What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

Videos আলাউদ্দিন আলীর অমর কিছু গান তৈরির ইতিহাস (1 Viewer)

আছেন আমার মুক্তার, আছেন আমার ব্যারিস্টার

আসলে গানের বাণী, সুর ও পরিবেশনা সুন্দর হলে আর কোনো কিছু লাগে না। এর একটা জ্বলন্ত উদাহরণ এই গান। এই গানটির কথা গাজী মাজহারুল আনোয়ার ভাইয়ের আর সুর আমার। আমজাদ হোসেনের ‘গোলাপী এখন ট্রেনে’ সিনেমায় অভিনেতা আনোয়ার হোসেন গায়েন চরিত্রে অভিনয় করেন। উনি গ্রামে-গঞ্জে-হাটে-ঘাটে গান গেয়ে বেড়ান। ওই ছবিতে আমি একটি সিকুয়েন্স বের করলাম, যেখানে ‘আছেন আমার মুক্তার আছেন আমার ব্যারিস্টার’ গানটি মোটামুটি যায়। এখন যেমন একটা গান দৃশ্যায়নের জন্য আমাদের হাল আমলের বিশেষ করে মেয়ে শিল্পীরা ২৫-৩০ লাখ টাকা খরচ করেন। তারপরও সেই গান চলে না। একবার-দুইবার দেখে তারপর ওই গান লোকজনের কাছে পুরনো হয়ে যায়। কিন্তু ‘গোলাপী এখন ট্রেনে’ সিনেমার এই গানটি যদি আরো ৫০ বছর পরে চলে, তখনো নতুন মনে হবে। কারণ এটা তো বাঙালির হৃদয়ের জিনিস। এটা নষ্ট হওয়ার নয়।

To view this content we will need your consent to set third party cookies.
For more detailed information, see our cookies page.
 
পারি না ভুলে যেতে, স্মৃতিরা মালা গেঁথে

এটা ‘সাক্ষী’ সিনেমার গান। এই গানটি করার সময় শাহনাজ রহমতউল্লাহর গলার অবস্থা বেশ খারাপ ছিল। তখন তো আর ডিজিটালি থামিয়ে থামিয়ে রেকর্ডের সুযোগ ছিল না, যে পরে এডিট করে ঠিক করা যাবে। পরে শাহনাজ গানটি সাত-আট বার গেয়েছে। তারপর গানটা কেটে কেটে জোড়া দিয়ে দিয়ে গানটি ‘ওকে’ করা হয়। তারপরও তো গানটি আজ ইতিহাস।

To view this content we will need your consent to set third party cookies.
For more detailed information, see our cookies page.
 
কেউ কোনো দিন আমারে তো কথা দিল না

এই গানের একটি মজার তথ্য আছে। এটাও ‘গোলাপী এখন ট্রেনে’ সিনেমার গান। গেয়েছে সাবিনা ইয়াসমিন। আসলে এই গান প্রথমে লেখার আগে আমজাদ হোসেন ভাই ছবির স্ক্রিপ্টটা লিখেন। যারা এই সিনেমা দেখেছে তারা জানে পুরো সিনেমায় নায়ক ফারুক এক সংলাপ বারবার বলত! ‘একটা কিছু কও গোলাপী, একটা কিছু কও’। মানে নায়ককে কেউ কোনো দিন কোনো কথাই দিল না। তো ওই সংলাপ থেকেই মূলত এই বিখ্যাত গানটি লিখেন আমজাদ ভাই। পরে এই গানটি সাবিনা ইয়সমিন ও হাদী ভাই করেন।

To view this content we will need your consent to set third party cookies.
For more detailed information, see our cookies page.
 
