What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

Other সিনেমার খারাপ মানুষ যখন করুণা চুরি করে (1 Viewer)

Bergamo

Forum God
Elite Leader
Joined
Mar 2, 2018
Threads
9,649
Messages
117,051
Credits
1,241,096
Glasses sunglasses
Berry Tart
Statue Of Liberty
Profile Music
Sandwich
l2W8SJL.jpg


হয়তো প্রত্যেক ভিলেনই একেকজন অ্যান্টি-হিরো। শুধু তার ইতিহাসটা জানা লাগে। খুবই একরোখা কথা, পুরোপুরি সত্য হবে না বলেই জানি। কিন্তু প্রত্যেক ঘটনার অন্যপিঠও থাকে!

১৯৮০ সালের একটা ছবি দেখতে দেখতে এ কথা মনে হলো। ছবির নাম গাংচিল, সিনেমায় যেটা গভীর সমুদ্রে মাছ ধরার জাহাজের নামও। পরিচালক রুহুল আমিন। নায়ক-নায়িকা বুলবুল আহমেদ ও অঞ্জনা। তবে যে কেউ মানবেন এই ছবির মূল আকর্ষণ আহমেদ শরীফ। এত দারুণভাবে রূপায়িত ভিলেন বা অ্যান্টি-হিরো বাংলা সিনেমায় আমি দেখি নাই। মেনে নিচ্ছি, অভিজ্ঞতা কম! কিন্তু সচরাচর যে অন্তসারশূন্য নাটকীয়তা থাকে- এ চরিত্রে তা নাই।

এটাও আমার জানা নেই— এ বিষয়ে এতো গল্প আকর্ষণীয় গল্প আছে কি-না বাংলা সিনেমায়। ওই যে, গল্পটা একটা মাছ ধরা জাহাজ নিয়ে। এ রকম জাহাজ বাংলাদেশে আছে কিনা সেটাও জানি না। ১৯৯০ এর দশকে পোকামাকড়ের ঘরবসতির ক্যারেক্টারগুলো মৎস্যজীবী ছিল, গভীর সমুদ্রে মাছ ধরতে যেতো ট্রলার নিয়ে। বাট, ঘটনা মূলত ডাঙা কেন্দ্রিক। ওই ছবিতে মেবি ভিলেন ছিলেন আলমগীর, ভালোই অভিনয় করেছিলেন।

যাই হোক, শুরুতে মনে হয় যেন জাহাজের ক্যাপ্টেনের নিষ্ঠুরতা নিয়েই 'গাংচিল'। শয়তান আহমেদ শরীফই সর্বেসর্বা। আর ছবির প্রয়োজনে নায়ক-নায়িকা থাকতে হয়- সেরকমই মনে হচ্ছিল। না, এরা আসলে পার্শ্বচরিত্র। খেয়াল করে দেখুন এ সিনেমার পোস্টারের কেন্দ্রে কিন্তু আহমেদ শরীফই।

বিশেষ করে বাংলা ছবিতে সাইকোপ্যাথ ধরনের ভিলেন খুব কম দেখা যায়। যারা থাকে- তারা বেশ চড়া দাগে সংলাপ বলে, প্রায়শ নিজেদের বৈচিত্র দিকগুলো লুকাতে ব্যস্ত যেন। করুণা জাগায় না। 'গাংচিল' নিসন্দেহে ব্যতিক্রম। এ ক্ষেত্রে সচরাচর আহমেদ শরীফকে যে ধরনের ভিলেনি ক্যারিকেচারে দেখা যায়— তার সঙ্গে মিলিয়ে পাঠ নিতে হয়। এখানে মতিন রহমানে অন্ধবিশ্বাস সিনেমার মতো রাজ্জাকের মতো নায়ককে নিলে চলতো না। খারাপ হওয়া সত্ত্বেও যে যথেষ্ট নায়কই থাকতো। যেমন ভিলেন থেকে নায়ক হওয়ার পর জসিম আর ভিলেন নাই!

