What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

বাংলাদেশের সাংসদ যখন মধ্যপ্রাচ্যে মানব পাচারকারী চক্রের মূল হোতা (1 Viewer)

Status
Not open for further replies.

Bergamo

Forum God
Elite Leader
Joined
Mar 2, 2018
Threads
9,649
Messages
117,051
Credits
1,241,096
Glasses sunglasses
Berry Tart
Statue Of Liberty
Profile Music
Sandwich
5g0AlLs.jpg


কুয়েতে মানব পাচারে অভিযুক্ত লক্ষ্মীপুর-২ আসনের (রায়পুর-লক্ষ্মীপুর সদরের আংশিক) সাংসদ সদস্য কাজী শহিদ ইসলাম ওরফে পাপুল। আর দশজনের মতো রাজনীতিতে খুব দীর্ঘপথ পাড়ি দিতে হয়নি তাকে। খুব অল্প দিনেই নিজেকে জনপ্রতিনিধি করে নিয়েছেন লক্ষীপুরের এই সন্তান। ২০১৬ সালের ঈদুল আজহার আগে তার নিজ গ্রামের মানুষই তাকে সে অর্থে চিনতেন না। গ্রামের বাড়িতে মায়ের নামে একটি দাতব্য প্রতিষ্ঠান করতে গিয়ে প্রথম এলাকাবাসীদের কাছাকাছি আসেন সাংসদ পাপুল। দুই হাতে দেদার বিলিয়েছেন টাকা। এরপর স্থানীয় আওয়ামী লীগের সমর্থন নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে সাংসদ নির্বাচিত হন।

পাপুল অবশ্য একা সংসদে যান নি, অর্থের জোরে স্ত্রী সেলিনা ইসলামকে পাইয়ে দিয়েছেন সংসদের সংরক্ষিত আসন। দুজনই সাংসদ হওয়ার পেছনে আওয়ামী লীগের অনেক প্রভাবশালী নেতার ভূমিকা রয়েছে বলে স্থানীয় লোকজন বিশ্বাস করেন। আর এই বিশ্বাসের পিছনে বড় কারণ জনগণের সাথে তার বিশাল দূরত্ব।

সংবাদমাধ্যমে দেয়া স্থানীয় জনতার ভাষ্য অনুযায়ী, ১৯৮৯ সালে একটি প্রতিষ্ঠানের শ্রমিকদের তত্ত্বাবধায়ক হিসেবে চাকরি নিয়ে কুয়েত যান তিনি। তখন তিনি ছিলেন অনেকটা নিঃস্ব। ১৯৯০ সালে ইরাকের কুয়েত দখলের কারণে তিনি দেশে ফিরে আসেন। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে কাজী শহিদ আবার কুয়েতে যান। এ ক্ষেত্রে তাঁকে সহযোগিতা করেন বড় ভাই কাজী মঞ্জুরুল আলম। মঞ্জুরুল ছিলেন কুয়েত বিএনপির সাধারণ সম্পাদক।

অভিযোগ এবং কুয়েতের ভাবনা

কুয়েতে আটক বাংলাদেশের সাংসদ কাজী শহিদ ইসলাম পাপুলের বিরুদ্ধে জালিয়াতি করে কর্মী নিয়োগ, রেসিডেন্সি আইনের লংঘন ও ঘুষ দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে। কুয়েতের তদন্ত কর্মকর্তাদের কাছে দেওয়া স্বীকারোক্তি আর সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে তাঁর বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিকভাবে এসব অভিযোগ আনা হচ্ছে।

কুয়েতের পাবলিক প্রসিকিশন সাংসদ পাপুলের বিরুদ্ধে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তার করা মামলার বিষয়ে ৬ জুলাই পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেছেন। আর ওই শুনানির আগে তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাঁকে আটক রাখা হবে। তবে এর সবই অনানুষ্ঠানিক ঘোষণা। এখন পর্যন্ত কুয়েত সরকার আনুষ্ঠানিক কোন বিবৃতি দেয়নি। বাংলাদেশ সরকার এখন পর্যন্ত সেই আনুষ্ঠানিক বিবৃতির অপেক্ষায় আছে।

