What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

কোন পথে রাষ্ট্রায়ত্ব পাট শিল্পের ভবিষ্যত? (1 Viewer)

Status
Not open for further replies.

Bergamo

Forum God
Elite Leader
Joined
Mar 2, 2018
Threads
9,649
Messages
117,051
Credits
1,241,096
Glasses sunglasses
Berry Tart
Statue Of Liberty
Profile Music
Sandwich
FjvXnsB.jpg


গত ৪৮ বছরের মাঝে প্রায় ৪৪ বছর লোকসানের মুখ দেখা রাষ্ট্রায়ত্ত সব পাটকল অবশেষে বন্ধ হলো। এক সময়ের প্রধান অর্থকরী ফসল, বাংলাদেশের সোনালী আঁশ নামে খ্যাত পাটশিল্পের জন্য এটি নিঃসন্দেহে বড় এক ধাক্কা। কিন্তু গোঁড়ার দিকে তলিয়ে দেখলে বাস্তবতা অনেক বেশি নির্মম হয়ে ধরা দিবে। বিগত ৪০ বছরে এই খাতে সরকারের লোকসানের অঙ্কটা গিয়ে ঠেকেছে প্রায় ১০ হাজার ৬৭০ কোটি টাকার কাছাকাছি। বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের ভাষ্য অনুযায়ী, এইসব পাটকল বন্ধ থাকা অবস্থায় যে লোকসান হবে, তা চালু থাকা অবস্থায় ক্ষতির তুলনায় বেশ কম।

বাংলাদেশ জুট মিলস কর্পোরেশন (বিজেএমসি) এর অধীনে থাকা ২৫ টি পাটকল বন্ধ করা হলেও সরকার মূলত সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকারি-বেসরকারি অংশিদারিত্বের মাধ্যমে এই সব পাটকলকে আধুনিকায়ন করে আন্তর্জাতিক প্রতিযোগীতার বাজারে এই খাতকে আরো শক্তিশালী করার। তবে লাভক্ষতির সমীকরণ এতটা সরল নয়। বরং সরকারের এই পরিকল্পনা অন্তত সাময়িকভাবে পাট চাষি ও পাটকল শ্রমিকদের অন্ধকার ভবিষ্যতের দিকে ঠেলে দিয়েছে এ ব্যাপারে কোন সন্দেহ নেই।

সরকারী যত সিদ্ধান্ত

চলতি জুলাই মাসের শুরুতে প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে গণভবনে রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল নিয়ে অনুষ্ঠিত এক গুরুত্বপূর্ণ সভায় রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল বন্ধের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সভায় এক এক করে উঠে আসে পাটশিল্পের দুরাবস্থার চালচিত্র। বর্তমানে দেশের মোট পাট ও পাটজাত শিল্পের ৯৫ শতাংশই নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে বেসরকারী খাতের দ্বারা। সরকারী পাটকলসমূহ এই প্রতিযোগিতায় প্রতিদিনই পিছিয়ে যাচ্ছিল একটু একটু করে। বস্ত্র মন্ত্রণালয়ের দাখিলকৃত হিসেব অনুযায়ী, দেশের রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলে শ্রমিকদের এখন পর্যন্ত বাকি থাকা বেতন-বয়েকার পরিমাণ প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকা। বেতনের দাবীতে প্রায় মাসেই পাটকলের শ্রমিক কর্মচারী বিক্ষোভ করছে।

২০১৫ সালের বেতন কাঠামো নীতি অবলম্বন করে সকল স্থায়ী শ্রমিকের তালিকা নির্ধারণ করতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। রাষ্ট্রায়ত্ত ২৫ পাটকলে স্থায়িভাবে কাজ করতেন ২৪ হাজার ৮৬৬ জন শ্রমিক। এছাড়া তালিকাভুক্ত বদলি ও দৈনিক মজুরিভিত্তিক শ্রমিকের সংখ্যা প্রায় ২৬ হাজার।

শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধের ক্ষেত্রে সরকার বিভিন্ন ধাপে ধাপে এগুবে। অনধিক দুই লক্ষ টাকা যাদের প্রাপ্য তারা এককালীন বেতন বুঝে পাবেন। এছাড়া যাদের পাওনা দুই লাখ টাকার উর্ধ্বে তাদের মোট পাওনার ৫০ শতাংশ এককালীন এবং বাকি ৫০ শতাংশ ভবিষ্যত জীবনের কথা বিবেচনায় ৩ মাস পরপর সঞ্চয়পত্রের মাধ্যমে বিতরণ করা হবে। এক্ষেত্রে এক একজন শ্রমিক গড়ে ১৩ দশমিক ৮৬ লাখ থেকে ৫৪ লাখ টাকা পর্যন্ত পাবেন। সঞ্চয়পত্র হিসেবে প্রতিবার টাকা উত্তোলনে যা হবে সর্বনিম্ম ১৯ হাজার ৩২০ টাকা এবং সর্বোচ্চ ৭৪ হাজার ৫২০ টাকা। এছাড়া অবসরে যাওয়া ৮ হাজার ৯৫৬ জন পাটকল শ্রমিকের অবসর ভাতা পরিশোধে সরকারের ব্যয় হবে ১০২০ কোটি টাকা।

এবার নজর কোথায়?

