What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

Other অবধারিত অধ্যায়: রীনা খান (1 Viewer)

Bergamo

Forum God
Elite Leader
Joined
Mar 2, 2018
Threads
9,649
Messages
117,051
Credits
1,241,096
Glasses sunglasses
Berry Tart
Statue Of Liberty
Profile Music
Sandwich
rykndcL.jpg


'কি বললি শয়তানি! আমার মুখের উপর এত বড় কথা! আজ তোর একদিন কি আমার একদিন!'

প্রতিপক্ষের বুকে কাঁপন ধরিয়ে দিয়ে সংসারে নিজের আধিপত্য কায়েম করা একজন কিংবদন্তি খলনায়িকা রীনা খান। এমন সংলাপ দিয়েই তিনি চিরপরিচিত বাংলাদেশের বাণিজ্যিক চলচ্চিত্রে।

কথায় বলে, ছবি চলে হিরো আর ভিলেন দিয়ে। অনেক সময় নায়িকা না হলেও চলে। ভিলেন যদি হয় মেয়ে বা মহিলা কেউ তখন তাকে খলনায়িকা বলা হয়। রীনা খান নিজের অবস্থান পাকা করে গণমানুষের কাছে পৌঁছে গেছেন খলনায়িকা হয়ে। সবাই তাঁকে চেনে। তিনি একবার বলেছিলেন-'আমার ফেসটাই তো একটা আইডি কার্ড' কথাটা শতভাগ সত্য।

y0IzKzw.jpg


মূলনাম সেলিনা সুলতানা রীনা। চলচ্চিত্রে আসেন পরিচালক সুভাষ দত্তের মাধ্যমে। সুভাষ দত্তই 'রীনা'-র পরে 'খান' বসিয়ে দেন। এই নামই হয়ে গেল একটা একক ইতিহাস।

ছোটবেলা থেকে রীনা খান খেলাধুলায় পারদর্শী ছিলেন। সাইক্লিং, ব্যাডমিন্টন, টেবিল টেনিস খেলতেন। বাইক চালাতেন। সাইক্লিং-এ জাতীয় পর্যায়ে তাঁর গোল্ড মেডেল আছে। আশির দশকেই 'বাজাজ'-এর বিজ্ঞাপনের মডেল হন।

'সোহাগ মিলন' ছবির মাধ্যমে চলচ্চিত্রে তাঁর অভিষেক ঘটে। নায়িকা ছিলেন প্রায় কয়েকটি ছবিতে। যেমন – মেঘ বিজলি বাদল, প্রেম যমুনা, মহানায়ক। 'প্রেম যমুনা' ছবিতে ইলিয়াস কাঞ্চনের বিপরীতে একটা গানও ছিল 'প্রেম যমুনায় জোয়ার যখন আসে' নামে। পজেটিভ রোলে ছিলেন প্রায় ৫০টি ছবির মতো।

১৯৮২ সালে সুভাষ দত্তের 'সবুজ সাথী' ছবিতে শাবানার সৎবোনের ছবিতে প্রথম নেগেটিভ রোলে অভিনয় করেন। প্রথম সিকোয়েন্সটি ছিল এমন তিনি শাবানাকে থাপ্পড় মারবেন শাবানা শাসন করেছেন বলে মানে সৎবোনের শাসন তিনি মানবেন না। সুভাষ দত্ত যখনই শ্যুটিং সেটে বলেন শাবানাকে থাপ্পড় মারতে হবে শুনে তিনি না করতে থাকেন, বলেন এটা তাঁকে দিয়ে সম্ভব না। শাবানাই তখন বুঝিয়ে বলেছিলেন-'তুই দে থাপ্পড়, আমার লাগবে না এটা তো তোর কাজ।' তারপর তিনি শট দেন এবং এক টেকে ওকে হয়। সেই ছবি সুপারহিট হবার পর রীনা খানের নেগেটিভ রোলের চাহিদা বাড়তে থাকে এবং তিনি হয়ে যান দেশের চলচ্চিত্র শাসন করা পরবর্তী খলনায়িকা।

