What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

করোনা সংকটে বিমান পরিবহনের হালচাল (1 Viewer)

Status
Not open for further replies.

Bergamo

Forum God
Elite Leader
Joined
Mar 2, 2018
Threads
9,649
Messages
117,051
Credits
1,241,096
Glasses sunglasses
Berry Tart
Statue Of Liberty
Profile Music
Sandwich
FBrpNVd.jpg


কোভিড–১৯ সংক্রমণের পর প্রথম কাজ ছিল লকডাউন। একের পর এক শহর লকডাউনের ফলে সবার আগে অর্থনৈতিক দুর্দশা দেখেছে পর্যটন খাত। অনির্দিষ্টকালের জন্য থমকে ছিল বিমান চলাচল। বিশেষ করে আমদানি রপ্তানির সবচেয়ে বড় দুই কেন্দ্র আমেরিকা এবং চীনের সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন সারা বিশ্বের। এ ছাড়া হংকং, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়ার মতো চীনের প্রতিবেশী দেশ ও অঞ্চলগুলোতেও করোনার সংক্রমণ বাড়তে থাকায় সৃষ্টি হয়েছে আতঙ্ক।

যেখানে পারতপক্ষে নিজের বাড়িই ছাড়তে চাইছেন না সাধারণ মানুষ, সেখানে বিমান সংক্রান্ত যেকোন কিছুই যেন ভাবনার বাইরে। ফলে এই সংকটে সবচেয়ে বেশি ক্ষতির মুখে পড়েছে বৈশ্বিক বিমান পরিচালনা খাত। একদিকে যেমন কমে গেছে যাত্রী সংখ্যা, তেমনি পাল্লা দিয়ে কমছে এয়ারলাইন্সগুলোর আয়। এই পরিস্থিতি অব্যাহত থাকলে আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ ২৯ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক বিমান পরিবহন কর্তৃপক্ষ।

সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদন বলছে, নভেল করোনাভাইরাসের কারণে এ খাতের সেবার পরিমাণ গত বছরের তুলনায় এরই মধ্যে ৮০ শতাংশ কমেছে। বহির্বিশ্ব তো বটেই, অভ্যন্তরীণ রুটেই বিমান চলাচল এখনো অনেক দেশে বন্ধ। চালু আছে অত্যন্ত জরুরি কাজে চলা বিমান। এখন পর্যন্ত কোভিডের বিরুদ্ধে কার্যকরী কোন ব্যবস্থা না আসায় বিমান পরিবহন খাতের এই সংকট যে আরো বাড়বে সে নিয়ে সন্দেহ করা চলে না। রয়টার্সকে দেয়া বিবৃতি অনুযায়ী সংশ্লিষ্টদের প্রায় সকলেই মনে করেন, পরিস্থিতি রাতারাতি স্বাভাবিক যদি হয়েও যায়, তবু বিমানের অচলাবস্থা কাটতে আরো কয়েক বছর লাগতে পারে। তাদের আশঙ্কা অন্যান্য সব খাতের মত বিমান পরিবহন খাতেও সবচেয়ে বেশি ক্ষতিতে থাকবে ছোট প্রতিষ্ঠানগুলো। বিশেষ করে অভ্যন্তরীণ রুটে সেবা দেয়া প্রতিষ্ঠানগুলো অস্তিত্ব সংকটের মুখে থাকবে বলে অভিমত সবার।

ইউনাইটেড এয়ারলাইনস হোল্ডিংস ইনকরপোরেশন এবং এয়ার নিউজিল্যান্ডের মতো বড় অনেক ক্যারিয়ারও চলমান অবস্থায় নিজেদের সংকটাপন্ন ভাবতে বাধ্য হচ্ছে। খাত সংশ্লিষ্টদের এসব ক্যারিয়ার জানিয়েছে, সীমিত পর্যায়ে এ সংকট কাটিয়ে উঠলেও বাকিদের জন্য সামনে বেশ বড় দুর্ভোগ অপেক্ষা করছে।

বিমানখাত বিষয়ক ডাটা ফার্ম ফর ওয়ার্ডকিসের সহকারী প্রধান অলিভিয়ের পন্টির মতে, মরণঘাতী ভাইরাসটি এক সময় শেষ হয়ে যাবে। কিন্তু আমরা যেভাবে বছর শুরু করি, সেরকম ভাল অবস্থা হয়ত আর থাকবেনা। যেখানে গত বছর ৩০ মার্চ থেকে ৫ এপ্রিল এই এক সপ্তাহে সারাবিশ্বে বিমানযাত্রী ছিল ৪ কোটি ৪ লাখের বেশি। সেখানে চলতি বছরে সে সংখ্যা সাকুল্যে ১ কোটিরও কম বলে ধারণা করছে ফার্ম ফর ওয়ার্ডকিস।

বিমানের ফ্লাইট নিয়ে তথ্য প্রদানকারী আরেকটি ফার্ম ওএজি বলছে, গত কয়েক বছরে বৈশ্বিক বিমান খাতে যে প্রবৃদ্ধি হয়েছিল, সেটি এখন হারিয়ে যেতে বসেছে। এ অবস্থায় হয়ত ২০২০ সালের প্রত্যাশিত প্রবদ্ধি অর্জন করতে সময় লাগবে ২০২২ কিংবা ২০২৩ পর্যন্ত।