বর্তমানে বাংলাদেশের পাটশিল্পের মোট উৎপাদনের মাত্র ৮ দশমিক ২১ ভাগ আসে রাষ্ট্রায়ত্ব পাটকলগুলো থেকে। বাদ বাকি অংশ বেসরকারি পাটকলের অবদান। এখন এই প্রশ্নটি করা অমূলক হবে না, বেসরকারি পাটকলগুলো লাভ করতে পারলে রাষ্ট্রের পাটকলগুলো কেন পারে না? এক কথায় এর উত্তর অদক্ষতা, অনিয়ম, দুর্নীতি। ২০১০-১১ অর্থবছরে বিজেএমসি ১৭ কোটি ৫৪ লাখ টাকা লাভ করলেও গত ১০ বছরে তারা লোকসান দিয়েছে ৭ হাজার কোটি টাকা।

অথচ পাট গবেষণায় বাংলাদেশের সাফল্য ঈর্ষণীয়। পাটের জিনতত্ত্ব আবিষ্কার সহ নানা কাজে বাংলাদেশ বেশ ভালভাবেই এগিয়ে আছে। বাংলাদেশ এখনো পর্যন্ত পাট উৎপাদনের জন্য বেশ উপযোগী একটি দেশ। পাট চাষীদের প্রতি মনোনিবেশ করা হলে বাংলাদেশের পাট শিল্প আরো অনেক বেশি সমৃদ্ধ হতে পারে।

কিন্তু পাট উৎপাদনই একমাত্র সমাধান নয়। সবার আগে উচিৎ বিজেএমসিকে ঢেলে সাজানো। পাটশ্রমিক নেতাদের অভিযোগের তীর বরাবরই এই প্রশাসনিক সংস্থাকে ঘিরে। এখানকার দূর্নীতি রোধ করা গেলে পাটের সুদিন ফিরতে খুব বেশি সময় লাগার কথা নয়। তবে এখানেও বড় একটা কিন্তু হয়ে আছে আমাদের দেশের পাটকলের প্রযুক্তিগত সমস্যা। বেশ কয়েক বছর আগেই চীনের সরকারী প্রতিষ্ঠান "চায়না টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রিয়াল করপোরেশন ফর ফরেন ইকোনমিক অ্যান্ড টেকনিক্যাল করপোশন" এর সাথে কারিগরি সহায়তা নেয়ার একটি চুক্তি করেছিল বাংলাদেশ সরকার। সংস্থাটির জরিপ অনুযায়ী, বাংলাদেশে রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলে যে মেশিন আছে সেগুলোর অবস্থা এতটাই নাজুক যে, এইসব মেশিন সংস্কার করাই এখন বৃথা প্রচেষ্টা। মেশিন বদলানোই বাংলাদেশের জন্য অনেক বেশি যৌক্তিক।

সরকারী বেসরকারী অংশীদারিত্বের দিকে সরকার আগাতে চাচ্ছে। কিন্তু ইতিপূর্বে আমাদের দেশে পাটকল সংক্রান্ত প্রায় সব পিপিপি প্রকল্প বেশ বাজেভাবেই ক্ষতির মুখ দেখেছে। তাই নতুন করে এই প্রকল্পে যাবার আগে সরকারের উচিত হবে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা। এছাড়া বেসরকারীকরণের ফলে শ্রমিকরা নায্য মজুরি থেকে বঞ্চিত হতে পারে। রাষ্ট্রায়ত্ব পাটকল বন্ধ হয়ে যাওয়াতে পাট চাষিদের থেকে বেসরকারি পাটকলগুলো কম দামে পাট কিনবে। সেই সাথে চাকরি না থাকায় অনেকে বাধ্য হয়ে কম মজুরিতে বেসরকারি পাটকলে যোগ দিবেন।

শুনতে অস্বাভাবিক লাগলেও সবচেয়ে বড় সত্য কথা হলো, পাটকল নিয়ন্ত্রক এই বিজেএমসিই বাংলাদেশের পাটকল উন্নয়নের ক্ষেত্রে বড় বাঁধা। এর সাংগঠিক কাঠামো বেশ দূর্বল। ধুঁকে ধুঁকে চলা একটি সংগঠন ঠিক কতটা সফলভাবে পাট শিল্পের মত বড় একটি অঙ্গনের অভিভাবকত্ব করবে তা নিয়ে বড়সড় প্রশ্ন থেকে যায়।
 
Status
Not open for further replies.
These are the rules that are to be followed throughout the entire site. Please ensure you follow them when you post. Those who violate the rules may be punished including possibly having their account suspended.

যারা কমেন্ট করবেন, দয়া করে বানান ঠিক রাখুন। উত্তেজিত অবস্থায় দ্রুত কমেন্ট করতে গিয়ে বানান ভুল করবেন না। আমরা যারা কমেন্ট পড়তে আসি, আমাদের কমেন্ট পড়তে অনেক অসুবিধা হয়।

Users who are viewing this thread

Back
Top