What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

চীনা পণ্য বর্জনের সামর্থ্য কি ভারতের আছে? (1 Viewer)

Status
Not open for further replies.

Bergamo

Forum God
Elite Leader
Joined
Mar 2, 2018
Threads
9,649
Messages
117,051
Credits
1,241,096
Glasses sunglasses
Berry Tart
Statue Of Liberty
Profile Music
Sandwich
hJgGCTy.jpg


বিংশ শতকের শুরুর দিকের কথা মনে আছে? ব্রিটিশ পণ্য বয়কট করার সেই স্বদেশী আন্দোলন? তৎকালীন সময়ে বৃটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম হাতিয়ার হিসেবে স্বদেশী আন্দোলন বেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল। বিগত কয়েক বছর ধরে সুযোগ পেলেই কট্টর ভারতীয় জাতীয়তাবাদীরা স্বদেশী আন্দোলনের কায়দায় চীনা পণ্য বর্জনের হুমকি দিয়ে আসছে। কিন্তু বাস্তবতা বলছে তাদের এই দাবির পেছনে নিখাদ "জাতীয়তাবাদী আবেগ" থাকলেও যুক্তি তেমন নেই। চীন-ভারতের মধ্যে একটি শক্তিশালী অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিদ্যমান। কিন্তু চীন থেকে যত পণ্য ভারত আমদানি করে, তার তুলনায় খুবই কম পণ্য তারা চীনে রপ্তানি করে।

সম্প্রতি লাদাখে চীনা এবং ভারতীয় সেনাদের মাঝে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়। চীনা সেনাদের হাতে ২০ জন ভারতীয় সেনা নিহত হন। যদিও উভয় দেশের মধ্যে শান্তি চুক্তির অংশ হিসেবে সীমান্তে অস্ত্র ছাড়াই সবাই টহল দিত। এমন পরিস্থিতিতে লাঠি এবং রডের মধ্যে তারকাটা পেঁচিয়ে সেগুলো দিয়েই নৃশংস ভাবে হত্যা করে হয়েছিল এই ভারতীয় সেনাদের।

এই ঘটনার পর থেকে আবারো চীনের বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফেটে পরে ভারতীয়রা। আর এই ক্ষোভ প্রকাশের অংশ হিসেবে অনেকেই চায়নিজ পণ্য বয়কটের জন্য আন্দোলনের ডাক দেন। এতে ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম থেকে শুরু করে অনেক তারকারাও যুক্ত হন। তবে এই মুহুর্তে আলোচ্য বিষয় হলো আদৌ কি ভারতের চীনা পণ্য বয়কটের সামর্থ্য আছে? আর এতে ভারতের লাভের থেকে ক্ষতির পরিমাণই কি বেশী হতে যাচ্ছে কি না?

চীনা পণ্যে ভারতীয় নির্ভরতা

চায়নিজ পণ্য বয়কটের ডাকের পর ভারতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ কিছু চাইনিজ পণ্য ভাংচুরের ভিডিও দেখা গেছে। কিন্তু তাতে আদৌ কি চাইনিজ পণ্যের উপর নির্ভরতা কমেছে ভারতীয়দের? বাজার বিশ্লেষকরা বলছে, ভারত চীনের ওপর এতটাই নির্ভরশীল যে চীনের বলয় থেকে বের হয়ে আসতে ভারতের আরো পাঁচ থেকে দশ বছরের মত লেগে যেতে পারে।

২০১৮-২০১৯ সালে ভারত ও চায়নার আমদানি ও রপ্তানি বাজার

রপ্তানি১.১৭ লাখ কোটি টাকা
আমদানি৪.৯২ লাখ কোটি টাকা
মোট বানিজ্য৬.০৯ লাখ কোটি টাকা
সূত্রঃ ডিপার্টমেন্ট অফ কমার্স, ভারত সরকার (১৭/০৬/২০২০)

