What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

ভগ্ন স্বাস্থ্যের স্বাস্থ্যখাত (1 Viewer)

Status
Not open for further replies.

Bergamo

Forum God
Elite Leader
Joined
Mar 2, 2018
Threads
9,649
Messages
117,051
Credits
1,241,096
Glasses sunglasses
Berry Tart
Statue Of Liberty
Profile Music
Sandwich
W5foxya.jpg


একের পর এক নিত্য নতুন বিতর্কে আর অদক্ষতার প্রশ্নে বিপন্ন দেশের স্বাস্থ্যখাত। রিজেন্ট হাসপাতালের শাহেদ করিমের কেলেঙ্কারি, আরিফ-সাবরিনা দম্পতির জেকেজি গ্রুপ, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালকের পদত্যাগ, সাবেক শীর্ষ এক মন্ত্রী কন্যার এয়ারপোর্ট থেকে জাল করোনা সনদে ফেরত আসা, বছর পাঁচেক মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় প্রশ্ন ফাঁস, ঢাকা মেডিকেলে ডাক্তারদের খাবারের অস্বাভাবিক বিল, সবশেষে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের কোভিড শনাক্ত কিট গবেষণায় বঙ্গবন্ধু মেডিকেলের অতিরিক্ত বিল দেখানো… সব মিলিয়ে স্বাস্থ্যখাত নিজেই আছে বড় বিপাকের মাঝে।

শীর্ষ পর্যায়ে বেশ কিছু রদবদল হলেও, স্বাস্থ্যখাতে কবে সুদিন ফিরবে তা বলা মুশকিল। তবে বিগত দুই মাসের মাঝেই স্বাস্থ্য সেবার যে ভঙ্গুর দশা ফুটে উঠেছে তা নিয়ে সত্যিই শঙ্কায় আছে বাংলাদেশ।

সাহেদ করিম এবং রিজেন্ট হাসপাতাল

সাহেদ করিম পুরো বিপর্যয়ের সূচনা বলা চলে। রিজেন্ট হাসপাতালে ভূতুড়ে বিল, করোনা শনাক্তের পরীক্ষায় জাল সনদপত্র দেয়া এবং ইতালি থেকে বাংলাদেশের নাগরিকদের ফিরে আসা- এসব নিয়ে তদন্ত করতে গিয়েই ধরা পড়ে বড় রকমের গলদ। লাইসেন্স না থাকার পরও সাহেদ করিমের রিজেন্টের সাথে চুক্তি করে স্বাস্থ্য অধিদফতর। সেই চুক্তির সময় উপস্থিত ছিলেন স্বয়ং মাননীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী। কিন্তু পরবর্তীতে আরো পিলে চমকানো কথা বলেছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। তার দাবি এমন অনেক চুক্তিইই হয়, যেসব মন্ত্রীরা পড়ে দেখেন না। মাননীয় মন্ত্রীর এই কথা সত্য হলে, আরো কতশত সাহেদ করিম যে লুকিয়ে আছেন তা আসলেই ভাবিয়ে তোলার মতো।

সাহেদ করিমের বিরুদ্ধে মূল অভিযোগ প্রতারণা হলেও স্বাস্থ্যসেবা সংক্রান্ত অভিযোগ কম নেই। এর মাঝে আছে করোনার ভুয়া সনদপত্র প্রদান, অতিরিক্ত বিল দেখানো। এমনকি তার বিরুদ্ধে অভিযোগের জন্য আলাদাভাবে হটলাইন নাম্বার চালু করতে বাধ্য হয়েছিল র‍্যাব। প্রথম চব্বিশ ঘন্টায় তাতে জমা পড়েছিল ৯২ টি অভিযোগ। এমনকি সাব কন্ট্রাক্টে নিম্ন মানের গার্মেন্টস থেকে ৫০ হাজার পিপিই, ১ লাখ মাস্ক ও ২০ হাজার বডি ক্যারিয়ার সরবরাহ করার অভিযোগও এসেছে সাহেদের নামে।