wC9anjd.jpg


এ ছবি দেখতে দেখতে যথেষ্ট কারণ ছাড়াই ছোটবেলায় পড়া ভয়ঙ্কর জলদস্যুগুলোর কথা মনে পড়ছিল। ট্রেজার অ্যাইল্যান্ডের জন লং সিলভার বা ব্ল্যাক বিয়ার্ড। যদিও আহমেদ শরীফ কোনো অর্থে জলদস্যু নয়। তবে একটা দৃশ্য আছে এই রকম। জাহাজ থেকে পালিয়ে যায় বুলবুল আহমেদ ও অঞ্জনা। নৌকায় করে আশ্রয় নেয় নির্জন এক দ্বীপে। পরে তারা খেয়াল করে 'গাংচিল' উপকূলে ফিরে এসেছে। আক্রমণের অপেক্ষায় থাকতে থাকতে বিরক্ত হয়ে যায়। তখন জাহাজে গিয়ে দেখে কেউ নেই। জাহাজ নষ্ট করে আহমেদ শরীফ আর বুড়ো এক কর্মচারিকে (তাকে নিয়েও একটা কাহিনি আছে) রেখে সবাই পালিয়ে গেছে। এই রকম ব্যাপার ট্রেজার আইল্যান্ডে আছে, খানিকটা মিউনি অব বাউন্টিতে (সেখানে নিষ্ঠুর ক্যাপ্টেনকে নৌকায় সঙ্গীসহ ভাসিয়ে দেয়)। জাস্ট এই। কিন্তু ভিলেন ও অ্যান্টি-হিরো হিসেবে পার্থক্য করার জন্য তুলনাগুলো হয়তো মাথায় আসে। তখনই আহমেদ শরীফ বুলবুল আহমেদের উপস্থিতি টের হয়ে যে কথাগুলো বলে, তখন নায়ক (দর্শকই তো নায়ক) হিসেবে আপনাকে তুচ্ছ মনে হবে। তাকে এতক্ষণ যতটুকু ভিলেন মনে হয়, তাও থাকে না। বরং নিয়তি ভিন্ন ভিন্ন মানুষরে কীভাবে একটা ছকের মধ্যে সাজায় সেটা উঠে আসে। … শুধু গল্পটা জানা চাই।

এরপর নানান ব্যাপার ঘটে। বুলবুল আহমেদ জাহাজ ঠিক করার চেষ্টা করে। আহমদ শরীফ এসে সব নষ্ট করে দিতে চায়, জাহাজে আগুন ধরাতে চায়। এটা ভিলেনসুলভ নয়, বরং জীবনের কাছে পরাজিত মানুষের কাজ- যা পরে আহমেদ শরীফ বলে। এত গল্পের পর- ধর্ষণ বা হাসতে হাসতে খুন করতে যার জুড়ি নেই সেই আহমেদ শরীফের করুণ মৃত্যু আপনাকে কষ্ট দেবে। কষ্ট দেবে এই কারণে যে আমরা বঞ্চনার গল্পগুলো শুনেছি। সেখানে হয়তো ভিলেনে একেকজন অ্যান্টি-হিরো।

এর জন্য আমরা একটা ব্যাকস্টোরি দেখি। যেখানে দেখা যায় বুলবুল, শরীফ ও অঞ্জনা ছোটবেলায় এমন একটা চক্রে বন্দি হয়ে যায়, যেখানে তাদের মা-বাবারাও বন্দি। মানে সোসাইটি যখন কোনো কিছুকে ভুল জেনেও প্রথা আকারে গ্রহণ করে নেয়- এটা আসলে অপরাধই হয়ে উঠে। এ জটিলতায় ইউনিক গল্প অঞ্জনার বাবা গোলাম মুস্তাফা ও শরীফের মা আনোয়ারার যে সম্পর্ক। আশ্রিতা-ধনী পরিবারের ছেলের সঙ্গে প্রেম হলেও বিয়ে সম্ভব নয়। ঘটনা যখন পরের প্রজন্মের আসে তখন ট্র্যাজেডি অন্যমাত্রা নেয়।

