What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

ড্রাগ ক্যাপ্টাগন- মানুষ বশীভুত করার মেডিসিন (1 Viewer)

smsh32

Banned
Joined
Jul 4, 2018
Threads
12
Messages
108
Credits
2,246
গত সপ্তায় ইন্টারন্যাশনাল মিডিয়ায় বেশ ইন্টারেস্টিং একটা নিউজ এসেছিল - ইতালিতে বিশ্বের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় ক্যাপ্টাগনের চালান ধরা পড়েছে। এবং ১ বিলিয়ন ইউরো মূল্যের প্রায় ১৪ টন ক্যাপ্টাগনের এই চালানের পেছনে ছিল জঙ্গি সংগঠন আইএস!



নিউজটা ইন্টারেস্টিং, কারণ মধ্যপ্রাচ্যের বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে যাদের মোটামুটি আইডিয়া আছে, তাদের বুঝতে পারার কথা, এই শিরোনামে ঘাপলা আছে।



কারণ প্রথমত, আইএসের ড্রাগ চালান, যেই ড্রাগ মূলত গ্রহণ করে যোদ্ধারা, সেটা ইরাক-সিরিয়া বা ইভেন আফগানিস্তান-ইয়েমেনে না গিয়ে ইউরোপে কেন যাবে? ইউরোপে তো আইএসের কোনো ফাইটিং ফোর্স নাই! অল্প কিছু লোন ঊলফ যদি লুকিয়ে-চুরিয়ে থেকেও থাকে, তাদের কাছে এই বিশাল চালান পৌঁছবে কীভাবে?



দ্বিতীয়ত, যদি ধরে নেওয়া হয় আইএস এটা নিজেদের যোদ্ধাদের জন্য না, এমনিই ব্যবসা করার জন্য ইউরোপে বিক্রি করতে পাঠিয়েছে, তাহলেও এটা বিশ্বাসযোগ্য না। কারণ আইএসের দখলে এই মুহূর্তে এমন এলাকা নাই যে, তাদের পক্ষে এরকম ম্যাস ইন্ডাস্ট্রিয়াল স্কেলে ক্যাপ্টাগন প্রস্তুত করে সেটা ইউরোপে পাঠানো সম্ভব হবে।



তাহলে? নিউজটা কি ফেক? ওয়েল, নিউজটা ফেক না হলেও শিরোনামটা নিশ্চিতভাবেই ফেক। এবং কারণটাও খুবই ইন্টারেস্টিং। কীপ রীডিং।



কয়েক সপ্তাহ আগে আসাদ-মাখলুফ দ্বন্দ্ব নিয়ে একটা লেখা দিয়েছিলাম। যারা পড়েছেন তাদের মনে থাকার কথা, সেখানে জার্মান পত্রিকা ডের স্পিগেলের একটা ইনভেস্টিগেটিভ রিপোর্টের কথা বলেছিলাম যে, সিরিয়াতে কীভাবে বাশারের ভাই মাহের, কাজিন রামি মাখলুফ এবং হেজবুল্লাহ মিলিশিয়াদের দুইটা ইউনিট মিলে রাষ্ট্রীয় তত্ত্বাবধানেই ড্রাগ তৈরি করছে এবং সেটা বিভিন্ন দেশে সাপ্লাই দিচ্ছে।



ঐ ডের স্পিগেলেরই নতুন রিপোর্ট অনুযায়ী, গত কয়েকমাসে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পোর্টে একাধিক ড্রাগ চালান আটক হয়েছে। গ্রিসে ৫.২৫ টন, দুবাইয়ে ৫.৬ টন, মিসরে ৪ টন এবং সৌদি আরবে প্রায় ৬ টন। সবগুলোই এবারের চালানের মতো ক্যাপ্টাগন। এবং সবগুলোর উৎসই একই - সিরিয়া।



মিসরে যে চালানটা আটক হয়েছিল, সেটা ছিল একটা দুধের কোম্পানির প্যাকেটের ভেতরে, যেই কোম্পানির মালিক বাশারের কাজিন, রামি মাখলুফ। আর সৌদি আরবে যে চায়ের প্যাকেটের ভেতরে ড্রাগগুলো লুকানো ছিল, সেই চা বিশেষভাবে সিরিয়ার আলাউই সম্প্রদায়ের মধ্যে জনপ্রিয়, এবং সেগুলোর প্যাকেজিং কোম্পানিও বাশারের ভাই মাহের আল-আসাদের সাথে কানেক্টেড।



