ পরিতৃপ্ত করে সহবাস করবে, যতক্ষণ না পর্যন্ত স্বামী দৈহিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় কিংবা জীবিকা উপার্জনের কাজে সময় দেয়া থেকে বঞ্চিত না হয়। স্বামী তার স্ত্রীর সঙ্গে সহমর্মী ও যৌক্তিক সৌজন্যতার সঙ্গে আচরণ করতে বাধ্য থাকবে। এই যৌক্তিক ও সৌজন্যমূলক আচরণের মধ্যে একটি অবশ্য করনীয় অংশ হল সহবাস। ইসলামী পন্ডিতদের বেশিরভাগই স্বামীর জন্য চার মাসের সময়সীমা বেধে দিয়েছেন, যার চেয়ে অধিক সময় স্বামী স্ত্রীকে সহবাস হতে বঞ্চিত রাখতে পারবে না, কিন্ত কিছু পন্ডিতের অভিমত এই যে, প্রকৃতপক্ষে এই অধিকার পূরণের জন্য কোন প্রকার সুনির্দিষ্ট সময়সীমা নেই।[৬৪]



আবূ হুরায়রা সুত্রে মুহাম্মাদ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, স্বামীর বিছানা পরিহার করে কোন স্ত্রী রাত্রি যাপন করলে ফজর পর্যন্ত ফিরিশতাগণ তার প্রতি লানত করতে থাকে।"

— বুখারী, ৩০৬৫; মুসলিম, ১৪৩৬


কিন্তু কোন স্বামীর জন্য বৈধ নয় যে সে তার স্ত্রীকে তার সহ্যক্ষমতার চেয়ে বেশী সহবাসে বাধ্য করবে। স্ত্রী যদি এমন কারণ দেখায় যে সে অসুস্থ বা সহবাসের চাপ নিতে অসমর্থ, তবে সহবাসে অস্বীকৃতি জানানোতে তার কোন পাপ বা দোষ হবে না।[৬৫]

বিধিনিষেধসমূহ

যৌনসঙ্গমের একটি ক্ষেত্র যা সাধারণত নিষিদ্ধ তা হল পায়ুসঙ্গম।

সকল মুসলিম আইনবিদই একমত ষে, পায়ুকাম নিষিদ্ধ, যার ভিত্তি হল এই হাদিসগুলো :



"তোমরা (পুরুষেরা) নারীদের সাথে পায়ুপথে সহবাস কোরো না।"

— (আহমাদ, আত-তিরমিযি, আন-নাসায়ী, এবং ইবনে মাজাহে বর্ণিত)


নবী মুহাম্মাদ আরও বলেন,



"সে পুরুষ অভিশপ্ত, যে কোন নারীর সাথে পায়ুপথে সঙ্গম করে।"

— (আহমাদ)


[৬৬] খুজাইমা ইবনে সাবিদ বর্ণনা করেন,



"আল্লাহর রাসুল বলেছেন: আল্লাহ তোমাদেরকে সত্য কথা বলতে লজ্জাবোধ করেন না: তোমরা তোমাদের স্ত্রীদের সাথে পায়ুপথে সঙ্গম করো না।"

— (আহমাদ হতে বর্ণিত, ৫/২১৩)


ইবনে আবাস বর্ণনা করেন: "আল্লাহর রাসুল বলেছেন:



"আল্লাহ সেই পুরুষের দিকে তাকাবেন না যে তার স্ত্রীর পায়ুপথে সঙ্গম করেছে।"

— (ইবনে আবি শাইবা হতে বর্ণিত, ৩/৫২৯, আত-তিরমিযীতে এটিকে বিশুদ্ধ হাদিস হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে, ১১৬৫)


উপরন্তু, বলা আছে যে নবী মুহাম্মাদ একে ছোট "সডোমি(অজাচার)" বলে আখ্যায়িত করেছেন। (আন-নাসায়ী হতে বর্ণিত)