J3BI7qy.jpg


ছবির শুরুতে অন্য একটা ঘটনার সূত্র ধরে প্রতিশোধের নেশায় বুলবুলকে আটকে রেখে জাহাজ নিয়ে সমুদ্রে রওনা হয় আহমদ শরীফ। সেখানে হাজির হয় অঞ্জনা। যাকে কি-না না জেনেই ধর্ষণ করতে চায় আহমদ শরীফ। এবং এ নিয়ে পরে তার কোনো অনুশোচনা দেখা যায় না। বরং জীবন তার কাছ থেকে সব কেড়ে নিয়েছে- ফলে পৃথিবীকে কিছু দেওয়ার নাই তার। বান্ধবীর কাছেও সৎ থাকার কিছু নাই। করুণা পাওয়ারও দরকার নেই, দেওয়ারও নেই। প্রতীকি অর্থে এখানে একটা জিনিস দেখানো হয়- বড়শিতে আটকানো হাঙরকে জলে খাবি খাওয়ানো। মূলত ক্ষমতা হাতে থাকলে আমরাও এই করি। ব্যাকগ্রাউন্ডে কিন্তু একটা প্রেমের গানই বাজে।

এ ছবির মজার আরেকটা দিক আছে ক্যারেক্টারের দিক থেকে। বুলবুল আহমেদকে আমরা আলমগীর কবিরের সীমানা পেরিয়েতে নির্জন দ্বীপে আটকা পড়তে দেখি, এখানেও। আবার রাজ্জাক পরিচালিত অভিযান সিনেমায় নদী পথের এক জলযানে হঠাৎ হাজির হয় অঞ্জনা। পুরো ঘটনা ওই জাহাজ ঘিরে যেখানে অঞ্জনা ও রাজ্জাকের একটা অতীত থাকে। এ ছাড়া আর কোনো মিল নাই অবশ্যই। কিন্তু এটা বলা যে, একই প্রেক্ষাপটে কত কত গল্প থাকে। তাই চরিত্রগুলো নানানভাবে সারভাইব করে, ক্লিশে থাকে না আর।

অবশ্য নদী ও জেলে কেন্দ্রিক জাগো হুয়া সাভেরা, তিতাস একটি নদীর নাম বা পদ্মা নদীর মাঝির মতো ছবিকে টানছি না। বরং 'গাংচিল' এমন একটা হিস্ট্রির মধ্যে তৈরি যেখানে আমরা বাংলা সিনেমাকে একঘেয়ে কাহিনি, প্রায়শ বস্তাপচা বলেই অভিহিত করি- এটা ওই ধারারই বাণিজ্যিক ছবি। শুধু গল্প অনুযায়ী নিজেকে প্রকাশ করে। সে দিক থেকে বলা যায়, আমরা খুঁজে দেখি না- তাই পাইও না। প্রথাগত সিনেমার মধ্যেও আলাদা গল্প থাকে। এ সিনেমা হয়তো শেষ পর্যন্ত আহামরি কিছু ঠেকবে না একালের দর্শকের কাছে, সেটা স্বীকার করে বলতে হয়- বাংলা সিনেমার যে সরল হিস্ট্রি আর লিখি সেখানে এমন সিনেমা অসম্ভব। মানে বাংলা সিনেমা নিয়ে বোঝাবুঝির মধ্যে ঝামেলা আছে।
 
These are the rules that are to be followed throughout the entire site. Please ensure you follow them when you post. Those who violate the rules may be punished including possibly having their account suspended.

যারা কমেন্ট করবেন, দয়া করে বানান ঠিক রাখুন। উত্তেজিত অবস্থায় দ্রুত কমেন্ট করতে গিয়ে বানান ভুল করবেন না। আমরা যারা কমেন্ট পড়তে আসি, আমাদের কমেন্ট পড়তে অনেক অসুবিধা হয়।

Users who are viewing this thread

Back
Top