What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

Bergamo

Forum God
Elite Leader
Joined
Mar 2, 2018
Threads
9,649
Messages
117,051
Credits
1,241,096
Glasses sunglasses
Berry Tart
Statue Of Liberty
Profile Music
Sandwich
kIemtLg.jpg


হিলারি ক্লিনটনের ফেসবুক পোস্টের পর অবশেষে নড়চড়ে বসার সময় হয়েছে। সময় এখন মার্কিন নির্বাচনের। জো বাইডেন ডেমোক্রেটিক প্রার্থী হিসেবে অনেকটাই চূড়ান্ত। আর রিপাবলিকানদের হয়ে আছেন বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সময়ের হিসেবে আর একশ দিনও নেই বিশ্বের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এই নির্বাচনের। অন্য সব নির্বাচন দেশীয় এবং আঞ্চলিক নীতিতে ভূমিকা রাখলেও মার্কিন নির্বাচন গোটা বিশ্বেই বড় প্রভাব রাখে। নভেম্বরে অনুষ্ঠিতব্য এই নির্বাচন ঘিরে এখনই শুরু হয়েছে নানা হিসেব নিকেশ। তবে সব হিসেব নিকেশের আগে দেখা দরকার পৃথিবীর সবচেয়ে জটিল নির্বাচনের পদ্ধতি নিয়ে।

প্রতীকের ইতিহাস

যুক্তরাষ্ট্রের দুই প্রধান দল, ডেমোক্রেটিক এবং রিপাবলিকান দল। ডেমোক্রেটিক দলের নির্বাচনী প্রতীক গাধা আর রিপাবলিকান দলের নির্বাচনী প্রতীক হাতি। শতশত বছর ধরে চলমান এই প্রতীকের আড়ালের গল্পটাও বেশ মজার।

আঠারোশ শতকের দিকে যুক্তরাষ্ট্রে আলোচনা বা সমালোচনায় আলোচ্য বিষয় ছিলো রাজনৈতিক কার্টুন। কার্টুনের মাধ্যমে ইতিবাচক কিংবা নেতিবাচক দুই ধরণের মনোভাবই প্রকাশ করতো মার্কিন নাগরিকরা। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, গাধা যেমন হতে পারে কষ্ট সহিষ্ণুতার প্রতীক, আবার হাস্যরস বা বোকার উদাহরণ হিসেবেও টেনে আনা হয় গাধার নামটাই। অন্যদিকে হাতিকে মহানুভবতার প্রতীক ধরা হয়, প্রেক্ষাপট বদলে আবার সেই হাতিই হয়ে যায় বোকা বা খারাপ কিছু।

যুক্তরাষ্ট্রের সপ্তম প্রেসিডেন্ট ছিলেন এ্যান্ড্রু জ্যাকসন। সেই সময় তার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ ব্যাঙ্গ করে তার নাম দেয় গাধা। কিন্তু প্রেসিডেন্ট জ্যাকসনের সেটিই পছন্দ হয়। তাৎক্ষনিক ডেমোক্রেটিক দলের নির্বাচনী প্রতীক বদলে গাধাকে বেছে নেন। আবার সে সময়ই রিপাবলিকান দলকে উদ্দ্যেশ করে একটি কার্টুন আঁকা হয়। যেখানে রিপাবলিকানদের হাতির সাথে তুলনা করা হয়। তার পরপরই রিপাবলিকান দল তাদের নির্বাচন প্রতীক হিসাবে হাতিকে বেছে নেয়। সেই থেকে আজ অবধি দুদলের নির্বাচনী প্রতীক বদল হয়নি। এখনো এই প্রতীকেই দুই দলের ক্ষমতার জন্য অভিযান।

কার নীতি কেমন?

আধুনিক উদারনীতির আদর্শে বিশ্বাসী ডেমোক্র্যাট পার্টি। তাদের মতাদর্শে রাষ্ট্রীয় হস্তক্ষেপ, সার্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা, সাশ্রয়ী মূল্যের শিক্ষা, সামাজিক কর্মসূচী, পরিবেশ সংরক্ষণ নীতি এবং শ্রমিক ইউনিয়নে বিশ্বাস রাখা উচিত। এই কারণে বিশ্বব্যাপী ডেমোক্র্যাটদের একটা আলাদা গ্রহণযোগ্যতা লক্ষ্য করা যায়।

অন্যদিকে রিপাবলিকান পার্টি আমেরিকান রক্ষণশীলতার প্রচারণা করে থাকে। যেমন সীমিত সরকারি নিয়ন্ত্রণ, কম কর হার, মুক্তবাজার পুঁজিবাদ, বন্দুকের অধিকার, নিয়ন্ত্রণ মুক্ত শ্রমিক ইউনিয়ন এবং অভিবাসন ও গর্ভপাতের মতো ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধতায় তাদের আগ্রহ সর্বদা লক্ষ করা যায়। সারা বিশ্বে মার্কিনীদের সামরিক আগ্রাসনের বেশির ভাগই রিপাবলিকানদের মাধ্যমেই প্রসারিত হয়।