কুয়েতের কূটনীতিক সূত্রে জানা গেছে, গত সপ্তাহে তদন্তের অংশ হিসেবে কুয়েত সিআইডির কর্মকর্তারা তাঁর মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান কুয়েতিয়া মারাফিয়ায় যান। সেখানে গিয়ে তদন্ত কর্মকর্তারা প্রতিষ্ঠানের লোকজনের সঙ্গে কথা বলেন। সেখানে কুয়েতিয়া মারাফিয়ার দুই কর্মকর্তা আটক এই সাংসদের বিষয়ে তদন্ত কর্মকর্তাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন। বেশ কিছুদিন ধরে ওই প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ওই যুগল দক্ষিণ এশিয়ার একটি দেশের নাগরিক। তদন্ত কর্মকর্তারা কুয়েতিয়া মারাফিয়ায় অভিযান শেষে সেখানে রেড স্টিকার দিয়ে এসেছেন। অর্থাৎ পরবর্তী নির্দেশ দেওয়া না পর্যন্ত ওই দপ্তর থেকে কোনো কার্যক্রম পরিচালনা করা যাবে না।

কুয়েতের আরবী দৈনিক আল কাবাস জানিয়েছে, বাংলাদেশের সাংসদের কাছ থেকে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে কুয়েতের তিন সরকারি কর্মকর্তাকে আটক করেছে সেখানকার সিআইডি। তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাদের আটক রাখার নির্দেশ দিয়েছেন পাবলিক প্রসিকিউটর।

কুয়েতের ইংরেজি দৈনিক আরব টাইমসের খবরে বলা হয়, মানবপাচার ও অর্থপাচারের অভিযোগে কুয়েতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করেই কাজ করতেন পাপুল। তার এসব অনৈতিক কাজে সাহায্য করেছেন দেশটির আরও কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তা। যাদের মধ্যে কিছু কর্মকর্তা ইতিমধ্যে চাকরির মেয়াদ শেষ করে অবসরে গেছেন।

কুয়েতের সরকারি পর্যায়ে বক্তব্য

কুয়েতের উপপ্রধানমন্ত্রী আনাস আল সালেহ দেশটির গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, মানবপাচারের অভিযোগের তদন্তে সরকারি কর্মকর্তা ও প্রভাবশালী ব্যক্তি যেই হোক না কেন, তাদের বিচারের আওতায় আনা হবে। কাউকে ন্যূনতম ছাড় দেয়া হবে না। সাধারণ শ্রমিক হিসাবে কুয়েত গিয়ে বিশাল সাম্রাজ্য গড়া পাপুল ২০১৮ সালে লক্ষ্মীপুর-২ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। পাপুলের মালিকানাধীন মারাফি কুয়েতিয়া গ্রুপে প্রায় ১৫ থেকে ২০ হাজার প্রবাসী বাংলাদেশি কাজ করেন বলে কুয়েতে বাংলাদেশ কমিউনিটির ধারণা। কোম্পানির ওয়েবসাইট থেকে জানা যায়, সেবা খাত, নিরাপত্তা, নির্মাণ, আবাসন, পরিবহন, তেল শোধন প্রভৃতি খাতে কার্যক্রম রয়েছে মারাফি কুয়েতিয়া গ্রুপের। কুয়েতের বাইরে মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি দেশে ব্যবসা রয়েছে তাদের।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, অভিযুক্ত বাংলাদেশের সাংসদকে মদদ দিয়েছেন দেশটির অন্তত সাতজন বিশিষ্ট নাগরিক। ওই সাতজনের মধ্যে কুয়েতের সাবেক ও বর্তমান তিন সাংসদও রয়েছেন। আর অত্যন্ত নিন্দনীয় এই ঘটনার প্রেক্ষিতে পাপুলকে মদদদানকারীদের পরিচয় প্রকাশের দাবি জানিয়েছেন কুয়েতের সাংসদেরা।