সাবরিনা-আরিফ দম্পতি এবং জেকেজি

করোনা ভাইরাস যেন প্রতারণার হাটবাজার খুলে দিয়েছিল সারা দেশে। জেকেজি গ্রুপ রীতিমতো দুর্নীতির উৎসবে মেতেছিল পুরোটা সময় জুড়ে। জেকেজি গ্রুপের সিইও ছিলেন আরিফ চৌধুরী আর তার স্ত্রী জাতীয় হৃদরোগ ইন্সটিটিউটের কার্ডিয়াক সার্জন ডাঃ সাবরিনা ছিলেন এর চেয়ারম্যান। ২২ জুন সর্বপ্রথম গ্রাফিক্স ডিজাইনার হারুন অর রশিদকে ভুয়া সনদপত্র তৈরির দায়ে আটক করে পুলিশ। ১৬৪ ধারার জবানবন্দির মাধ্যমে আরিফ চৌধুরীর নাম উল্লেখ করেন হারুন। ২৩ জুন অভিযুক্ত আরিফ চৌধুরী জানান, তার স্ত্রীর সম্পৃক্ততার কথা। সেই সাথে আটক অন্যান্যরাও জানান, জেকেজি গ্রুপের চেয়ারম্যান ছিলেন ডাঃ সাবরিনা। কিন্তু ডাঃ সাবরিনার দাবি, তার এবং আরিফ চৌধুরীর বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটেছে এবং তিনি আর সেই প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান পদে নেই।

করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার পর নমুনা সংগ্রহের জন্য সারাদেশে ৪৪টি বুথ স্থাপন করে জেকেজি গ্রুপ। নমুনা সংগ্রহের জন্য তারা মাঠকর্মীও নিয়োগ দিয়েছিল। তাদের হটলাইন নাম্বারে কল করলেই মাঠকর্মীরা চলে যেত রোগীর বাড়িতে। এতটুকু পর্যন্ত ঠিকই ছিল সব। এরপরেই নাটকের শুরু। দিনে প্রায় ৫০০ জনের নমুনা নিলেও আদতে কিছুই করা হতোনা। সব নমুনা ফেলে দেয়া হতো আর গুলশানের একটি ভবনে দিনরাত গ্রাফিক্স ডিজাইনাররা কাজ করতেন জাল সনদ তৈরির জন্য।

কলংকিত ভর্তি পরীক্ষা

স্বাস্থ্য অধিদফতরের প্রেস থেকে ২০১৩ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস হয়েছে। সম্প্রতি তদন্তের মাধ্যমে এমন তথ্যই জানিয়েছে সিআইডি। মূল তদন্ত শুরু হয় ২০১৭ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশ্নফাঁস ঘটনা নিয়ে। এতে আটক ৪৭ জনের মাঝে ৪৬ জনই আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দেন। গত ১৯ জুলাই আটক হওয়া এসএম সানোয়ার জানান, তিনি জড়িত ছিলেন মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসের সাথেও। সেদিনই মিরপুর থেকে আটক হন আরও তিনজন। এর মাঝে গ্রেফতার হওয়া মূল হোতা জসিম উদ্দিন ভূইয়ার কাছ থেকেই প্রশ্ন ফাঁসের মাধ্যমে আয় করা ২ কোটি ২৭ লাখ টাকা পাওয়া যায়। এছাড়া তার কাছে আরো ২ কোটি ৩০ লাখ টাকার চেকও উদ্ধার করে পুলিশ।

পুলিশের কাছে দেয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০১৩ থেকে ২০১৮ পর্যন্ত পাঁচ বছরে প্রায় ৪ হাজার শিক্ষার্থী জালিয়াতির মাধ্যমে ভর্তি হয়েছে মেডিকেলে। পুলিশের অতিরিক্ত বিশেষ সুপার কামরুল আহসান গণমাধ্যমে দেয়া তথ্যে জানান, এখন পর্যন্ত ৭৮ জনের নাম তারা জালিয়াতিতে আটককৃতদের মাধ্যমে পেয়েছেন। এদের পড়াশোনা প্রায় শেষ পর্যায়ে বলেও জানা গিয়েছে। প্রতিজনের কাছ থেকে পাঁচ থেকে সাত লাখ পর্যন্ত টাকাও নিয়েছেন তারা।