বিশ্বজুড়ে গত দুই মাসে আড়াই লাখেরও বেশি ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক বেসামরিক বিমান পরিবহন সংস্থা (আইসিএও) জানিয়েছে, করোনাভাইরাস বা কোভিড–১৯–এর প্রভাবে বিশ্বের বিমান সংস্থাগুলোকে ৫ বিলিয়ন ডলার পর্যন্ত লোকসানের মাশুল গুনতে হতে পারে। মার্চের প্রথম সপ্তাহ থেকে বিমান চলাচল ৩৫ শতাংশ কমে এসেছে। আন্তর্জাতিক বিমান পরিবহন সংস্থা (আইএটিএ) এটিকে গত এক দশকে ভয়াবহ বিপর্যয় হিসেবে উল্লেখ করেছে। ২০০৮ সালের অর্থনৈতিক মন্দার পর এবারই এমন নাজুক অবস্থা দেখছে বিমান পরিবহন খাত।

করোনায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ইউরোপ এবং যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু ইউরোপ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে বিমান ভ্রমণ বিশ্বের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ রুট। আর রোগের প্রকোপ বাড়ার সাথে সাথেই ইউরোপ–যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা জারি করায় ইউরোপের এয়ারলাইনসগুলো বিশ্বের অন্য সব এয়ারলাইনসের মতোই পড়েছে ক্ষতির মুখে। উত্তর আমেরিকা, লাতিন আমেরিকা ও ইউরোপের বিমান চলাচল ট্র্যাককারী এনওয়াইএসই আরকা এয়ারলাইনস ইনডেক্স থেকে জানা যায়, করোনাভাইরাসের কারণে রাজস্ব আয় ৪০০ কোটি ডলার ক্ষতি হয়েছে। গত এক দশকে প্রথম এ ধরনের ক্ষতির মুখে পড়ল বিমান চলাচল শিল্প। করোনা সংকটে সবচেয়ে বড় ধাক্কা খেয়েছে নরওয়েজিয়ান এয়ার। ইতিমধ্যে এয়ারলাইনসটি ৪ হাজারের বেশি ফ্লাইট বাতিল করেছে। অর্ধেকের বেশি বিমানকর্মীকে কাজে না আসার নির্দেশ দিয়েছে বিমান সংস্থাটি। আর এই অচলাবস্থা যে সহসাই কাটছে না তাও একপ্রকার নিশ্চিতই বলা চলে।

প্রায় একইরকম প্রভাব পড়েছে অস্ট্রেলিয়ায়ও। ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে অস্ট্রেলিয়ার এয়ারলাইনসগুলো। বড় বড় বিমানবন্দর দিন দিন ফাঁকা হয়ে পড়েছে। অনেক এয়ারলাইনস তাদের কর্মীদের বাধ্যতামূলক অবৈতনিক ছুটিতে পাঠিয়েছে। অনেক বিমান সংস্থার পাইলট এবং কর্মীরা ভাইরাসে আক্রান্তের ভয়ে কাজে যোগ দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। একই সঙ্গে দেশে দেশে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞায় বিশ্ব পর্যটনে ধস নেমেছে। অনেকের দাবি এভিয়েশন শিল্পে করোনাভাইরাস শুধু বিপর্যয় নয়, 'মহাবিপর্যয়' ডেকে এনেছে। সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়ান প্রশাসন জানিয়েছে, অস্ট্রেলিয়ার বর্তমান বিমানখাতের ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে এবং পুনরায় স্বাভাবিক গতি ফিরে উঠতে আরো প্রায় ৩ বছর সময় প্রয়োজন।

এখন পর্যন্ত বিশ্বের প্রধান যেসব এয়ারলাইন্স ফ্লাইট স্থগিত বা হ্রাস করেছে তাদের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে, আমেরিকান এয়ারলাইন্স, ইউনাইটেড এয়ারলাইন্স, ডেল্টা, এয়ার কানাডা, এয়ার এশিয়া, নিপ্পন, ক্যাথে প্যাসিফিক, ক্যাথে ড্রাগন, জাপান এয়ারলাইন্স, কোরিয়ান এয়ার, সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্স, সিল্ক এয়ার, কান্তাস, এয়ার নিউজিল্যান্ড, এয়ার ফ্রান্স, ব্রিটিশ এয়ারওয়েজ, ভার্জিন আটলান্টিক, লুফথানসা, সুইস অস্ট্রিয়ান এয়ারলাইন্স, টার্কিশ এয়ারলাইন্স, ইতিহাদ, এমিরাটস ও কাতার এয়ারওয়েজ।

বিশ্বের সবচেয়ে লাভজনক বিমান সংস্থা আমেরিকান এয়ারলাইন্স দেশটির সরকারের কাছে ১২ কোটি ডলার সহায়তা চেয়েছে। অন্যদিকে অস্ট্রেলিয়ার রাষ্ট্রীয় বিমান সংস্থা কান্তাস এয়ারলাইন্স জানিয়েছে, করোনা সংকটে এই আর্থিক বছরের দ্বিতীয়ভাগে তাদের কর–পূর্ব মুনাফা ১০ কোটি মার্কিন ডলার কম হতে পারে। এছাড়া এয়ার ফ্রান্স–কেএলএম জানিয়েছে, করোনা ভাইরাসের কারণে ফেব্রুয়ারি থেকে এপ্রিলের মধ্যে তাদের আয় ২১ কোটি ৬০ লাখ ডলার কমে যাবে।
 
Status
Not open for further replies.

Users who are viewing this thread

Back
Top