প্রাইমারিস

যেহেতু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কেবল দুটি দলই মূল প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী নির্ধারণ করে, তাই নির্বাচনের আগে বেশ বড় একটা সময় ব্যয় হয় মূল প্রার্থী নির্ধারণ করতে। চলতি নির্বাচনে আপাত দৃষ্টিতে রিপাবলিকানদের মাঝে প্রাইমারিস নেই, যেহেতু বর্তমান প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আরো একবার প্রার্থী হচ্ছেন। অন্যদিকে ডেমোক্র্যাটদের প্রাইমারিস নির্বাচনে বার্নি স্যান্ডার্স এবং জো বাইডেনের মাঝে চূড়ান্ত লড়াই চলছে। তবে সবশেষে জো বাইডেনইই নির্বাচিত হবেন বলে অনেকটা নিশ্চিত এই পর্যায়ে।

এখানে বলে রাখা দরকার, যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানে এই 'প্রাইমারি' সম্পর্কে উল্লেখ নেই। বরং পুরো ব্যাপারটি নির্ধারিত হয় দল এবং রাজ্য আইন অনুযায়ী। যেভাবে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ঠিক সেভাবেই এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। তবে এক্ষেত্রে স্টেট বা রাজ্য সরকার প্রাইমারি নির্বাচনের আয়োজন করে থাকে। রাজ্য আইনে নির্ধারিত হয় এই প্রাইমারি রুদ্ধদ্বার কক্ষে হবে নাকি উন্মুক্ত হবে। রুদ্ধদ্বার ভোটিং এর ক্ষেত্রে কেবলমাত্র তালিকাভুক্ত ভোটাররাই ভোট দিতে সক্ষম হবেন। আর যদি উন্মুক্ত হয়। তবে সেখানে যেকোনো ভোটার ভোট দিতে পারবেন।

একজন প্রার্থী যদি প্রাইমারিতে বিজয়ী হন, তখন স্টেটের সব প্রতিনিধি বা আংশিক প্রতিনিধিরা দলের চূড়ান্ত সম্মেলনে তার পক্ষে ভোট দেবেন। পরে দলের সম্মেলনের মাধ্যমে তিনি প্রেসিডেন্ট প্রার্থী বলে ঘোষিত হবেন।

ইলেকটরাল কলেজ কি?

মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদ বা হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভে রাজ্যের প্রেরিত প্রত্যেক প্রতিনিধির বিপরীতে একজন করে ইলেকটর মনোনীত হন। মূলত এরাই প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত করেন মার্কিনীদের জন্য। ইলেকটরাল ভোটে ২৭০ ভোট পেলেই যে কেউ প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হবেন। এক্ষেত্রে জনগণের ভোট যদি আরেকজনের পক্ষেও যায়, সেক্ষেত্রে ফলাফল পরিবর্তন হয় না। যেমন, জর্জ বুশ জুনিয়র এবং আল গোরের ২০০৪ সালের নির্বাচনে আল গোর এবং ২০১৬ সালে হিলারি ক্লিনটন জনগণের ভোট বেশি পেলেও ইলেকটরাল কলেজ ভোটে পিছিয়ে থাকায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন নি।

মার্কিন কংগ্রেসে কোনো রাজ্যে থাকা প্রতিনিধির অনুপাতে নির্ধারিত হয় সেই রাজ্যে ঠিক কত হবে ইলেকটরের সংখ্যা। এ ছাড়া প্রত্যেক সিনেট সদস্যের বিপরীতেও একজন করে ইলেকটর মনোনীত হন। এসবের বাইরেও মার্কিন সিনেটে প্রত্যেক রাজ্যে দুটি সিনেট সদস্য পদ সংরক্ষিত থাকে। এক্ষেত্রে জনসংখ্যা ও আয়তন বিবেচনায় নেয়া হয় না।

মার্কিন সংবিধানের ২৩তম সংশোধনী ধারায় অনুযায়ী, "যুক্তরাষ্ট্রের ৫০টি রাজ্য ছাড়াও ডিস্ট্রিক্ট অব কলম্বিয়ার জন্য অতিরিক্তি ৩ জন ইলেকটর নিয়োগ করা যাবে।" এই পদ্ধতির স্বার্থেই নির্বাচনের সময় ডিস্ট্রিক্ট অব কলম্বিয়াকেও আলাদা রাজ্য হিসেবে বিবেচনা করা হয়। প্রার্থীরা তাদের নিজেদের বা তার দলের পছন্দ অনুযায়ী ইলেকটরের মনোনয়ন দিতে পারবেন। তবে রাজনৈতিক দলগুলোই মূলত ইলেকটর মনোনয়ন দিয়ে থাকলেও একজন ব্যক্তির ইলেকটর হিসেবে মনোনয়ন লাভের ক্ষেত্রে কিছু ন্যূনতম যোগ্যতা নিয়ে প্রত্যেক রাজ্যই আলাদা শর্ত জুড়ে দেয়।