উপরোক্ত তথ্য থেকে দেখা যায় বিগত অর্থ বছরে চায়না ও ভারতের মধ্যে প্রায় ছয় লাখ কোটি টাকার বাণিজ্য হয়েছে। ভারতে স্মার্ট-ফোন পণ্যের বাজারের প্রায় ৭২% দখল করে আছে চীনা পণ্য। আবার স্মার্ট টেলিভিশন পণ্যের বাজারও পায় ৪২% এর মতো চীনের দখলে। ঠিক একইভাবে হোম এপ্লায়েন্সে ১০%, অটো কম্পোনেন্টে ২৬%, ইন্টারনেট এপস এর ৬৬%, সোলার পাওয়ারে ৯০%, ষ্টীল বাজারের ২০% দখল করে আছে বিভিন্ন চায়না পণ্য!

এই মুহূর্তে কি চীনা পণ্য বয়কট সম্ভব?

বর্তমান পৃথিবীতে অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে আপনি যদি কোন পণ্যের সবগুলো পার্ট খুলে একদম আলাদা করে ফেলেন, হতে পারে সেটা স্মার্ট-ফোন, গাড়ি, টিভি এমনকি এরোপ্লেন—সেখানে আপনি হাজারো পার্টস পাবেন যেগুলো চায়না হতে উৎপাদিত। তাই একদম সোজা-সাপ্টা কথায় এটা বলে দেয়া যায় যে, সরাসরি চাইনিজ পণ্য বর্জন করা ভারতের জন্য একদমই অসম্ভব একটি কাজ।

এছাড়া ভারতে ফ্লিপকার্ট, পে-টিএম এর মতো বেশ কিছু কোম্পানি রয়েছে যেই কোম্পানিগুলোর প্রতিষ্ঠাতা ভারতীয় হলেও এসব কোম্পানিতে অন্যান্য দেশের ব্যক্তি কিংবা কোম্পানির শেয়ার রয়েছে। যেমন পেটিএমের ভারতীয় শেয়ারের অংশ মাত্র ৩৯ শতাংশ এবং ফ্লিপকার্টের ৭৭% শেয়ারের মালিকই আমেরিকান কোম্পানি ওয়ালমার্টের। তাহলে প্রশ্ন আসতে পারে এই পণ্যগুলো কি আদৌ ভারতীয় পণ্য কি না? আর ভারতে এই ধরনের পণ্য তালিকার কোন শেষ নেই।

তবে বেশ কিছু পণ্য চাইলেই ভারত নিজের দেশে উৎপাদন করে ব্যবহার করতে পারে। বেশ কিছু পণ্য চাইলেই তারা উৎপাদন বাড়িয়ে রপ্তানি শুরু করতে পারে। এই ধরনের পণ্যের সংখ্যাও নেহায়েত কম নয়। তবে বর্তমান সময়ের প্রেক্ষাপট নিয়েও একটু আলোচনার অবকাশ রয়েছে। করোনাভাইরাসের ভয়াল থাবা পুরো বিশ্বব্যাপী প্রভাব বিস্তার করেছে। করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ভারতেও দিন দিন আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। ইতোমধ্যে ভারতে প্রায় সাড়ে চার লাখ মানুষ করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে।

করোনার কারণে ভারতের বিভিন্ন পণ্যের ইন্ডাস্ট্রি এবং বাজার উভয়েই হুমকির মুখে। এমন একটি নাজুক পরিস্থিতিতে ৩০% চাইনিজ পণ্যও যদি বর্জন করা হয় তাহলেও সেই ফাঁকা জায়গা ভারতীয় পণ্য দিয়ে পূরণ করা সম্ভব নয়। এমতাবস্থায় চাইনিজ পণ্য বর্জন করলে ভারতের লাভ তো হবেই না বরং বিশাল আকারে ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
 
Status
Not open for further replies.

Users who are viewing this thread

Back
Top