জন্ম থেকে জ্বলছি মাগো

এই গানটি হাদী ভাই এবং সামিনা চৌধুরী দুজনই আলাদাভাবে গেয়েছিল। ১৯৮১ সাল হবে। সামিনা তখন বাচ্চা মেয়ে, ছোটদের টেলিভিশন অনুষ্ঠানে গান করে। সেটা আমারই অনুষ্ঠান ছিল। ক্লাস সেভেন-এইটে পড়তো মনে হয়। কেন জানি আমার মনে হয়েছে ওর গলাটা সুন্দর আছে। ও পারবে। আমি তখন ‘জন্ম থেকে জ্বলছি’ সিনেমার কাজ করছিলাম। তো আমি একদিন আমজাদ ভাইকে বললাম, ‘সংগীতশিল্পী মাহমুদুন্নবীর একটি মেয়ে আছে, ছোট মেয়ে, ওরে দিয়া একটা গান করাই।’ তখন আমজাদ ভাই বললেন, ‘তুমি যদি ভালো মনে করো, আমার তো কোনো আপত্তি নাই।’ তারপর ওরে দিয়া এই ‘জন্ম থেকে জ্বলছি মাগো’ গানটি গাওয়াই। একটা বাচ্চার লিপে ছিল গানটি। তারপর আরেকটা রোমান্টিক গান ছিল, ‘একবার যদি কেউ ভালোবাসতো, আমার নয়ন দুটি জলে ভাসতো’। আমি আমজাদ ভাইরে আবার বললাম, ওই গানটা যখন উৎরে গেছে ববিতার লিপে, এই গানটাও ওরে দিয়া করিয়ে ফেলি।’ পরে এই দুইটা গানই অসম্ভব জনপ্রিয়তা পায় এবং পুরস্কারও পায়। অল্প বয়সে প্লে-ব্যাক শিল্পী হিসেবে দাঁড়িয়ে যায় সামিনা। এই সিনেমার জন্য আমি শ্রেষ্ঠ সংগীত পরিচালক হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারও পাই। আমি মোট আটবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পাই। যা সুরকার হিসেবে সর্বাধিক। আমি ‘গোলাপী এখন ট্রেনে’, ‘সুন্দরি’, ‘কসাই’ এই তিন সিনেমায় পরপর তিনবার শ্রেষ্ঠ সুরকার হিসেবে হ্যাটট্রিক করি।

To view this content we will need your consent to set third party cookies.
For more detailed information, see our cookies page.
 
আমার মনের ভেতর অনেক জ্বালা আগুন হইয়া জ্বলে

মইনুল হোসেনের পরিচালনায় আমি ‘প্রেমিক’ নামের এক ছবিতে গীতিকার হিসেবেও জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পাই। কলকাতায় সিনেমার কাজ চলছে। মূলত গীতিকার গাজী মাজহারুল ভাইয়ের গানটি লেখার কথা ছিল। কিন্তু গাজী ভাই ঠিক সময়ে কলকাতা গিয়ে পৌঁছাতে না পারায়, আমাকেই গানটি লিখতে হয়। গানটি গাইবে সাবিনা। তো গানটা রেকর্ড করে ঢাকায় দ্রুত পাঠাতে হবে। কারণ গান হাতে পেলেই কক্সবাজারে শুটিং চলবে। আমার সঙ্গে ফুয়াদ নাসের বাবু সহযোগী সংগীত পরিচালক হিসেবে ছিল, এখনো আমার সঙ্গে সে কাজ করে। তখন বাবুকে বললাম, তুমি গিটারটা ধরো, আমি সুর করি। ও এতই ক্লান্ত ছিল যে গিটার ধরে ও ঘুমিয়ে পড়েছিল। পরে ঘুম থেকে উঠে গান লিখে ও সুর করে গানটি করতে স্টুডিওতে চলে যাই। কলকাতার নিউমার্কেটের লাগোয়া ‘লিটন হোটেলে’ এই কাজগুলো আমরা করতাম। আসলে ওই লিটন হোটেলে বাংলাদেশের অনেক গানের জন্ম হয়েছে।

যে ছিল দৃষ্টির সীমানায়

এই গান বিটিভিতে ঈদের আনন্দমেলা অনুষ্ঠানের জন্য তৈরি করা হয়। আর যেহেতু ঈদের অনুষ্ঠান তাই ধুমধাম গানের চাহিদা বেশি। তখন মোস্তফা কামাল সৈয়দ, টেলিভিশনের প্রডিউসার হিসেবে আছেন। আমি বললাম- কামাল ভাই, আমি কিন্তু ধুমধাম গান করব না। আমি আমার ইচ্ছামতো গান করব, দেখবেন লোকে পছন্দ করবে। তারপরে শাহনাজ রহমতউল্লাহকে দিয়ে এই গান করালাম। এরপর কিন্তু গানটি যথেষ্ট সমাদৃত হয়। গানটি লেখা ছিল মনিরুজ্জামান মনিরের।

To view this content we will need your consent to set third party cookies.
For more detailed information, see our cookies page.
 