বর্ণিত আছে যে, মদিনার ইহুদিগণ বলতো যে, কেও যদি তার স্ত্রীর সাথে পেছন দিক থেকে জরায়ুপথে সঙ্গম করে তবে তার সন্তান ট্যাড়া চোখ নিয়ে জন্মাবে। সে সময়ে একদিন ওমর ইবনুল খাত্তাব নবী মুহাম্মাদের কাছে এসে বললেন, "হে আল্লাহর রাসুল! আমি ধ্বংস হয়ে গিয়েছি!" মুহাম্মাদ প্রশ্ন করলেন, "কি তোমাকে ধ্বংস করেছে?" তিনি উত্তরে বললেন, "গত রাতে আমি আমার স্ত্রীকে পেছন দিকে ঘুরিয়ে ফেলেছিলাম।," অর্থাৎ তিনি পেছন দিক থেকে তার স্ত্রীর সাথে জরায়ুপথে সহবাস করেছিলেন।

নবী তাকে কিছু বললেন না। এরপর এ প্রসঙ্গে নিম্নোক্ত আয়াত অবতীর্ণ হলঃ



"তোমাদের স্ত্রীরা তোমাদের শস্যক্ষেত্র, অতএব তোমরা তোমাদের শস্যক্ষেত্রে যেভাবে ইচ্ছা যেতে পার (তোমাদের স্ত্রীদের সাথে জরায়ুপথে যেকোনোভাবে সঙ্গম করতে পারো কিন্তু পায়ুপথে নয়)। আর তোমরা তোমাদের নিজেদের জন্য আগেই কিছু পাঠাও (ভালো কাজ করো অথবা আল্লাহর কাছে পুণ্যবান সন্তানসন্তদি প্রাপ্তির জন্য প্রার্থনা করো) ও আল্লাহ্‌কে ভয় করো। আর জেনে রাখো যে, আল্লাহ্‌র সাথে নিশ্চয়ই তোমাদের (পরকালে) দেখা করতে হবে। আর (হে মুহাম্মাদ,) বিশ্বাসীদেরকে সুখবর দাও।"কুরআন 2:223



উপরিউক্তে আয়াতে স্ত্রীর সাথে জরায়ুপথে সঙ্গমকে শস্যক্ষেত্রে বীজ বপনের সাথে তুলনা করে এটি নির্দেশ করা হয়েছে যে, ইসলামে ইচ্ছেমত যে কোন পন্থায় শুধুমাত্র জরায়ুপথেই সঙ্গম করাকে অণুমোদন দেয়া হয়েছে, কারণ শস্যক্ষেত্রে বীজ বপনের ফলে যেমন ফসল উৎপন্ন হয় ঠিক সেভাবে জরায়ুপথে সঙ্গমের ফলেই সন্তানের জন্ম হয়।

এ আয়াত অবতীর্ণ হওয়ার পর নবী মুহাম্মাদ ওমর বিন খাত্তাবকে উত্তর দেন, "সামনে বা পেছনে যে কোন দিক থেকে [নিজের স্ত্রীর সাথে জরায়ুপথে সংগম কর], কিন্তু পায়ুপথকে পরিহার কর এবং রজস্রাবকালে সঙ্গম থেকে বিরত থাকো।" (আহমাদ এবং তিরমিজী হতে বর্ণিত)

চারটি ক্ষেত্রে বৈবাহিক সঙ্গমের ব্যাপারে সুস্পষ্টভাবে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। এগুলো হলঃ

  • পায়ুমৈথুন
  • রজঃস্রাবকালীন সময়
  • সন্তান জন্মের পর প্রথম চল্লিশদিন,
  • রমজান মাসে রোজা রাখা অবস্থায় এবং হজ্জ ও ওমরাহ পালনের সময়। হজ্জ বা ওমরা চলাকালীন সময়ে বিবাহ হলে তা সক্রিয় বলে গণ্য হবে না।[৬৭]
বংশবৃদ্ধি