কুয়েতের দুর্নীতি দমন কর্তৃপক্ষ (নাজাহা) জানিয়েছে, মানব পাচার নিয়ে বাংলাদেশের সাংসদের বিরুদ্ধে পাবলিক প্রসিকিউশন যে তদন্ত চালাচ্ছে, তা নিয়ে সংস্থাটি পরের ধাপের তদন্ত চালাবে।

বাংলাদেশ কি ভাবছে!

এখন পর্যন্ত খুব বেশি কিছু করেনি বাংলাদেশ। তবে দাপ্তরিক কিছু কাজ এগিয়েছে। সাংসদ আটকের কারণ ও তাঁর অবস্থান সম্পর্কে জানতে চেয়ে কুয়েত সরকারকে চিঠি দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন কুয়েতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এস এম আবুল কালাম৷ তবে সে চিঠির জবাব কুয়েত সরকার দেয়নি বলেই জানিয়েছেন তিনি।

তবে আরেক জনপ্রতিনিধি এবং পাপুলের স্ত্রী সাংবাদিকদের বলছেন অন্য কথা। লিখিত বিবৃতিতে তিনি জানান, ''শহিদ ইসলাম মারাফি কুয়েতিয়া কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী৷ যে প্রতিষ্ঠানে ২৫ হাজারের বেশি বাংলাদেশি কাজ করেন৷ করোনা মহামারির কারণে গত তিন মাস কুয়েত লকডাউন হয়ে আছে৷ এই সময়ে বেকার হয়ে পড়া কয়েকজন অভিবাসী কর্মী সরকারি দপ্তরে অভিযোগ করেছেন। কুয়েত সরকারের নিয়মানুযায়ী ব্যবসায়িক বিষয়ে আলোচনার জন্য সিআইডি তাকে ডেকে নিয়েছে৷''

সাংসদের বিষয়ে সরকার কী ভাবছে, জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেন দেশের সংবাদমাধ্যমে বলেন, 'আমরা এখনো কুয়েতের কাছ থেকে সরকারিভাবে কোনো তথ্য পাইনি। পত্রিকায় যেসব তথ্য পেয়েছি, সরকারিভাবে কুয়েতের কাছ থেকে এসব তথ্য পেলে আইন অনুযায়ী অবশ্যই তাঁর বিচার হবে। এখন তথ্য না পেলে তো আমাদের পক্ষে কিছু বলা সম্ভব হচ্ছে না।'

কুয়েতের সাংসদের অনৈতিক ব্যবসা পরিচালনায় দেশটিতে বাংলাদেশ দূতাবাসের কারো কারোও বিরুদ্ধে অভিযোগ এসেছে। এ ব্যাপারে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, 'দূতাবাসের কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার উদ্যোগ নেব।'

তবে একথা স্পষ্ট বড় শাস্তিই পেতে যাচ্ছেন পাপুল। পুরো ব্যাপারটিই এখন কুয়েতের নিয়ন্ত্রণে। আর শেষ অব্দি বহিঃবিশ্বে লজ্জার নতুন প্রলেপ হতে যাচ্ছেন দেশের একজন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি।
 
Status
Not open for further replies.
These are the rules that are to be followed throughout the entire site. Please ensure you follow them when you post. Those who violate the rules may be punished including possibly having their account suspended.

যারা কমেন্ট করবেন, দয়া করে বানান ঠিক রাখুন। উত্তেজিত অবস্থায় দ্রুত কমেন্ট করতে গিয়ে বানান ভুল করবেন না। আমরা যারা কমেন্ট পড়তে আসি, আমাদের কমেন্ট পড়তে অনেক অসুবিধা হয়।

Users who are viewing this thread

Back
Top