ভোটের দিন অবশ্য ব্যালট পেপারে প্রেসিডেন্ট ও ভাইস প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থীর নাম লেখা থাকে। আর একেক রাজ্যের নিয়ম অনুসারে নির্বাচক মণ্ডলীর নাম উল্লেখ্য থাকতেও পারে নাও পারে। জনগণ মূলত প্রেসিডেন্টের নামে ভোট দিয়ে সেই প্রেসিডেন্ট প্রার্থীর মনোনীত ইলেকটরালকেই ক্ষমতা হস্তান্তর করেন। পরবর্তীতে সেই নির্বাচকমণ্ডলী ভোট দিয়ে নির্বাচন করেন জনগণের পছন্দের প্রেসিডেন্ট প্রার্থীকে। তাহলে প্রশ্ন আসতে পারে, পাবলিক ভোট বেশি হলেও কেন আল গোর নির্বাচনে জয়ী হননি? বা সব জরিপ পক্ষে থাকবার পরেও কেন হিলারিকে ছাপিয়ে গেল বার ডোনাল্ড ট্রাম্প নির্বাচিত হলেন?

যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল আইন অনুসারে নির্বাচকমণ্ডলী জনগণের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে বাধ্য নন। অর্থাৎ নির্বাচক মণ্ডলী চাইলেও দলের বাইরে গিয়ে বিরোধী দলের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারবেন। এখানেও একটি ছোট্ট কিন্তু আছে। যুক্তরাষ্ট্রের ৫০টি রাজ্যের মধ্যে ২৪টি রাজ্যের আইনে এই ধরণের "বিশ্বাসঘাতকতা" অপরাধ হিসাবে গণ্য হয়। সাধারণত কোন নির্বাচককে নিজ দলীয় প্রার্থীর বাইরে অন্য কাউকে ভোট দিতে দেখা যায় না। তবু দেশটা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বলেই কোন সম্ভাবনা একেবারে উড়িয়ে দেয়া চলে না।

কার দখলে কোন রাজ্য?

মার্কিন নির্বাচনে বলতে গেলে অল্প কিছু রাজ্যের উপরেই পুরো ফলাফল নির্ভর করে। আগেই জেনে নেওয়া দরকার, যেসব রাজ্যের ইতিহাস রিপাবলিকানদের পক্ষে তাদের বলা হয় রেড স্টেট বা লাল রাজ্য। আর ডেমোক্র্যাটদের পক্ষে থাকা রাজ্যকে বলা হয় ব্লু স্টেট বা নীল রাজ্য।

আইডাহো, আলাস্কা এবং দক্ষিণের অনেক রাজ্যকে বলা হয় 'রেড স্টেট'। এসব রাজ্যে রিপাবলিকান প্রার্থীর বিজয় অনেকটা সুনিশ্চিত। অন্যদিকে ডেমোক্র্যাট প্রাধান্য পাওয়া স্টেটগুলোর মাঝে অন্যতম হলো ক্যালিফোর্নিয়া, ইলিনয় এবং উত্তরপূর্ব এলাকার স্টেটগুলোকে।

আর ভাগ্য নির্ধারণী যেসব রাজ্যে প্রার্থীদের ভোট এদিকে বা ওদিকে যেতে পারে, তাকে বলে সুইং স্টেট বা দোদুল্যমান স্টেট। ওহাইয়ো বা ফ্লোরিডার মতো দোদুল্যমান রাজ্যগুলোতেই মূলত প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়।

২০২০ সালের এরকম দোদুল্যমান স্টেট হিসাবে বিবেচনা করা হচ্ছে অ্যারিজোনা, পেনসিলভেনিয়া এবং উইসকনসিন স্টেটকে। সাধারণত যেসব রাজ্যে বিজয় অর্জন একেবারে দূরহ সেসব রাজ্যে ইলেকটরাল পাঠানোইই হয়না।

সবচেয়ে মজার কথা হলো, মার্কিন নির্বাচনে ১৯৬৪ সাল থেকেই ওহাইয়ো সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ রাজ্য বলে বিবেচিত। ওহাইতো যারা জিতেছেন তাদেরকেই হোয়াইট হাউজে বসতে দেখা গিয়েছে গত ৫৬ বছর ধরে। এবারেও নিশ্চয় সেখানেই চোখ থাকবে সবার।
 

Users who are viewing this thread

Back
Top