ইসলামী আইনশাস্ত্রে, বৈবাহিক যৌনতার প্রাথমিক উদ্দেশ্য হল বংশবিস্তার[৬৮] ইসলাম প্রজননের জন্য দৃঢ় যৌন আকাঙ্খাকে স্বীকৃতি দেয়, যা ইসলামে বিবাহের প্রধান উদ্দেশ্য।[৬৯] এর মাধ্যমে মানব প্রজাতির উৎপাদন ও সংরক্ষণ নিশ্চিত হয়। [৬৮] বৈবাহিক সম্পর্কের মাধ্যমে জন্ম নেওয়া সন্তান বৈধ বলে গৃহীত হয় এবং পিতামাতার সম্পত্তিতে সন্তানের পারস্পারিক মালিকানার অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়।[৭০] অধিকন্তু ইসলাম একটি বর্ধনশীল প্রজননবাদী দৃষ্টিভঙ্গিকে সমর্থন করে যা বহু হাদিসে উল্লেখিত হয়েছে।



মা'কিল ইবনু ইয়াসার (রাযি.) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক ব্যক্তি নবী মুহাম্মাদের খিদমাতে উপস্থিত হয়ে বললো, আমি এক সুন্দরী ও মর্যাদা সম্পন্ন নারীর সন্ধান পেয়েছি। কিন্তু সে বন্ধ্যা। আমি কি তাকে বিয়ে করবো? তিনি বললেনঃ না। অতঃপর লোকটি দ্বিতীয়বার এসেও তাঁকে জিজ্ঞেস করলে তিনি তাকে নিষেধ করলেন। লোকটি তৃতীয়বার তাঁর নিকট এলে তিনি তাকে বললেনঃ এমন নারীকে বিয়ে করে যে, প্রেমময়ী এবং অধিক সন্তান প্রসবকারী। কেননা আমি অন্যান্য উম্মাতের কাছে তোমাদের সংখ্যাধিক্যের কারণে গর্ব করবো।

— আবু দাউদঃ ২০৫০


এই হাদিসে উর্বর নারীদের বিবাহে উৎসাহিত করা হয়েছে, যেন ইসলামের অনুসারিদের সংখ্যা বৃদ্ধি পায়, যাতে নবী মুহাম্মাদ অন্যান্য ধর্মীয় জাতির বিপরীতে নিজ অনুসারীর সংখ্যা নিয়ে গর্ব করতে পারেন। এতে প্রতীয়মান যে, ইসলামে অধিক সন্তান গ্রহণকে উৎসাহিত করা হয়েছে।[৭১]



কুতায়বা ইবনু সাঈদ... আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা মুহাম্মাদের সাথে জিহাদে অংশ নিতাম; কিন্তু আমাদের কোন কিছু ছিল না। সুতরাং আমরা মুহাম্মাদের কাছে বললাম, আমরা কী খাসি হয়ে যাব? তিনি আমাদেরকে খাসি হতে নিষেধ করলেন এবং কোন মহিলার সাথে একখানা কাপড়ের বিনিময়ে হলেও শাদী করার অনুমতি দিলেন এবং আমাদেরকে এই আয়াত পাঠ করে শোনালেনঃ হে মু'মিনগণ! আল্লাহ যে পবিত্র জিনিসগুলো তোমাদের জন্য হালাল করেছেন তোমরা তা হারাম করো না এবং সীমালংঘন করো না। আল্লাহ সীমালংঘনকারীদের পছন্দ করেন না।

