যৌনতা নিয়ে মানুষের মধ্যে আগ্রহের যেমন শেষ নেই। তেমনি এর রহস্যেরও শেষ নেই। স্থান, কাল, পাত্রভেদে এই যৌনতা পাপ আবার পূণ্য। একেক জনগোষ্ঠির কাছে যৌনতা বিষয়ক নৈতিকতা একেক রকম। এ নিয়ে পৃথিবীর বিভিন্ন জাতি-উপজাতির মধ্যে আছে অদ্ভুত সব রীতি আর প্রথা।
- যৌন নাচ, বিবস্ত্র হয়ে ঝর্ণার জলে স্নান করা হাইতির ধর্মীয় আচারের অংশ। প্রতি বছর জুলাই মাসে ভালোবাসার দেবতাকে উৎসর্গ করেই অনুষ্ঠিত হয় এমন আজব যৌন লোকাচার।
- মঙ্গোলিয়ার রীতিটি বেশ মজাদার। এখানে বয়সে বড়ো মেয়েরা ছেলেদের শেখায় কী ভাবে অন্য মেয়েদের যৌন আনন্দ দিতে হয়। সঙ্গমের সময় মেয়েদের যৌনসুখ ভোগকে এখানে প্রাধান্য দেওয়া হয়।
- কম্বোডিয়ার বাবা মায়েরা তাঁদের মেয়ের জন্য তৈরি করে দেন 'ভালোবাসার ঘর'। সেখানে একাধিক ছেলের সঙ্গে পরিচয়, আলাপ-আলোচনার সুযোগ পায় মেয়েরা। অধিকাংশ সময়ে সেই আলোচনা গড়ায় যৌনসম্পর্কে। এর পর সব দিক ভেবে ঠান্ডা মাথায় নিজের পছন্দের জীবনসঙ্গী বেছে নেন মেয়েরা।
- যৌনতার সঙ্গে জড়িয়ে থাকে প্রার্থনাও। ইন্দোনেশিয়ায় পালিত হয় পোন উৎসব। তখন উপজাতিরা দল বেধে জাভা পাহাড়ে যায়। সেখানে তারা যৌনতায় লিপ্ত হয়। তবে একটাই শর্ত। মিলিত হতে হবে স্বামী স্ত্রী ছাড়া অন্য কারো সঙ্গে। বছরে সাত বার এই উৎসব হবে। এবং সাতবারই একই পার্টনারের সঙ্গে যৌনসঙ্গম করতে হবে। তাতেই পূর্ণ হবে প্রার্থনা।
- কলম্বিয়ার গুয়াজিরো সম্প্রদায়ের মানুষের মধ্যেও আছে অদ্ভুত এক প্রথা। সেখানে নির্দিষ্ট উৎসবে বাজনার সঙ্গে নাচতে থাকে ছেলেমেয়েরা। নাচের মধ্যেই তরুণীরা তরুণদের পোশাক খুলে দিতে থাকে। রীতি অনুযায়ী, যে মেয়ে যে ছেলের পোশাক খুলবে, তাদের দুজনের মধ্যে যৌনতা হতেই হবে।
- ভারতের ছত্তীসগঢ়ের রীতিটিও বেশ আধুনিক। ডিয়ার হর্ন মুরিয়া উপজাতির মধ্যে চল আছে ঘটুলের। এখানে কিশোর কিশোরীরা গান গায়, নাচে, সঙ্গমেও লিপ্ত হয়। মেয়েরা গর্ভধারণ এড়াতে ভেষজ গর্ভ নিরোধক পান করে থাকে। আর তা সত্ত্বেও কোনো ভাবে গর্ভবতী হয়ে পড়লে বাচ্চার দায়িত্ব নেয় গ্রামের লোকেরাই।
- হিমালয়ের পাদদেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে বহু আদিবাসী সম্প্রদায়। তাদের কোনো কোনো উপজাতির মধ্যে আছে বহু স্বামী প্রথা। অর্থাৎ একই স্ত্রীর বহু স্বামী। কারণ এখানে চাষযোগ্য জমি কম। ভাই ভাই বিয়ে করে সংসার পৃথক হলে জমিও ভাগ হয়ে যাবে। তাই সমাধান- জমি ভাগের বদলে ভাগ করে নাও বউকে।
- উত্তর আমেরিকা এবং সাইবেরিয়ায় উত্তর মেরুর কাছাকাছি এলাকার একটি উপজাতির মধ্যে প্রচলিত আছে এমনই এক আজব রীতি। অশুভ শক্তির প্রভাব তাড়াতে স্ত্রী বদল করে তারা। এই উপজাতির মানুষের বিশ্বাস, এর ফলে পরিবার থেকে দূর হয়ে যায় অশুভ শক্তির প্রভাব। এই উপজাতিটির নাম 'এস্কিমো'।
- আফ্রিকার নাইজারে ওয়াড্ডাবে উপজাতিরা আবার অল্প বয়সে বিয়ে করে। কিন্তু পরে পরিণত বয়সে তারা অন্যের বৌ চুরি করে। এটাই তাদের রীতি। এবং চুরি করে যদি ধরা না পড়ে তাহলে' সেই জুটিকে স্বামী স্ত্রী হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হবে।
- যৌনশিক্ষাকে স্কুলপাঠ্য করা হবে কিনা, তা নিয়ে বিস্তর বিতর্ক থাকলেও ছবিটা একেবারে অন্য রকম নিউগিনির পাপুয়াতে। ৬ থেকে ৮ বছরের শিশুদের যৌনসম্পর্কে লিপ্ত হওয়ার রেওয়াজ রয়েছে সেখানে।
- দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরের একটি দ্বীপ মাঙ্গুইয়া। তাদের প্রচলিত রীতি অনুযায়ী ছেলে বা মেয়ের বয়স যখন ১৩ হয়, তখন বাধ্যতামূলকভাবে প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ বা মহিলার সাথে যৌনতায় লিপ্ত হতে হয়। এর ফলে তারা যৌনশিক্ষা পায় এবং সঙ্গীকে কিভাবে সন্তুষ্ট করতে হয় তা জানতে পারে।
- মারকোয়েসাস দ্বীপে আবার ছেলে-মেয়েদের সামনেই সঙ্গমে অভ্যস্ত তাঁদের বাবা মায়েরা।
- আফ্রিকার ওদাবে আদিবাসী গোষ্ঠীর যৌন রীতিটি বেশ অদ্ভুত। সেজেগুজে পুরুষরা পরস্ত্রীকে আকৃষ্ট করার চেষ্টা করেন এখানে। অন্যের স্ত্রীকে আকৃষ্ট করতে এখানে রীতিমতো উৎসব করা হয়, অর্থাৎ পুরো পদ্ধতিটি বৈধ। আমাদের সমাজে কিন্তু বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্কে জড়ানো অপরাধের পর্যায়েই পড়ে।
- অন্যদিকে তুরস্ক এবং নিউগিনির কিছু আদিবাসী সম্প্রদায়ের পুরুষরা যৌনাঙ্গে গয়না পরে। পূর্ব-আফ্রিকার অনেক জনজাতি আবার মেয়েদের যৌনাঙ্গ সেলাই করে রাখে। যাতে তারা বিয়ের আগে যৌনতা না করতে পারে।