vZajTrS.jpg


পরিচালক, প্রযোজকরা ছবি করার আগে খলনায়িকা চিন্তা করে রাখতেন রীনা খানের জন্য। শাবানা তাঁর নিজের প্রোডাকশনের ছবিতেও রীনা খানকে রাখতেন। এতটা জনপ্রিয় ছিলেন যে এফডিসির সাতটা ফ্লোরেই একদিনে তাঁকে শ্যুটিং করতে হত। অন্তঃসত্ত্বা থাকার সময়ও তাঁকে শ্যুটিং করতে হয়েছে ক্লোজ শটে, কখনোবা বৃষ্টিতে ভিজেও এত ত্যাগ স্বীকার করেছেন চলচ্চিত্রের জন্য। পর্দার খলনায়িকা রীনা খানকে দর্শক এতটা বাস্তব মনে করতে থাকল তাঁর গাড়িতে ইটের টুকরা দিয়ে ঢিলও মারত মানুষ। তখনই তিনি বুঝতে পেরেছিলেন দর্শকের মনের ভেতর তিনি জায়গা করেছেন।

প্রথম ছবিতে পারিশ্রমিক পান তিন হাজার টাকার মতো। তিনি দুটি ছবির সহকারী পরিচালকও ছিলেন।

wKK1BEm.jpg


তিনি নিজের মতো করে, নিজস্ব প্যাটার্নে অভিনয় করতেন। তাঁকে পরিচালকরা মাঝে মাঝে বলতেন বলিউডের অমুক অভিনেত্রীর খল দিকটা দেখতে ফলো করতে তিনি করতেন না এবং দেখতেনও না সেটা। কারণ তাঁর বিশ্বাস ছিল ওটা দেখা মানে তাঁকে ফলো করা তিনি নিজের মতো অভিনয় করতে চান। সেটাই করেছেনও তিনি তাই দর্শক একবাক্যে বলে দেয় কোনটা রীনা খানের চরিত্র। সংসারে আগুন লাগাতে হবে, দুধে বিষ মেশাতে হয়, স্বামীকে জোর করে ফুঁসলিয়ে সংসারে প্রভাব খাটাতে বলতে হবে, ননদ জা-কে অত্যাচার করতে হবে তো রীনা খান অবধারিত। সিনেমাহল বা টিভি সেটের সামনে বসা দর্শকও তখন রীনা খানকে গালিগালাজ করে আর সেখানেই তিনি সার্থক কারণ চরিত্রটিকে ধারণ করতে পেরেছেন।

অভিনয়ে আসার ইচ্ছা তিনি ছোটবেলাতেই পুষে রেখেছিলেন। সাদাকালো 'সুজন সখি' বিউটি সিনেমাহলে দেখতে গিয়েছিলেন। ছবি দেখতে দেখতে তিনি মনে মনে বলেছিলেন কবে এমন করে তাঁর ছবি মুক্তি পাবে আর তিনি অভিনয় করবেন। কী আশ্চর্য সেই ছবির রিমেক 'রঙিন সুজন সখি'-তে তিনি সালমান শাহ-র মায়ের চরিত্র করেছেন।

অশ্লীলতার সময় তিনি টানা তিন বছর চলচ্চিত্রে কাজ করেননি। বাচসাস পুরস্কার পেলেও জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার তিনি পাননি।