— সহীহ বুখারী, অধ্যায়ঃ ৬২, হাদীসঃ ১১




আসবাগ... আবূ হুরায়রা থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি মুহাম্মাদের কাছে বললাম, ইয়া রাসূলল্লাহ! আমি একজন যুবক। আমার ভয় হয় যে, আমার দ্বারা না জানি কোন গুনাহর কাজ সংঘটিত হয়ে যায়; অথচ আমার শাদী করার মতো পর্যাপ্ত সম্পদ নেই। এই কথা শুনে মুহাম্মাদ চুপ রইলেন। আমি আমার প্রশ্নের পুনরাবৃত্তি করলাম। তিনি চুপ রইলেন। আমি আবারও অনুরূপভাবে বললাম। তিনি চুপ থাকলেন। আবারও অনুরূপভাবে বললে তিনি উত্তর করলেন, হে আবূ হুরায়রা! যা কিছু তোমার ভাগ্যে আছে, তা লেখার পর কলমের কালি শুকিয়ে গেছে। তুমি খাসি হও বা না হও, তাতে কিছু আসে যায় না।

— সহীহ বুখারী, ৪৭০৫




আয়িশাহ্র থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, মুহাম্মাদ বলেছেনঃ বিবাহ করা আমার সুন্নাত। যে ব্যক্তি আমার সুন্নাত মোতাবেক কাজ করলো না সে আমার নয়। তোমরা বিবাহ করো, কেননা আমি তোমাদের সংখ্যাধিক্য নিয়ে অন্যান্য উম্মাতের সামনে গর্ব করবো। অতএব যার সামর্থ্য আছে সে যেন বিবাহ করে এবং যার সামর্থ্য নেই সে যেন রোযা রাখে। কারণ রোযা তার জন্য জৈবিক উত্তেজনা প্রশমনকারী।

— ইবনে মাজাহ ১৮৪৬




কাতাদাহ হতে বর্নিত, আল্লাহর রাসূল চিরকুমার থাকাকে নিষিদ্ধ করেছেন। ইবনে আখসাম বলেন: এরপর কাতাদাহ কুরআন হতে পাঠ করলেন, 'সূরা রা'দ: ৩৮ - আপনার পূর্বে আমি অনেক রসূল প্রেরণ করেছি এবং তাঁদেরকে পত্নী ও সন্তান-সন্ততি দিয়েছি।"

— ইবনে মাজাহ, ১৮৪৯


টেস্ট টিউব বেবি

আইভিএফ বা টেস্ট টিউব বেবির ক্ষেত্রে, ইসলামী প্রতিক্রিয়া হল নিম্নোক্ত ফতোয়া:[৭২]

  • স্ত্রীর ডিম্বাণুর সঙ্গে স্বামীর শুক্রাণুর আইভিএফ এবং তা পুনরায় স্ত্রীর জরায়ুতে স্থাপন বৈধ, যদি তা অক্ষমতার কারণে করা হয় এবং অভিজ্ঞ ডাক্তার দ্বারা পরিচালিত হয়।
  • যেহেতু বৈবাহিক সময়কাল জুড়ে বিবাহ স্বামী স্ত্রীর মাঝে একটি চুক্তি, কোন তৃতীয় পক্ষ যৌনতা ও প্রজননের বৈবাহিক প্রক্রিয়ায় অনধিকারপ্রবেশ করতে পারবে না। এর অর্থ হল কোন তৃতীয়পক্ষের শুক্রাণু, ডিম্বাণু, ভ্রুণ কিংবা গর্ভদাতা গ্রহণযোগ্য নয়। এক্ষেত্রে তৃতীয় পক্ষের অংশগ্রহণ হল জিনা বা ব্যভিচারের সমতুল্য।
পবিত্রতা এবং পরিচ্ছন্নতা