এবার ইতালিতে যে চালানটা ধরা পড়েছে, সেটা ছিল তিনটা কন্টেইনার ভর্তি বিশাল বিশাল পেপার রোলের ভেতর। এই কন্টেইনারগুলোও এসেছে সিরিয়ার লাতাকিয়া বন্দর থেকে, যে শহরটা দীর্ঘদিন ধরেই বাশারের নিয়ন্ত্রণে। আর যে পেপার রোলগুলোর ভেতরে করে ড্রাগগুলো এসেছে, সেগুলোর উৎস হচ্ছে বাশারের নিয়ন্ত্রণাধীন আরেকটা শহর আলেপ্পোর একটা পেপার মিল, যেটা মাত্র কয়েক সপ্তাহ আগে চালু হয়েছে। চালানগুলো সবগুলো একই সূত্রে গাঁথা।



তাহলে কথা হচ্ছে, পত্রিকাগুলো যে আইএসের নাম দিয়ে নিউজ করল, সেটা কীসের ভিত্তিতে? এটাই হচ্ছে ইন্টারেস্টিং ব্যাপার। যত কেউ এই নিউজটা করেছে, তাদের সবার মূল সোর্স ইতালিয়ান সরকারি প্রেস নোট। সেখান থেকেই আইএসের নাম জানানো হয়েছে।



কিন্তু নিজেদের দাবির পক্ষে ইতালিয়ানরা কোনো প্রমাণ দেয়নি। কোনো গ্রেপ্তার হওয়া আইএস-লিঙ্কড ব্যক্তি বা গ্রুপের নাম উল্লেখ করেনি। শুধু জানিয়েছে, অতীতে আইএস সদস্যরা এই ড্রাগের ব্যবহার এবং চোরাচালানের সাথে জড়িত থাকায় ড্রাগটা আইএস ড্রাগ বা জিহাদী ড্রাগ নামে পরিচিত :) অর্থাৎ জাস্ট ড্রাগটার মার্কেট নেমের কারণে তারা এর দায় আইএসের উপর চাপিয়ে দিয়েছে!



কেন তারা এই কাজটা করেছে? এটাও কম ইন্টারেস্টিং না। হতে পারে তারা জাস্ট ব্যাপারটাকে সেনসুয়ালাইজ করার জন্য, অথবা টেরোরিজমের বিরুদ্ধে বিশাল বিজয় দেখানোর জন্যই এটা করেছে। আইএসের সাথে ক্যাপ্টাগনকে জড়িয়ে এর আগেও মিডিয়া সেনসুয়ালাইজড রিপোর্ট করেছিল যে, ক্যাপ্টাগন খাইয়েই নাকি আইএস মানুষকে ব্রেইন ওয়াশ করিয়ে জঙ্গি বানিয়ে দেয়।



বাস্তবে অবশ্য ক্যাপ্টাগনের কোনো ব্রেইন ওয়াশিং পাওয়ার নাই, এটা জাস্ট নার্ভ সিস্টেমকে অ্যালার্ট রাখে, শরীরকে সতেজ রাখে, দীর্ঘক্ষণ জাগিয়ে রাখে। এবং আইএসের বাইরেও লিবিয়া-ইরাক-সিরিয়ার প্রায় সবগুলো জিহাদী/নন-জিহাদী সব ধরনের মিলিশিয়াদের কাছেই ক্যাপ্টাগনের চালান যাওয়ার রিপোর্ট আছে।



কিন্তু সেনসুয়ালাইজড রিপোর্টের বাইরে আরেকটা সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যায় না। সেটা হচ্ছে ইতালিয়ানরা বাশারকে খুশি রাখার জন্য এই কাজ করেছে। কেন? কারণ বাশার আল-আসাদের সাথে ইতালিয়ানদের বেশ ভালো ব্যবসায়িক সম্পর্ক আছে। ইতালি এখনও বাশারের নিয়ন্ত্রণাধীন সিরিয়া থেকে ফসফেট আমদানি করে।



এবং পুরো পশ্চিমা বিশ্ব যেখানে বাশারের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করে রেখেছে, অনেকে তার বিরুদ্ধে অবরোধও দিয়েছে, সেখানে ইতালি ২০১৮ সালেও গোপনে বাশারের সিক্রেট সার্ভিস চীফ আলি মামলুককে প্লেনে করে ইতালিতে উড়িয়ে নিয়ে তার সাথে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক করেছিল।



কাজেই এমনও হতে পারে, ইতালিয়ানরা তাদের বন্ধুরাষ্ট্রের ভাবমূর্তি রক্ষার জন্যই ক্যাপ্টাগন চালানের দায় আইএসের উপর চাপিয়ে দিয়েছে।
 

Users who are viewing this thread

Back
Top