QO34BfN.jpg


রীনা খান সেই আশির দশকের শুরু থেকে ২০০০ পরবর্তী ছবিতেও অভিনয় করেছেন দাপটের সাথে। শাকিব খানের প্রথম ছবি 'অনন্ত ভালোবাসা'-তেও তিনি ছিলেন। তাঁর খলনায়িকার চরিত্র সিনেমাহলের পর্দা কাঁপাত। শাবনূরের সাথে 'বউ শাশুড়ির যুদ্ধ' ছবিতে তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বিতা দর্শক ব্যাপকভাবে উপভোগ করেছে। মৌসুমীর সাথে 'বাংলার বউ, দজ্জাল শাশুড়ি' ছবি দুটিতেও দর্শক তাঁকে ব্যাপকভাবে গ্রহণ করেছে। 'দজ্জাল শাশুড়ি'-তে রীনা খানকে খুব নৃশংস দেখানো হয়েছে এবং তিনি সেটা পেরেছেনও তাঁর অভিনয়ের শক্তিতে। তাঁর কাছে অভিনয় করে তৃপ্তি পাওয়ার মতো দুটি ছবি তিনি বলেছেন 'শ্বশুরবাড়ি জিন্দাবাদ' ও 'পড়েনা চোখের পলক।'

রীনা খানের অভিনয়ের দক্ষতা বা নিজস্বতা বিচার করলে দাঁড়ায় তাঁর অসাধারণ ভয়েস, চোখের ব্যবহার, ভয় পাইয়ে দেয়ার মতো বডি ল্যাংগুয়েজ। ছবির নায়ক, নায়িকা যতই আলোচিত থাকুক তিনি নিজের গুণে দর্শকের মনোযোগ পেয়ে যেতেন।

'বাজাজ' এর বিজ্ঞাপন করতে গিয়েই আলতাফ হোসেন কাজলের সাথে পরিচয় হয়। ভালোলাগা থেকে বিয়ে হয় তাঁদের। দুই ছেলে আছে রীনা খানের।

উল্লেখযোগ্য ছবি :

সোহাগ মিলন, সবুজ সাথী, মহানায়ক, মেঘ বিজলি বাদল, সূর্যকন্যা, প্রেম যমুনা, মান সম্মান, তাসের ঘর, মায়ের দোয়া, সুদ আসল, সংসারের সুখ দুঃখ, নির্মম, বিদ্রোহী বধূ, সুখের স্বর্গ, আকর্ষণ, স্নেহ, লক্ষীর সংসার, স্নেহ, হিংসা, নিষ্ঠুর, রঙিন সুজন সখি, অপরাজিত নায়ক, শেষ রক্ষা, সন্ত্রাস, লাভ, আমার প্রতিজ্ঞা, মেহেরনেগার, শ্বশুরবাড়ি জিন্দাবাদ, বউ শাশুড়ির যুদ্ধ, বাংলার বউ, দজ্জাল শাশুড়ি, শিবা গুণ্ডা, অনন্ত ভালোবাসা, পড়েনা চোখের পলক, দাদীমা, সত্তা ইত্যাদি।

চলচ্চিত্রে অভিনয়ের পাশাপাশি তিনি কিছু নাটকেও পজেটিভ ও নেগেটিভ দুই রোলেই কাজ করেছেন। তিনি শখের বশে গানও করেছেন নিজের জন্য।

একজন রীনা খান তাঁর একক আধিপত্যপূর্ণ ক্যারিয়ার এবং ওয়ার্ড অফ মাউথ ইমেজে যুগ যুগ বেঁচে থাকবেন চলচ্চিত্রপ্রেমী দর্শকদের মনে। কিংবদন্তি এ অভিনেত্রী দেশের চলচ্চিত্রের অবধারিত একটি অধ্যায়।
 
These are the rules that are to be followed throughout the entire site. Please ensure you follow them when you post. Those who violate the rules may be punished including possibly having their account suspended.

যারা কমেন্ট করবেন, দয়া করে বানান ঠিক রাখুন। উত্তেজিত অবস্থায় দ্রুত কমেন্ট করতে গিয়ে বানান ভুল করবেন না। আমরা যারা কমেন্ট পড়তে আসি, আমাদের কমেন্ট পড়তে অনেক অসুবিধা হয়।

Users who are viewing this thread

Back
Top