মূল নিবন্ধ: ইসলামী যৌন পরিচ্ছন্নতা-বিষয়ক আইনশাস্ত্র

যৌনক্রিয়া বা সহবাসের সময় দম্পতির যৌনাঙ্গদ্বয়ের পারস্পারিক অণুপ্রবেশ অথবা অণুপ্রবেশের পর বীর্যস্খলন হলে সহবাসের পর স্বামী ও স্ত্রী উভয়ের পূর্ণরুপে ধর্মীয় পরামর্শ অনুযায়ী পূর্ণ শরীর স্নান বা গোসল করা প্রয়োজন, যাতে তারা পরবর্তী উপাসনা বা সালাতের পূর্বে ধর্মীয় পবিত্রতাকে পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করতে পারে।[৭৩] গোসলের জন্য প্রয়োজন এমন পরিষ্কার ও দুর্গণ্ধবিহীন পবিত্র পানি যা ইতিপূর্বে গোসল বা শৌচকাজে ব্যবহৃত হয় নি, এবং উপাসনার স্বার্থে পবিত্র হওয়ার মনসংকল্প বিবৃতকরণের মাধ্যমে স্নানকার্যের সূচনা করা হয়।[৭৪] এরপর দেহের কোন স্থান শুকনো না থাকে এমনভাবে সম্পূর্ণ শরীরে পানি ঢালার পর দেহের প্রতিটি অঙ্গপ্রত্যঙ্গ পরিষ্কার করা হয়।[৭৪] এছাড়াও মুহাম্মাদের সুন্নতের উদ্ধৃতি রয়েছে যা যৌনাঙ্গের পারিপার্শের বয়ঃসন্ধিক চুল মুন্ডন করে কেটে ফেলার নির্দেশনা দেয়, তিনি এর জন্য চল্লিশ দিনের সময়সীমা নির্ধারণ করে দিয়েছেন, এবং তিনি বলেছেন এরচেয়ে বেশি সময় বয়ঃসন্ধিক চুল, বগলের নিচের চুল, গোঁফ ও হাতে পায়ের নখ অকর্তিত রাখা উচিৎ নয়।[৭৫]

উপবাস এবং রমজান



উপবাসের রাতে স্বামী-স্ত্রীগণ তোমাদের জন্য বৈধ করা হয়েছে; তারা তোমাদের জন্য একটি পরিচ্ছদস্বরূপ ও তোমরা তাদের জন্য একটি পরিচ্ছদস্বরূপ; আল্লাহ জানেন যে তোমরা তোমাদের প্রতি অবিচার করেছিলে, তাই তিনি তোমাদের দিকে (করুণার সাথে) মুখ তুলে তাকিয়েছেন এবং তোমাদেরকে (এই কষ্ট থেকে) মুক্তি দিয়েছেন; তাই এখন থেকে তোমাদের স্ত্রীর সংস্পর্শে বসবাস কর এবং আল্লাহ তোমাদের জন্য যা নির্ধারণ করেছেন তা প্রার্থনা কর, ভোরবেলায় দিনের শুভ্রতা রাতের অন্ধকার থেকে পৃথক না হওয়া পর্যন্ত খাও ও পান কর, এরপর (পরবর্তী) রাতের আগ পর্যন্ত উপবাস পূর্ণ কর, এবং মসজিদে থাকা অবস্থায় তাদের সঙ্গে যোগাযোগ স্থগিত রাখো; এগুলোই আল্লাহর নির্ধারিত সীমা, তাই এগুলোর কাছে যেয়ো না। এভাবেই আল্লাহ মানুষের জন্য তার বার্তাকে স্পষ্ট করেছেন যেন তারা (মন্দের বিরুদ্ধে) সুরক্ষিত থাকতে পারে।

— কুরআন 2:187 (অনুবাদ করেছেন শাকির)


রমজান মাসে ধর্মীয় উপবাস বা রোজার সময় যৌনসঙ্গম নিষিদ্ধ, এ সময় যৌনসঙ্গম করলে বা কোন কারণে বীর্যপাত ঘটালে রোজা নষ্ট হয়ে যাবে। যৌন উত্তেজনা বশত: বীর্য-তরল বা কামঃরস নির্গত হলে রোজা ক্ষতিগ্রস্থ হবে।[৭৬] তবে রোজাবিহীন অবস্থায় রাত্রিকালীন সময়ে তা নিষিদ্ধ নয়।[৭৬][৭৭]
 

Users who are viewing this thread

Back
Top