দুই মাসে বিল ২০ কোটি টাকা

স্বাস্থ্যখাতে দূর্নীতির আরেক বড় চিত্র হয়ে উঠেছিল ২০ কোটি টাকার বিল। প্রাথমিক পর্যায়ে এই বিল করা হয়েছিল শুধুমাত্র খাবারের খরচ বাবদ। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে শুরু করে সংসদে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সবার মনেই প্রশ্ন আসতে থাকে, এও কি সম্ভব? প্রাথমিক পর্যায়ে কেবল খাবারের এই বিলে সরকারের উচ্চপর্যায় পর্যন্ত ব্যাপক তোলপাড় শুরু হলে সুর বদলায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষ। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, শুধু খাওয়া নয় বরং যাতায়াত, হোটেল বিল সব মিলিয়েই দুই মাসে বিলের অংক দাঁড়ায় ২০ কোটি টাকা। স্বাস্থ্যমন্ত্রীর দেয়া তথ্য অনুযায়ী, ঢামেকের ৩ হাজার ৭০০ জনের জন্য মোট হোটেল প্রয়োজন ছিল ৫০টি। যেখানে ১ হাজার ১০০ টাকা করে রুম ভাড়া এবং দৈনিক খাবার খরচ পড়তো ৫০০ টাকা।

মহাপরিচালকের বিদায় কি সমাধান?

একের পর এক বিতর্কে অবশেষে পদত্যাগ করতে হয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবুল কালাম আজাদকে। সরকার এবং অধিদপ্তরের মাঝে ব্যাপক সমন্বয়হীনতা, রিজেন্ট এবং জেকেজি গ্রুপ বিতর্ক সহ বড় কিছু ইস্যু নিয়ে যখন কথা হচ্ছিল, তখনই তার এই পদত্যাগ। এপ্রিল মাসের শুরুর দিকে স্বাস্থ্যমন্ত্রী আক্ষেপ করে বলেন, করোনা নিয়ে বাংলাদেশে গঠিত জাতীয় কমিটির প্রধান হওয়া সত্ত্বেও অনেক কিছুই তিনি জানেন না। আবার রিজেন্ট হাসপাতাল নিয়ে প্রশ্ন উঠলে সাবেক মহাপরিচালক আবুল কালাম আজাদ বলেছিলেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের আদেশেই চুক্তি করেছিল স্বাস্থ্য অধিদফতর। এই নিয়ে মন্ত্রণালয় আর অধিদফতরের মাঝে কয়েক দফা কাদা ছোড়াছুঁড়ির পর জানা যায়, মন্ত্রণালয়ের এই "ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা" ছিলেন সাবেক একজন স্বাস্থ্য সচিব, যিনি রিজেন্টকে চুক্তিটি পাইয়ে দিতে সাহায্য করেছেন। কিন্তু দেশটি বাংলাদেশ বলে এই নিয়ে কারো কোন উচ্চ বাচ্য নেই। শাহেদ ধরা পরেছে, কিন্তু সরকারি গদিতে বসে যারা সাহেদকে সাহায্য করেছে তারা থেকে যাবে ধরা ছোঁয়ার বাইরেই।

এছাড়া মাস্ক নিয়ে দূর্নীতি, ঈদে মার্কেট এবং যানবাহন চলাচল করতে দেয়া সহ নানাবিধ কাজে সমালোচনা ছিল আগে থেকেই। সব মিলিয়ে মহাপরিচালকের পদত্যাগেই যে সব বিতর্ক থেমে যাচ্ছে এমন নয়। বরং সংকট ও বিতর্কের এই চরম মুহুর্তে আবুল কালাম আজাদের তড়িঘড়ি পদত্যাগ ছাই চাপা আগুন জ্বালিয়ে দিয়েছে নতুন করে।
 
Status
Not open for further replies.

Users who are viewing this thread

Back
Top