ভালোবাসা যত বড় জীবন তত বড় নয়

আমি ৯৩-৯৪ সালের দিকে ‘এই চরম আঘাত’ নামের একটি ছবির সংগীত করতে মুম্বাই যাই। মুম্বাইতে যাওয়ার সময় গানটির গীতিকার রফিকুজ্জামান আর আমি এই গানগুলো ঢাকা থেকে তৈরি করে নিয়ে যাই। আর ওই সময় মিতালী মুখার্জি মুম্বাই ছিলেন। আর গেলেই ওর সঙ্গে আমরা যোগাযোগ করতাম। কাকে কোন গানটা দিলে ভালো হয়, সেটা ও আমাদের সাথে শেয়ার করতো। মুম্বাইতে যাওয়ার পর এই গান আমরা মিতালী মুখার্জি আর কুমার শানুকে দিয়ে গাওয়াই। গানটির পেছনে সবচেয়ে মজার একটি গল্প হলো, এখনকার সুরকারদের এই সুযোগ পাওয়াটা খুবই ভাগ্যের ব্যাপার, যা এই গানে আমি করতে পেরেছিলাম। এই গানটির জন্য সানাই ছিল, বাঁশি ছিল, স্যাক্সোফোন ছিল, চ্যালো ছিল দুইটা, প্রায় ৩০টি ভায়োলিন, ২৪ পিস রিদম প্লেয়ার ওই হলরুম ভর্তি ছিল। তাদের সঙ্গে নিয়ে গানটি সরাসরি রেকর্ড করা হয়। এর মিউজিক শুনলেই তা বোঝা যায়। এরপর তারা দুজন দুই-তিন টেকেই এই গান গেয়ে ফেলে। পরে তো গানটি সুপার ডুপার হিট হয়ে যায়। এটাই কুমার শানুর সঙ্গে আমার প্রথম কাজ। এর পরে তাঁর সাথে অনেক কাজ করেছি।

To view this content we will need your consent to set third party cookies.
For more detailed information, see our cookies page.
 
শত জনমের স্বপ্ন তুমি আমার জীবনে এলে

শরৎচন্দ্রের লেখা ‘রাজলক্ষী শ্রীকান্ত’ সিনেমার গান এটি। ১৯৮৭ সালের ছবি। চিত্রনায়ক বুলবুল সাহেব আমাকে গীতিকার ড. আবু হেনা মোস্তফা কামালকে নিয়ে কাজ করার অনুরোধ করেন। তিনি আমাদের নজরুলগীতি শিল্পী সুজিত মোস্তফার বাবা। প্রথম দিন ওনার সঙ্গে বসলাম। স্টুডিওর কার্পেটে মাথায় হেলান দিয়ে অনেকক্ষণ ধরে ভাবলেন। উনি ভাবছেন আর আমি সুর গুনগুন করছি। অনেক সময় পার হওয়ার পর উনি বললেন, ‘না আজকে আর না, আজ হবে না।’ খুব চুজি এবং মুডি মানুষ ছিলেন তিনি। মন মতো না হলে লিখতেন না। পরের দিন এসে শুধু ‘শত জনমের স্বপ্ন, তুমি আমার জীবনে এলে’ এইটুকু পর্যন্ত লিখে আমাকে দিলেন এবং সুর করতে বললেন। আমি সুর করলাম। পরে ওনার নিজের লেখা যতটা না পছন্দ করলেন, তার চেয়ে আমার সুরটা পছন্দ করলেন তিনি। দুজনের মধ্যে একটা মেলবন্ধন তৈরি হলো। পরে এই গান পুরো লিখলেন এবং একটি কালজয়ী গানের সৃষ্টি হলো। ‘শত জনমের স্বপ্ন তুমি আমার জীবনে এলে/কত সাধনায় এমন ভাগ্য মিলে।’

To view this content we will need your consent to set third party cookies.
For more detailed information, see our cookies page.
 

Users who are viewing this thread

Back
Top